তাওবার বিবরণ। শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণী

তাওবার বিবরণ। শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণী

তাওবার বিবরণ। শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণী >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

তাওবার বিবরণ। শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণী

৮০/১. অধ্যায়ঃ প্রত্যেক নাবীর মাকবুল দুআ আছে।
৮০/২. অধ্যায়ঃ শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণীঃ
৮০/৩. অধ্যায়ঃ দিনে ও রাতে নাবী (সাঃআঃ) -এর ইস্তিগফার।
৮০/৪. অধ্যায়ঃ তাওবাহ করা।

৮০/১. অধ্যায়ঃ প্রত্যেক নাবীর মাকবুল দুআ আছে।

৬৩০৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক নাবীর এমন একটি দুআ রয়েছে, যা (আল্লাহর নিকট) গৃহীত হয় আর নাবী সে দুআ করে থাকেন। আমার ইচ্ছা, আমি আমার সে দুআর অধিকার আখিরাতে আমার উম্মাতের শাফায়াতের জন্য মুলতবি রাখি।

[৭৪৭৪; মুসলিম ১/৮৬, হাদীস ১৯৮, ১৯৯, আহমাদ ৮৯৬৮] আঃপ্রঃ- ৫৮৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৩)

৬৩০৫. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন যে, প্রত্যেক নাবীই যা চাওয়ার চেয়ে নিয়েছেন। অথবা নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক নাবীকে যে দুআর অধিকার দেয়া হয়েছিল তিনি সে দুআ করে নিয়েছেন এবং তা কবূলও করা হয়েছে। কিন্তু আমি আমার দুআকে ক্বিয়ামতের দিনে আমার উম্মাতের শাফায়াতের জন্য রেখে দিয়েছি।

[মুসলিম ১/৮৬, হাদীস ২০০, আহমাদ ১৩৭০৭] (আঃপ্রঃ- ৫৮৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৩)

৮০/২. অধ্যায়ঃ শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণীঃ

“আমি বলেছি- তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, তিনি বড়ই ক্ষমাশীল। (তোমরা তা করলে) তিনি অজস্র ধারায় তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন এবং তোমাদের জন্য নদীনালা প্রবাহিত করবেন।” (সুরা নূহ ৭১/১০-১২)

“যারা কোন পাপ কাজ করে ফেললে কিংবা নিজেদের প্রতি যুল্‌ম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে…..।” (সুরা আল ইমরান ৩/১৩৫)

৬৩০৬. শাদ্দাদ ইবনু আউস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দুআ পড়া-

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّه“ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ

আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি। লা ইলাহা ইল্লা আনতা। খালাকতানি ওয়া আনা আবদুকা। ওয়া আনা আলা আহদিকা। ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাতা’তু। আউজু বিকা মিন শাররি মা-সানা’তু। আবুয়ু লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা। ওয়া আবুয়ু লাকা বি জাম্বি। ফাগফিরলী। ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনবা ইল্লা আনতা। “হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা কর।”

যে ব্যক্তি দিনে (সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইসতিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হবার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হইবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (প্রথম ভাগে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দুআ পড়ে নেবে আর সে ভোর হবার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হইবে।

(আঃপ্রঃ- ৫৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৪)

৮০/৩. অধ্যায়ঃ দিনে ও রাতে নাবী (সাঃআঃ) -এর ইস্তিগফার।

৬৩০৭. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহর শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে সত্তরবারেরও অধিক ইস্তিগফার ও তাওবাহ করে থাকি।

(আঃপ্রঃ- ৫৮৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৪)

৮০/৪. অধ্যায়ঃ তাওবাহ করা।

ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মহান আল্লাহর বাণীঃ “তোমরা সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করো।” (সুরা আত-তাহরীম ৬৬/৮)

৬৩০৮. আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদি.) দুটি হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। একটি নাবী (সাঃআঃ) থেকে আর অন্যটি তাহাঁর নিজ থেকে। তিনি বলেন, ঈমানদার ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে এত বিরাট মনে করে, যেন সে একটা পর্বতের নীচে উপবিষ্ট আছে, আর সে আশঙ্কা করছে যে, সম্ভবত পর্বতটা তার উপর ধ্বসে পড়বে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে মাছির মত মনে করে, যা তার নাকে বসে চলে যায়। এ কথাটি আবু শিহাব নিজ নাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলেন। তারপর [নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন] নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মনে কর কোন এক ব্যক্তি (সফরের) কোন এক স্থানে অবতরণ করলো, সেখানে প্রাণেরও ভয় ছিল। তার সঙ্গে তার সফরের বাহন ছিল। যার উপর তার খাদ্য ও পানীয় ছিল, সে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো এবং জেগে দেখলো তার বাহন চলে গেছে। তখন সে গরমে ও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লো। রাবী বলেনঃ আল্লাহ যা চাইলেন তা হলো। তখন সে বললো যে, আমি যে স্থানে ছিলাম সেখানেই ফিরে যাই। এরপর সে নিজ স্থানে ফিরে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। তারপর জেগে দেখলো যে, তার বাহনটি তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে ব্যক্তি যতটা খুশি হলো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাহাঁর বান্দার তাওবাহ করার কারণে এর চেয়েও অনেক অধিক খুশি হন। আবু আওয়ানাহ ও জারীর আমাশ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে এ রকমই বর্ণনা করিয়াছেন।

(আঃপ্রঃ- ৫৮৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৬)

৬৩০৯. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা বান্দার তাওবাহর কারণে সেই লোকটির চেয়েও অধিক খুশি হন, যে লোকটি মরুভূমিতে তাহাঁর উট হারিয়ে পরে তা পেয়ে যায়।

[মুসলিম ৪৯/১, হাদীস ২৭৪৭]আঃপ্রঃ- ৫৮৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৭)


Posted

in

by

Comments

One response to “তাওবার বিবরণ। শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহর বাণী”

Leave a Reply