ঘুমাবার সময়ের দোআ, তাসবীহ ও আশ্রয় প্রার্থনা

ঘুমাবার সময়ের দোআ, তাসবীহ ও আশ্রয় প্রার্থনা

ঘুমাবার সময়ের দোআ, তাসবীহ ও আশ্রয় প্রার্থনা  >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

১৭. অধ্যায়ঃ বিছানা গ্রহণ ও ঘুমানোর সময় যা বলিতে হয়
১৮. অধ্যায়ঃ কৃত আমাল ও না করা আমালের খারাবী থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা
১৯. অধ্যায়ঃ দিনের শুরুতে ও ঘুমানোর সময়ের তাসবীহ
২০. অধ্যায়ঃ মোরগ ডাকার সময় দুআ করা মুস্তাহাব

১৭. অধ্যায়ঃ বিছানা গ্রহণ ও ঘুমানোর সময় যা বলিতে হয়

৬৭৭৫. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[তিনি বলেন,] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তুমি তোমার বিছানা গ্রহণ করিবে তখন নামাজের ওযূর মতো তুমি ওযূ করে নিবে। এরপর তুমি তোমার ডান কাতে শুয়ে পড়বে। তারপর তুমি বলবে,

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْلَمْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ وَاجْعَلْهُنَّ مِنْ آخِرِ كَلاَمِكَ فَإِنْ مُتَّ مِنْ لَيْلَتِكَ مُتَّ وَأَنْتَ عَلَى الْفِطْرَةِ 

আল্ল-হুম্মা আস্লাম্তু ওয়াজ্হি ইলাইকা নাফসী ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াফাও ওয়ায্তু আম্রী ইলাইকা ওয়া আল জাতু যাহরি ইলাইকা রাগ্বাতান্ ওয়া রাহ্বাতান্ ইলাইকা লা- মাল্জাআ ওয়ালা- মান্জা- মিন্কা ইল্লা ইলাইকা আমানতু বি কিতাবিকাল্লাজি আনজালতা ওয়া বি নাবিয়্যিইয়াকাল্লাজি আরসালতা ওয়াজ আলহুন্না মিন আখিরি কালামিকা ফাইন মুত্তা মিন লায়লাতিকা মুত্তা ওয়া আন্তা আলাল ফিত্রাহ্, “হে আল্লাহ! আমি আমার চেহারাকে তোমার প্রতি সমর্পণ করলাম, আমার কাজ-কর্ম তোমার নিকট অর্পণ করলাম। আমি প্রতিদান পাওয়ার প্রত্যাশায় এবং শাস্তির ভয় পূর্বক তোমার নিকট আশ্রয় চাইলাম। তুমি ব্যতীত নেই কোন আশ্রয়স্থল ও নেই কোন মুক্তির স্থান। তুমি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছ তার উপর বিশ্বাস আনলাম, তুমি যে নবীকে পাঠিয়েছ তাহাঁর প্রতি বিশ্বাস আনলাম।”

আর এ বাক্যগুলোকে তোমার শেষ কথা বলে গণ্য করে নাও। এরপর যদি তুমি ঐ রাতে মারা যাও তাহলে তুমি ফিতরাতের উপরই মৃত্যুবরণ করলে।

বারা [রাদি.] বলেন, আমি এ দুআগুলো মনে রাখার জন্যে বার বার পড়তে গিয়ে আমি বললাম, [হে আল্লাহ] আমি আপনার রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যাকে আপনি প্রেরণ করিয়াছেন। অর্থাৎ- [তোমার নবীর স্থানে তোমার রসূল বললাম]। তিনি বলিলেন, তুমি বলো, আমি বিশ্বাস স্থাপন করেছি তোমার নবীর প্রতি যাকে তুমি প্রেরণ করেছ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৮৮]

৬৭৭৬. বারা ইবনি আযিব [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি মানসূর বর্ণিত হাদীসটি সম্পূর্ণ বর্ণনা করিয়াছেন। আর হুসায়ন-এর হাদীসে যদি সে সকালে উপনীত হয় তাহলে সে কল্যাণপ্রাপ্ত হইবে কথাটি বর্ধিত বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৮৯]

৬৭৭৭. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক লোককে আদেশ করিলেন রাত্রে সে শয্যা গ্রহণ করিবে তখন সে বলবে-

اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ وَبِرَسُولِكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ ‏.‏ فَإِنْ مَاتَ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ 

“আল্ল-হুম্মা আস্লাম্তু নাফসী ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হি ইলাইকা ওয়া আল জাতু যাহ্রী ইলাইকা ওয়াফাও ওয়ায্তু আম্রী ইলাইকা রাগ্বাতান্ ওয়া রাহ্বাতান্ ইলাইকা লা- মাল্জাআ ওয়ালা- মান্জা- মিন্কা ইল্লা- ফিত্রাহ্”। অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মাকে আপনার নিকট সমর্পণ করলাম। আমার মুখমণ্ডল আপনার দিকে ফিরালাম। আমার পিঠকে আপনার নিকট দিলাম পুরস্কারের আশায় ও শাস্তির ভয়ে; আপনি ভিন্ন নেই কোন আশ্রয়স্থল আর নেই কোন মুক্তির পথ। আমি বিশ্বাস স্থাপন করেছি আপনার কিতাবের উপর যা আপনি অবতীর্ণ করিয়াছেন এবং আপনার রসূলের প্রতি [বিশ্বাস স্থাপন করেছি] যাকে আপনি পাঠিয়েছেন।”

এরপর যদি সে লোক ঐ রাতে মারা যায় তাহলে ফিতরাতের উপরই মৃত্যুবরণ করেছে [বলে গণ্য হইবে]। ইবনি বাশ্শার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার বর্ণিত হাদীসে [আরবী] রাত্রিকালে কথাটি বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৮৯]

৬৭৭৮. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক লোককে বলিলেন, হে অমুক! যখন তুমি তোমার বিছানায় আশ্রয় গ্রহণ করিবে। এরপর আম্‌র ইবনি মুর্রাহ্ বর্ণিত হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিলেন। কিন্তু পার্থক্য এই যে, তিনি বলেছেন,

وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ

ওয়াবি নাবিয়্যিকাল্লাযী আর্সাল্তা” অর্থাৎ- “এবং আপনার সে নবীর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি, যাকে আপনি প্রেরণ করিয়াছেন।” যদি তুমি সে রাত্রে মৃত্যুবরণ করো তাহলে ফিতরাতের উপরই মৃত্যুবরণ করলে। আর যদি ভোরে উপনীত হও তবে তুমি কল্যাণপ্রাপ্ত হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯১]

৬৭৭৯. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক লোককে আদেশ করিলেন। তারপর তার অবিকল। কিন্তু তিনি “যদি তুমি ভোরে উপনীত হও তবে তুমি কল্যাণপ্রাপ্ত হইবে” কথাটি বর্ণনা করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩৮, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৬৭৮০. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] যখন শয্যাগ্রহণ করিতেন তখন তিনি বলিতেন,

 اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَحْيَا وَبِاسْمِكَ أَمُوتُ

“আল্ল-হুম্মা বিস্মিকা আহ্ইয়া- ওয়া বিস্মিকা আমূতু” অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আমি তোমার নামেই জীবিত আছি আর তোমার নামেই মৃত্যুবরণ করছি।” আর যখত তিনি ঘুম হইতে সজাগ হইতেন তখন বলিতেন,

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

“আল্হাম্দু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বাদা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিন্ নুশূর” অর্থাৎ- “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যই যিনি আমাদেরকে মৃত্যুবরণের পর জীবিত করছেন। আর তার দিকেই প্রত্যাবর্তন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯২]

৬৭৮১. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি এক লোককে আদেশ করিলেন, যখন শয্যাগ্রহণ করিবে তখন বলবে,

‏ اللَّهُمَّ خَلَقْتَ نَفْسِي وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْيَاهَا إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ

“আল্ল-হুম্মাখ লাক্তা নাফসী ওয়া আন্তা তা ওয়াফ্ফা-হা লাকা মামা-তুহা ওয়া মাহ্ইয়া-হা ইন্ আহ্ ইয়াইতাহা- ফাহ্ফাযহা- ওয়া ইন্ আমাত্তাহা- ফাগ্ফির লাহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল আ-ফিয়াহ্” অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আপনি আমার জীবন সৃষ্টি করিয়াছেন এবং আপনিই তাকে [আমার জীবনকে] মৃত্যুদান করে। আপনার কাছে [নাফ্সের] জীবন ও মরণ। যদি আপনি একে জীবিত রাখেন তাহলে আপনি এর হিফাযাত করুন। আর যদি আপনি এর মৃত্যু দান করেন তাহলে একে ক্ষমা করে দিন। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সুস্থতা প্রার্থনা করছি”।

তখন সে লোকটি তাকে জিজ্ঞেস করিলেন, আপনি তা উমর [রাদি.] হইতে শুনছেন? তিনি বলিলেন, উমর-এর চেয়ে যিনি উত্তম

[অর্থাৎ-] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে শুনেছি।ইবনি নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার বর্ণনায় বলেছেন, আবদুল্লাহ ইবনি হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এবং তিনি [আরবী] [আমাকে শুনেছি] শব্দটি বলেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯৩]

৬৭৮২. সুহায়ল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু সালিহ্ আমাদেরকে আদেশ করিতেন, যখন আমাদের কেউ ঘুমাতে যায় সে যেন ডান পার্শ্বে কাত হয়ে শয্যাগ্রহন করে। এরপর যেন বলেন,

اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ وَرَبَّ الأَرْضِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالإِنْجِيلِ وَالْفُرْقَانِ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَىْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ اللَّهُمَّ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَىْءٌ اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ

“আল্ল-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়া রব্বাল আর্যি ওয়া রব্বাল আর্শিল আযীম, রব্বানা- ওয়া রব্বা কুল্লি শাইয়িন্ ফা-লিকাল্ হাব্বি ওয়ান্ নাওয়া ওয়া মুন্যিলাত্ তাওর-তি ওয়াল ইন্জীলি ওয়াল ফুর্কা-নি আঊযুবিকা মিন্ শার্রি কুল্লি শাইয়িন্ আন্তা আ-খিযুন্ বিনা-সিয়াতিহি, আল্ল-হুম্মা আন্তাল্ আও্ওয়ালু ফালাইসা কাব্লাকা শাইউন্ ওয়া আন্তাল আ-খিরু ফালাইসা বাদাকা শাইউন্ ওয়া আন্তায্ যা-হিরু ফালাইসা ফাওকাকা শাইউন্ ওয়া আন্তাল বা-তিনু ফালাইসা দূনাকা শাইউন্ ইক্যি আন্নাদ্ দাইনা ওয়া আগ্নিনা- মিনাল ফাক্রি” অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আপনি আকাশমণ্ডলী, জামিন ও মহান আর্শের রব। আমাদের রব ও সব কিছুর পালনকর্তা। আপনি শস্য ও বীজের সৃষ্টিকর্তা, আপনি তাওরাত, ইন্জীল ও কুরআনের অবতীর্ণকারী। আমি আপনার নিকট সকল বিষয়ের খারাবী হইতে আশ্রয় চাই। আপনিই একমাত্র সব বিষয়ের পরিচর্যাকারী। হে আল্লাহ! আপনিই শুরু, আপনার আগে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই এবং আপনিই শেষ, আপনার পরে কোন কিছু নেই। আপনিই প্রকাশ, আপনার উর্ধ্বে কেউ নেই। আপনিই বাতিন, আপনার অগোচরে কিছু নেই। আমাদের ঋণকে আদায় করে দিন এবং অভাব থেকে আমাদেরকে সচ্ছলতা দিন।” তিনি [আবু সালিহ] নবী [সাঃআঃ] হইতে আবু হুরায়রা্ [রাদি.]-এর সূত্রেও এ হাদীসটি রিওয়ায়াত করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯৪]

৬৭৮৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের আদেশ করিতেন যে, যখন আমরা শয্যাগ্রহণ করি তখন যেন পড়ি। তারপর জারীর-এর হাদীসের হুবহু হাদীস। আর তিনি বলেছেন, সকল জীবের অকল্যাণ হইতে যাদের ধারণকারী আপনিই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯৫]

৬৭৮৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ফাতিমাহ্ [রাদি.] নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে একজন খাদিমের জন্য আবেদন করিলেন। তখন তিনি তাঁকে বললেনঃ তুমি বলো,

اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ

আল্লাহুম্মা রব্বাস সামাওয়াতিস সাবই, “সাত আসমানের রব হে আল্লাহ! …..”

[তারপর] সুহায়ল-এর পিতা হইতে বর্ণীত হাদীসের অবিকল উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯৬]

৬৭৮৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন তার শয্যাগ্রহণ করিতে বিছানায় আসে, সে যেন তার কাপড়েরর আঁচল দিয়ে বিছানাটি ঝাড়া দিয়ে নেয় এবং বিসমিল্লাহ পাঠ করে নেয়। কেননা সে জানে না যে, বিছানা ছাড়ার পর তার বিছানায় কি আছে। তারপর যখন সে শয্যাগ্রহণ করিতে ইচ্ছা করে তখন যেন ডান কাত হয়ে শয্যাগ্রহণ করে। এরপর সে যেন বলে,

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبِّي بِكَ وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أَرْفَعُهُ إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَاغْفِرْ لَهَا وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ

“সুবহা- নাকাল্লা-হুম্মা রব্বী বিকা ওয়া যাতু জামবী ওয়াবিকা আর্ ফাউহু ইন্ আম্সাক্তা নাফ্সী ফাগ্ফির্ লাহা- ওয়া ইন্ আর্সাল্তাহা- ফাহ্ফায্হা- বিমা- তাহ্ফাযু বিহি ইবা-দাকাস্ স-লিহীন” অর্থাৎ- “আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, হে আমার প্রতিপালক! আপনার নামেই আমি আমার পার্শ্ব [দেহ] রাখলাম, আপনার নামেই তা তুলব। আপনি যদি আমার প্রাণ আটকিয়ে রাখেন তাহলে আমাকে মাফ করে দিন। আর যদি আপনি তাকে উঠবার অবকাশ দেন তাহলে তাকে রক্ষা করুন, যেমন আপনি আপনার নেক বান্দাদের রক্ষা করে থাকেন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯৭]

৬৭৮৬. উবাইদুল্লাহ ইবনি উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, এরপর সে যেন বলে,

بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي فَإِنْ أَحْيَيْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا

“বিস্মিকা রব্বী ওয়াযাতু জামবী ফা ইন্ আহ্ ইয়াইতা নাফ্সী ফার্হামহা-” অর্থাৎ- “হে আমার রব! তোমার নামে আমার পার্শ্ব রাখলাম। যদি আপনি আমাকে জীবিত রাখেন তাহলে তার উপর দয়া করুন।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯৮]

৬৭৮৭. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন বিছানায় আশ্রয় গ্রহণ করিতেন তখন তিনি বলিতেন,

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَكَفَانَا وَآوَانَا فَكَمْ مِمَّنْ لاَ كَافِيَ لَهُ وَلاَ مُئْوِيَ

“আল্হাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ আমানা- ওয়া সাকা-না- ওয়া কাফা-না- ওয়া আ-ওয়া-না ফাকাম মিম্মান্ লা- কা-ফিয়া লাহু ওয়ালা- মুবিয়া” অর্থাৎ- “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদের জীবিকা দিয়েছেন, পানি পান করিয়েছেন, তিনি আমাদেরকে দায়িত্ব বহন করিয়াছেন, আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন। এমন অনেক আছে যাদের জন্য কোন দায়িত্ব বহনকারী নেই, আশ্রয় দাতাও নেই।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯৯]

১৮. অধ্যায়ঃ কৃত আমল ও না করা আমালের খারাবী থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা

৬৭৮৮ : ফারওয়াহ্ ইবনি নাওফাল আল আশজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাদি.]-কে প্রশ্ন করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আল্লাহর নিকট কি কি দুআ করিতেন? তিনি আয়িশা [রাদি.] জবাব দিলেন, তিনি [সাঃআঃ] বলিতেন,

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَمِلْتُ وَمِنْ شَرِّ مَا لَمْ أَعْمَلْ

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন্ শার্রি মা- আমিল্তু ওয়া মিন শার্রি মা- লাম আমল” ( “হেআল্লাহ! আপনার নিকট সেসব কর্মের খারাবী থেকে আশ্রয় চাই যা আমি করেছি এবং তাত্থেকেও যা আমি করিনি।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০০]

৬৭৮৯ : ফারওয়াহ্ ইবনি নাওফাল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাদি.]-কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দুআ সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। তিনি {আয়িশা [রাদি.]} বলিলেন, তিনি [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَمِلْتُ وَشَرِّ مَا لَمْ أَعْمَلْ

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন্ শার্রি মা- আমিলতু ওয়া মিন্ শার্রি মা- লাম আমল” (“হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট সেসব আমালের খারাবী হইতে আশ্রয় চাই যা আমি করেছি এবং যা আমি করিনি।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০১]

৬৭৯০ : মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না, ইবনি বাশ্শার ও মুহাম্মাদ ইবনি আমর ইবনি জাবালাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হুসায়ন [রাদি.] হইতে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন। তবে মুহাম্মাদ ইবনি জাফারের হাদীসে “ওয়া মিন্ শার্রি মা- লাম আমল” অর্থাৎ- “এবং আমি যা করিনি তার খারাবী হইতে” কথাটি উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০২]

৬৭৯১ : আয়িশাহ্ [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি তাহাঁর দুআয় বলিতেন,

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَمِلْتُ وَشَرِّ مَا لَمْ أَعْمَلْ 

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন্ শার্রি মা- আমিল্তু ওয়া মিন্ শার্রি মা-লাম আমল ( “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই সেসব কর্মের খারাবী হইতে, যা আমি করেছি এবং যা আমি করিনি তাথেকেও।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০৩]

৬৭৯২ : ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ وَبِكَ خَاصَمْتُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِعِزَّتِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَنْ تُضِلَّنِي أَنْتَ الْحَىُّ الَّذِي لاَ يَمُوتُ وَالْجِنُّ وَالإِنْسُ يَمُوتُونَ

“আল্ল-হুম্মা লাকা আস্লাম্তু ওয়াবিকা আ-মান্তু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কাল্তু ওয়া ইলাইকা আনাব্তু ওয়াবিকা খ-সামতু আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযু বিইয্যাতিকা লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্তা আন্ তুযিল্লানী আন্তাল হাইয়ুল্লাযী লা- ইয়ামূতু ওয়াল জিন্নু ওয়াল ইন্সু ইয়ামূতূন”, (“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছেই আত্মসমর্পণ করেছি, আপনার প্রতিই বিশ্বাস স্থাপন করেছি, আপনার উপরই ভরসা করেছি, আপনার দিকেই ফিরে যাচ্ছি এবং আপনার সহযোগিতায়ই শত্রুদের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছি। হে আল্লাহ! আপনার সম্মানের নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। আপনি ছাড়া কোন মুাবূদ নেই। আপনি আমাকে বিভ্রান্তির পথ থেকে বাঁচান। আপনি চিরঞ্জীব সত্তা, যার মৃত্যু নেই। আর জিন্ জাতি ও মানব জাতি মারা যাবে।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০৪]

৬৭৯৩ : আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[তিনি বলেন,] নবী [সাঃআঃ] যখন ভ্রমণে থাকতেন তখন সকালবেলা বলিতেন,

سَمَّعَ سَامِعٌ بِحَمْدِ اللَّهِ وَحُسْنِ بَلاَئِهِ عَلَيْنَا رَبَّنَا صَاحِبْنَا وَأَفْضِلْ عَلَيْنَا عَائِذًا بِاللَّهِ مِنَ النَّارِ

“সামিআ সা-মিউন্ বিহাম্দিল্লা-হি ওয়া হুস্নি বালা-য়িহি আলাইনা- রব্বানা- স-হিব্না- ওয়া আফ্যিল আলাইনা- আ-য়িযান্ বিল্লা-হি মিনান্না-র” (“শ্রবণকারী শ্রণ করুক এবং আল্লাহর দেয়া কল্যাণ ও নিআমাতের উপর আমাদের প্রশংসার সাক্ষী থাকুক। হে আমাদের রব! আপনি আমাদের সাথী হোন এবং আমাদের উপর অনুগ্রহ দান করুন। আমি মহান আল্লাহর নিকট জাহান্নাম হইতে আশ্রয় চাই।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০৫]

৬৭৯৪ : আবু মূসা আল আশআরী [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি এ দুআর মাধ্যমে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করিতেন,

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي خَطِيئَتِي وَجَهْلِي وَإِسْرَافِي فِي أَمْرِي وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي جِدِّي وَهَزْلِي وَخَطَئِي وَعَمْدِي وَكُلُّ ذَلِكَ عِنْدِي اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ وَأَنْتَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

“আল্ল-হুম্মাগ্ ফির্লী খতীআতী ওয়া জাহ্লী ওয়া ইসরা-ফী ফী আম্রী ওয়ামা- আন্তা আলামু বিহি মিন্নী, আল্ল-হুম্মাগ্ ফির্লী জিদ্দী ওয়া হায্লী ওয়া খতায়ী ওয়া আম্দী ওয়া কুল্লু যালিকা ইন্দী, আল্ল-হুম্মাগ্ ফির্লী মা- কদ্দামতু ওয়ামা- আখ্খার্তু ওয়ামা- আস্রার্তু ওয়ামা- আলান্তু ওয়ামা- আন্তা আলামু বিহি মিন্নী আন্তাল্ মুকাদ্দিমু ওয়া আন্তাল মুয়াখ্খিরু ওয়া আন্তা আলা-কুল্লি শাইয়িন্ কদীর” (“হে আল্লাহ! আপনি আমার পাপ, আমার অজ্ঞতা ও আমার কাজের সীমালঙ্ঘনকে মার্জনা করে দিন। আপনি এ বিষয়ে আমার চেয়ে সর্বাধিক জ্ঞাত। হে আল্লাহ! আমাকে মাফ করে দিন আমার আন্তরিকতাপূর্ণ ও রসিকতামূলক অপরাধ এবং আমার ইচ্ছাকৃত ও ভুলক্রমে সব রকমের অপরাধগুলো [যা আমি করেছি]। হে আল্লাহ! মাফ করে দিন যা আমি আগে করে ফেলেছি এবং যা আমি পরে করব, যা আমি গোপনে করেছি এবং যা প্রকাশ্যে করেছি। আর আপনি আমার চাইতে আমার সম্পর্কে সার্বাধিক জ্ঞাত। আপনিই একমাত্র অগ্রবর্তী এবং আপনিই একমাত্র পরবর্তী। আপনি সব বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০৬]

৬৭৯৫ “শুবাহ্ [রাদি.]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০৭]

৬৭৯৬ : আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

 اللَّهُمَّ أَصْلِحْ لِي دِينِيَ الَّذِي هُوَ عِصْمَةُ أَمْرِي وَأَصْلِحْ لِي دُنْيَاىَ الَّتِي فِيهَا مَعَاشِي وَأَصْلِحْ لِي آخِرَتِي الَّتِي فِيهَا مَعَادِي وَاجْعَلِ الْحَيَاةَ زِيَادَةً لِي فِي كُلِّ خَيْرٍ وَاجْعَلِ الْمَوْتَ رَاحَةً لِي مِنْ كُلِّ شَرٍّ

“আল্ল-হুম্মা আস্লিহ্লী দীনিয়াল্লিযী হুওয়া ইস্মাতু আমরী ওয়া আস্লিহ্লী দুন্ইয়াল্লাতী ফীহা মাআ-শী ওয়া আস্লিহ্লী আ-খিরতিল্লাতী ফীহা মাআ-দী ওয়াজ আলিল হায়া-তা যিয়া-দাতান্ লী ফী কুল্লি খইরিন্ ওয়াজ আলিল মাওতা রা-হাতান্ মিন্ কুল্লি শার্রিন্” (অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আপনি আমার দ্বীন পরিশুদ্ধ করে দিন, যে দীনই আমার নিরাপত্তা। আপনি শুদ্ধ করে দিন আমার দুনিয়াকে, যেথায় আমার জীবনোপকরণ রয়েছে। আপনি সংশোধন করে দিন আমার আখিরাতকে, যেখানে আমাকে প্রত্যাবর্তন করিতে হইবে। আপনি আমার আয়ূষ্কালকে বৃদ্ধি করে দিন প্রত্যেকটি ভালো কর্মের জন্য এবং আপনি আমার মরণকে বিশ্রামাগার বানিয়ে দিন সব প্রকার খারাবী হইতে।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০৮]

৬৭৯৭ : আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি এ বলে দুআ করিতেন,

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল্ হুদা ওয়াত্ তুকা ওয়াল আফা-ফা ওয়াল গিনা” (অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট পথনির্দেশ, আল্লাহভীতি, চারিত্রিক উৎকর্ষতা ও সচ্ছলতার জন্য দুআ করছি।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০৯]

৬৭৯৮ : ইবনি ইসহাক্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে হবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু পার্থক্য এটুকু যে, ইবনিল মুসান্না তার বর্ণিত হাদীসে [আরবী]-এর স্থলে [হারাম থেকে পবিত্রতা] শব্দ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১০]

৬৭৯৯ : যায়দ ইবনি আরকাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি তোমাদের নিকট তেমনই বলব যেমনটি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেন। তিনি [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

‏ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَعَذَابِ الْقَبْرِ اللَّهُمَّ آتِ نَفْسِي تَقْوَاهَا وَزَكِّهَا أَنْتَ خَيْرُ مَنْ زَكَّاهَا أَنْتَ وَلِيُّهَا وَمَوْلاَهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عِلْمٍ لاَ يَنْفَعُ وَمِنْ قَلْبٍ لاَ يَخْشَعُ وَمِنْ نَفْسٍ لاَ تَشْبَعُ وَمِنْ دَعْوَةٍ لاَ يُسْتَجَابُ لَهَا

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল আজ্‌যি ওয়াল কাসালি ওয়াল জুব্‌নি ওয়াল বুখ্‌লি ওয়াল হারামি ওয়া আযা-বিল কব্‌রি, আল্ল-হুম্মা আ-তি নাফসী তাক্‌ওয়া-হা ওয়াযাক্কিহা-আন্‌তা খইরু মান্‌ যাক্‌কা-হা আন্‌তা ওয়ালী ইউহা- ওয়া মাওলা-হা-, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন ইল্‌মিন্‌ লা- ইয়ান্‌ফাউ ওয়ামিন কালবিন্‌ লা- ইয়াখ্‌শাউ ওয়ামিন নাফ্‌সিন লা- তাশ্‌বাউ ওয়ামিন দাওয়াতিন লা- ইউসতাজা-বু লাহা-” (অর্থাৎ- “হেআল্লাহ! আমি আপনার নিকট পানাহ চাই অপরাগতা, অলসতা, ভীরুতা, বখিলতা, বার্ধক্যতা এবং কবরের শাস্তি থেকে। হেআল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে পরহেযগারিতা দান করুন এবং একে সংশোধন করে দিন। আপনি একমাত্র সর্বোত্তম সংশোধনকারী এবং আপনিই একমাত্র তার মালিক ও আশ্রয়স্থল। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট পানাহ চাই এমন ইল্‌ম হইতে যা কোন উপকারে আসবে না ও এমন অন্তঃকরণ থেকে যা আল্লাহর ভয়ে ভীত হয় না; এমন আত্মা থেকে যা কক্ষনও তৃপ্ত হয় না। আর এমন দুআ থেকে যা কবূল হয় না।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১১]

৬৮০০ : আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন সন্ধ্যা হত তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

 أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ

“আম্‌সাইনা- ওয়া আম্‌সাল্‌ মুল্‌কু লিল্লা-হি ওয়াল হাম্‌দু লিল্লা-হি লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্‌দাহু লা- শারীকা লাহু, (অর্থাৎ- “আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি এবং আল্লাহর রাজ্যও, প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য, তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক সত্তা, তাহাঁর কোন শারীক নেই।”)

হাসান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমাকে যুবায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হাদীস বর্ণনা করেন যে, তিনি ইব্‌রাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ দুআটি মুখস্ত করেছেনঃ

 لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّارِ وَعَذَابٍ فِي الْقَبْرِ

“লাহুল মুল্‌কু ওয়ালাহুল হাম্‌দু ওয়াহুয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, আল্ল-হুম্মা আসাআলুকা খইরা হা-যিহিল লাইলাতি ওয়া আঊযুবিকা মিন্‌ শাররি হা-যিহিল লাইলাতি ওয়া শার্‌রি মা- বাদাহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়া সূয়িল কিবারি, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিন আযা-বিন ফিন্না-রি ওয়া আযা-বিন ফিল কবরি।” (অর্থাৎ, “রাজত্ব তাহাঁর মালিকানাধীন, সকল প্রশংসা তাহাঁরই, তিনিই সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এ রাতের কল্যাণ প্রত্যাশা করি এবং আশ্রয় চাই এ রাতের খারাবী হইতে এবং এর পরবর্তী রাতের অনিষ্ট থেকেও। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা থেকে ও অহংকারের খারাবী থেকে। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই জাহান্নামের শাস্তি থেকে এবং কবরের শাস্তি থেকে।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১২]

৬৮০১ : আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন সন্ধ্যা হয়ে যেত সে সময় নবী [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

“আম্‌সাইনা- ওয়া আম্‌সাল্‌ মুল্‌কু লিল্লা-হি ওয়াল হাম্‌দু লিল্লা-হি লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু লা-শারীকা লাহু”, (অর্থাৎ- “আমরা সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি এবং আল্লাহর রাজ্যও সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছে। আল্লাহর জন্যই সকল কৃতজ্ঞতা। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাহাঁর কোন অংশীদার নেই।”)

রাবী বলেন যে, তিনি তাহাঁর দুআর মধ্যে বলেছেন,

 لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ رَبِّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّارِ وَعَذَابٍ فِي الْقَبْرِ

“লাহুল মুল্‌কু ওয়ালাহুল হাম্‌দু ওয়াহুয়া আলা-কুল্লি শাইয়িন্‌ কদীর, রব্বি আস্‌আলুকা খইরা মা- ফী হা-যিহিল্‌ লাইলাতি ওয়া খাইরা মা- বাদাহা- ওয়া আঊযুবিকা মিন্‌ শার্‌রি মা- ফী হাযিহিল লাইলাতি ওয়া শার্‌রি মা- বাদাহা- রব্বি আঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়া সূয়িল কিবারি রব্বি আঊযুবিকা মিন্‌ আযা-বিন ফিন্‌না-রি ওয়া আযা-বিন ফিল কব্‌রি”, (অর্থাৎ- “রাজত্ব তাহাঁরই, প্রশংসা তাহাঁরই এবং তিনিই সব বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। হে আমার রব! আমি আপনার নিকট কল্যাণ চাই এ রাতের এবং পরবর্তী রাতেরও। আর আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই এ রাত্রের খারাবী হইতে এবং এর পরবর্তী রাতের খারাবী হইতেও। হে আমার প্রতিপালক। আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই অলসতা, অহঙ্কারের অশুভ পরিণতি থেকে। হে আমার প্রতিপালক। আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই জাহান্নাম ও কবরের শাস্তি হইতে।” আর যখন ভোর হতো, তিনি বলিতেনঃ “আস্‌বাহ্‌না- ওয়া আস্‌বাহাল মুল্‌কু লিল্লা-হি”, অর্থাৎ “আমরা ভোরে পৌঁছেছি এবং আল্লাহর রাজ্যও ভোরে পৌঁছেছে।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১৩]

৬৮০২ : আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন সন্ধ্যা হতো তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

‏ أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرِ مَا فِيهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَسُوءِ الْكِبَرِ وَفِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْقَبْرِ

“আম্‌সাইনা- ওয়া আম্‌সাল্‌ মুল্‌কু লিল্লা-হি ওয়াল হাম্‌দু লিল্লা-হি লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্‌দাহু লা- শারীকা লাহু, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্‌আলুকা মিন্‌ খইরি হাযিহিল লাইলাতি ওয়া খইরি মা- ফীহা- ওয়া আঊযুবিকা মিন্‌ শার্‌রিহা- ওয়া শার্‌রি মা- ফীহা-, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়া সূয়িল কিবারি ওয়া ফিত্‌নাতিদ্‌ দুন্‌ইয়া ওয়া আযা-বিন ফিল কব্‌রি”, (অর্থাৎ- “আমরা সন্ধ্যায় পৌঁছেছি এবং পৃথিবী আল্লাহর জন্য সন্ধ্যায় পৌঁছেছে। সকল প্রকার প্রশংসা আল্লাহরই। আল্লাহ ছাড়া কোন মাবূদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাহাঁর কোন অংশীদার নেই। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট কল্যাণ চাই এ রাত্রের ও তার পরবর্তী রাত্রের এবং আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই এ রাত্র ও এর পরবর্তী রাত্রের খারাবী হইতে। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই। অলসতা, বার্ধক্য, অহঙ্কারের খারাবী দুনিয়ার ফিতনাহ ও কবরের শাস্তি হইতে।”)

হাসান ইবনি উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, যুবায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর সানাদে মারফূ সূত্রে একটু বর্ধিত বলেছেন। তিনি বলেন,

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ

“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্‌দাহু লা- শারীকা লাহু লাহুল মুল্‌কু ওয়ালাহুল হাম্‌দু ওয়াহুয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর”, (অর্থাৎ “আল্লাহ ভিন্ন অন্য কোন মাবূদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাহাঁর কোন অংশীদার নেই। রাজত্ব তাহাঁরই, প্রশংসা তাহাঁরই এবং তিনিই সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১৪]

৬৮০৩ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ

 لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ أَعَزَّ جُنْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَغَلَبَ الأَحْزَابَ وَحْدَهُ فَلاَ شَىْءَ بَعْدَهُ

“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্‌দাহু আ আয্‌যা জুন্‌দাহু ওয়া নাসারা আব্‌দাহু ওয়া গলাবাল আহ্‌যা-বা ওয়াহ্‌দাহু ফালা- শাইয়া বাদাহু”, (অর্থাৎ- “আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবূদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তিনি তাহাঁর সৈনিকদের সম্মান দিয়েছেন এবং তাহাঁর বান্দাকে সহযোগিতা করিয়াছেন। আর তিনি একাই অসংখ্য কাফির বাহিনীর উপর বিজয়ী হয়েছেন। এরপরে আর কোন কিছু নেই।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১৫]

৬৮০৪ : আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেনঃ তুমি বলো-

قُلِ اللَّهُمَّ اهْدِنِي وَسَدِّدْنِي وَاذْكُرْ بِالْهُدَى هِدَايَتَكَ الطَّرِيقَ وَالسَّدَادِ سَدَادَ السَّهْمِ ‏

“আল্ল-হুম্মাহ্‌দিনী ওয়া সাদ্‌দিদ্‌নী ওয়ায্‌কুর বিল্‌হুদা হিদা-ইয়াতাকাত্‌ তারীকা ওয়াস্‌ সাদা-দি সাদা-দাস্‌ সাহ্‌ম”, (অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আপনি আমাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করুন, আমাকে সোজা পথে পরিচালিত করুন।” তিনি আমাকে আরও বলেছেন, “আপনার হিদায়াতকে সঠিক পথের মাধ্যমে এবং তীর সোজা করাকে সরলতার মাধ্যমে স্মরণ করুন।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১৬]

৬৮০৫ : আসিম ইবনি কুলায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে এ রকম বলিতে বলেছেনঃ

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالسَّدَادَ

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল হুদা ওয়াস্ সাদা-দ”, (অর্থাৎ- “হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট হিদায়াত ও সরলপথ প্রার্থনা করছি।” অতঃপর তিনি তার মতই হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন।)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১৭]

১৯. অধ্যায়ঃ দিনের শুরুতে ও ঘুমানোর সময়ের তাসবীহ

৬৮০৬ : জুওয়াইরিয়াহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভোরবেলা ফাজ্‌রের নামাজ আদায় করে তাহাঁর নিকট থেকে বের হলেন। ঐ সময় তিনি নামাজের স্থানে বসাছিলেন। এরপর তিনি চাশ্‌তের পরে ফিরে আসলেন। এমতাবস্থায়ও তিনি উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি বলিলেন, আমি তোমাকে যে অবস্থায় ছেড়ে গিয়েছিলাম তুমি সে অবস্থায়ই আছ। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। নবী [সাঃআঃ] বলেন, আমি তোমার নিকট হইতে রওনার পর চারটি কালিমাহ্‌ তিনবার পড়েছি। আজকে তুমি এ পর্যন্ত যা বলেছ তার সাথে ওযন করা হলে এ কালিমাহ্‌ চারটির ওযনই ভারী হইবে। কালিমাগুলো এই-

سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَرِضَا نَفْسِهِ وَزِنَةَ عَرْشِهِ وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ ‏

“সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবি হাম্‌দিহি আদাদা খল্‌কিহি ওয়া রিযা- নাফ্‌সিহি ওয়াযিনাতা আর্‌শিহি ওয়ামি দা-দা কালিমা-তিহি”, (অর্থাৎ- “আমি আল্লাহর প্রশংসার সাথে তাহাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করছি তাহাঁর মাখলুকের সংখ্যার পরিমাণ, তাহাঁর সন্তুষ্টির পরিমাণ, তাহাঁর আর্‌শের ওযন পরিমাণ ও তাহাঁর কালিমাসমূহের সংখ্যার পরিমাণ।”)

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১৮]

৬৮০৭ : জুওয়াইরিয়াহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ফাজ্‌রের নামাজের সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নিকট আসলেন অথবা ফাজ্‌রের নামাজের পরে সকালে তিনি [সাঃআঃ] আসলেন। তারপর রাবী তার হুবহু হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু তাতে পার্থক্য শুধু এই যে, তিনি বলেছেন,

سُبْحَانَ اللَّهِ عَدَدَ خَلْقِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ رِضَا نَفْسِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ زِنَةَ عَرْشِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ

“সুবহা-নাল্ল-হি আদাদা খল্‌কিহি সুবহা-নাল্ল-হি রিযা- নাফ্‌সিহি সুবহা-নাল্ল-হি যিনাতা আরশিহি সুবহা-নাল্ল-হি মিদা-দা কালিমা-তিহি”, (অর্থাৎ- “আমি আল্লাহর প্রশংসার সাথে পবিত্রতা বর্ণনা করছি তাহাঁর অসংখ্য মাখলুকের পরিমাণ, তার সন্তুষ্টির সমান, তাহাঁর আর্‌শের ওযন পরিমাণ এবং তাহাঁর কালিমাসমূহের সংখ্যার সমান।” )

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১৯]

৬৮০৮ :আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

ফাতিমাহ্‌ [রাদি.] চাক্কি ঘুরাতে গিয়ে তাহাঁর হাতে ব্যাথা অনুভব করিলেন। তখন নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে বন্দি এসেছিল। তাই তিনি বন্দি হইতে একজন খাদিমের জন্য নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলেন, কিন্তু নবী [সাঃআঃ]-কে পেলেন না। তিনি আয়িশা [রাদি.]-এর সাথে দেখা করে তাঁকে ব্যাপারটি অবহিত করিলেন। অতঃপর নবী [সাঃআঃ] আগমন করলে তখন আয়িশা [রাদি.] তাহাঁর নিকট ফাতিমাহ্‌ [রাদি.]-এর তাহাঁর নিকট আগমনের বিষয়টি অবহিত করিলেন। অতঃপর নবী [সাঃআঃ] আমাদের নিকট আসলেন। এমন সময় আমরা আমাদের শয্যাগ্রহণ করেছিলাম। অতঃপর আমরা উঠতে লাগলাম। নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, “তোমরা তোমাদের যথাস্থানে থাকো। অতঃপর তিনি আমাদের দুজনের মাঝে বসলেন। এমনকি আমি তাহাঁর পা মুবারকের শীতলতা আমার সীনার মধ্যে অনুভব করলাম। অতঃপর তিনি বলিলেন, আমি কি তোমাদের এমন বিষয় শিখিয়ে দিব না, যা তোমরা প্রার্থনা করছিলে তার চেয়ে উত্তম? যে সময় তোমরা তোমাদের শয্যাগ্রহণ করিবে তখন

৩৪ বার আল্ল-হু আকবার, ৩৩ বার সুবহা-নাল্ল-হ এবং ৩৩ বার আল হাম্‌দু লিল্লা-হ পড়ে নিবে।

এটি তোমাদের জন্য খাদিমের চেয়ে উত্তম।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২০]

৬৮০৯ : আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্, উবাইদুল্লাহ ইবনি মুআয ও ইবনিল মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

এ সূত্রে হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু মুআয-এর হাদীসে مِنَ اللَّيْلِ [রাতে] শব্দটি রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২১]

৬৮১০ : আলী [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] থেকে ইবনি আবু লাইলা সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

হাকাম-এর হাদীসের অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। হাকাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার বর্ণিত হাদীসে এটুকু বর্ধিত বলেছেন যে, আলী [রাদি.] বলেছেন নবী [সাঃআঃ] হইতে শ্রবণ করার পর থেকে আমি কক্ষনো তা ছাড়িনি। তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, সিফ্ফীনের রাতেও কি? তিনি বলিলেন, সিফ্ফীনের রাতে নয়।

ইবনি আবু লাইলা-এর সানাদে আতা বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেছেন, আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “সিফ্ফীনের রাত্রও কি ছেড়ে দেননি?”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২২]

৬৮১১ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার ফাতিমাহ্‌ [রাদি.] একজন খাদিমের জন্য নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলেন এবং অনেক কর্মের অভিযোগ করিলেন। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, “আমার নিকটে তো কোন খাদিম নেই। তিনি বলিলেন, তবে আমি কি তোমাকে এমন বিষয়ের নির্দেশনা করবো না, যা তোমার খাদিমের তুলনায় অতি উত্তম? যখন তুমি শয্যাগ্রহণ করিবে তখন

৩৩ বার সুবহা-নাল্ল-হ, ৩৩ বার আল হাম্‌দু লিল্লা-হ এবং ৩৪ বার আল্ল-হু আকবার পড়ে নিবে।”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২৩]

৬৮১২ : সুহায়ল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২৪]

২০. অধ্যায়ঃ মোরগ ডাকার সময় দুআ করা মুস্তাহাব

৬৮১৩ : আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে সময় তোমরা মোরগের ডাক শুনতে পাবে তখন আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ প্রার্থনা করিবে। কেননা সে ফেরেশ্‌তা দেখিতে পায়। আর যে সময় তোমরা গাধার বিকট ডাক শুনতে পাবে তখন আল্লাহর নিকট শাইতান থেকে আশ্রয় চাইবে। কেননা সে শাইতান দেখিতে পায়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২৫]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply