কসম করার নিষেধাজ্ঞা বিঁধান ও ইনশাআল্লাহ বলা
আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো কসম করার নিষেধাজ্ঞা >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
১. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো কসম করার নিষেধাজ্ঞা
২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি লাত ও উযযার নামে কসম করে সে যেন [আরবী] বলে
৩. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে কসম করে, অতঃপর এটা না করাই উত্তম মনে করলে তা-ই করিবে আর কসমের কাফফারাহ দিয়ে দিবে।
৪. অধ্যায়ঃ কসম গ্রহণকারীর নিয়্যাত অনুযায়ী কসম হইবে
৫. অধ্যায়ঃ কসমের মধ্যে ইনশাআল্লাহ বলা
৬. অধ্যায়ঃ কসম দ্বারা যদি পরিবারের লোকদের কষ্ট হয় তবে কসম ভঙ্গ না করা নিষেধ, তবে তাতে শর্ত হলো কাজটি হারাম হইবে না
৭. অধ্যায়ঃ কোন কাফির ব্যক্তি কুফ্রী অবস্থায় কোন মানৎ করে, অতঃপর মুসলিম হয়ে যায়
১. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো কসম করার নিষেধাজ্ঞা
৪১৪৬. উমর ইবনি খাত্তাব [রা] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করিতে নিষেধ করিয়াছেন।
উমর [রাদি.] বলিলেন, আল্লাহ কসম! আমি যখন থেকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে এ থেকে নিষেধ করিতে শুনেছি, তখন থেকে আর কখনও সে নামে কসম করিনি, নিজের পক্ষ থেকেও নয়, আর অপরের উদ্ধুতি দিয়েও নয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১০৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১০৬]
৪১৪৭. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
উকায়ল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসে আছে যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে এ থেকে নিষেধ করিতে শুনার পর থেকে সে নামে আর শপথ করিনি। আর ঐ নামের কসমের উচ্চারণও করিনি। তবে তিনি “নিজের পক্ষ থেকে এবং অপরের উদ্ধৃতি দিয়েও” কথাটি উল্লেখ্ করেননি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১০৭]
৪১৪৮. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর পিতা হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] একদা উমর [রাদি.] কে তাহাঁর পিতার নামে শপথ করিতে শুনলেন। পরবর্তী অংশ ইউনুস ও মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণনার অনুসারে বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১০৮]
৪১৪৯. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক সময় কাফিলায় উমর ইবনি খাত্তাব [রাদি.]- কে পেলেন। উমর [রাদি.] তখন তাহাঁর পিতার নামে শপথ করছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের সম্বোধন করে বললেনঃ সাবধান! আল্লাহ তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করিতে তোমাদের নিষেধ করিয়াছেন। সুতরাং যে কেউ কসম করিতে চায়, সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে অথবা সে যেন চুপ থাকে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১০৯]
৪১৫০. মুহাম্মাদ ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি নুমায়র, মুহাম্মাদ মুসান্না, ইয়াহ্ইয়া, বিশ্র ইবনি হিলাল, আবু কুরায়ব, ইবনি আবু উমর, ইবনি রাফি, ইসহাক্ ইবনি ইবরাহীম ইবনি রাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তারা সকলেই ইবনি উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে অনুরূপ ঘটনা নবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১২, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১০]
৪১৫১. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শপথ করার জন্য মনস্থ করে, সে যেন আল্লাহর নাম ব্যতীত শপথ না করে। কুরায়শরা তাদের বাপ-দাদার নামে শপথ করতো। কাজেই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার নামে শপথ করো না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১১]
২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি লাত ও উযযার নামে কসম করে সে যেন [আরবী] বলে
৪১৫২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কসম করে এবং সে কসম করিতে গিয়ে বলে, লাতের কসম সে যেন এর পরপরই বলে [আরবী] আর যে ব্যক্তি তার সাথীকে বলে, এসো, তোমার সাথে জুয়া খেলি, সে যেন এর সাথে সাথেই কিছু সদাকাহ্ করে দেয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১২]
৪১৫৩. যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণনা করেন। আর মামার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর হাদীস ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর হাদীসের অনুরূপ। তবে মামার বলেছেন, “সে যেন কোন কিছু সদাকাহ্ করে দেয়”। আর আওযাঈর হাদীসে আছে, যে লাত ও মানাত এর শপথ করিবে। [ইসলামিক সেন্টার- ৪১১৩]
আবুল হুসায়ন মুসলিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ কথাটি অর্থাৎ তার কথা “তুমি এসো, তোমার সাথে আমি জুয়া খেলি, তবে সে যেন সাথে সাথে সদাকাহ্ দেয়” যুহরী ব্যতীত অন্য কেউই বর্ণনা করেননি। ঈমাম মুসলিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আরো বলেন, নবী [সাঃআঃ] থেকে প্রায় নব্বইটি হাদীস যুহরীর নিকট রয়েছে যা তিনি উত্তম সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন, যাতে আর কেউ শারীক নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১৪]
৪১৫৪. আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা দেব-দেবীর নামে ও তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করো না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১৫]
৩. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে কসম করে , অতঃপর এটা না করাই উত্তম মনে করলে তা-ই করিবে আর কসমের কাফফারাহ দিয়ে দিবে।
৪১৫৫. খালাফ ইবনি হিশাম, কুতাইবাহ্ ইবনি ঈদ ও ইয়াহ্ইয়া ইবনি হাবীব হারিসী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু মূসা আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আশআরী গোত্রের কিছু সংখ্যক লোককে নিয়ে বাহন চাওয়ার জন্যে নবী [সাঃআঃ]- এর নিকট আসি। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের বাহনের সওয়ারী দিব না। আর আমার কাছে এমন কিছু নেই যাতে আমি তোমাদের সওয়ার করাতে পারি। আবু মূসা আশআরী [রাদি.] বলেন, আল্লাহ যতটা চাইলেন আমরা ততক্ষণ অপেক্ষা করলাম। তারপর তাহাঁর কাছে উট আনা হলো। তিনি আমাদেরকে তিনটি সাদা কুঁজবিশিষ্ট উট দেয়ার নির্দেশ দেন। যখন আমরা [তা নিয়ে] চলে আসি। তখন আমরা বললাম, রাবী বলেন, অথবা আমাদের একে অপরকে বলিলেন যে, এতে আল্লাহ তাআলা আমাদের কল্যাণ করবেন না। আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকট সওয়ারী বাহন চাইতে এসেছিলাম। তখন তিনি কসম করেছিলেন যে, আমাদেরকে সওয়ারী বাহন দিবেন না। এরপর আমাদেরকে সওয়ারী দিলেন। তারপর তারা নবী [সাঃআঃ]- এর নিকট এসে তাহাঁর কসমের কথা অবগত করালেন। তিনি বললেনঃ আমি নই; বরং আল্লাহ তোমাদের সওয়ারী দিয়েছেন। আর আল্লাহর কসম! ইনশা-আল্লাহ আমি যখনই কোন বিষয়ের উপর কসম করি এরপর যদি এর তুলনায় অন্যটি কল্যাণকর মনে করি, তবে আমি আমার কসমের কাফফারাহ দিয়ে দিব এবং যা উত্তম তাই করবো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১৬]
৪১৫৬. আবু মুসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]- এর সঙ্গে জায়শুল উসরা অথাৎ তাবুকের যুদ্ধের জন্যে সমবেত হওয়ার কালে আমার সাথীরা তাদের জন্যে সওয়ারী চাইতে আমাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকট প্রেরণ করেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমার সঙ্গীরা আমাকে আপনার নিকট তাদেরকে সওয়ারী দেয়ার জন্যে পাঠিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের কোন বাহন দেব না। আর যখন আমি তাহাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি তখন তিনি রাগান্বিত ছিলেন, অথচ আমি বুঝতে পারিনি। আমি চিন্তিত মনে ফিরে আসি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর অসম্মতির কারণে এবং এ ভয়ে যে, সম্ভবত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার উপর মনে মনে রাগান্বিত হয়েছেন। তখন আমি আমার সাথীদের কাছে চলে আসি এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যা বলেছেন, তা তাদের জানাই। অল্পক্ষণের বেশি দেরি করিনি, হঠাৎ শুনতে পাই যে, বিলাল [রাদি.] ডাক দিচ্ছেন হে আবদুল্লাহ ইবনি কায়স! আমি উত্তর দিলাম। তিনি বলিলেন, চলো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তোমাকে ডাকতে পাঠিয়েছেন। যখন আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকট আসি, তখন তিনি বলিলেন, এ জোড়া নাও, এ জোড়া নাও এবং এ জোড়া নাও। ছয়টি উট সম্পর্কে বলিলেন, যা সাদ [রাদি.] থেকে সে সময়েই রসূল [সাঃআঃ] ক্রয় করিয়াছেন। সুতরাং তুমি তা নিয়ে তোমার সাথীদের কাছে চলে যাও এবং বল, আল্লাহ অথবা বলেন, আল্লাহর রসূল তোমাদের এগুলো বাহনের জন্যে দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা এর উপর আরোহণ করো।
আবু মুসা [রাদি.] বলেন, আমি এগুলো নিয়ে আমার সাথীদের নিকট আসি এবং বলি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এগুলো তোমাদের বাহন হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের ছাড়বো না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের কেউ আমার সাথে সে ব্যক্তির নিকট না যায়, যে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর কথা শুনেছে, যখন আমি তাহাঁর নিকট তোমাদের জন্যে [বাহন] চেয়েছিলাম এবং তিনি প্রথমবার নিষেধ করেন এবং পরে আমাকে তা প্রদান করেন। তোমরা মনে করো না, তিনি [সাঃআঃ] যা বলেননি, আমি তোমাদের এমন কথা বলেছি। তারা আমাকে বলিলেন, আল্লাহর কসম! আপনি আমাদের নিকট অবশ্যই সত্যবাদী। আর আপনি যা চাইছেন তা আমরা অবশ্যই করবো। তারপর আবু মূসা [রাদি.] তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে সাঃথে নিয়ে ঐসব লোকদের নিকটে এলেন যাঁরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর কথা এবং তাদের দিতে তাহাঁর নিষেধাজ্ঞা শুনেছিলেন এবং পরবর্তীতে তাহাঁর দেয়া লক্ষ্য করেছিলেন। তারা তাদের কাছে হুবহু সে বর্ণনাই দিলেন যা আবু মূসাঃ [রাদি.] তাদের কাছে বর্ণনা করেছিলেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১৭]
৪১৫৭. যাহদাম জারমী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা আবু মূসা [রাদি.]- এর নিকটে ছিলাম। তিনি তাহাঁর [খানার] দস্তরখান নিয়ে আসতে বলিলেন। তাতে মুরগীর গোস্ত ছিল। ইত্যবসরে তাইমুল্লাহ গোত্রের লাল বর্ণের এক লোক প্রবেশ করে, যে গোলাম সদৃশ ছিল। আবু মূসা [রাদি.] তাকে বলিলেন, এসো। সে ইতস্ততঃ করে। আবু মূসাঃ [রাদি.] বলিলেন, এসো। কারণ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে তা খেতে দেখেছি। লোকটি বললো, আমি একে এমন কিছু খেতে দেখেছি যাতে আমার খেতে ঘৃণার উদ্রেক হয়, তাই আমি কসম করেছি যে, তা আর খাবো না। আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, এসো, এ ব্যাপারে আমি তোমাকে একটি হাদীস বলছি। আমি একবার আশআরী গোত্রের কতিপয় লোকের সাথে রসূলু্ল্লাহ- এর নিকট সওয়ারী চাইতে আসি। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের সওয়ারী দিব না। আর তোমাদের দেওয়ার মতন সওয়ারীও আমার কাছে নেই। তারপর যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছা হয়, আমরা অপেক্ষা করলাম। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকটে কিছু গানীমতের উট আসে। তিনি আমাকে ডাকতে পাঠান এবং সাদা কুঁজবিশিষ্ট পাঁচটি উট আমাদের দেয়ার নির্দেশ দেন। যখন আমরা চললাম তখন আমাদের একে অন্যকে বলিলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে তাহাঁর কসম সম্বন্ধে অবহিত করিনি, আমাদের জন্যে বারাকাত হইবে না। তখন আমরা তাহাঁর নিকট ফিরে গিয়ে বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল [সাঃআঃ]! আমরা আপনার নিকট এসেছিলাম বাহন চাওয়ার জন্য আর আপনি কসম করে ছিলেন যে, আমাদেরকে বাহন দিবেন না, অতঃপর আমাদেরকে বাহন দিলেন; হে আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ]! আপনি কী ভুলে গেছেন? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! ইনশা-আল্লাহ আমি যখনই কোন বিষয়ে কসম করি, তারপর তার বিপরীতটিকে উত্তম মনে হলে উত্তমটিই করি এবং কসম থেকে হালাল হয়ে যাই অর্থাৎ কাফফারাহ আদায় করি। সুতরাং তোমরা যাও, কেননা আল্লাহ তাআলা তোমাদের সওয়ারী দান করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১৮]
৪১৫৮. যাহদাম জার্মী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জার্ম এর এ গোত্র এবং আশআরীদের মধ্যে হৃদ্যতা ও ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। একবার আমরা আবু মূসা আশআরীর নিকটে ছিলাম, তখন তাহাঁর সামনে খাবার আনা হলো, যার মধ্যে মুরগির গোশতও ছিল। পরবর্তী অংশ উক্ত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১১৯]
৪১৫৯. যাহদাম জারমী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা আবু মূসার নিকটে ছিলাম। অতঃপর সকলেই হাম্মাদ ইবনি যায়দের হাদীসের অর্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১২০]
৪১৬০. যাহদাম জারমী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু মূসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর নিকট গমন করি। তখন তিনি মুরগীর গোশ্ত আহার করছিলেন। তিনি হাদীসের পরবর্তী অংশ উক্ত বর্ণনাকারীদের মতই বর্ণনা করেন। তবে তিনি এতে এতটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর কসম! আমি তা ভুলে যাইনি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২২, ইসলামিক সেন্টার- ৪০২১]
৪১৬১. আবু মূসা আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকট সওয়ারী চাইতে আসি। তিনি বললেনঃ আমার নিকট এমন কিছু নেই যা তোমাদেরকে সওয়ারী হিসেবে দিতে পারি। আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে সওয়ারী দিব না। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কালো মিশ্রিত সাদা কুঁজমিশ্রিত তিনটি উট আমাদের নিকট পাঠান। আমরা আলোচনা করলাম যে, সওয়ারী চাওয়ার জন্যে আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকট এসেছিলাম। তখন তিনি কসম খেয়েছিলেন যে, তিনি আমাদের সওয়ারী দিবেন না। এরপর আমারা তাহাঁর নিকট গিয়ে তাঁকে কসমের বিষয় জানালাম। তিনি বললেনঃ আমি কোন বিষয়ের উপর কসম করলে তার বিপরীত কাজ যদি উত্তম দেখি, তবে সে উত্তমটি করি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪০২২]
৪১৬২. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা পদাতিক ছিলাম। তাই আমরা নবী [সাঃআঃ]- এর নিকটে সওয়ারী চাইতে আসলাম। এরপর জারীরের হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪০২৩]
৪১৬৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]- এর নিকটে গভীর রাত পর্যন্ত বিলম্ব করে। এরপর তার গৃহে গিয়ে দেখে যে, বাচ্চারা ঘুমিয়ে পড়েছে। তার স্ত্রী তার খাবার নিয়ে এলে সে সন্তানদের কারণে কসম করলো যে, সে খাবে না। পরে খাবার গ্রহণকে উচিত মনে করলে সে খেয়ে নিল। এরপর সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর নিকট এসে তাঁকে উক্ত ঘটনা বলে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে কসম খায়, পরে অন্যটিকে তা থেকে উত্তম মনে করে, যে যেন তা করে ফেলে এবং নিজের কসমের কাফফারাহ দেয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪০২৪]
৪১৬৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন বিষয়ে কসম করে, পরে অন্যটি তার চেয়ে উত্তম মনে করে, তবে সে যেন তার কসমের কাফ্ফারা দেয় এবং ঐ [উত্তম] কাজটি করে ফেলে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪০২৫]
৪১৬৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন বিষয়ের উপর কসম করে, পরে অন্যটিকে তার চেয়ে ভালো মনে করে তবে সে যেন সেই ভাল বিষয়কে কার্যে পরিণত করে এবং কসমের কাফ্ফারা আদায় করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪০২৬]
৪১৬৬. সুহায়ল[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
সুহায়ল[রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর সূত্রে উক্ত সানাদে মালিক বর্ণিত হাদীসের মর্মানুরুপ বর্ণনা করেন। কিন্তু এতে রয়েছে, “সে যেন তার কসমের কাফ্ফারাহ্ দেয় এবং তাই করে যা ভাল।”
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১২৭]
৪১৬৭. তামীম ইবনি তারাফাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আদী ইবনি হাতিম [রাদি.]- এর নিকট একজন প্রার্থী আসল। সে একজন দাসের মূল্য কিংবা দাসের মূল্যের কিছু অংশ সাঃহায্য করার প্রার্থনা জানায়। তিনি বলিলেন, একটি বর্ম ও লোহার টুপি ব্যতীত আমার নিকট তোমাকে দেয়ার মত আর কিছুই নেই। আমি আমার ঘরে লিখে দিচ্ছি যেন তারা এ দুটি তোমাকে দিয়ে দেয়। রাবী বলেন, সে ব্যক্তি এতে রাজি হলো না। আদী এতে ক্রোধান্বিত হয়ে বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাকে কিছুই দিব না। পরে লোকটি রাযি হয়ে গেল। তখন তিনি বললেনঃ জেনে রেখো, আল্লাহর কসম! আমি যদি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে এ কথা বলিতে না শুনতাম যে, যে ব্যক্তি কোন ব্যাপারে কসম করে, অতঃপর তা অপেক্ষা বেশি আল্লাহর ভয়সম্পন্ন বিষয় দেখে, তবে সে যেন তাক্ওয়াপূর্ণ বিষয়টিই করে, তাহলে আমি আমার কসম ভঙ্গ করতাম না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১২৮]
৪১৬৮. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কসম করে, এরপর অন্যটিকে উত্তম মনে করে, তবে সে যেন উত্তমটিই করে এবং কসম ছেড়ে দেয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১২৯]
৪১৬৯. আদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ কসম করে, এরপর তার চেয়ে উত্তম কিছু দেখে, তবে সে যেন তার কাফফারা আদায় করে এবং তা-ই যেন করে যা উত্তম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩০]
৪১৭০. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ]- কে উক্ত হাদীসের অনুরূপ বলিতে শুনেছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩১]
৪১৭১. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একবার তার নিকট এক ব্যাক্তি এসে একশ দিরহামের প্রার্থনা জানায়। তিনি বলিলেন, তুমি আমার নিকট একশ দিরহাম সওয়াল করছ! অথচ আমি হাতিমের ছেলে। আল্লাহর শপথ! তোমাকে আমি দান করব না। এরপর তিনি বলিলেন, আমি যদি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে এ কথা বলিতে না শুনতাম যে, যে ব্যক্তি কসম করে, পরে তদপেক্ষা উত্তম কিছু দেখে, তবে সে যেন সে উত্তমটিই পালন করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩২]
৪১৭২. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যাক্তি তার কাছে সাওয়াল করে। এরপর উক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন এবং অতিরিক্ত বলেন যে, আমার দান থেকে তুমি চারশ দিহরাম নাও।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩৩]
৪১৭৩. আবদুর রহমান ইবনি সাঃমুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ! তুমি শাসন কর্তৃত্ব চেয়ো না। কারণ, যদি তোমাকে চাওয়ার কারণে তা দেয়া হয়, তবে তার দায়িত্ব তোমার উপর পড়বে। আর চাওয়া ব্যতীত তোমাকে তা দেয়া হলে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হইবে। আর যখন তুমি কোন কাজের উপর কসম কর, তারপর তার বিপরীত কাজকে তুমি উত্তম মনে কর, তবে তুমি তোমার কসমের কাফফারা আদায় কর এবং যা উত্তম তা করে নাও। {দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৭০৫}
আবু আহমাদ আল-জালূদী ….. জারীর ইবনি হাযিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উক্ত সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩৪]
৪১৭৪. আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে মুতামির তাহাঁর পিতা সূত্রে বর্ণিত হাদীসে শাসন কর্তৃত্ব [ইমারাত] এর কথা উল্লেখ নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩৫]
৪. অধ্যায়ঃ কসম গ্রহণকারীর নিয়্যাত অনুযায়ী কসম হইবে
৪১৭৫. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমার কসম ঐ উদ্দেশের উপর ধরে নেয়া হইবে, যে উদ্দেশের উপর তোমার সঙ্গী তোমাকে সত্য বলে বিশ্বাস করে। আম্র বলেন, এ ভাবে যে, তোমার সঙ্গী যে উদ্দেশ্যে তোমাকে সত্য বলে বিশ্বাস করে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩৬]
৪১৭৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কসমকারীর নিয়্যাতের উপরই কসমটি হইবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩৭]
৫. অধ্যায়ঃ কসমের মধ্যে ইনশাআল্লাহ বলা
৪১৭৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সুলাইমান [আঃ] এর ষাটজন স্ত্রী ছিল। একদা তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আমি আজ রাতে সকল স্ত্রীর কছেই গমন করবো। অর্থাৎ মিলিত হব। এতে প্রত্যেকেই গর্ভবতী হইবে এবং প্রত্যেকেই এমন সব সন্তান প্রসব করিবে যারা [ভবিষ্যতে] আল্লাহর পথে অশ্বারোহী সৈনিক হিসেবে লড়াই করিবে। কিন্তু পরিশেষে একজন স্ত্রী ব্যতীত আর কেউই গর্ভবতী হননি। এরপর তিনি অর্ধ মানবাকৃতির [নিষ্কর্মা] একটি সন্তান প্রসব করিলেন। এ প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ যদি তিনি ইনশাআল্লাহ বলিতেন, তবে নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যেকেই এমন সব সন্তান প্রসব করিতেন, যারা প্রত্যেকেই অশ্বারোহী সৈনিক হিসেবে আল্লাহর পথে লড়াই করিতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩৮]
৪১৭৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন যে, একদা আল্লাহর নবী সুলাইমান ইবনি দাঊদ [আঃ] বলেছিলেন, অবশ্যই আমি আজ রাতে সত্তরজন স্ত্রীর প্রত্যেকের কাছে যাব। এতে তাদের প্রত্যেকেই এমন সব সন্তান প্রসব করিবে যারা ভবিষ্যতে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করিবে। তখন তাহাঁর কোন সাথী অথবা ফেরেশতা তাঁকে বলিলেন যে, আপনি ইনশাআল্লাহ বলুন! কিন্তু তিনি ভুলে যাওয়ার কারণে তা বলেননি। অতএর, তাহাঁর স্ত্রীদের মধ্য হইতে একজন ছাড়া আর কেউ সন্তান প্রসব করেননি। আর সে স্ত্রী যে সন্তানটি প্রসব করিলেন, তাও আবার অপূর্ণাঙ্গ ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ যদি তিনি ইনশাআল্লাহ বলিতেন, তবে তিনি শপথ প্রত্যাহারকারী হইতেন না। আর তিনি তখন স্বীয় উদ্দেশ্য সাধনে সফলকাম হইতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৩৯]
৪১৭৯. আবু হুরাইরাহ্ সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ
আবু হুরায়রা্ সূত্রে নবী [সাঃআঃ] থেকে আরেকটি হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪০]
৪১৮০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সুলাইমান ইবনি দাঊদ [আঃ] একদা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আমি আজ রাতে সত্তরজন স্ত্রীর কাছে যাব। এতে তাদের প্রত্যকেই এমন সব সন্তান জন্ম দেবে যারা আল্লাহর পথে লড়াই করিবে। তখন তাকে বলা হলো যে, আপনি ইনশাআল্লাহ বলুন। কিন্তু তিনি [ভূলক্রমে] তা বলেননি। অতঃপর তিনি সকল স্ত্রীর কছে গমন করিলেন। তাতে কোন স্ত্রী গর্ভবতী হলেন না, একজন স্ত্রীর একটি অর্ধ মানবাকৃতির [অপূর্ণাঙ্গ] সন্তান প্রসব করা ব্যতীত।
রাবী বলেন যে, এ প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, যদি তিনি তখন ইন্শা-আল্লাহ বলিতেন, তবে তিনি শপথ ভঙ্গকারী হইতেন না। আর উদ্দেশ্য পূরণে তিনি সফলতা পেতেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪১]
৪১৮১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা সুলাইমান ইবনি দাঊদ [আঃ] বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আমি আজ রাতে নব্বইজন স্ত্রীর প্রত্যেকের কাছেই গমন করবো। এতে তারা এমন যোগ্য সন্তান প্রসব করিবে যারা ভবিষ্যতে আল্লাহর পথে জিহাদ করিবে। তখন তাহাঁর কোন সাথী তাঁকে বলিলেন, আপনি ইনশাআল্লাহ বলুন। কিন্তু তিনি ইনশাআল্লাহ বলেননি। এরপর তিনি সকল স্ত্রীর সঙ্গেই সহবাস করিলেন। কিন্তু মাত্র একজন স্ত্রী ব্যতীত আর কোন স্ত্রী গর্ভবতী হলেন না। তিনি যে সন্তানটি প্রসব করিলেন- তাও ছিল অপূর্ণাঙ্গ। সেই মহান সত্তার শপথ! যাঁর হাতে মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]- এর জীবন, যদি তিনি তখন ইনশাআল্লাহ বলিতেন, তবে তারা সকলেই [স্ত্রীদের জন্ম দেয়া সন্তান] অশ্বারোহী সৈনিক হয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করতো।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪২]
৪১৮২. আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু যিনাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে একই সূত্রে উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তিনি কিছু শাব্দিক পরিবর্তন করে বলেছেন যে- প্রত্যেক স্ত্রী এমন সন্তানদের প্রসব করিবে, যারা ভবিষ্যতে আল্লাহর পথে জিহাদ করিবে।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪৩]
৬. অধ্যায়ঃ কসম দ্বারা যদি পরিবারের লোকদের কষ্ট হয় তবে কসম ভঙ্গ না করা নিষেধ, তবে তাতে শর্ত হলো কাজটি হারাম হইবে না
৪১৮৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.]- এর সূত্রে নবী [সাঃ] হইতে বর্ণীতঃ
এ ব্যাপারে বহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাদের কেউ স্বীয় পরিবারের সাথে [কোন বিষয়] আল্লাহর নামে কসম করে এর পুনরাবৃত্তি করে বা এর উপর অটল থাকে তা অধিক গুনাহর কারণ বলে বিবেচিত হইবে- কসম করে আল্লাহর নির্ধারিত [শপথ ভঙ্গের] কাফফারাহ্ আদায় করার তুলনায়। {২৩}
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪৪]
{২৩} যদি কসম ভঙ্গ না করলে পরিবারের লোকদের কষ্ট হয় তাহলে কসমের উপর স্থির থাকা কসম ভঙ্গ করে এর কাফফারাহ দেয়ার তুলনায় অধিক গুনাহের কাজ বলে গণ্য হইবে।
৭. অধ্যায়ঃ কোন কাফির ব্যক্তি কুফরি অবস্থায় কোন মানৎ করে , অতঃপর মুসলিম হয়ে যায়
৪১৮৪. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একদা উমর [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! আমি জাহিলিয়্যাতের জামানায় মাসজিদুল হারামে এক রাত্রি ইতেকাফ করার মানৎ করেছিলাম। তখন তিনি [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি তোমার মানৎ পূর্ণ কর।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪৫]
৪১৮৫. আবু সাঈদ আশাজ্জ, মুহাম্মাদ ইবনি মুসান্না, আবু বাক্র ইবনি আবু শাইবাহ্, মুহাম্মাদ ইবনি আলা, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনি আম্র ইবনি জাবালা ইবনি আবু রাওয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. সকলেই উবাহদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর সূত্রে ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাঁদের মধ্য হইতে হাফ্স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উমর [রাদি.] থেকে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর আবু উসামাহ্ এবং সাকিফী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উভয়ের বর্ণিত হাদীসে [আরবী] [এক রাত্রির ইতিকাফের] কথা উল্লেখ আছে। আর শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণিত হাদীসে [আরবী] [তিনি তাহাঁর উপর একদিনের ইতেকাফ করা ধার্য করে নিয়েছিলেন]। উল্লেখিত হাফ্স [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর বর্ণিত হাদীসে একদিন এবং এক রাত্রির কথা উল্লেখ নেই।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪৬]
৪১৮৬. আবু তাহির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তায়িফ থেকে ফিরে আসার পর জিরানাহ্ নামক স্থানে অবস্থান কালে উমর ইবনি খাত্তাব [রাদি.] তাঁকে জিজ্ঞেস করিলেন হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! আমি অজ্ঞতার যুগে মাস্জিদুল হারামে একদিন ইতেকাফ করার মানৎ করেছিলাম। এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কী? তখন তিনি বললেনঃ যাও এবং একদিন ইতেকাফ করো। বর্ণনাকারী বলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত সম্পদের [গনীমাতের] এক পঞ্চমাংশ থেকে একটি দাসী প্রদান করেন। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন যুদ্ধ বন্দীদেরকে মুক্ত করে দেন তখন উমর [রাদি.] তাদের শোরগোল শুনতে পান। তারা বলাবলি করছিল যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। উমর [রাযি;] বলিলেন, ব্যাপার কী? তখন তারা বলিল, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুদ্ধ বন্দীদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। তখন উমর [রাদি.] বলিলেন, হে আবদুল্লাহ! ঐ দাসীটির কাছে গিয়ে তাকে মুক্ত করে দাও।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪৭]
৪১৮৭. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যখন নবী [সাঃআঃ] হুনাইনের যুদ্ধ থেকে ফিরে এলেন- তখন উমর [রাদি.] তাহাঁর জাহিলী যুগে করা একদিনের ইতেকাফ করার মানৎ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে জিজ্ঞেস করেন। এরপর জারীর ইবনি হাযিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর হাদীসের মর্মানুরূপ হাদীসটি উল্লেখ করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪৮]
৪১৮৮. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইবনি উমর [রাদি.]- এর নিকট জিরানাহ্ থেকে ফেরার সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর উমরাহ্ করার কথা উল্লেখ করা হল। তখন তিনি বলিলেন, সেখান থেকে তিনি উমরাহ্ করেননি। বর্ণনাকারী বলেন যে, উমর [রাদি.] জাহিলী যুগে একরাত্রি ইতেকাফ করার মানৎ করেছিলেন। এরপর জারীর ইবনি হাযিম ও মামার সূত্রে আইয়ূব হইতে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ উল্লেখ করেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৪৯]
৪১৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি আবদুর রহমান দারিমী, ইয়াহ্ইয়া ইবনি খালাফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] …. উভয়েই নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- এর সূত্রে ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মানৎ সম্পর্কে এ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর উভয়ের বর্ণিত হাদীসে সকলেই [আরবী] [একদিনের ইতেকাফ] কথাটি বর্ণনা করিয়াছেন।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪১৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৪১৫০]
Leave a Reply