হায়িয, ইসতিহাযাহ, বীর্যপাত ও অপবিত্রতার গোসল

হায়িয, ইসতিহাযাহ ও অপবিত্রতার গোসল এর বিবরণ

অপবিত্রতার গোসল এর বিবরণ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

৯. অধ্যায়ঃ অপবিত্রতার গোসলের বিবরণ
১০. অধ্যায়ঃ অপবিত্রতার গোসলে কতটুকু পরিমাণ পানি ব্যবহার মুস্তাহাব, পুরুষ এবং মেয়েলোক একই অবস্থায় একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করা এবং তাদের উভয়ের মধ্যে একজনের অবশিষ্ট পানি দিয়ে অপরজনের গোসল করার বর্ণনা।
১১. অধ্যায়ঃ মাথা এবং কতিপয় অঙ্গে [গোসলের সময়] তিনবার পানি ঢেলে দেয়া মুস্তাহাব
১২. অধ্যায়ঃ গোসলকারিনীর [অপবিত্রতার] মাথার বেনীর হুকুম
১৩. অধ্যায়ঃ হায়িয থেকে গোসলকারিনীর জন্যে রক্তের স্থানে [লজ্জাস্থানে] সুগন্ধযুক্ত কাপড়ের টুকরা বা তুলা ব্যবহার করা মুস্তাহাব
১৪. অধ্যায়ঃ ইসতিহাযাহ {৮৯} বা রক্তপ্রদর রোগগ্রস্ত মহিলার গোসল ও তার নামাজ প্রসঙ্গ
১৫. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী মহিলার উপর সওম কায়া করা জরুরী, নামাজ নয়
১৬. অধ্যায়ঃ গোসল করার সময় কাপড় কিংবা অনুরূপ কিছু দিয়ে পর্দা করে নেবে
১৭. অধ্যায়ঃ লজ্জাস্থানের দিকে তাকানো হারাম
১৮. অধ্যায়ঃ নির্জনে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়িয
১৯. অধ্যায়ঃ লজ্জাস্থান ঢাকার ব্যাপারে বিশেষভাবে সাবধানতা অবলম্বনের বর্ণনা
২০. অধ্যায়ঃ প্রসাবের ও পায়খানার সময় পর্দা করা
২১. অধ্যায়ঃ একমাত্র বীর্যপাত থেকে গোসল ফার্‌য করণ {৯৪}
২২. অধ্যায়ঃ কেবল বীর্যপাত হলেই গোসল করিতে হইবে, এ হুকুম রহিতকরণ

৯. অধ্যায়ঃ অপবিত্রতার গোসল এর বিবরণ

৬০৫. আয়েশাহ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যখন অপবিত্রতা থেকে গোসল করিতেন তখন প্রথমে দুই হাত ধুতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে বাম হাতে পানি ঢেলে লজ্জাস্থান ধুতেন। তারা নামাজের ওযূর মত ওযূ করিতেন। তারপর পানি নিয়ে তাহাঁর আঙ্গুলগুলো চুলের গোড়ায় ঢুকাতেন। এমনিভাবে যখন মনে করিতেন যে, চুল ভিজে গেছে তখন মাথায় তিন আজল [দুই হাতের তালু ভরা] পানি ঢালতেন। তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিতেন। তারপর তাহাঁর উভয় পা ধুয়ে ফেলতেন। {৮২}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬২৫]

{৮২} অপবিত্রতার গোসল: এমনভাবে করিবে যাতে শরীরের কোন জায়গা শুষ্ক না থাকে, যেমন দাড়ি মাথার চুল খিলাল করিবে, বগল নাভি ও নিম্নাঙ্গের খবর রাখবে, পায়ের আঙ্গুলের খিলাল করিবে। উত্তম হলো, ডান দিক থেকে আরম্ভ করা ও পশ্চিম দিকে মুখ করে গোসল করা। গোসল সমাধা করে ওযূর দুআ পড়ে নিবে। তাতে নামাজ আদায় করা যাবে ওযূর ভঙ্গের কারণ না পেলে।

৬০৬. হিশাম হইতে বর্ণীতঃ

অবিকল সানাদে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত আছে। তবে তাদের হাদীসে পা ধোয়ার কথা উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১০, ইসলামিক সেন্টার- ৬২৬]

৬০৭. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] অপবিত্রতা থেকে গোসলের সময় প্রথমে তাহাঁর উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধুতেন। এরপর আবু মুআবিয়ার হাদীসের অবিকল উল্লেখ করেন কিন্তু তিনি উভয় পা ধোয়ার কথা উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১১, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৬০৮. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলূল্লাহ্ [সাঃআঃ] যখন অপিবত্রতা থেকে গোসল করিতেন তখন পাত্রে হাত ঢুকানোর আগে প্রথমেই তাহাঁর দুই হাত ধুতেন, তারপর নামাজের ওযূর মত ওযূ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১২, ইসলামিক সেন্টার- ৬২৭]

৬০৯. আবুদল্লাহ্ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, আমার খালা মাইমুনাহ্ আমাকে বলেছেন, আমি রসূলূল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর অপবিত্রতার গোসলের জন্যে পানির পাত্র এগিয়ে দিতাম। তিনি প্রথমে দুহাতের কব্জি পর্যন্ত দুবার অথবা তিনবার ধুয়ে নিলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে বাম হাতে লজ্জাস্থান ধুয়ে পরিষ্কার করিলেন। পরে বাম হাতখানা মাটিতে খুব করে রগড়ালেন, এরপর ধুয়ে নিলেন। অতঃপর উক্তস্থান থেকে সরে গিয়ে পা দুখানা ধুলেন। অতঃপর আমি তাহাঁর শরীর মোছার জন্যে কাপড় বা রুমাল নিয়ে আসলে তিনি তা ব্যবহার না করে বরং ফেরত দিলেন। {৮৩}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬২৮]

{৮৩} অপবিত্র গোসলের পর রুমাল ব্যবহার করা যাবে কিনা, সহাবাগণের তিনটি মত দেখা যায়। [১] ওযূ গোসল করে রুমাল বা কাপড় ব্যবহার করা যাবে, দোষ নেই। যেমন আনাস বিন মালিক [রাদি.] বলেন। [২] ওযূ ও গোসল করে কাপড় বা রুমাল ব্যবহার করা যাবেনা। যেমন ইবনি উমর [রাদি.] বলেন : [৩] ওযূতে রুমাল বা কাপড় ব্যবহার করা যাবে না, গোসলে ব্যবহার করা যাবে। যেমন ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন। রসূলূল্লাহ্ [সাঃআঃ] থেকে নিখুঁতভাবে বিধান উল্লেখ নেই যে, প্রয়োজনবোধে উভয়ই রুমাল বা কাপড় ব্যবহার করা যাবে।

৬১০. মুহাম্মাদ ইবনি সাব্বাহ্, আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্, আবু কুরায়ব, আল আশাজ্জ ও ইসহাক্ প্রত্যেকেই ওয়াকী হইতে এবং ইয়াহইয়া ইবনি ইয়াহইয়া ও আবু কুরায়ব আবু মুআবিয়াহ্ হইতে উভয়ে আমাশ হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদের হাদীসটি বর্ণনা করেন। তবে তাদের উভয়ের হাদীসে তিন আঁজলা পানি মাথায় ঢেলে দেয়ার কথা নেই। আর ওয়াকী-এর হাদীসে ওযূর পূর্ণ বর্ণনা দেয়া হয়েছে। অতঃপর তিনি কুলি করা এবং নাকে পানি দেয়ার কথা তার হাদীসে বর্ণনা করিয়াছেন। আবু মুআবিয়ার হাদীসে রুমালের কথা উল্লেখ নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬২৯]

৬১১. মাইমুনাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কে রুমাল দেয়া হল, কিন্তু তিনি তা স্পর্শ করিলেন না। তিনি পানি নিয়ে এরূপ করছিলেন অর্থাৎ পানি ঝেড়ে ফেলেছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩০]

৬১২. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যখন অপবিত্রতা থেকে গোসল করিতেন তখন হিলাব-এর [দুধ দোহন করার পাত্রের] মতো একটি পানির পাত্র চেয়ে নিতেন। অতঃপর এক হাত দিয়ে পানি নিয়ে প্রথমে মাথার ডান দিকে ধুয়ে ফেলতেন তারপর বাম দিক ধুতেন, তারপর উভয় হাত দিয়ে পানি নিয়ে মাথায় ঢেলে দিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩১]

১০. অধ্যায়ঃ অপবিত্রতা র গোসলে কতটুকু পরিমাণ পানি ব্যবহার মুস্তাহাব, পুরুষ এবং মেয়েলোক একই অবস্থায় একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে গোসল করা এবং তাদের উভয়ের মধ্যে একজনের অবশিষ্ট পানি দিয়ে অপরজনের গোসল করার বর্ণনা।

৬১৩. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এক ফারাক্ [সাড়ে সাত কেজি] পরিমাণ পাত্রের পানি দিয়ে অপবিত্রতার গোসল করিতেন। {৮৪}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩২]

{৮৪} ঈমাম নাবাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন : ওযূ এবং গোসলের জন্য পানির পরিমাণ নির্ধারিত নেই। কারণ কোন রিওয়ায়াতে গোসলের জন্য এক ফারাক [সাড়ে সাত কেজি] কোন রিওয়ায়াতের তিন মুদ। কাযী আয়ায [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ রিওয়ায়াতের মুদের অর্থ সা [আড়াই কেজি] তা হলে উভয় রিওয়ায়াতের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় থাকে। অপর এক রিওয়ায়াতে বর্ণিত হচ্ছে যে, আয়েশাহ[রাদি.] এক সা পানি দ্বারা গোসল করিয়াছেন। অপর এক রিওয়ায়াতে পাঁচ মাককুফ গোসলের জন্য আর ওযূর জন্য এক মাককুফ, এ রিওয়ায়াতে মাককুফের দ্বারা মুদ উদ্দেশ্য করা হয়েছে আর মুদের পরিমাণ ১১ ছটাক। অন্য এক রিওয়ায়াতে গোসলের জন্য সা এবং ওযূর জন্য এক মুদের বর্ণনা করিয়াছেন। অন্য আর এক রিওয়ায়াতে ওযূর জন্য এক মুদ এবং গোসলের জন্য এক সা থেকে পাঁচ মুদ পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন। সুতরাং ঈমাম শাফিঈ এবং অন্যান উলামায়ি কিরাম বলেন, রিওয়ায়াতেরর এ মতপার্থক্যের দ্বারা বুঝা যায় যে, স্থান, কাল, পাত্র কিংবা অবস্থা ভেদে পানি কিছুটা কম-বেশি হইতে পারে। তবে শর্ত হচ্ছে যাতে ওযূর অঙ্গসমূহ এবং গোসলের জন্য শরীরের কোন স্থানে শুকনা না থাকে ভালভাবে ভিজে যায় বরং একটি পশমের গোড়াও যেন শুকনা না থাকে কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা সমীচীন নয়। এমন কি নদীর কিনারায় বসে ওযূ কিংবা গোসল করলেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা যাবে না। [নাবাবী]

৬১৪. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এক ফারাক পরিমাণ পানি দিয়ে গোসল করিতেন। অনেক সময় আমি এবং তিনি একই পাত্রে গোসল করতাম।

সুফইয়ানের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে “একই পাত্র থেকে”।

কুতাইবাহ বলেন, সুফইয়ান বলেছেন, ফারাক্ হল তিন সা পরিমাণ। {৮৫}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৩]

৮৫. ঈমাম নাবাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন: স্বামী এবং স্ত্রীর পবিত্রতার গোসল এক সঙ্গে একই পাত্রে জায়িয। এ ব্যাপারে মুসলিমদের … ঐকমত্য হয়েছে। অনুরূপভাবে পুরুষের ব্যবহারকৃত পানি হইতে উদ্ধৃত পানি দ্বারা মহিলাদের গোসল জায়িয। এ বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে। উক্ত মহিলার ব্যবহারকৃত পানি হইতে উদ্ধৃত পানি দ্বারা পুরুষের জন্য পবিত্রতা অর্জন করা সম্পর্কে কিছুটা মতানৈক্য থাকলেও সহীহ হাদীসের দ্বারা জায়িয প্রমানিত হয়েছে, তবে মহিলাদেরকে একটু সতর্কতার সাথে পানি ব্যবহার করা উচিত যাতে শরীরের ব্যবহারকৃত পানি পুনরায় পাত্রে পতিত না হয় কেননা শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধোয়া পানি ব্যবহার জায়িয নয়। [নাবাবী]

৬১৫. আবু সালামাহ ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং আয়েশাহ[রাদি.] এর দুধ ভাই একবার তাহাঁর কাছে গেলাম। অতঃপর তাহাঁর দুধ ভাই তাঁকে রসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর অপবিত্রতার গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি একটি পাত্র আনালেন যা ছিল এক সা পরিমাণ। তারপর তিনি গোসল করিলেন। আমাদের এবং তাহাঁর মধ্যে পর্দা ছিল। তিনি তাহাঁর মাথায় তিনবার পানি ঢাললেন। আবু সালামা বলেন, রসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর স্ত্রীগণ মাথার চুল কেটে রাখতেন তা ওয়াফরা-এর ন্যায় হয়ে যেত [ঘার বরাবর লম্বা চুলই ওয়াফরা]। {৮৬}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৪]

{৮৬} [ওয়াফরা] ঐ চুলকে বলা হয় যা কাঁধ পর্যন্ত লম্বা থাকে। কাযী আয়ায বলেন, আরবের মেয়েরা মাথার চুল বেনী গেঁথে রাখতো। সুতরাং রসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর স্ত্রীগণ তাহাঁর [সাঃআঃ] এর মৃত্যুর পর সম্ভবত এরূপ করিতেন সৌন্দর্য বর্জন করার জন্য। ঈমাম নাবাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, কাযী আয়াযের মতো অন্যান্য উলামায়ে কিরামও বলেছেন। রসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর জীবদ্দশায় তাঁরা এরূপ করিয়াছেন বলে ধারণা করা যায় না।

৬১৬. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যখন গোসল করিতেন তখন ডানদিক থেকে শুরু করিতেন। তিনি প্রথমেই ডান হাতে পানি ঢেলে তা ধুয়ে ফেলতেন। তারপর ডান হাত দিয়ে শরীরের যেখানে নাপাকী থাকত সেখানে পানি ঢেলে দিতেন এবং বাম হাত দিয়ে তা ধুয়ে ফেলতেন। এটা শেষ করে তিনি মাথায় পানি ঢালতেন।

আয়েশাহ [রাদি.] বলেন, আমি এবং রসুলূল্লাহ্ [সাঃআঃ] উভয়েই অপবিত্র অবস্থায় একই পাত্র থেকে [পানি নিয়ে] গোসল করতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৫]

৬১৭. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, তিনি এবং নবী [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে গোসল করিতেন যাতে তিন মুদ্‌ বা তার সম পরিমান পানি ধরত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৬]

৬১৮. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে [পানি নিয়ে] গোসল করতাম। আমাদের দুজনের হাত ভিন্ন ভিন্ন ভাবে তাতে লাগত। এ গোসল ছিল অপবিত্রতা থেকে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৮]

৬১৯. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্র থেকে গোসল করতাম যা আমার এবং তাহাঁর মাঝখানে থাকত। তিনি আমার থেকে আগে তাড়াতাড়ি করে ফেলতেন। তখন আমি বলতাম, আমার জন্য একটু রেখে দিন, আমার জন্য একটু রেখে দিন। তিনি {আয়েশাহহ [রাদি.]} বলেন যে তারা উভয়েই অপবিত্র ছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৭]

৬২০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মাইমুনাহ্‌ [রাদি.] আমাকে বলেন যে, তিনি ও রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্রে গোসল করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৩৯]

৬২১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাইমুনাহ্‌ [রাদি.] এর উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে গোসল করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪০]

৬২২. উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, তিনি এবং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্রে অপবিত্রতার গোসল করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪১]

৬২৩. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] পাঁচ মাক্‌কুক পানি দিয়ে গোসল করিতেন এবং এক মাক্‌কুক পানি দিয়ে ওযূ করিতেন। আর ইবনি আল মুসান্না বলেছেন: পাঁচ মাক্‌কুক দিয়ে গোসল করিতেন এবং বর্ণনাকারীদের মধ্যে ইবনি মুআয আবদুল্লাহ ইবনি আবদুল্লাহ থেকে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি ইবনি জাব্‌র শব্দটি উল্লেখ করেননি। [মাক্‌কুক ও মুদ্‌ পৌনে এগার ছটাক পরিমাণ এবং এক সা দুসের এগার ছটাক পরিমাণ।]

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪২]

৬২৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক মুদ্‌ পানি দিয়ে ওযূ করিতেন এবং এক সা থেকে পাঁচ মুদ্‌ পর্যন্ত পানি দিয়ে গোসল করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৩]

৬২৫. সাফীনাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক সা পানিতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর অপবিত্রতার গোসল সম্পন্ন হয়ে যেত এবং এক মুদ্‌ পানিতে ওযূ হয়ে যেত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৪]

৬২৬. সাফীনাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাহাবা আবু বকর [রাদি.] বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক সা পানি দিয়ে গোসল এবং এক মুদ্‌ পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন [ওযূ]করিতেন। আর ইবনি হুজ্‌র তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে বা তিনি বলেছেন, এক মুদ্‌ পানি তাঁকে অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করিতেন। তিনি [আবু রাইহানাহ্‌] বলেন, সাফীনাহ্‌ অত্যন্ত বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাই আমি তাহাঁর বর্ণিত হাদীসের উপর নির্ভর করিতে পারি না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৫]

১১. অধ্যায়ঃ মাথা এবং কতিপয় অঙ্গে [গোসলের সময়] তিনবার পানি ঢেলে দেয়া মুস্তাহাব

৬২৭. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সম্মুখে লোকেরা গোসল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু করিল। কেউ কেউ বলিল, আমি তো এ পরিমাণ পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে থাকি। তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি তো আমার মাথায় তিন কোষ পানি ঢেলে থাকি। {৮৭}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৬]

{৮৭} ঈমাম নাবাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, পবিত্রতার গোসলের সময় মাথায় তিনবার পানি ঢেলে দেয়া মুস্তাহাব। যেমন ওযূর অঙ্গসমূহ তিনবার করে ধৌত করা মুস্তাহাব।]

৬২৮. জুবায়র ইবনি মুতইম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে একবার অপবিত্রতা থেকে গোসলের আলোচনা করা হলে তিনি বলিলেন, আমি তো আমার মাথায় তিন বার পানি ঢেলে দেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৭]

৬২৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[তিনি বলেছেন] সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দল এসে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলঃ আমাদের এলাকাটি অত্যন্ত শীতপ্রধান, সেখানে আমরা [অপবিত্রতার] গোসল কীভাবে করব? তিনি বলিলেন, আমি তো আমার মাথায় তিন বার পানি ঢেলে থাকি।

ইবনি সালিম হুশায়ম ও আবু বিশর্‌ এর মাধ্যমে তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দল এসে হে আল্লাহর রাসুল বলে সম্বোধন করেছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৮]

৬৩০. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

[তিনি বলেছেন] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] অপবিত্রতার গোসল করার সময় মাথায় তিন আঁজলা পানি ঢালতেন। হাসান ইবনি মুহাম্মাদ তাঁকে [জাবিরকে] বলিলেন, আমার মাথায় তো চুল অনেক [কাজেই এটুকু পানি তো আমার জন্য যথেষ্ট নয়] জবাবে জাবির বলিলেন, ভাতিজা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মাথায় চুল তোমার চেয়ে অনেক বেশি এবং উত্তম ও পরিচ্ছন্ন ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৪৯]

১২. অধ্যায়ঃ গোসলকারিনীর [অপবিত্রতার] মাথার বেনীর হুকুম

৬৩১. উম্মু সালামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি তো মাথায় চুলের বেনী গেঁথে থাকি। সুতরাং অপবিত্রতার গোসলের সময় কি আমি তা খুলব? তিনি বলিলেন, না। বরং তোমার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, তুমি মাথার ওপর তিন আঁজলা পানি ঢেলে দিবে। অতঃপর সারা শরীরে পানি ঢেলে দিয়ে পবিত্র হয়ে যাবে। {৮৮}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫০]

{৮৮} উম্মু সালামাহ্‌ ও আয়েশাহ[রাদি.] বর্ণিত হাদীস দ্বারা বুঝা গেল যে, মহিলাদের পবিত্রতার গোসলের সময় মাথার চুলের বেনী খোলা জরুরি নয়

৬৩২. আম্‌র আন্‌ নাকিদ ও আব্‌দ ইবনি হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে উক্ত হাদীসটি বর্ণিত আছে। আব্‌দুর রায্‌যাকের হাদীসে রয়েছে যে, “আমি কি তা হায়িয ও অপবিত্রতা থেকে গোসলের জন্যে খুলবো? তিনি বলিলেন, না”।এরপর ইবনি উয়াইনার [উপরোক্ত] হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫১]

৬৩৩. আহমাদ ইবনি সাঈদ আদ্‌ দারিমী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সূত্রে আইয়ূব ইবনি মূসা [রাদি.] হইতে এ সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

সেখানে উল্লেখ আছে যে, “আমি কি তা খুলে অপবিত্রতা থেকে গোসল করব?” সেখানে তিনি হায়িযের কথা উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫২]

৬৩৪. উবায়দ ইবনি উমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, আয়েশাহ[রাদি.] এর নিকটে খবর পৌঁছিল যে, আবদুল্লাহ ইবনি আম্‌র স্ত্রীলোকদেরকে গোসলের সময় তাদের মাথার চুল [বেনী] খোলার আদেশ দিয়ে থাকেন। এ কথা জানার পর আয়েশাহ[রাদি.] বলেন, আশ্চর্য লাগে ইবনি আম্‌র [রাদি.] এর মত লোক মেয়েদেরকে গোসলের সময় মাথার চুল খোলার আদেশ করেন। তাহলে তো তিনি তাদেরকে মাথার চুল মুড়ে ফেলার আদেশ দিতে পারেন। অথচ আমি এবং রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক সাথে একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে অপবিত্রতার গোসল করেছি। এ সময় আমি আমার মাথায় তিন কোষ [দুই হাতের তালুর] অধিক পানি ঢালিনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩]

১৩. অধ্যায়ঃ হায়িজ থেকে গোসলকারিনীর জন্যে রক্তের স্থানে [লজ্জাস্থানে] সুগন্ধযুক্ত কাপড়ের টুকরা বা তুলা ব্যবহার করা মুস্তাহাব

৬৩৫. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক মহিলা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করিল যে, কিভাবে সে তাহাঁর হায়িজ থেকে গোসল করিবে? হাদীসের রাবী বলেন, আয়েশাহ[রাদি.] উল্লেখ করেন যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভদ্রমহিলাকে সে কিভাবে গোসল করিবে, তা শিখিয়ে দিলেন তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা ব্যবহার করিবে এবং তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। সে বলিল, এ সুগন্ধযুক্ত কাপড় দ্বারা আমি কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করব? তিনি বলিলেন, তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। তিনি বলিলেন, সুবহানাল্লাহ্‌! [এত সোজা কথাও বুঝ না]। এরপর তিনি [মুখ] সরিয়ে নিলেন। [রাবী বলেন] সুফ্‌ইয়ান ইবনি উয়াইনাহ্‌ নিজ মুখের উপর হাত দিয়ে আমাদেরকে ইশারা করে দেখালেন। আয়েশাহ[রাদি.] বলেন, আমি তাঁকে আমার দিকে টেনে আনলাম। আর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি বুঝাতে চাচ্ছেন তা আমি বুঝে ফেললাম। অতঃপর আমি মহিলাটিকে বললাম, তুমি তা [সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা] রক্তের স্থানে [লজ্জাস্থানে] বুলিয়ে নিবে। ইবনি উমর তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, তিনি বলেনঃ আমি বললাম, রক্তের স্থানে সুগন্ধযুক্ত কাপড়টি বুলিয়ে দিন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪]

৬৩৬. আয়েশাহ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক মহিলা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করিল যে, আমি তুহ্‌র এর [ হায়িজ  থেকে পবিত্রতার] সময় কিভাবে গোসল করব? তিনি বলিলেন, এক টুকরো সুগন্ধযুক্ত কাপড় বা তুলা নিবে তারপর তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। এরপর সুফ্‌ইয়ানের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৫]

৬৩৭. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা আসমা [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – কাছে হায়িজ এর গোসল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। তিনি বলিলেন, তোমাদের কেউ পানি এবং বরইয়ের পাতা নিয়ে সুন্দর ভাবে পবিত্রতা অর্জন করিবে। তারপর মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে দিয়ে ভালভাবে নাড়াচড়া করিবে যাতে পানি সমস্ত চুলের গোড়া পর্যন্ত পৌঁছে যায়। তারপর তার উপর পানি ঢেলে দিবে। তারপর সুগন্ধযুক্ত কাপড় নিয়ে তার দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করিবে। আসমা বলিল, তা দিয়ে সে কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করিবে। অতঃপর আয়িশা [রাদি.] তাকে যেন চুপি চুপি বলে দিলেন, রক্ত বের হবার জায়গায় তা বুলিয়ে দিবে। সে অপবিত্রতার গোসল সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করিল। তিনি বলিলেন, পানি নিয়ে তার দ্বারা সুন্দরভাবে পবিত্রতা অর্জন করিবে। তার মাথায় পানি ঢেলে দিয়ে ভাল করে নাড়াচড়া করিবে যাতে চুলের গোঁড়ায় পানি পৌঁছে যায়। তারপর সমস্ত শরীরে পানি ঢেলে দিবে। আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, আনসারদের মহিলারা কত ভাল ! লজ্জা তাদেরকে দীন-এর জ্ঞান থেকে ফিরিয়ে রাখে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৬]

৬৩৮. শুবাহ্‌ হইতে বর্ণীতঃ

অবিকল বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! তা দ্বারা পবিত্রতা লাভ করিবে। অতঃপর তিনি আড়াল করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৭]

৬৩৯. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আসমা বিনতু শাকাল রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, ইয়া রসুলুল্লাহ! আমাদের কেউ যখন হায়িয থেকে পবিত্র হইবে তখন সে কিভাবে গোসল করিবে? এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তবে হাদীসটির মধ্যে অপবিত্রতার গোসলের কথা উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৮]

১৪. অধ্যায়ঃ ইসতিহাযাহ {৮৯} বা রক্তপ্রদর রোগগ্রস্ত মহিলার গোসল ও তার নামাজ প্রসঙ্গ

{৮৯} ইসতিহাযাহ্‌ বলা হয় ঐ রক্তকে যা হায়িজ ও নিফাসের নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত মহিলাদের লজ্জাস্থান দিয়ে রক্ত বের হয় । এ রক্ত একটি রগ থেকে বের হয়ে থাকে যাকে আদিল বলা হয় । আর হায়িযের রক্ত জরায়ুর ভিতর থেকে বের হয় । ইসতিহাযার রক্ত সাধারনত লাল কিংবা হলদে অথবা মেটে রং হয় এবং হায়িযের রক্ত স্বভাবত কালচে রং হয় । সুতরাং রক্তের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখলে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝা যায় ।

ইসতিহাযাহ রোগাক্রান্ত মহিলা সুস্থ মহিলার মত নামাজ, সওম, ইতিকাফ, কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত সহ যাবতীয় ইবাদত বন্দেগী করিতে পারবে । তবে প্রত্যেক ওয়াক্তের সলাতে প্রারম্ভে ওযূ করে নিবে । আর যখন নামাজ আদায় করার নিয়্যাত করিবে তখন লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে এবং উক্তস্থানে এক টুকরো কাপড়, তুলা লাগিয়ে রাখবে । [নাবাবী]

৬৪০. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

ফাতিমাহ্‌ বিনতু আবু হুরায়শ নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহর রসুল! আমি একজন ইসতিহাযাহ্‌ বা রক্তপ্রদর রোগগ্রস্ত নারী। কখনো এ রোগ থেকে মুক্ত হই না। তাই আমি এ নামাজ আদায় করা কি ছেড়ে দিব? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ না , তুমি নামাজ আদায় ছাড়বেনা। কেননা, এ হায়িয না বরং একটি শিরা নিঃসৃত রক্ত। তাই যখন হায়িয দেখা দিবে তখন শুধু নামাজ আদায় করিবেনা। আর যখন হায়িয ভাল হয়ে যাবে তখন রক্ত ধুয়ে ফেলে গোসল করে পবিত্র হয়ে নামাজ আদায় করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৯]

{৮৯} ইসতিহাযাহ্‌ বলা হয় ঐ রক্তকে যা হায়িজ ও নিফাসের নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত মহিলাদের লজ্জাস্থান দিয়ে রক্ত বের হয় । এ রক্ত একটি রগ থেকে বের হয়ে থাকে যাকে আদিল বলা হয় । আর হায়িযের রক্ত জরায়ুর ভিতর থেকে বের হয় । ইসতিহাযার রক্ত সাধারনত লাল কিংবা হলদে অথবা মেটে রং হয় এবং হায়িযের রক্ত স্বভাবত কালচে রং হয় । সুতরাং রক্তের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখলে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বুঝা যায় ।

ইসতিহাযাহ রোগাক্রান্ত মহিলা সুস্থ মহিলার মত নামাজ, সওম, ইতিকাফ, কুরআন মাজীদ তিলাওয়াত সহ যাবতীয় ইবাদত বন্দেগী করিতে পারবে । তবে প্রত্যেক ওয়াক্তের সলাতে প্রারম্ভে ওযূ করে নিবে । আর যখন নামাজ আদায় করার নিয়্যাত করিবে তখন লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে এবং উক্তস্থানে এক টুকরো কাপড়, তুলা লাগিয়ে রাখবে । [নাবাবী]

৬৪১. জারীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

ফাতিমাহ্‌ বিনতু আবু হুবায়শ ইবনি আব্দুল মুত্তালিব ইবনি আসাদ যিনি আমাদের বংশের একজন মহিলা ছিলেন- রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এলেন। আর হাম্মাদ ইবনি যায়দ-এর হাদীসে একতা অক্ষর অতিরিক্ত ছিল, আমরা তা উল্লেখ করিনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬০]

৬৪২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ্‌ বিনতু জাহ্‌শ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে মাসআলা জানতে চেয়ে বলিল, আমার ইসতিহাযাহ্‌ হয়েছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, ওটা হল একতা রগের [ধমনী] রক্ত। তাই তুমি গোসল করে ফেলবে তারপর নামাজ আদায় করিবে। এরপর সে প্রতি নামাজের সময়ই গোসল করত। রাবী লায়স ইবনি সাদ বলেন, ইবনি শিহাব এ কথা উল্লেখ করেননি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উম্মু হাবীবাহ্‌কে প্রত্যেক নামাজের সময়ই গোসলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বরং এটা সে নিজের থেকেই করত। ইবনি রুম্‌হ তার বর্ণনায় জাহ্‌শের কন্যার কথা বলেছেন, উম্মু হাবীবার নাম উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬১]

৬৪৩. নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর শ্যালিকা এবং আব্দুর রহমান ইবনি আওফ-এর স্ত্রী হাবীবাহ্‌ বিনতু জাহা্‌শ সাত বছর যাবৎ ইসতিহাযার রোগী ছিলেন। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এ ব্যাপারে মাসআলা জানতে চাইলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এটা হায়িয নয়; বরং ধমনীর [রগের] রক্ত। তাই তুমি গোসল করে ফেল এবং নামাজ আদায় কর।

আয়েশাহহ্‌ [রাদি.] বলেন, এরপর তিনি তার বোন যায়নাব বিনতু জাহ্‌শ-এর ঘরে একটি পাত্রের মধ্যে বসে গোসল করিতেন। এমনকি পানি রক্তে লাল হয়ে যেত।

ইবনি শিহাব বলেন, আমি এই হাদীসটি আবু বাক্‌র ইবনি আব্দুর রহমান ইবনিল হারিস ইবনি হিশাম-এর কাছের বর্ণনা করলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহ তায়ালা হিন্‌দের ওপর রহমাত করুন। সে যদি এ ফাতাওয়ার [মাসআলাহ্‌] শুনতে পেত! আল্লাহর কসম! সে শুধু কাঁদত। কারন সে নামাজ আদায় করতনা [এ মাসআলা তার জানা ছিলনা। ফলে নামাজ আদায় করিতে না পারার কারণে কাঁদত]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬২]

৬৪৪. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ্‌ বিনতু জাহ্‌শ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এলো। আর সাত বৎসর ধরে তার ইসতিহাযাহ্‌ চলছিল। এরপর রাবী আবু ইমরান আম্‌র ইবনিল হারিসের অনুরূপ “এমনকি পানি রক্তে লাল হয়ে যেত” পর্যন্ত বর্ণনা করেন এর পরবর্তী অংশ তিনি উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৩]

৬৪৫. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জাহ্‌শ-এর কন্যার সাত বৎসর যাবত ইসতিহাযাহ্‌ ছিল। এরপর পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৪]

৬৪৬. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ্‌ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিল। এরপর আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি তার পাত্র দেখেছি রক্তে পরিপূর্ণ। এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তোমার হায়িয যে কয়দিন হয়, সে কয়দিন পরিমাণ তুমি অপেক্ষা কর। তারপর গোসল করে ফেল এবং নামাজ আদায় কর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৫]

৬৪৭. নবী [সাঃআঃ] –এর স্ত্রী আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, আব্দুর রহমান ইবনি আওফ-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবাহ্‌ বিনতু জাহ্‌শ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে তার রক্ত প্রদরের অসুবিধার কথা বলিল। তিনি তাকে বললেনঃ তুমি তোমার মাসিক ঋতুর মেয়াদ পরিমাণ অপেক্ষা কর [অর্থাৎ] এ সময়ে নামাজ আদায় করিবেনা। এ সময় পার হলে তুমি গোসল করিবে এবং নামাজ আদায় করিবে। তাই তিনি প্রতেক নামাজের সময়েই গোসল করিতেন।৯০

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৬]

{৯০} হায়য অবস্থায় নামাজ মাফ এবং সওমের কাযা করিতে হয় । এটা পরম করুণাময় আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ তা না হলে নামাজের কাযা করিতে মহিলাদের বিশেষ কষ্ট হতো । নামাজ দৈনিক পাঁচবার পড়তে হয় বিধায় বছরের বহু নামাজের কাযা করিতে হতো । আর সওম বছরে একবার মাত্র । সুতরাং ৫/৭ দিন সওম কাযা করা কোন কঠিন কিছু নয় । [নাবাবী]

১৫. অধ্যায়ঃ ঋতুবতী মহিলার উপর সওম কায়া করা জরুরী, নামাজ নয়

৬৪৮. মুআযাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক মহিলা আয়েশাহ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিল, আমাদের কেউ কি তার হায়িযের দিন গুলোর নামাজ কাযা করিবে? আয়িশা [রাদি.] বলিলেন, তুমি কি হারুরিয়্যাহ্‌ {৯১} [খারিজীয়া]? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে আমাদের কারো হায়িয হলে পড়ে তাকে [নামাজ] কাযা করার নির্দেশ দেয়া হতো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৭]

{৯১} [হরুরী] হারুরা কুফা নগরের নিকটবর্তী একটি গ্রামের নাম । প্রথমে খারিজীরা এ গ্রামে এসে একত্রিত ছিল এ জন্য তাদেরকে হারুরী বলা হয়েছে । এ খারেজীরা সহীহ হাদীস এবং মুসলিমদের ঐক্যমতের বিরোধিতা করে বলে হায়িযা অর্থাৎ ঋতুবতী মহিলাদের নামাজ কাযা করিতে হইবে । [নাবাবী]

৬৪৯. মুআযাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আয়েশাহ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করিলেন, ঋতুবতী মহিলা কি নামাজ কাযা করিবে? আয়েশাহহ [রাদি.] বলিলেন, তুমি কি হারুরিয়্যাহ্‌? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পত্নীগনের হায়িয হতো, তিনি কি তাদেরকে [নামাজ] কাযা করার হুকুম দিয়েছেন? মুহাম্মাদ ইবনি জাফার বলেন [আরবি] নামাজ কাযা করা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৮]

৬৫০. মুআযাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়িশা [রাদি.]-কে প্রশ্ন করলাম, ঋতুবতী মহিলা সওম কাযা করিবে এবং নামাজ কাযা করিবেনা এটা কেমন কথা? তুমি কি হারুরিয়্যাহ্‌? আমি বললাম, আমি হারুরিয়্যাহ্‌ নয়; বরং আমি [জানার জন্যই কেবল] জিজ্ঞেস করছি। তিনি {আয়িশা [রাদি.]} বলিলেন, আমাদের এরূপ হত। তখন আমাদেরকে কেবল সওম কাযা করার নির্দেশ দেয়া হত, নামাজ কাযা করার নির্দেশ দেয়া হত না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৯]

১৬. অধ্যায়ঃ গোসল করার সময় কাপড় কিংবা অনুরূপ কিছু দিয়ে পর্দা করে নেবে

৬৫১. উম্মু হানী বিনতু আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মাক্কাহ বিজয়ের বছর আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে গেলাম। তখন আমি তাকে এ অবস্থায় পেলাম যে, তিনি গোসল করছিলেন, আর তার কন্যা ফাতিমাহ্‌ একটি কাপড় দিয়ে তাকে আড়াল করে রেখেছিল।৯২

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭০]

{৯২} ঈমাম নাবাবী[রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ প্রয়োজনের সময় গুপ্তাঙ্গ খোলা জায়িয, যেমন নির্জনে গোসল করার সময়, প্রসাব করার সময়, স্ত্রী সহবাসের সময় । কিন্তু লোক সম্মুখে গুপ্তাঙ্গ খোলা কখনও বৈধ নয় । অন্যান্য উলামায়ে কিরাম বলেন, নির্জনে গোসলের সময়ও লুঙ্গি পড়ে থাকা মুস্তাহাব । তাই প্রয়োজনে উলঙ্গ হয়ে গোসল করাও বৈধ আছে । [নাবাবী]

৬৫২. উম্মু হানী বিনতু আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মক্কা বিজয়ের বছর তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এলেন। তিনি তখন মাক্কার উঁচু এলাকায় অবস্থান করছিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গোসল করিতে গেলে ফাতিমাহ্‌ তাঁকে আড়াল করেন। এরপর তিনি নিজের কাপড় নিয়ে পরিধান করিলেন। তারপর আট রাকআত চাশতের নামাজ আদায় করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭১]

৬৫৩. সাঈদ ইবনি আবু হিন্‌দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

অতঃপর তিনি বলেন, এরপর তাহাঁর কন্যা ফাতিমাহ্‌ তাহাঁর কাপড় দিয়ে তাঁকে আড়াল করে রেখেছিল। গোসল শেষে তিনি ঐ কাপড় নিয়ে পরিধান করিলেন। তারপর দাঁড়িয়ে আট রাকআত নামাজ আদায় করিলেন। আর সেটা ছিল চাশতের সময়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭২]

৬৫৪. মাইমুনাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জন্যে পানি রাখলাম এবং তাঁকে আড়াল করলাম। এরপর তিনি গোসল করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৩]

১৭. অধ্যায়ঃ লজ্জাস্থান এর দিকে তাকানো হারাম

৬৫৫. আবু সাঈদ আল খুদরী[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন পুরুষ অপর পুরুষের লজ্জাস্থানের দিকে তাকাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলা লজ্জাস্থানের দিকে তাকাবে না; কোন পুরুষ অপর পুরুষের সাথে এক কাপড়ের নীচে [উলঙ্গ অবস্থায়] ঘুমাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সাথে একই কাপড়ের নীচে ঘুমাবে না।৯৩

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৪]

{৯৩} “কোন পুরুষ অপর পুরুষের সাথে এক কাপড়ের নীচে ঘুমাবে না এবং কোন মহিলা অপর মহিলার সাথে একই কাপড়ের নীচে ঘুমাবে না ।” এর দ্বারা উদ্দেশ্য উভয়ের উলঙ্গ অবস্থায় যখন কোন প্রকার কাপড় থাকিবে না । [নাবাবী]

৬৫৬. যাহ্‌হাক ইবনি উসমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

উক্ত সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁরা উভয়েই [আরবি] এর স্থলে [আরবি] এর উল্লেখ করিয়াছেন। অর্থাৎ- উলঙ্গ অবস্থায় পুরুষ পুরুষের দিকে এবং নারী নারীর দিকে তাকাতে পারবেনা এবং একই বিছানায় ঘুমাবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৫]

১৮. অধ্যায়ঃ নির্জনে উলঙ্গ হয়ে গোসল করা জায়িয

৬৫৭. হাম্মাম ইবনি মুনাব্বিহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করে বলেন, এগুলো আবু হুরায়রা [রাদি.] মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে আমার কাছে বর্ণনা করিয়াছেন। তন্মধ্যে একটি হল, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, বানী ইসরাঈলগণ উলঙ্গ হয়ে গোসল করত, একে ওপরের লজ্জাস্থানের দিকে দেখত। আর মূসা [আঃ] গোসল করিতেন একাকী। তাই তারা বলাবলি করত, আল্লাহর কসম মূসা আমাদের সাথে গোসল করে না কারণ তার একশিরা রোগ হয়েছে। একবার তিনি গোসল করিতে গিয়ে একটি পাথরের উপর তাহাঁর কাপড় রাখলেন। এরপর পাথরটি তাহাঁর কাপড় নিয়ে দৌড়াতে লাগল। রাবী বলেন, মূসা [আঃ] তার পিছু পিছু ছুটলেন আর বলিতে লাগলেন, পাথর! আমার কাপড়, পাথর! আমার কাপড়। এমনিভাবে বনী ইসরাঈলগণ মূসা [আঃ]-এর লজ্জাস্থান দেখে ফেলল এবং তারা বলিল, আল্লাহর কসম মুসার তো কোন খুত নেই। এরপর পাথর দাঁড়িয়ে গেল এবং তাঁকে দেখে নিল। রাবী বলেন, এরপর তিনি তাহাঁর কাপড় তুলে নিলেন এবং [রাগে] পাথরকে মারতে শুরু করে দিলেন।

আবু হুরায়রা [রাদি.] বলেন, আল্লাহর কসম! পাথরের ওপর মূসা [আঃ]- এর আঘাতের ছয়টি কি সাতটি চিহ্ন রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৬]

১৯. অধ্যায়ঃ লজ্জাস্থান ঢাকার ব্যাপারে বিশেষভাবে সাবধানতা অবলম্বনের বর্ণনা

৬৫৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন কাবাহ্‌ তৈরি করা হচ্ছিল তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও আব্বাস [রাদি.] পাথর বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। আব্বাস [রাদি.] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিলেন, পাথর বহনের সুবিধার্থে তোমার লুঙ্গি কাঁধের উপর তুলে নাও। এরপর তিনি এরুপ করিলেন। সাথে সাথেই তিনি [বেহুশ হয়ে] মাটিতে পড়ে গেলেন। আর তাহাঁর উভয় চোখ আকাশের দিকে নিবদ্ধ হল। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে বলিলেন, আমার লুঙ্গি , আমার লুঙ্গি। এরপর তাহাঁর লুঙ্গি পরিয়ে দেয়া হল। ইবনি রাফি তার রিওয়াতে কাধের স্থলে ঘাড়ে উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৭]

৬৫৯. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাদের সাথে কাবাহ্‌ মেরামতের জন্যে পাথর বয়ে নিচ্ছিলেন। আর তাহাঁর পরনের ছিল লুঙ্গি। এরপর তাহাঁর চাচা আব্বাস [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, ভাতিজা; তোমার লুঙ্গি খুলে যদি কাঁধের উপর পাথরের নীচে রেখে নিতে [তাহলে ভাল হত]। তিনি লুঙ্গি খুলে তাহাঁর কাঁধের উপর রাখলেন। সাথে সাথেই তিনি বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। যাবির [রাদি.] বলেন, সেদিনের পর থেকে আর কখনো তাঁকে উলঙ্গ দেখা যায়নি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৩, ইসলামিক সেন্টার-৬৭৮]

৬৬০. মিসওয়ার ইবনি মাখরামাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি একটি ভারী পাথর বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আর তখন আমার পরনে ছিল একটা পাতলা লুঙ্গি। তিনি বলেন, এরপর আমার লুঙ্গি খুলে গেল। পাথরটি তখন আমার কাছে ছিল। তাই আমি লুঙ্গি তুলে নিতে পারলাম না। এমনিভাবে আমি পাথরটি যথাস্থানে নিয়ে গেলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমার কাপড়ের কাছে ফিরে গিয়ে তা নিয়ে এসো। আর কখনো উলঙ্গ হয়ে চলবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৭৯]

২০. অধ্যায়ঃ প্রসাবের ও পায়খানার সময় পর্দা করা

৬৬১. আব্দুল্লাহ ইবনি জাফার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, একদিন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে তাহাঁর সাওয়ারীর পিছন দিকে বসালেন এবং আমাকে চুপে চুপে এমন একটি কথা বলিলেন যা আমি কাউকে কখন বলব না। তবে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রাকৃতিক প্রয়োজন সমাধা করার সময় উচু ঢিলা অথবা ঘন গাছগাছালি দ্বারা ঢাকা স্থানকে সবচেয়ে বেশী পছন্দ করিতেন। ইবনি আসমা তাহাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, অর্থাৎ খেজুর বাগানের আড়ালে মানবীয় প্রয়োজন সমাধান করাটাই বেশী পছন্দ করিতেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮০]

২১. অধ্যায়ঃ একমাত্র বীর্যপাত থেকে গোসল ফার্‌য করণ {৯৪}

{৯৪} কিন্তু পরবর্তীতে এ হুকুম মানসুখ [রহিত] হয়ে যায় এবং শুধু সহবাসের দ্বারাই গোসল ফারয হয়।

৬৬২. আব্দুর রহমান ইবনি আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] তাহাঁর পিতা আবু সাঈদ আল খুদরী হইতে বর্ণীতঃ

কোন এক সোমবারে আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কুবা এলাকার দিকে গেলাম। আমরা বানু সালিম গোত্রের মহল্লায় পৌঁছালে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইত্‌বান এর গেইটে দাঁড়ালেন এবং তাকে উচ্চঃস্বরে ডাকলেন। তৎক্ষণাৎ তিনি পরনের লুঙ্গি হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে বের হয়ে আসলেন। এ অবস্থা দেখে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমরা কি লোকটিকে তাড়াহুড়োয় ফেলে দিলাম? তখন ইতবান বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! যদি কোন ব্যক্তি তাহাঁর স্ত্রীর সাথে সহবাসের সময় তাড়াহুড়ো করে এবং তাতে বীর্যপাত না হয় তখন তাকে কি করিতে হইবে? [অর্থাৎ তাকে গোসল করিতে হইবে কিনা?] জবাবে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, বস্তুত বীর্যপাত ঘটলেই গোসল করিতে হইবে। {৯৫}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮১]

{৯৪} কিন্তু পরবর্তীতে এ হুকুম মানসুখ [রহিত] হয়ে যায় এবং শুধু সহবাসের দ্বারাই গোসল ফারয হয়।

{৯৫} “বস্তুতঃ বীর্যপাত ঘটলেই গোসল করিতে হইবে।” এ কথার ব্যাখ্যায় ঈমাম নাবাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সহবাস করলেই গোসল ফরয হয়ে যায়। এ ব্যাপারে উম্মাতের ইজমা [ঐকমত্য] হয়েছে। সহবাস দ্বারা বীর্যপাত হোক বা না হোক শুদুমাত্র পুরুষদের যৌনাঙ্গের অগ্রভাগ মহিলার গুপাতাঙ্গে প্রবেশ করলেই গোসল করিতে হইবে। “বীর্যপাত ঘটলেই গোসল করিতে হইবে” এ হাদীস মানসুখ [রহিত] হয়েছে। অর্থাৎ ইসলামের প্রথম যুগে এ হুকুম ছিল যে, সহবাসে বীর্যপাত না ঘটলে গোসল করা অপরিহার্য নয়। কিন্তু পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে গেছে। এ অধ্যায়ে [৮৭-৩৪৮] নম্বর হাদীসটি নাসিখ [রহিতকারী]

৬৬৩. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, পানির [ধাতু বের হলে] দ্বারা [গোসল] ফারয হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮২]

৬৬৪. আবুল আলা ইবনি শিখ্‌খীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর এক হাদীস অপর হাদীসকে মানসুখ [রহিত] করে দিতে যেমনিভাবে কুরআনের এক আয়াত অপর আয়াতকে মানসুখ করে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৩]

৬৬৫. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক আনসারীর [বাড়ির] সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে সংবাদ পাঠালেন। সে বেরিয়ে এলো আর তার মাথা থেকে তখন ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছিল। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, সম্ভবত আমরা তোমাকে তাড়াহুড়োর মধ্যে ফেলেছি। সে বলিল হ্যাঁ, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বলিলেন, যখন [কোন কারণে] তোমাকে তাড়াতাড়ি [বীর্য বের হবার আগেই উঠে পড়তে হয়] অথবা বীর্য বের হইতে বাধাপ্রাপ্ত হও তখন তোমার উপর গোসল করা [ফারয] নয় বরং তোমার উপর শুধু ওযূ করা জরুরী। আর ইবনি বাশশার বলেন, যখন তোমাকে তাড়াহুড়ার মধ্যে ফেলা হয়েছে বা তোমাকে বীর্যপাত করিতে বাধা দেয়া হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৬৮]

৬৬৬. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করলাম সে ব্যক্তি সম্পর্কে যে স্ত্রী সহবাস করে [অথচ] তারপর বীর্যপাত হল না। তিনি বলিলেন, স্ত্রীর [লজ্জাস্থান] থেকে তার [লজ্জাস্থানে] যা লেগেছে তা ধুয়ে ফেলবে। তারপর ওযূ করিবে এবং নামাজ আদায় করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৫]

৬৬৭. উবাই ইবনি কাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তারপর বীর্যপাত হয় না- তাহাঁর সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, সে তার লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে এবং ওযূ করিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৬]

৬৬৮. যায়দ ইবনি খালিদ আল জুহানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা তিনি উসমান ইবনি আফফান [রাদি.]-কে প্রশ্ন করেন, কোন লোক যদি তাহাঁর স্ত্রীর সাথে মেলামেশা করে এবং বীর্যপাত না হয় তাহলে তাহাঁর হুকুম কি? উসমান [রাদি.] বলিলেন, সে সালাতের ওযূ করে নিবে। এবং তার লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেলবে। উসমান [রাদি.] বলেন, আমি এটা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৭]

৬৬৯. আবু আইয়ুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে এমন শুনেছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৮]

২২. অধ্যায়ঃ কেবল বীর্যপাত হলেই গোসল করিতে হইবে, এ হুকুম রহিতকরণ

৬৭০. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যখন কেউ তার স্ত্রীর চার-হাত পায়ের মাঝখানে বসবে এবং তার সাথে মিলবে তখন তার উপর গোসল ফারয হইবে।

মাতার-এর হাদীসে যদিও বীর্য বের না করে- বাক্যটি অতিরিক্ত রয়েছে।

যুহায়র বলেছেন, তাদের মধ্য হইতে কেউ যদি নারীর চার শাখার মধ্যে বসে। {৯৬}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৮৯]

{৯৬} নারীর চার শাখা বলিতে তার দুহাত ও দুপা বুঝানো হয়েছে। তবে কেউ কেউ বলেন, নারীর যোনীর চার পাশ। ঈমাম নাবাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, নারীর যোনীর মধ্যে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করলে, উভয়ের গোসল ফারয হয়। এক সময় এ সম্বন্ধে সাহাবাদের মাঝে মতানৈক্য থাকলেও পরবর্তী সময়ে গোসল ফরয হওয়ার উপর ইজমা বা ঐকমত্য স্থাপন হয়ে গেছে।

৬৭১. কাতাদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

অবিকল বর্ণিত রয়েছে। তবে শুবার হাদীসে এরপর মিলিত হয় কথাটির উল্লেখ আছে। কিন্তু যদিও বীর্য বের না হয়- কথাটি বর্ণনা নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯০]

৬৭২. আবু মূসা আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মুহাজির ও আনসারদের একটি দল এ ব্যাপারে মতবিরোধ করিল। আনসারগণ বলিল, জোরে অথবা স্বাভাবিক গতিতে পানি [বীর্য] বের না হলে গোসল ফারয হয় না। আর মুহাজিরগণ বলিল, স্ত্রী সঙ্গে শুধু মিললেই গোসল ফারয [বীর্য বের হোক বা না হোক] আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, আমি এ ব্যপারে তোমাদেরকে শান্ত করছি। এরপর আমি উঠে গিয়ে আয়েশাহ [রাদি.]-এর কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলাম। আমাকে অনুমতি দেয়া হল। আমি তাকে বললাম, মা ! অথবা [তিনি বলছিলেন] হে মুমিনদের মা! আমি আপনার কাছে একটি বিষয়ে জিজ্ঞেস করিতে চাই কিন্তু আমি লজ্জাবোধ করছি। তুমি তোমার গর্ভধারিণী মাকে যে ব্যপারে প্রশ্ন করিতে পারতে সে ব্যপারে আমাকে প্রশ্ন করিতে লজ্জাবোধ করো না। আমি তো তোমার মা। আমি বললাম, গোসল কিসে ফারয হয়? তিনি বলিলেন, জানা-কোন লোকের কাছেই তুমি প্রশ্ন করেছ। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন কোন পুরুষ স্ত্রীর চার হাত-পায়ের মাঝখানে বসবে এবং একের লজ্জাস্থান অপরের লজ্জাস্থানের সাথে লাগবে তখন গোসল ফারয হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯১]

৬৭৩. রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা এক লোক রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করিল-যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে মেলামেশা করে, অতঃপর বীর্য বের হবার আগেই তার পুরুষাঙ্গ বের করে ফেলে তাহলে কি তাদের উভয়ের গোসল ফারয হইবে? এ সময়ে আয়েশাহ [রাদি.] সেখানে উপবিষ্ট ছিলেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি এবং আয়েশাহ [রাদি.] ঐরূপ করি, এরপর আমরা গোসল করে ফেলি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৯২]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply