মজলিসে বসার দোয়া , আদব ও নিয়ম কানুন

মজলিসে বসার দোয়া , আদব ও নিয়ম কানুন

মজলিসে বসার দোয়া , আদব ও নিয়ম কানুন। এ বিষয়ে সরাসরি মুল হাদিস শরীফ থেকে পড়ুন >> সহীহ বুখারী >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> রিয়াদুস সালেহীন হাদীস শরীফ হতে

মজলিসে বসার দোয়া

মজলিসে যা বলতে হয়
বৈঠকের কাফ্‌ফারা (ক্ষতিপূরণ)
মজলিস হইতে উঠে যাওয়ার দুয়া
কেউ যদি বলে, ‘আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন’, তার জন্য দো‘আ
কেউ আপনার সাথে সদাচারণ করলে তার জন্য দো‘আ
কেউ আপনার সাথে সদাচারণ করলে তার জন্য দো‘আ

কেউ কাউকে তার বসার স্থান থেকে উঠাবে না। [তিরমিজি]
আল্লাহর যিকির না করেই কারো মাজলিস হইতে উঠে যাওয়ার অপছন্দনীয় [আবু দাউদ] [তিরমিজি]
প্রয়োজনবশতঃ কেউ আসন ছেড়ে উঠে গিয়ে আবার ফিরে এলে সে ব্যক্তিই সে আসনের বেশি হক্বদার [তিরমিজি] [আবু দাউদ]
বিনা অনুমতিতে দুজনের মাঝখানে বসা মাকরূহ [তিরমিজি] [আবু দাউদ]
বৈঠকের মাঝখানে বসা নিষেধ [তিরমিজি]
কারো সম্মানার্থে দাঁড়ানো অপছন্দনীয় []তিরমিজি
রাস্তার পাশে বসা সম্পর্কে [আবু দাউদ]
মাজলিসের বসার জায়গা প্রশস্ত করা [আবু দাউদ]
রোদ ও ছায়ার মাঝামাঝি বসা সম্পর্কে [আবু দাউদ]
গোল হয়ে বসা সম্পর্কে [আবু দাউদ]
বৃত্তের মাঝখানে বসা [আবু দাউদ]
অন্যকে বসতে দেয়ার জন্য নিজের স্থান হইতে উঠে যাওয়া [আবু দাউদ]
যার সংস্পর্শে বসা উচিত [আবু দাউদ]
ঝগড়া করা নিন্দনীয় [আবু দাউদ]
কথা বলার আদব-কায়দা [আবু দাউদ]
খুত্ববাহ সম্পর্কে [আবু দাউদ]
লোকদের সাথে পদমর্যাদা অনুযায়ী আচরণ করা [আবু দাউদ]
কিভাবে বসা উচিৎ [আবু দাউদ] [বুখারী]
দৃষ্টিকটুভাবে বসা [আবু দাউদ]
ইশার সলাতের পর আলোচনা সম্পর্কে [আবু দাউদ]
যে ব্যক্তি চার হাঁটু হয়ে বসে [আবু দাউদ]
কানাঘুষা করা [আবু দাউদ]

মজলিসে যা বলতে হয়

ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, প্রতিটি মাজলিসে হিসাব করে দেখা গেছে যে, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উক্ত মাজলিস হইতে উঠে যাওয়ার আগে এক শতবার বলিতেনঃ

رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَىَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الْغَفُورُ

রাব্বিগফিরলি ওয়াতুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আংতাত তাওয়্যাবুল গাফুর, “হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার তাওবা গ্রহণ কর। কারন তুমিই তাওবাহ কবুলকারী, ক্ষমাকারী”।

[তিরমিজি ৩৪৩৪ সহীহ]

ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা গণনা করে দেখেছি যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই মজলিশে শতবার বলিতেন,

 رَبِّ اغْفِرْ لِي وَتُبْ عَلَىَّ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

“রব্বিগফির লী ওয়াতুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আনতাত তাওয়াবুর রহীম” [প্রভু! আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার তওবা কবুল কর।

কেননা তুমিই তওবা কবুলকারী ও করুণাময়]

[ইবনে মাজা ৩৮১৪]

বৈঠকের কাফ্‌ফারা (ক্ষতিপূরণ)

আব্দুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কিছু বাক্য যা কোন ব্যক্তি মাজলিস হইতে উঠার সময় তিনবার উচ্চারণ করলে তা তার ঐ মাজলিসের কাফফারাহ হইবে। আর যদি উক্ত বাক্যগুলো কোন উত্তম মাজলিসে ও যিকিরের মাজলিসে পাঠ করে তাহলে পুস্তিকায় সীল মোহর করার মতই তা তার জন্য স্থায়িত্ব লাভ করে। বাক্যগুলো হলো

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ

সুবাহানকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা লা ইলাহা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইকা”। হে আল্লাহ! মহিমা আপনার, আমি আপনার প্রশংসা সহকারে শুরু করছি। আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আমি আপনার নিকট ক্ষমা চাই এবং অনুতপ্ত হয়ে আপনার নিকট ফিরে আসছি।

সহিহ। তবে “তিনবার” কথাটি বাদে।

[আবু দাউদ ৪৮৫৭, সহিহ হাদিস, ৪৮৫৮ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীত, সহিহ ]

আবু বারযাহ আল-আসলামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন কোন বৈঠক শেষ করে চলে যাওয়ার ইচ্ছা করিতেন তখন বলিতেন

 سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ 

সুবাহানকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লা আনতা আসতাগফিরুকা ওয়া আতূবু ইলাইকা”। এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এখন আপনি যে বাক্য পাঠ করিলেন তা তো ইতোপূর্বে আপনি পাঠ করেননি? তিনি বলিলেন, মাজলিসে যা কিছু [ভুলক্রটি] হয়ে থাকে একথাগুলো তার কাফফারাহ গণ্য হইবে।

[আবু দাউদ ৪৮৫৯ হাসান সহিহ]

আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক মজলিসে বসে প্রয়োজন ছাড়া অনেক কথা-বার্তা বলেছে, সে উক্ত মাজলিস হইতে উঠে যাওয়ার আগে যদি বলেঃ

اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ ‏. 

আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লা আন্তা আসতাগফেরুকা ওয়া আতুবু ইলায়কা।

“হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র এবং সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য। আমি সাক্ষ্য দেই যে, তুমি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই, তোমার কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তন করি ,

তাহলে উক্ত মজলিসে তার যে অপরাধ হয়েছিলো তা ক্ষমা করে দেয়া হইবে।

[তিরমিজি ৩৪৩৩ সহীহ]

মজলিস হইতে উঠে যাওয়ার দুয়া

ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিম্নোক্ত বাক্যে তাহাঁর সাহাবীগণের জন্য দুয়া না করে হঠাৎ মাজলিস হইতে খুব কমই বিদায় হইতেনঃ

 اللَّهُمَّ اقْسِمْ لَنَا مِنْ خَشْيَتِكَ مَا يَحُولُ بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَعَاصِيكَ وَمِنْ طَاعَتِكَ مَا تُبَلِّغُنَا بِهِ جَنَّتَكَ وَمِنَ الْيَقِينِ مَا تُهَوِّنُ بِهِ عَلَيْنَا مُصِيبَاتِ الدُّنْيَا وَمَتِّعْنَا بِأَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُوَّتِنَا مَا أَحْيَيْتَنَا وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنَّا وَاجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلَى مَنْ ظَلَمَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى مَنْ عَادَانَا وَلاَ تَجْعَلْ مُصِيبَتَنَا فِي دِينِنَا وَلاَ تَجْعَلِ الدُّنْيَا أَكْبَرَ هَمِّنَا وَلاَ مَبْلَغَ عِلْمِنَا وَلاَ تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لاَ يَرْحَمُنَا

আল্লা-হুম্মাক্বসিম লানা মিন খাশ্য়্যাতিকা মা তাহূলু বিহী বাইনানা অবাইনা মা‘আ-স্বীক, অমিন ত্বা-‘আতিকা মা তুবাল্লিগুনা বিহী জান্নাতাক, অমিনাল য়্যাক্বীনি মা তুহাউবিনু বিহী আলাইনা মাস্বা-ইবাদ দুন্য়্যা। আল্লাহুম্মা মাত্তি‘না বিআসমা-‘ইনা অ আবস্বা-রিনা অ ক্বুউওয়াতিনা মা আহয়্যাইতানা, অজ্‘আলহুল ওয়া-রিসা মিন্না। অজ‘আল সা’রানা আলা মান যালামানা, অনস্বুরনা ‘আলা মান ‘আ-দা-না, অলা তাজ‘আল মুস্বীবাতানা ফী দীনিনা। অলা তাজ‘আলিদ্দুন্য়্যা আকবারা হাম্মিনা অলা মাবলাগা ‘ইলমিনা, অলা তুসাল্লিত্ব ‘আলাইনা মাল লা য়্যারহামুনা।

“হে আল্লাহ্‌! আমাদের মাঝে তুমি এতো পরিমাণ আল্লাহ্‌ভীতি ভাগ কর যা আমাদের মাঝে ও তোমার প্রতি অবাধ্যচারী হওয়ার মাঝে বাধা হইতে পারে এবং আমাদের মাঝে তোমার প্রতি আনুগত্য এতো পরিমাণ প্রদান করো যার দ্বারা তুমি আমাদেরকে তোমার জান্নাতে পৌঁছে দিবে, এতটা দৃঢ় প্রত্যয় প্রদান কর যার মাধ্যমে তুমি পৃথিবীর যে কোন অনিষ্ট আমাদের জন্য সহজসাধ্য করিবে, যতক্ষণ আমাদের তুমি জীবিত রাখ ততক্ষণ আমাদের কর্ণ, আমাদের চক্ষু ও আমাদের শক্তি –সামর্থ্য দিয়ে আমাদের জীবনোপকরণ দান কর [কিংবা আমাদের চোখ –কান মৃত্যু পর্যন্ত তাজা ও সুস্থ রাখ], আর তাকে আমাদের উত্তরাধিকার বানিয়ে দাও। আমাদের উপর যে যুল্‌ম করে তার প্রতি আমাদের প্রতিশোধ সুনির্ধারিত কর, আমাদের প্রতি যে দুশমনি করে তার বিরুদ্ধে আমাদেরকে সহযোগিতা কর, আমাদের ধর্ম পালনে আমাদের বিপদাক্রান্ত করো না , দুনিয়া অর্জনকে আমাদের ও আমাদের জ্ঞানের উদ্দেশে রুপান্তর করোনা এবং আমাদের প্রতি যে দয়া করিবে না তাকে আমাদের উপর প্রভাবশালী [শাসক নিয়োগ] করো না”।

তিরমিজি ৩৫০২, হাসানঃ আল-কালিমুত তাইয়িব [হাঃ ২২৫/১৬৯], মিশকাত তাহক্কিক সানী [হাঃ ২৪৯২] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব । এ হাদীসটি কিছু বর্ণনাকারী খালিদ ইবনি আবী ইমরান হইতে, তিনি নাফি হইতে, তিনি ইবনি উমার [রাদি.] হইতে এই সনদে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। এই হাদীসটির তাহকিকঃ হাসান হাদীস

কেউ কাউকে তার বসার স্থান থেকে উঠাবে না।

সুরা মুজাদালাহ ৫৮/১১

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِذَا قِيلَ لَكُمۡ تَفَسَّحُواْ فِي ٱلۡمَجَٰلِسِ فَٱفۡسَحُواْ يَفۡسَحِ ٱللَّهُ لَكُمۡۖ وَإِذَا قِيلَ ٱنشُزُواْ فَٱنشُزُواْ يَرۡفَعِ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مِنكُمۡ وَٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡعِلۡمَ دَرَجَٰتٖۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعۡمَلُونَ خَبِيرٞ ١١

হে মুমিনগণ, তোমাদেরকে যখন বলা হয়, ‘মজলিসে স্থান করে দাও’, তখন তোমরা স্থান করে দেবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য স্থান করে দেবেন। আর যখন তোমাদেরকে বলা হয়, ‘তোমরা উঠে যাও’, তখন তোমরা উঠে যাবে। তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় সমুন্নত করবেন। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবহিত।

বুখারী ৬২৭০ (আঃপ্রঃ- ৫৮২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭২৩)

২/৮৩০। আবূ হুরাইরা রাঃআঃ হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ‘‘মজলিস থেকে কেউ উঠে গিয়ে আবার সেখানে ফিরে এলে সেই ঐ জায়গার বেশি হকদার।’’ [মুসলিম][2]

৩৬৮ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, তোমাদের যে ব্যক্তি যে মুসল্লায় নামাজ আদায় করেছে , সে মুসল্লায় যতক্ষণ বসা থাকে এবং ওযূ ছুটে যায় মত কোন কাজ না করে ততক্ষণ ফেরেশতাগণ এই বলে দোয়া করিতে থাকেন,

اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اَللّٰهُمَّ ارْحَمْهُ

আল্লাহুম্মাগফির লাহু আল্লাহুম্মার হামহু, “হে আল্লাহ! তোমার এই বান্দার গুনাহ মাফ করো, হে আল্লাহ! তোমার এই বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করো।” [বুখারি ৪৪৫, মুসলিম ৬৪৯]

ইয়াহইয়া [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মালিক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেছেন, হাদিসে বর্ণিত, مَا لَمْ يُحْدِثْ [মালাম য়ুহদিস] বাক্যটির অর্থ আমার মতে, [মুসল্লি কতৃক] এমন কোন কাজ করা যাতে ওযূ ভেঙে যায়, এটা অন্য কিছু নয় ।

কসর নামাজের নিয়ম -এই হাদীসটির তাহকিকঃ অন্যান্য

কেউ যদি বলে, ‘আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন’, তার জন্য দো‘আ

وَلَكَ

(ওয়া লাকা)

১৯৭- “আর আপনাকেও।”

আহমাদ ৫/৮২, নং ২০৭৭৮; আন-নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, পৃ. ২১৮, নং ৪২১। তাহকীক, ড. ফারূক হাম্মাদাহ।

কেউ আপনার সাথে সদাচারণ করলে তার জন্য দো‘আ

جَزَاكَ اللَّهُ خَيْراً

(জাযা-কাল্লা-হু খাইরান)।

১৯৮- “আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন।”

তিরমিযী, হাদীস নং ২০৩৫। আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ৬২৪৪; সহীহুত তিরমিযী, ২/২০০।

Muslim ১৮৮১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যিমাদ (রাঃ) মক্কায় আগমন করলেন। তিনি ছিলেন আযদ শানুয়া গোত্রের লোক। তিনি বাতাস লাগার ঝাঁড় ফুঁক করতেন। তিনি মক্কার কতিপয় নির্বোধ লোককে বলাবলি করতে শুনলেন যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মাদ। যিমাদ বললেন, আমি যদি এ লোকটিকে দেখতাম, হয়ত আমার হাতে আল্লাহ তাঁকে শিফা দিতেন। রাবী বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি ঐ সব ব্যাধির ঝাঁড় ফুঁক করে থাকি আর আল্লাহ আমার হাতে যাকে ইচ্ছা শিফা দান করেন। আপনি কি ঝাঁড় ফুঁক করতে ইচ্ছুক?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সকল হামদ ও প্রশংসা আল্লাহরই জন্য, আমি তাঁরই হামদ বর্ণনা করছি, তাঁরই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি। আল্লাহ যাকে হিদায়াত দেন কেউ তাকে গোমরাহ করতে পারে না। আর যাকে তিনি পথভ্রষ্ট করেন, তাকে কেউ হিদায়াত করতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। তিনি এক তার কোন শরীক নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও তাঁরই রাসুল।

অতঃপর বক্তব্য এই যে, রাবী বলেন, তিনি (যিমাদ) বললেন, আপনার বাক্যগুলো পূনরাবৃত্তি করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার পূনরাবৃত্তি করলেন। রাবী বলেন, যিমাদ (রাঃ) বলেন, অনেক গণক, যাদুকর ও কবিদের কথাবার্তা শুনেছি কিন্তু আপনার এ বাক্যগুলোর মত আর শুনিনি। আপনার এ বাক্যগুলো সাগরের গভীরতায় পৌছে গিয়েছে।

রাবী বলেন যিমাদ (রাঃ) বললেন, হাত বাড়িয়ে দিন আমি আপনার কাছে ইসলামের বায়আত গ্রহণ করব। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বায়আত করে নিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বায়আত কি তোমার কাওমের পক্ষ হতেও? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমার কাওমের পক্ষ হতেও।

রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ছোট সেনাদল প্রেরণ করলেন। তারা যিমাদের (রাঃ) গোত্রের নিকট দিয়ে অতিক্রম করল। সেনাপ্রধাণ তার সৈন্যদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি যিমাদের কাওমের নিকট থেকে কোন জিনিস গ্রহন করেছ? তখন তাদের মধ্যে থেকে এক ব্যাক্তি বলল, আমি একটি পানির (উযূ (ওজু/অজু/অযু)র) পাত্র নিয়েছি। সেনানায়ক বললেন, তা ফিরিয়ে দাও। এ মানুষগুলো হল যিমাদ (রাঃ) এর গোত্রের লোক।

‏ إِنَّ الْحَمْدَ لِلَّهِ نَحْمَدُهُ وَنَسْتَعِينُهُ مَنْ يَهْدِهِ اللَّهُ فَلاَ مُضِلَّ لَهُ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلاَ هَادِيَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ أَمَّا بَعْدُ


উচ্চারণ : ইন্নাল হামদা লিল্লাহি নাহমাদুহু ওয়া নাসতায়িনুহু মাই ইয়াহদিহিল্লাহু ফালা মুদিল্লা লাহু ওয়া মাই ইয়ুদলিল ফালা হাদিয়া লাহু ওয়া আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু। আম্মাবাদ। অর্থ-নিশ্চয় প্রশংসা আল্লাহর। আমরা আল্লাহর প্রশংসা করছি। আমরা আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাচ্ছি। আল্লাহ যাকে হেদায়ত দেন ,তাকে কেউ গোমরাহ করতে পারবে না। এবং আল্লাহ যাকে গোমরাহ করেন, তাকে কেউ হেদায়ত দিতে পারবে না। আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ এক, তার কোনো শরীক নাই। এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাঃ শেষ নবী।

প্রশংসা الْحَمْدَ নিশ্চয় إِنَّ
আমরা আল্লাহর প্রশংসা করছি نَحْمَدُهُ আল্লাহর لِلَّهِ
যাকে مَنْ আমরা আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাচ্ছি وَنَسْتَعِينُهُ
আল্লাহ اللَّهُ হেদায়ত দেন يَهْدِهِ
গোমরাহ করতে مُضِلَّ না فَلاَ
যাকে وَمَنْ কেউ لَهُ
না فَلاَ গোমরাহ করতে يُضْلِلْ
তাকে لَهُ হেদায়ত দেন هَادِيَ

মুসলিম, মিশকাত, তিরমিজি, আবু দাউদ

নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসুলিহিল কারিম। আম্মা বা’দ।  

অর্থ- আমরা আল্লাহর প্রশংসা করছি।এবং রাসূলুল্লাহ সাঃ এর দুরুদ পাঠ করছি।অতঃপর–

আলহামদুল্লিাহি ওয়াহদাহু ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা মান লা নাবিয়্যা বাদাহু।  

অর্থ- সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর।তিনি এক ও অদ্বিতীয়। এবং সালাত ও সালাম ঐ নবীর উপর, যার পর আর কোনো নবী নেই।


Posted

in

by

Comments

One response to “মজলিসে বসার দোয়া , আদব ও নিয়ম কানুন”

Leave a Reply