গোলাম মুক্ত করা এবং ক্রীতদাসদের সাথে ব্যবহার

গোলাম মুক্ত করা এবং ক্রীতদাসদের সাথে ব্যবহার

অংশীদারিত্ব আছে এমন গোলাম মুক্ত করা >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৮. অধ্যায়ঃ ক্রীতদাসদের সাথে আচার-আচরণ এবং দাসকে চপেটাঘাতের কাফ্ফারা
৯. অধ্যায়ঃ নিজ দাস-দাসীর প্রতি যে যিনার অপবাদ প্রদান করে তার ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী
১০. অধ্যায়ঃ নিজে যা খাবে ও পরিধান করিবে দাস-দাসীকেও তা খেতে পরতে দেয়া এবং তাদের সাধ্যের বাইরে কাজের ভার না দেয়া
১১. অধ্যায়ঃ কল্যাণকামিতার সাথে মনিবের সেবা ও ভালভাবে আল্লাহর ইবাদাতকারী দাস-দাসীর পুরস্কার
১২. অধ্যায়ঃ অংশীদারিত্ব আছে এমন গোলাম মুক্ত করা
১৩. অধ্যায়ঃ মুদাব্বারকে {২৫} বিক্রি করা বৈধ

৮. অধ্যায়ঃ ক্রীতদাসদের সাথে আচার-আচরণ এবং দাসকে চপেটাঘাতের কাফ্ফারা

৪১৯০. আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনি উমর [রাদি.]- এর কাছে আগমন করলাম, ইতোমধ্যে একজন ক্রীতদাসকে মুক্ত করিয়াছেন। বর্ণনাকারী বলেন যে, তিনি মাটি থেকে একটি কাঠি অথবা অন্য কোন বস্তু নিয়ে বলিলেন, তাকে আযাদ করার মধ্যে তার সমতুল্য পুণ্যও নেই। কিন্তু আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনেছি, যে ব্যক্তি নিজ ক্রীতদাসকে চপেটাঘাত করিল অথবা প্রহার করিল, এর কাফ্ফারা হল তাকে মুক্ত করে দেয়া।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫১]

৪১৯১. যযান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

, ইবনি উমর [রাদি.] তাহাঁর এক গোলামকে ডাকলেন। এরপর তার পিঠে [প্রহারের] দাগ দেখিতে পেলেন। তিনি তাকে বলিলেন, তুমি কি এতে যন্ত্রণা অনুভব করছ? সে বলিল, না। তখন তিনি বলিলেন, তুমি মুক্ত। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি মাটি থেক কোন বস্তু নিয়ে বলিলেন, তাকে আযাদ করার মধ্যে এতটুকু পুণ্যও মেলেনি। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আপন গোলামকে বিনা অপরাধে প্রহার করিল কিংবা চপেটাঘাত করিল, এর কাফ্ফারাহ্ হল তাকে মুক্ত করে দেয়া।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫২]

৪১৯২. আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্, মুহাম্মাদ ইবনি মুসাঃন্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উভয়েই সুফ্ইয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি মাহদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর হাদীসের উল্লেকপূর্বক বলেন যে, এতে [আরবী] [বিনা অপরাধে] কথাটি উল্লেখ আছে। আর ওয়াকী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে [আরবী] [যে ব্যক্তি আপন গোলামকে চপেটাঘাত করিল] বাক্যটির উল্লেখ আছে। তিনি তাহাঁর হাদীসে [আরবী] [অপরাধের শাস্তি] কথাটি উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫৩]

৪১৯৩. মুআবিয়াহ্ ইবনি সুওয়াইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন যে, একদা আমি আমাদের এক গোলামকে চপেটাঘাত করলাম। এরপর আমি পালিয়ে গেলাম এবং যুহরের সালাতের আগে আগে ফিরে এলাম। আমি আমার পিতার পিছনে নামাজ আদায় করলাম। তিনি তাকে এবং আমাকে ডাকলেন। গোলামকে বলিলেন, তুমি তার কাছ থেকে বদলা নাও। অবশেষে সে ক্ষমা করে দিল। এরপর তিনি বলিলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর সময়কালে বানী মুকার্রিন গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। আমাদের মাত্র একটি গোলাম ছিল। একদা আমাদের কোন একজন তাকে চপেটাঘাত করিল এবং এ সংবাদ নবী [সাঃআঃ] পর্যন্ত পৌঁছল। তখন তিনি বলিলেন, তাকে আযাদ করে দাও। তারা বলিল, সে ব্যতীত তাদের কোন খাদেম নেই। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা তার কাছ হইতে সেবা গ্রহণ করিতে থাক, যখনই তার প্রয়োজন মিটে যাবে তখনই তোমরা তাকে মুক্ত করে দিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫৪]

৪১৯৪. হিলাল ইবনি ইয়াসাফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক বৃদ্ধ তার চাকরকে তড়িঘড়ি করিতে গিয়ে চপেটাঘাত করিল। সুওয়াইদ ইবনি মুকার্রিন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাকে বলিলেন, আপনি তার মূল্যবান চেহারা ছাড়া আর কোন স্থান পেলেন না। আপনি আমাকে বানী মুকার্রিন গোত্রের সাঃত সদস্য বিশিষ্ট পরিবারে সপ্তম লোক হিসেবে দেখিতে পাচ্ছেন। আমাদের একজন গোলাম ব্যতীত অন্য কোন গোলাম ছিল না। একদা আমাদের মধ্যকার সর্ব কনিষ্ঠ ব্যক্তি তাকে চপেটাঘাত করিল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন তাকে আযাদ করে দিতে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫৫]

৪১৯৫. হিলাল ইবনি ইয়াসাফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা নুমান ইবনি মুকার্রিন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর ভাই সুওয়াইদ ইবনি মুকার্রিন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বাড়িতে কাপড় বিক্রি করছিলাম। এমন সময় একজন দাসী বেরিয়ে এসে আমাদের একজন লোকের সাথে তর্ক করিল। তখন সে তাকে একটি চপেটাঘাত মারল। এতে সুওয়াইদ [রাদি.] রাগান্বিত হলেন। তখন তিনি ইবনি ইদ্রীস বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫৬]

৪১৯৬. সুওয়াইদ ইবনি মুকার্রিন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তাহাঁর একজন দাসী ছিল। এক ব্যক্তি একদা তাকে চপেটাঘাত করিল। তখন সুওয়াইদ [রাদি.] তাকে বলিলেন, তুমি কি জাননা যে, চেহারায় চপেটাঘাত করা নিষিদ্ধ? নিশ্চয়ই তুমি আমাকে দেখিতে পাচ্ছ যে, আমরা সাঃত ভাই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর যামানায় আমাদের একজনের গোলাম ব্যতীত আর কারো গোলাম ছিল না। একদা আমাদের মধ্যকার জনৈক ব্যক্তি তাকে চপেটাঘাত করিল। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে নির্দেশ দিলেন তাকে মুক্ত করে দেয়ার জন্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫৭]

৪১৯৭. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবনি মুনকাদার [রাদি.] এরপর আমাকে জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার নাম কী? অতঃপর তিনি আবদুস সামাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫৮]

৪১৯৮. আবু মাসঊদ বদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি আমার ক্রীতদাসকে চাবুক দিয়ে প্রহার করছিলাম। হঠাৎ আমার পিছনে থেকে একটি শব্দ শোনলাম, হে আবু মাসঊদ! জেনে রেখো! রাগের কারণে আমি শব্দটি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম না। বর্ণনাকারী বলেন, যখন তিনি আমার কাছাকাছি এলেন তখন দেখিতে পেলাম, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]। এবং তিনি বলছেনঃ হে আবু মাসঊদ! তুমি জেনে রেখো, হে আবু মাসঊদ! তুমি জেনে রেখো! বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমি চাবুকটি আমার হাত থেকে ফেলে দিলাম। এরপর তিনি বলিলেন, হে আবু মাসঊদ! তুমি জেনে রেখো যে, এ গোলামের উপর তোমার ক্ষমতার চেয়ে তোমার উপর আল্লাহ তাআলা অধিক ক্ষমতাবান। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, এরপর কখনও কোন কৃতদাসকে আমি প্রহার করবো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫৯]

৪১৯৯. ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম যুহায়র ইবনি হারব, মুহাম্মাদ ইবনি রাফি, আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সকলেই আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সুত্রে হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল ওয়াহিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু জারীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণিত হাদীস [আরবী] [তাহাঁর ভয়ে আমার হাত থেকে চাবুকটি পড়ে গেল] এ বাক্যটি অতিরিক্ত সংযোজিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬০]

৪২০০. আবু মাসঊদ আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার এক দাসকে প্রহার করছিলাম। হঠাৎ আমার পিছন দিক থেকে একটি আওয়াজ শোনলাম। হে আবু মাসঊদ! জেনে রেখো, তুমি তার উপর যেরূপ শক্তিমান, আল্লাহ তাআলা তোমার ওপর এর চেয়ে অধিক শক্তিমান। হঠাৎ পিছন দিকে তাকিয়ে দেখি তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]! তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]! সে আল্লাহর ওয়াস্তে মুক্ত। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সাবধান! যদি তুমি তা না করিতে তাহলে অবশ্যই দোযখ তোমাকে গ্রাস করতো। কিংবা [রাবীর সন্দেহ] দোযখ তোমাকে অবশ্যই স্পর্শ করতো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬১]

৪২০১. আবু মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি একদা তার গোলামকে মারছিলেন। তখন সে বলিতে লাগলো- আমি আল্লাহর কাচে পরিত্রাণ চাই। বর্ণনাকারী বলেন, তখনও তিনি তাকে প্রহার করছিলেন। এরপর সে বলিল, আমি আল্লাহর রসূলের কাছে সাহায্য চাই। তখন তিনি তাঁকে ছেড়ে দিলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আল্লাহর শপথ! তুমি তার উপর যতটুকু শক্তিমান, আল্লাহ তাআলা তোমার উপর তার চেয়ে অধিক শক্তিমান। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি তাকে আযাদ করে দিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬২]

৪২০২. বিশর ইবনি খালিদ উক্ত হাদীসটি শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ একই সূত্রে বর্ণনা করেন। কিন্তু তিনি [আরবী] [আমি আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ চাই, আমি আল্লাহর রাসূলের কাছে সাহায্য চাই] এ বাক্যটির উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬৩]

১০. অধ্যায়ঃ নিজে যা খাবে ও পরিধান করিবে দাস-দাসী কেও তা খেতে পরতে দেয়া এবং তাদের সাধ্যের বাইরে কাজের ভার না দেয়া

৪২০৫. মারূর ইবনি সুওয়াইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন যে, আমরা রাবাযাহ নামক স্থানে আবু যার [রাদি.]- এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন তাহাঁর গায়ে একটি চাদর ছিল এবং তাহাঁর গোলামের গায়েও অনুরূপ একটি চাদর ছিল। তখন আমরা বললাম, হে আবু যার [রাদি.]! যদি আপনি উভয়টি একত্রিত করিতেন, তাহলে এক জোড়া চাদর হতো। তিনি বলিলেন, আমার মধ্যে এবং আমার ভাই সম্পর্কীয় ব্যক্তিটির মধ্যে কিছু কথা আছে। তার মা একজন অনারব। একদা আমি তার মাকে উল্লেখ করে তাকে ভর্ৎসনা করলাম। তখন সে আমার বিরুদ্ধে নবী [সাঃআঃ]- এর কাছে নালিশ করিল। এরপর যখন আমি নবী [সাঃআঃ]- এর সাথে সাক্ষাৎ করলাম তখন তিনি বলিলেন, হে আবু যার! তুমি এমন ব্যক্তি, যার মধ্যে জাহিলী যুগের কাজকর্ম রয়েছে [যে সময়ে একে অন্যের বাপ-মাকে অবজ্ঞা ও তুচ্ছজ্ঞান করতো]। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাঃআঃ]! যে ব্যক্তি মানুষদেরকে গালি দেয় তার প্রতি উত্তরে তারাও তার পিতা মাতাকে উল্লেখ করে গালি দেয়া স্বাভাবিক। তখন নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আবু যার! তোমার মধ্যে জাহিলী যুগের কর্মকান্ড এখনও বিদ্যমান [অর্থাৎ তার মন্দ কথার বদলায় তার বাবা-মাকে গালি দেয়া অন্যায়]। তারা তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করিয়াছেন। তোমরা যা খাবে তাদেরকেও তা খাওয়াবে এবং তোমরা যেমন পোশাক পরবে তাদেরকে তা পরাবে। তোমরা তাদের উপর এমন কোন কাজের ভার চাপিয়ে দিবে না, যা করিতে তারা হিমশিম খেয়ে যায়। যদি তোমরা তাদেরকে কোন কাজে কষ্ট দাও, তাহলে এ কাজে তাদের সাহায্যও করো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬৬]

৪২০৬. আহমাদ ইবনি ইউনুস, আবু কুরায়ব ও ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]….. সকলেই আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]….. থেকে এ একই সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর তিনি যুহায়র ও আবু মুআবিয়াহ্ [রাদি.] থেকে বর্ণনা করেন, হাদীসে “তোমার মধ্যে জাহিলী যুগের কর্মকাণ্ড বিদ্যমান এ কথার পর কিছু বাড়িয়ে যোগ করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমি বললাম, তা কি আমার বয়োবৃদ্ধে হইবে? তিনি বলেন, হ্যাঁ। আর আবু মুআবিয়াহ্র বর্ণনায় আছে, হ্যাঁ, তোমার বয়োবৃদ্ধকালে। আর ঈসাঃ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যদি তুমি তাকে সাধ্যের বাইরে কোন কাজ করিতে দাও, যা সে করিতে অক্ষম, তবে তাকে বিক্রি করে দাও। আর যুহায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসে আছে “অতএব তুমি তাকে তখন সাঃহায্যও করিবে।” আবু মুআবিয়াহ্ [রাদি.]- এর হাদীসে “তুমি তাকে বিক্রি করে দাও” অথবা “সাহায্য কর” কোন কথার উল্লেখ নেই। “তুমি তাকে এমন কাজের ভার চাপিয়ে দিও না, যা করিতে সে অক্ষম” এ কথা দ্বারাই হাদীস শেষ হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬৭]

৪২০৭. মুহাম্মাদ ইবনি মুসান্না ও ইবনি বাশ্শার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] মারূর ইবনি সুওয়াইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু যার [রাদি.]- কে দেখিতে পেলাম যে, তাহাঁর গায়ে একটি চাদর এবং তাহাঁর গোলামের গায়েও অনুরূপ একটি চাদর রয়েছে। তখন আমি এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলিলেন যে, কোন এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর যামানায় এক ব্যক্তিকে গালি দিয়েছিল। প্রত্যুত্তরে সে ব্যক্তি তার মাকে উল্লেখ করে গালি দিল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন লোকটি নবী [সাঃআঃ]- এর কাছে এসে ঐ ঘটনা বর্ণনা করলো, নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ নিশ্চয়ই তোমার মধ্যে অজ্ঞতা যুগের কর্মকাণ্ড বিদ্যমান। তারা তোমাদের ভাই, তোমাদের গোলাম। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। সুতরাং যে ব্যক্তির অধীনে তার কোন ভাই থাকে তার উচিত তাকে এমন খাদ্য দেয়া যা সে নিজে খায় এবং এমন পোশাক দেয়া যা সে নিজে পরে। আর তোমরা তাদের উপর এমন কাজের ভার চাপিয়ে দিও না যা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়। আর যদি তোমরা তাদেরকে সামর্থ্যের বাইরে কাজ দাও, তবে তোমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতাও করো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬৮]

৪২০৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেনঃ কৃতদাসের জন্যে খাওয়া-দাওয়া ও পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যবস্থা করা মনিবের দায়িত্ব। তার সাধ্যের বাইরে কোন কাজের জন্য তাকে কষ্ট দেয়া যাবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৬৯]

৪২০৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কোন গোলাম খাদ্য তৈরী করে তার মনিবের কাছে নিয়ে আসে যাতে তার তাপ ও ধোঁয়া সে সহ্য করেছে, তখন তার উচিত হইবে তাকে কাছে বসিয়ে তা থেকে কিছু খাবার প্রদান করা। আর যদি খাবারের পরিমাণ অতি অল্প হয়, তবে সে যেন তার হাতে অন্ততঃ এক লোকমা অথবা দু লোকমা খাবার প্রদান করে। বর্ণনাকারী দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. বলেন যে, [আরবী] এর অর্থ [আরবী] এক লোকমা অথবা দু লোকমা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭০]

১১. অধ্যায়ঃ কল্যাণকামিতার সাথে মনিবের সেবা ও ভালভাবে আল্লাহর ইবাদাতকারী দাস-দাসীর পুরস্কার

৪২১০. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন চাকর যখন কল্যাণকামিতার সাথে আপন মনিবের সেবা করে এবং উত্তমরূপে আল্লাহর ইবাদাতও করে- তখন সে দুটি পুরস্কার প্রাপ্ত হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭১]

৪২১১. যুহায়র ইবনি হারব, মুহাম্মাদ ইবনি নুমায়র, আবু বাক্র আবু শাইবাহ্ ও হারূন ইবনি সাঈদ আইলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলেই ইবনি উমর [রাদি.] সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] …… এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭২]

৪২১২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সৎ গোলামের জন্যে দ্বিগুণ পুরস্কার রয়েছে। সে মহান আল্লাহর শপথ! যাঁর হাতে আবু হুরায়রা্‌র জীবন, যদি আল্লাহর পথে জিহাদ করা, হজ্জ করা এবং আমার মায়ের সেবা করা অধিক পুণ্যের বিষয় না হতো, তবে গোলাম অবস্থায় মৃত্যু হওয়াকেই আমি অধিক পছন্দ করতাম। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা জানতে পারলাম যে, আবু হুরায়রা্‌ [রাদি.] হজ্জে গমন করেননি তাহাঁর মায়ের মৃত্যুর আগে। কেননা তিনি সর্বদা তাহাঁর পাশে থেকে সেবা করিতেন।

বর্ণনাকারী আবু তাহির তাহাঁর বর্ণিত হাদীস [আরবী] [সৎ গোলামের জন্যে] কথাটির উল্লেখ করিয়াছেন। কিন্তু [আরবী] [ক্রীতদাস] শব্দটি তিনি উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭৩]

৪২১৩. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সানাদে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তিনি [আরবী] [আমাদের কাছে সংবাদ পৌঁছেছে থেকে নিয়ে এর পরবর্তী অংশ উল্লেখ করেননি]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭৪]

৪২১৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে গোলাম আল্লাহর হক এবং তার মনিবের হক আদায় করিল, তার জন্য দ্বিগুণ পুরস্কার রয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন যে, এই হাদীসটি কাব [রাদি.]- এর নিকট বর্ণনা করলাম তখন কাব [রাদি.] বলিলেন, কিয়ামাতের দিন তার কোন হিসাব নেই এবং ঐ মুমিনের ওপরও কোন হিসাব নেই যার সম্পদ কম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭৫]

৪২১৫. যুহায়র ইবনি হারব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উপর্যুক্ত হাদীস যুহায়র ইবনি হারব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে একই সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭৬]

৪২১৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবু হুরায়রা্ [রাদি.] সূত্রে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে এ ব্যাপারে অনেক হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে উত্তমরূপে ইবাদাত করে মৃত্যুবরণ করেছে এবং আপন মনিবের উত্তম সেবা করেছে, ঐ গোলামের জন্য কতই না উত্তম পুরস্কার রয়েছে, তার জন্য কতই না উত্তম প্রতিদান রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭৭]

১২. অধ্যায়ঃ অংশীদারিত্ব আছে এমন গোলাম মুক্ত করা

৪২১৭. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন গোলামে নিজের অংশ মুক্ত করে দেয় আর তার কাছে এমন পরিমাণ সম্পদ আছে যা দ্বারা সে ঐ গোলামের সম্পূর্ণ মূল্য ন্যায়সঙ্গতভাবে পরিশোধ করিতে সক্ষম তখন সে যেন অন্যান্য অংশীদারদের প্রাপ্য অংশ পরিশোধ করে দেয় এবং নিজ দায়িত্বে তাকে সম্পূর্ণভাবে আযাদ করে দেয়। অন্যথায় সে যে অংশ আযাদ করিল, তাই শুধু আযাদ হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭৮]

৪২১৮. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যৌথভাবে ক্রয় করা কোন গোলামের নিজ অংশ আযাদ করে দিল, তার উপর কর্তব্য হইবে সম্পূর্ণ গোলাম আযাদ করে দেয়া, যদি সম্পূর্ণ গোলামের মূল্য পরিশোধের মত সম্পদ তার কাছে থাকে। আর যদি এ পরিমাণ সম্পদ তার কাছে না থাকে, তবে সে যে অংশ আযাদ করিল, তাই শুধু আযাদ হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৭৯]

৪২১৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শারীকানায় ক্রয় করা কোন গোলামের নিজ অংশ আযাদ করে দেয় এবং তার কাছে গোলামের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধের মত সম্পদও থাকে তখন তার উপর কর্তব্য হইবে ন্যায়সঙ্গতভাবে সকলের মূল্য পরিশোধ করে তাকে সম্পূর্ণ আযাদ করে দেয়া। অন্যথায় সে যে অংশ আযাদ করিল তাই শুধু আযাদ হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮০]

৪২২০. কুতাইবাহ্ ইবনি সাঈদ, মুহাম্মাদ ইবনি রুম্হ, মুহাম্মাদ ইবনি মুসান্না, আবু রাবী, আবু কামিল, যুহায়র ইবনি হারব, ইসহাক্ ইবনি মানসূর, মুহাম্মাদ ইবনি রাফি, হারূন ইবনি সাঈদ আইলী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলেই ইবনি উমর [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

সকলেই ইবনি উমর [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃআঃ] থেকে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর তাঁদের বর্ণিত হাদীসে [আরবী] [আর যদি তার কাছে সম্পদ না থাকে, তবে সে যে অংশ আযাদ করিল তাই শুধু আযাদ হইবে] এরূপ বাক্যের উল্লেখ করিয়াছেন। আর তারা এ কথাও বলেছেন যে, আমরা জানি না যে, প্রকৃতপক্ষেই এ শব্দগুলো হাদীসের অন্তর্ভুক্ত, না বর্ণনাকারী নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] নিজের পক্ষ হইতেই এগুলো বলেছেন। উল্লিখিত বর্ণনাকারীদের বর্ণনায় “আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে এ কথা বলিতে শুনেছি- এ কথাটি একমাত্র লায়স ইবনি সাদ- এর হাদীস ব্যতীত অন্য কারো বর্ণনায় নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮১]

৪২২১. আমর আন নাকিদ ও ইবনি উমর [রাদি.] ….. উভয়েই.. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন গোলামকে আযাদ করিল যার মধ্যে তার এবং অপরের অংশীদারিত্ব আছে, তবে তার সম্পদ থেকে অন্যের অংশ ন্যায়সঙ্গতভাবে পরিশোধ করা কর্তব্য। যদি সে প্রাচুর্যশালী হয়, নিজ দায়িত্বে স্বীয় সম্পদ দ্বারা তাকে মুক্ত করে দেয়া উচিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮২, ই.সে ৪১৮২]

৪২২২. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি যৌথভাবে ক্রয় করা কোন গোলামের নিজ অংশ আযাদ করিল, বাকী অংশটুকু তার সম্পদ থেকে আযাদ করে দেয়া কর্তব্য, যদি তার এমন সম্পদ থাকে যা দিয়ে গোলামের মূল্য পরিশোধ করা যায়।

[ই.ফা ৪১৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮৩]

৪২২৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেনঃ দুজনের অংশীদারিত্বে কোন গোলামের একজন মালিক যদি তার অংশ আযাদ করে দেয়, তবে সে [অপরের অংশের] যামিন হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮৪]

৪২২৪. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে হাদীসটি একই সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

যদি কেউ যৌথভাবে ক্রয় করা কোন গোলামের এক অংশ আযাদ করিল, সে স্বাধীন হইবে তার মাল দ্বারাই। [অর্থাৎ নিজ দায়িত্বে স্বীয় সম্পদ দ্বারা তাকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে দেয়া কর্তব্য]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮৫]

৪২২৫. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি যৌথ মালিকানার কোন গোলামের নিজ অংশ আযাদ করিল, তবে তার মাল থেকেই তাকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে দেয়া কর্তব্য, যদি সে সম্পদশালী হয়। আর যদি তার সম্পদ না থাকে তবে গোলামের দ্বারা সেবা কার্য আদায় করিবে বটে, কিন্তু তার উপর কোন কঠোরতা আরোপ করিতে পারবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮৬]

৪২২৬. ইবনি আবু আরূবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে একই সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর ঈসাঃ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণিত হাদীসে “এরপর যে অংশ আযাদ হয়নি সে অংশ আযাদ করানোর চেষ্টা করিবে, কিন্তু তার উপর কোন কঠোরতা আরোপ করা যাবে না” বর্ণিত রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮৭]

৪২২৭. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক ব্যাক্তি তার মৃত্যুকালে নিজের ছয়জন গোলামকে আযাদ করিল। অথচ গোলামগুলো ব্যতীত তার আর কোন সম্পদও ছিলও না। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদেরকে ডাকালেন এবং তাদেরকে তিনভাগে ভাগ করিলেন। তারপর তাদের মধ্যে লটারী করে দুজনকে সম্পূর্ণভাবে আযাদ করিলেন এবং বাকী চারজনকে গোলাম বানিয়ে রাখলেন। আর তার [মৃতের] প্রতি শক্ত ভাষা প্রয়োগ করিলেন। {২৪}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮৮]

{২৪} ঈমাম নাবাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, অপর বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, রসূলুল্লাহ [সাঃ]- এর শক্ত কথা ছিল, যদি পূর্বেই আমরা এ বিষয়টি জানতাম তাহলে তার জানাযা পড়তাম না। [সহীহ মুসলিম শারহে নাবাবী, ২য় খণ্ড, ৫৪ পৃষ্ঠা]

৪২২৮. আইয়ূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। আর হাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণিত হাদীসটি ইবনি উলাইয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর হাদীসের অনুরূপ। আর সাকাফী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, “আনসারী এক লোক তাহাঁর মৃত্যুর সময় ওয়াসিয়্যাত করায় তাহাঁর ছয়জন গোলামকে মুক্ত করা হলো”।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৮৯]

৪২২৯. মুহাম্মাদ ইবনি মিনহাল দারীর ও আহমদ ইবনি আবদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. উভয়ে ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি উলাইয়্যাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ও হাম্মাদ- এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯০]

১৩. অধ্যায়ঃ মুদাব্বারকে {২৫} বিক্রি করা বৈধ

{২৫} মুদাব্বার ঐ শ্রেণীর গোলামকে বলে- যার মনিব মৃত্যুর পূর্বে বলিল, আমার মৃত্যুর পর তুমি মুক্ত।

৪২৩০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আনসারী একজন লোক তাহাঁর গোলামকে এ শর্তে আযাদ করলে যে, তুমি আমার মৃত্যুর পর স্বাধীন। সে গোলাম ব্যতীত তার আর কোন সম্পদও ছিল না। এ সংবাদ যখন নবী [সাঃআঃ] পর্যন্ত পৌঁছল তখর তিনি বললেনঃ আমার কাছ থেকে তাকে কিনে নিবে, এমন কে আছে? তখন নুআয়ম ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] আটশ দিরহামের বিনিময়ে তাকে কিনে নিল। তখন নবী [সাঃআঃ] ঐ অর্থ আনসারীকে দিয়েছিলেন।

আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহকে বলিতে শুনেছি যে, সে ছিল একজন কিবতী গোলাম। সে [আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.]- এর খিলাফতের] প্রথম বছর মৃত্যুবরণ করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯১]

৪২৩১. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন আনসারী এক লোক তাহাঁর গোলামকে এই বলে আযাদ করিল যে, আমার মৃত্যুর পর তুমি স্বাধীন। কিন্তু সে গোলাম ব্যতীত তাহাঁর আর কোন সম্পদ ছিল না। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বিক্রি করেন।জাবির [রাদি.] বলেন যে, ইবনি নাহ্‌হাম [রাদি.] তাকে ক্রয় করলো। সে গোলামটি ছিল একজন কিবতী। ইবনি যুবায়র [রাদি.]- এর খিলাফত কালের প্রথম বছর সে মৃত্যুবরণ করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯২, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯২]

৪২৩২. জাবির [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

“মুদাব্বার সম্পর্কে হাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] কর্তৃক আমর ইবনি দীনারের বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৯৩]

৪২৩৩. কুতাইবাহ, আবদুল্লাহ ইবনি হাশিম ও আবু গাস্সান মিসমাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি], সকলেই নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ

হাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এবং ইবনি উয়াইনাহ্ [রাদি.] কর্তৃক আমর [রাদি.] ও জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিত অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৯৪, ই.স. ৪১৯৪]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply