কবীরাহ গুনাহ, শিরক না করা এবং অহংকারের পরিচয়
কবীরাহ গুনাহ এবং এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
৩৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা সর্বোত্তম আমল
৩৭. অধ্যায়ঃ শিরক ঘৃণ্যতম গুনাহ এবং শিরকের পরে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ
৩৮. অধ্যায়ঃ কবীরাহ গুনাহ এবং এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ
৩৯. অধ্যায়ঃ অহংকারের পরিচয় ও তা হারাম হওয়া
৪০.অধ্যায়ঃ শিরক না করা অবস্থায় যার মৃত্যু হয় সে জান্নাতী, মুশরিক অবস্থায় যার মৃত্যু হয় সে জাহান্নামী
৩৬. অধ্যায়ঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা সর্বোত্তম আমল
১৫০. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] কে প্রশ্ন করা হলো, সর্বোত্তম আমাল কোনটি? তিনি বলিলেন, মহিমান্বিত আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা। আবার জিজ্ঞেস করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। প্রশ্ন করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, যে হাজ্জ কবূল হয়। মুহাম্মাদ ইবনি জাফারের রিওয়ায়াতে আছেঃ তিনি বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআ:] এর প্রতি ইমান আনা। মুহাম্মাদ ইবনি রাফি ও আবদ ইবনি হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ….. যুহরী সূত্রেও এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ই.ফা. ১৫১; ই.সে. ১৫৬-১৫৭]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫১. আবু যার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! সর্বোত্তম আমাল কোনটি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। আমি আবার প্রশ্ন করলামঃ কোন ধরণের গোলাম আযাদ করা উত্তম? তিনি বলিলেন, সে গোলাম আযাদ করা উত্তম যে মুনিবের কাছে অধিক প্রিয় এবং অধিক মূল্যমান। আমি আরয করলাম, আমি যদি তা করিতে না পারি। তিনি বলিলেন, তাহলে অন্যের কর্মে সাহায্য করিবে অথবা কর্মহীনের কাজ করে দিবে। আমি আরয করলাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! যদি আমি এমন কোন কাজ করিতে অক্ষম হই? তিনি বলিলেন, তোমার মন্দ আচরণ থেকে লোকদের মুক্ত রাখবে। এ হলো তোমার পক্ষ থেকে তোমার প্রতি সদাকাহ।
[ই.ফা. ১৫২; ই.সে. ১৫৮]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫২. মুহাম্মাদ ইবনি রাফি এবং আবদ ইবনি হুমায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু যার [রাঃআ:]-এর সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] থেকে অবিকল হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তার বর্ণনায় একটু শাব্দিক পার্থক্য রয়েছে, অর্থ একই।
[ই.ফা. ১৫৩; ই.সে. ১৫৯]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৩. আবদুল্লাহ ইবনি মাসুদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে প্রশ্ন করলাম, সর্বোত্তম আমাল কোনটি? তিনি বলিলেন, সময় মত সলাত আদায় করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। তাহাঁর কষ্ট হইবে এ ভেবে অতিরিক্ত থেকে বিরত থাকলাম।
[ই.ফা. ১৫৪; ই.সে. ১৬০]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৪. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর নবি! কোন আমাল জান্নাতের নিক্তবর্তী করে? তিনি বলিলেন, সঠিক ওয়াক্তে সলাত আদায় করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আর কোনটি, হে আল্লাহর নবি [সাঃআ:]? তিনি বলিলেন, মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্বব্যবহার করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আর কোনটি, হে আল্লাহর নবি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা।
[ই.ফা. ১৫৫; ই.সে. ১৬১]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৫. আবদুল্লাহ ইবনি মাসুউদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] কে প্রশ্ন করলাম, আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় আমাল কোনটি? তিনি বলিলেন, সঠিক সময়ে সলাত আদায় করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, পিতা-মাতার প্রতি সদ্বব্যবহার করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন আল্লাহর পথে জিহাদ করা। তিনি আমাকে এ কথাগুলো বলিলেন, যদি আমি আরো প্রশ্ন করতাম তাহলে তিনি আরো অতিরিক্ত বিষয়ে বলিতেন।
[ই.ফা. ১৫৬; ই.সে. ১৬২]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৬. শুবা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন এতে ….. আরবী ….. .. তিনি “আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদের গৃহের দিকে ইশারা করিলেন, কিন্তু আমাদের সম্মুখে তার নাম উল্লেখ করেননি” কথা গুলো বর্ধিত রয়েছে।
[ই.ফা. ১৫৭; ই.সে. ১৬৩]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৭. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেছেন, সঠিক সময়ে সলাত আদায় করা এবং পিতা-মাতার প্রতি সদ্বব্যবহার করা আমালসমূহের মধ্যে বা আমালের মধ্যে সর্বোত্তম আমাল।
[ই.ফা. ১৫৮; ই.সে. ১৬৪]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৭. অধ্যায়ঃ শিরক ঘৃণ্যতম গুনাহ এবং শিরকের পরে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ
১৫৮. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী স্থির করা অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। আমি বললাম, এটা তো বড় গুনাহ বটে। এরপর কোনটি? তিনি বলিলেন, আপন সন্তানকে এ আশঙ্কায় হত্যা করা যে, সে তোমার আহারের সঙ্গী হইবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।
[ই.ফা. ১৫৯; ই.সে. ১৬৫]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৯. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বলিল, ইয়া রসুলুল্লাহ। আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বলিলেন তুমি আল্লাহর জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী সাব্যস্ত করিবে অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। সে বলিল, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, তুমি তোমার সন্তানকে এ আশঙ্কায় হত্যা করিবে যে, সে তোমার আহারে ভাগ বসাবে। সে বলিল, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার লিপ্ত হইবে। এ উক্তির সমর্থনে আল্লাহ তাআলা নাযিল করেন,
وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
“আর তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করিয়াছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে ব্যক্তি এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করিবে” [সূরা আল-ফোরকান ২৫ : ৬৮]
[ই.ফা. ১৬০; ই.সে. ১৬৬]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৮. অধ্যায়ঃ কবীরাহ গুনাহ এবং এর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ
১৬০. আবু বাকরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি বলিলেন, আমি কি তোমাদের কাবীরাহ গুনাহ {৪০} সম্পর্কে বলব না? তিনি এ কথাটি তিনবার বলিলেন। [তারপর বলিলেন, সেগুলো হলো-[১] আল্লাহর সাথে শারীক করা; [২] পিতামাতার অবাধ্য হওয়া; [৩] মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া কিংবা কথা বলা। এ সময় রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং [শেষোক্ত] কথাটি বারবার বলিতে লাগলেন। এমন কি আমরা মনে মনে বলছিলাম, আহা তিনি যদি থামতেন।
[ই.ফা. ১৬১; ই.সে. ১৬৭]
{৪০} কবীরা গুনাহের বর্ণনাঃ ইমাম নাবাবী বলেন, আলিমদের এ ব্যাপারে মতবিরোধ আছে। ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] বলেন, যে জিনিস সম্পর্কে আল্লাহ নিষেধ করছেন, তা কাবীরাহ গুনাহ। আবু ইসহাক ও কাযী আয়ায বলেন, তত্ত্বান্বেষীগণ এটা গ্রহণ করিয়াছেন।
ইবনি আব্বাস [রাঃআ:] হতে বর্ণিত। কাবীরাহ গুনাহ এমন কাজকে বলা হয় যাতে আল্লাহ জাহান্নাম, গোস্বা, অভিসম্পাত আর শাস্তির কথা উল্লেখ করিয়াছেন আর এ জাতীয় শব্দ আরো আছে। তাবিঈ হাসান বাসরী হতে এটাই বর্ণিত হয়েছে। আর কেউ বলেন, যে পাপের দরুন আল্লাহ পরকালে জাহান্নামের ওয়াদা করেন কিংবা ইহকালে শাস্তির কথা।
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬১. আনাস [রাঃআ:]-এর সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] থেকে কাবীরাহ গুনাহ সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ তা হলো আল্লাহর সাথে শারীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কথা বলা।
[ই.ফা. ১৬২; ই.সে. ১৬৮]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] কাবীরাহ গুনাহের বর্ণনা করেন অথবা তাকে কাবীরাহ গুনাহের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়। তখন তিনি, আল্লাহর সাথে শারীক করা, অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া অতঃপর তিনি বলিলেন, আমি কি তোমাদের সবচাইতে বড় গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব না? তিনি বলিলেন, মিথ্যা কথা বলা অথবা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। রাবী শুবাহ বলেন, আমার প্রবল ধারণা যে, কথাটি হলো ….. .. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া।
[ই.ফা. ১৬৩; ই.সে. ১৬৯]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৩. আবু হুরাইরাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ ধ্বংসকারী সাতটি কাজ থেকে তোমরা বেঁচে থেকো। প্রশ্ন করা হলো-হে আল্লাহর রসূল সে গুলো কি? তিনি বললেনঃ [১] আল্লাহর সাথে শারীক করা; [২] যাদু করা; [৩] আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করিয়াছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা; [৪] ইয়াতীমের মাল অন্যায়ভাবে আত্নসাৎ করা; [৫] সুদ খাওয়া; [৬] যুদ্ধক্ষেত্রে থেকে পলায়ন করা এবং [৭] সাধ্বী, সরলমনা ও ইমানদার নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করা।
[ই.ফা. ১৬৪; ই.সে. ১৭০]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৪. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআ:] বলেছেনঃ পিতা-মাতাকে গালি দেয়া কাবীরাহ গুনাহ। সহাবা কিরাম প্রশ্ন করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! কেউ কি তার পিতা-মাতাকে গালি দিতে পারে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। কোন ব্যক্তি অন্যের পিতাকে গালি দেয় প্রত্যত্তরে সেও তার পিতাকে গালি দেয়। কেউ বা অন্যের মাকে গালি দেয় জবাবে সেও তার মাকে গালি দেয়।
[ই.ফা. ১৬৫; ই.সে. ১৭১]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৫. সাঈদ ইবনি ইবরাহীম [রাঃআ:]-এর সূত্রে হইতে বর্ণিতঃ
অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।
[ই.ফা. ১৬৬; ই.সে. ১৭২]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৯. অধ্যায়ঃ অহংকারের পরিচয় ও তা হারাম হওয়া
১৫৮. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী স্থির করা অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। আমি বললাম, এটা তো বড় গুনাহ বটে। এরপর কোনটি? তিনি বলিলেন, আপন সন্তানকে এ আশঙ্কায় হত্যা করা যে, সে তোমার আহারের সঙ্গী হইবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া।
[ই.ফা. ১৫৯; ই.সে. ১৬৫]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৯. আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি বলিল, ইয়া রসুলুল্লাহ। আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বলিলেন তুমি আল্লাহর জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী সাব্যস্ত করিবে অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। সে বলিল, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, তুমি তোমার সন্তানকে এ আশঙ্কায় হত্যা করিবে যে, সে তোমার আহারে ভাগ বসাবে। সে বলিল, তারপর কোনটি? তিনি বলিলেন, তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যভিচার লিপ্ত হইবে। এ উক্তির সমর্থনে আল্লাহ তাআলা নাযিল করেন,
وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
“আর তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করিয়াছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যে ব্যক্তি এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করিবে” [সূরা আল-ফোরকান ২৫ : ৬৮]
[ই.ফা. ১৬০; ই.সে. ১৬৬]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৪০.অধ্যায়ঃ শিরক না করা অবস্থায় যার মৃত্যু হয় সে জান্নাতী, মুশরিক অবস্থায় যার মৃত্যু হয় সে জাহান্নামী
১৬৯. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলেছেন, অন্য বর্ণনায় রসূল [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শারীক করে মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করিবে। আমি বলি, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শারীক না করা অবস্থায় মারা যায় সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে।
[ই.ফা. ১৭০; ই.সে. ১৭৬]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭০. জাবির [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবি [সাঃআ:] এর সামনে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করিল-ইয়া রসুলুল্লাহ! ওয়াজিবকারী [অবশ্যম্ভাবী] দুটো বিষয় কি? তিনি বলিলেন, আল্লাহর সাথে কোন কিছু শারীক না করে যে ব্যক্তি মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শারীক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে যাবে।
[ই.ফা. ১৭১; ই.সে. ১৭৭]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
আমি রসুলুল্লাহ [সাঃআ:]-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকেও শারীক না করে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হইবে সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আর যে ব্যক্তি তাহাঁর সম্মুখে উপস্থিত হইবে এমন অবস্থায় যে, সে আল্লাহর সাথে শারীক স্থির করে, তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করিবে।
[ই.ফা. ১৭২; ই.সে. ১৭৮]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭২. জাবির [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেছেন, যার পরবর্তী অংশ পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ।
[ই.ফা. ১৭৩; ই.সে. ১৭৯]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৩. আবু যার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
নবি [সাঃআ:] বলেন, জিবরীল [আ:] আমার নিকট এসে সুসংবাদ দিলেন যে, আপনার উম্মাতের যে কেউ শিরক না করে মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আমি [আবু যার] বললাম, যদিও সে ব্যভিচার করে এবং যদিও সে চুরি করে। তিনি বলিলেন, যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে।
[ই.ফা. ১৭৪; ই.সে. ১৮০]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৭৪. আবু যার [রাঃআ:] হইতে বর্ণিতঃ
একদা আমি নবি [সাঃআ:]-এর খিদমাতে উপস্থিত হলাম। সে সময় তিনি ঘুমাচ্ছিলেন এবং তাহাঁর গায়ের উপর একখানা চাদর ছিল। আবার এসে তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেলাম। পরে আবার এসে দেখি, তিনি ঘুম থেকে উঠেছেন। আমি তাহাঁর নিকটে বসলাম। তারপর তিনি বলিলেন, যে কোন বান্দা [আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই] বলবে এবং এ বিশ্বাসের উপর মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আমি আরয করলাম, যদি সে ব্যভিচার করে এবং চুরি করে তবুও? রসূল [সাঃআ:] বলিলেন, যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে। এ কথাটি তিন তিনবার পুনরাবৃত্তি করা হলো। চতুর্থবারে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআ:] বলিলেন, যদিও আবু যার-এর নাক ধূলিমলিন হয়, [অর্থাৎ আবু যার-এর অপছন্দ হলেও] রাবী বলেন, আবু যার [রাঃআ:] এ কথা বলিতে বলিতে বের হলেন, যদিও আবু যার-এর নাক ধূলিমলিন হয়।
[ই.ফা. ১৭৫; ই.সে. ১৮১]
হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply