ইকরামুল মুসলেমীন বা মুসলমানের উপকার করা

ইকরামুল মুসলেমীন বা মুসলমানের উপকার করা

একরামুল মুসলেমীন বা মুসলমানের উপকার করা

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَلۡتَكُن مِّنكُمۡ أُمَّةٞ يَدۡعُونَ إِلَى ٱلۡخَيۡرِ وَيَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَيَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِۚ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ

আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।

সুরা আল ইমরান ৩, আয়াত ১০৪

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

كُنتُمۡ خَيۡرَ أُمَّةٍ أُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَأۡمُرُونَ بِٱلۡمَعۡرُوفِوَتَنۡهَوۡنَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَتُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِۗ وَلَوۡ ءَامَنَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَٰبِ لَكَانَ خَيۡرٗا لَّهُمۚ مِّنۡهُمُ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ وَأَكۡثَرُهُمُ ٱلۡفَٰسِقُونَ

কুনতুম খইরা উম্মাতিন উখরি জাত লিন্নাছি, তামুরুনা বিল মা’রুফি ওয়া তানহাওনা আনিল মুনকারি ওয়া তু’মিনু বিল্লাহি ওয়া লাও আমানা আহ্লুল কিতাবি লাকানা খাইরুল্লাহুম মিনহুমুল মু’মিনুনা ওয়া আকছারুমহুমুল ফাছিকুন। তোমরা হলে সর্বোত্তম উম্মত, যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করবে। আর যদি আহলে কিতাব ঈমান আনত, তবে অবশ্যই তা তাদের জন্য কল্যাণকর হত। তাদের কতক ঈমানদার। আর তাদের অধিকাংশই ফাসিক।

সুরা আল ইমরান ৩, আয়াত ১১০

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَذَكِّرۡ فَإِنَّ ٱلذِّكۡرَىٰ تَنفَعُ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ

ওয়া জাক্কির ফা ইন্নাজ জিকরা তানফাউল মু’মিনিন, এবং উপদেশ দিতে থাক, কারণ উপদেশ মুমিনদের উপকারে আসে।

[সুরা যারিয়াত ৫১ আয়াত ৫৫] [ফাজায়েলে তাবলীগ, প্রথম পরিচ্ছেদে, ২ নং এ এই আয়াত টি সংকলন করা হয়েছে]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

لَّا خَيۡرَ فِي كَثِيرٖ مِّن نَّجۡوَىٰهُمۡ إِلَّا مَنۡ أَمَرَ بِصَدَقَةٍ أَوۡ مَعۡرُوفٍ أَوۡ إِصۡلَٰحِۢ بَيۡنَ ٱلنَّاسِۚ وَمَن يَفۡعَلۡ ذَٰلِكَ ٱبۡتِغَآءَ مَرۡضَاتِ ٱللَّهِ فَسَوۡفَ نُؤۡتِيهِ أَجۡرًا عَظِيمٗا

তাদের গোপন পরামর্শের অধিকাংশে কোন কল্যাণ নেই। তবে (কল্যাণ আছে) যে নির্দেশ দেয় সদাকা কিংবা ভালো কাজ অথবা মানুষের মধ্যে মীমাংসার। আর যে তা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করবে তবে অচিরেই আমি তাকে মহাপুরস্কার দান করব।

সুরা নিসা ৪ঃ১১৪

وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَيُطِيعُونَ اللهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ سَيَرْحَمُهُمُ اللهُ إِنَّ اللهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ 

মুমিন পুরুষ ও নারী তারা পরস্পরের বন্ধু শুভাকাঙ্খী। তারা ভালকাজের আদেশ করে এবং মন্দকাজের নিষেধ করে। তারা আল্লাহকে মান্য করে, তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। তারা এমন মানুষ যাদের প্রতি আল্লাহ দয়া করেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়

তওবা ৭১

يَا بُنَيَّ أَقِمِ الصَّلَاةَ وَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ وَانْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَاصْبِرْ عَلَى مَا أَصَابَكَ إِنَّ ذَلِكَ مِنْ عَزْمِ الْأُمُورِ

হে আমার পুত্র! ছালাত কায়েম কর, ভালকাজের আদেশ দাও, মন্দকাজের নিষেধ কর। আর যে বিপদই আসুক না কেন তাতে ধৈর্য ধারণ কর। এ কাজগুলি এমন যাতে খুব বেশী বেশী তাকীদ করা হয়েছে

يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا لِمَ تَقُوْلُوْنَ مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ، كَبُرَ مَقْتًا عِنْدَ اللهِ أَنْ تَقُوْلُوْا مَا لاَ تَفْعَلُوْنَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন কথা কেন বল, যা তোমরা কর না? আল্লাহর নিকট বড় ক্রোধের বিষয় এই যে, তোমরা বল এমন কথা, যা তোমরা কর না 

(ছফ ২-৩)

লোকমান ১৭

فَذَٰلِكَ ٱلَّذِي يَدُعُّ ٱلۡيَتِيمَ ٢

সে-ই ইয়াতীমকে কঠোরভাবে তাড়িয়ে দেয়

وَلَا يَحُضُّ عَلَىٰ طَعَامِ ٱلۡمِسۡكِينِ ٣

আর মিসকীনকে খাদ্যদানে উৎসাহ দেয় না।

﴿یَاْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوْفِ وَیَنْھٰهُمْ عَنِ الْمُنْکَرِ وَیُحِلُّ لَهُمُ الطَّیِّبٰتِ وَیُحَرِّمُ عَلَیْهِمُ الْخَبٰٓئِثَ﴾ۚ

সে তাদের ভাল কাজের নির্দেশ দেয়, মন্দ কাজ হতে নিষেধ করে, তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করে এবং অপবিত্র মন্দ বস্তুসমূহ তোমাদের ওপর হারাম করে। [সূরা আ’রাফ : আয়াত ১৫৭

সুরা মাউন ১০৭ঃ২-৩

وَيَمۡنَعُونَ ٱلۡمَاعُونَ ٧

এবং ছোট-খাট গৃহসামগ্রী দানে নিষেধ করে।

সুরা মাউন ১০৭ঃ৭

عَن أَنَس بْنِ مَالِكٍ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى الله عَلَيه وَسَلَّم قال: من أغاث ملهوفًا كتب الله له ثلاثًا وسبعين مغفرة مغفرة واحدة منها فيها صلاح لأمره كله وثنتان وسبعون إلى يوم القيامة، أو ذخرها له يوم القيامة.

আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত।

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন ব্যথিত ব্যক্তির প্রয়োজন পূর্ণ করে, আল্লাহ তাআলা তার ৭৩টি প্রয়োজন পূর্ণ করেন। একটি দ্বীন ও দুনিয়া সুন্দর করা হিসেবে। আর বাকি ৭২টি আখেরাতের জন্য বাকি থাকবে।

মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৭৪৭০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৭২৬৪, মুসানাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৪২৬৬, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-১৬৪৭১, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২১৩৭৭

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، وَأَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَا: «مَنْ مَشَى فِي حَاجَةِ أَخِيهِ الْمُسْلِمِ أَظَلَّهُ اللَّهُ تَعَالَى بِخَمْسَةٍ وَسَبْعِينَ أَلْفَ مَلَكٍ يَدْعُونَ لَهُ، وَلَمْ يَزَلْ يَخُوضُ فِي الرَّحْمَةِ حَتَّى يَفْرُغَ، فَإِذَا فَرَغَ كَتَبَ اللَّهُ لَهُ حَجَّةً وَعُمْرَةً،

অনুবাদ- হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর ও হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

তারা উভয়ে বলেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন পূর্ণ করার জন্য চলে, তার জন্য পঁচাত্তর হাজার ফেরেশতাকে নিয়োগ করেন, যারা উক্ত ব্যক্তির জন্য দুআ করতে থাকে। আর উক্ত কাজটি সম্পন্ন করা পর্যন্ত তার উপর রহমতের ছায়া থাকে। আর যখন প্রয়োজনটি পূর্ণ করে ফেলে তখন তার জন্য একটি হজ্ব ও উমরার সওয়াব লেখা হয়।

আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৩৯৬, মাকারিমাল আখলাক, হাদীস নং-৯২, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৩৯৬, মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-৩৭৮২, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-১৬৪৭৪, আততারগীব ওয়াত তারহীব, হাদীস নং-৫২৭৪

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ مَشَى فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ خَيْرًا لَهُ مِنَ اعْتِكَافِ عَشْرِ سِنِينَ، وَمَنِ اعْتَكَفَ يَوْمًا ابْتِغَاءَ وَجْهِ اللَّهِ جَعَلَ اللَّهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّارِ ثَلَاثَ خَنَادِقَ، كُلُّ خَنْدَقٍ أَبَعْدُ مِمَّا بَيْنَ الْخافِقَيْنِ»

অনুবাদ- হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত।

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আপন কোন ভাইয়ের কাজের জন্য পায়ে হেঁটে যায়, তার একাজ দশ বছরের এতেকাফ থেকে উত্তম। যে ব্যক্তি একদিনের এতেকাফও আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য করে আল্লাহ তাআলা তার ও জাহান্নামের মাঝে তিন খন্দক আড় করে দেন। প্রতি খন্দক আসমান ও জমিনের দূরত্ব হতে বেশি।

আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৭৩২৬, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৬৭৯, মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৩৭১৬, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৪০১৯, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২৩৯৯৬, আততারগীব ওয়াততারহীব, হাদীস নং-১৬৫০।

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন,

নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘সবচেয়ে উত্তম জিহাদ হচ্ছে, যালিম শাসকের নিকটে হক কথার দাওয়াত দেয়া’ 

(আবুদাউদ, তারগীব হা/৩২৯৯)

জাবির (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘শহীদদের সর্দার হচ্ছেন হামযা ইবনু আবদুল মুত্তালিব এবং সেই ব্যক্তিও শহীদদের সর্দার যে অত্যাচারী নেতার নিকটে গেল এবং তাকে ভাল কাজের আদেশ করল এবং মন্দ কাজের নিষেধ করল। তখন সে তাকে হত্যা করল’ (তিরমিযী, তারগীব হা/৩৩০২)

হুযায়ফা (রাঃ) বলেন,

নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার আত্মা রয়েছে! অবশ্যই তোমরা ভালকাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজের নিষেধ করবে নইলে অচিরেই আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে শাস্তি প্রেরণ করবেন, তখন তোমরা তাঁর নিকট প্রার্থনা করবে, কিন্তু আল্লাহ তোমাদের প্রার্থনা কবুল করবেন না’ 

(তিরমিযী, তারগীব হা/৩৩০৭)

জারীর (রাঃ) বলেন,

নবী করীম (ছাঃ) বলেন, দ্বীন হচ্ছে উপদেশ প্রদানের নাম। কথাটি তিনি তিনবার বললেন। জারীর (রাঃ) বলেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এ উপদেশ কার জন্য হবে? তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর রাসূলের জন্য, মুসলিম নেতাদের জন্য ও সাধারণ মুসলমানদের জন্য’ 

(বুখারী, তারগীব হা/৩৩১০)

জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন,

আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যখন কোন মানুষ কোন সম্প্রদায়ের মাঝে পাপের কাজ করে। এ সময় তারা বাধা প্রদান করবে না, তাহলে আল্লাহ তাদের মরণের পূর্বে তাদের সকলের উপর বিপদ চাপিয়ে দিবেন’ 

(আবুদাউদ, তারগীব হা/৩৩১২)

আবু বকর ছিদ্দীক (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যখন কোন সম্প্রদায় শরী‘আত বিরোধী কোন কাজ দেখবে এবং তা হতে বাধা প্রদান করবে না, তখন আল্লাহ তাদের সকলকে শাস্তি প্রদান করেন’ (আবুদাউদ, তারগীব হা/৩৩১৩)

আবু সাঈদ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের যে কোন ব্যক্তি যে কোন অন্যায় কাজ দেখবে সে যেন তা বল প্রয়োগে বাধা প্রদান করে। এভাবে সম্ভব না হলে মুখে বাধা প্রদান করবে। সম্ভব না হলে সে অন্যায়কে ঘৃণা করবে। আর অন্তরে ঘৃণা করে বাধা প্রদান করা কাজটি সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচয়’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৩৭)

নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘অন্যায়কারী ও অন্যায় দেখে যে ব্যক্তি বাধা প্রদান করে না এমন ব্যক্তিদ্বয়ের উদাহরণ হচ্ছে এক সম্প্রদায়ের মত। যে সম্প্রদায় একটি নৌকায় আরোহনের জন্য লটারী করেছে। এতে তাদের কিছু হয়েছে উপর তলার যাত্রী এবং কিছু হয়েছে নীচ তলার। নীচ তলার লোকেরা উপর তলায় পানি আনতে যায়। এতে উপর তলার লোকের কষ্ট হয়। তখন নীচ তলার লোকেরা কুড়াল দিয়ে পানি বের করার জন্য নৌকার তলা ছিদ্র করতে উদ্ধত হয়। তার পর উপর তলার লোক এসে বলে, তোমাদের কি হয়েছে, তোমরা এমন করছ কেন? তখন তারা বলল, আমরা নীচ তলা থেকে পানি আনতে গেলে তোমাদের কষ্ট হয়। আবার আমাদের পানিরও খুব দরকার। (এ কারণে নৌকার তলা ছিদ্র করে পানি বের করব।) উপরের লোকেরা যদি তাদের কুড়ালটি নিয়ে নেয় এবং তাদেরকে একাজ থেকে বারণ করে তাহলে তারা তাদেরকে বাঁচাবে এবং নিজেদেরকেও বাঁচাবে। আর তাদেরকে ছেড়ে দেয়, বাধা না দেয়, তাহলে তাদেরকে ডুবিয়ে ধ্বংস করবে এবং নিজেদেরকেও ধ্বংস করবে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১৩৮)। এ হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, যারা অন্যায় করে এবং যারা অন্যায় দেখে বাধা দেয় না, তারা উভয়ই পাপী। তাদের উভয়ের অপরাধ সমান।

উসামা ইবনু যায়েদ বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ক্বিয়ামতের দিন এক ব্যক্তিকে আনা হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তখন আগুনে পুড়ে তার নাড়িভুড়ি বের হয়ে যাবে। এসময় সে ঘুরতে থাকবে, যেমন গাধা তার চাকা নিয়ে তার চার পার্শ্বে ঘুরতে থাকে। তখন জাহান্নামবাসীরা তার নিকট একত্রিত হয়ে তাকে বলবে হে অমুক ব্যক্তি! তোমার এ অবস্থা কেন? তুমি না আমাদেরকে ভালকাজের আদেশ করতে আর অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করতে? সে বলবে, আমি তোমাদেরকে ভালকাজের আদেশ করতাম বটে, কিন্তু আমি তা করতাম না। আর আমি তোমাদেরকে অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করতাম অথচ আমিই তা করতাম’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১৩৯)

আনাস ইবনু মালিক বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে রাতে আমাকে মি‘রাজে নিয়ে যাওয়া হল, সে রাতে কতগুলি লোককে দেখলাম, যাদের ঠোট আগুনের কাঁচি দ্বারা কেটে দেয়া হচ্ছে। আমি বললাম, হে জিবরাঈল! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা আপনার উম্মতের বক্তা, যারা মানুষকে ভাল কাজের আদেশ করত, কিন্তু নিজেরা আমল করত না। তারা কুরআন তেলাওয়াত করত, তারা কুরআন চর্চা করত না’ (ইবনু হিববান, তারগীব, হা/৩৩২৮)

জুনদুব ইবনু আব্দুল্লাহ আযদী বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সে ব্যক্তি উদাহরণ যে ব্যক্তি মানুষকে কল্যাণের দাওয়াত দেয়, নিজে আমল করে না। সে সেই মোমবাতির মত, যে মোমবাতির মত। যে মোমবাতি মানুষকে আলো দেয় এবং নিজেকে জ্বালিয়ে দেয়’ (তাবারানী, তারগীব, হা/৩৩৩১)

ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমার অবর্তমানে তোমাদের উপর যেটা সবচেয়ে বেশী ভয় করি, তা হচ্ছে সেই সব লোক যারা মুখে জ্ঞানী, মুনাফেক’ (তাবারানী, তারগীব হা/৩৩৩২)

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের কোন ব্যক্তি অন্যের চোখে ক্ষুদ্র-কুটা দেখতে পায়, কিন্তু নিজের চোখে গাছের শিকড়, বড় কাঠ খন্ড দেখতে পায় না (তাবারানী, তারগীব হা/৩৩৩৬)


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply