সৎ কাজ, সুমিষ্ট ভাষা সদাকাহ। সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা ও কৃপণতা সম্পর্কে

সৎ কাজ, সুমিষ্ট ভাষা সদাকাহ। সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা ও কৃপণতা সম্পর্কে

সৎ কাজ, সুমিষ্ট ভাষা সদাকাহ। সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা ও কৃপণতা সম্পর্কে >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

৭৮/৩৩. অধ্যায়: প্রত্যেক সৎ কাজই সদাকাহ হিসেবে গণ্য ।
৭৮/৩৪. অধ্যায়: সুমিষ্ট ভাষা সদাকাহ।
৭৮/৩৫. অধ্যায়: সকল কাজে নম্রতা অবলম্বন করা।
৭৮/৩৬. অধ্যায় : মুমিনদের পারস্পরিক সহযোগিতা ।
৭৮/৩৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য সুপারিশ করিবে, তার জন্য তাতে (সাওয়াবের) অংশ আছে এবং যে মন্দ কাজের জন্যে সুপারিশ করিবে, তার জন্য তাতে অংশ আছে, আল্লাহ সকল বিষয়ে খোঁজ রাখেন। [সুরা আন-নিসা: ৪/৮৫]
৭৮/৩৮. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন কথা বলিতেন না।
৭৮/৩৯. অধ্যায়ঃ সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপণতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে।
৭৮/৪০. অধ্যায়ঃ মানুষ নিজ পরিবারে কীভাবে চলবে।
৭৮/৪১. অধ্যায়ঃ ভালবাসা আসে আল্লাহ তাআলার তরফ থেকে।
৭৮/৪২. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশে ভালবাসা।

৭৮/৩৩. অধ্যায়: প্রত্যেক সৎ কাজই সদাকাহ হিসেবে গণ্য ।

৬০২১

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন: সকল সৎ আমাল সদাকাহ হিসেবে গণ্য।(আঃপ্রঃ- ৫৫৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৩)

৬০২২

আবু মূসা আশআরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন: প্রতিটি মুসলিমেরই সদাকাহ করা দরকার। উপস্থিত লোকজন বললোঃ যদি সে সদাকাহ করার মত কিছু না পায়। তিনি বললেনঃতাহলে সে নিজের হাতে কাজ করিবে। এতে সে নিজেও উপকৃত হইবে এবং সদাকাহ করিবে। তারা বললোঃ যদি সে সক্ষম না হয় অথবা বলেছেন: যদি সে না করে? তিনি বললেনঃতা হলে সে যেন বিপন্ন মাযলূমের সাহায্য করে। লোকেরা বললোঃ সে যদি তা না করে? তিনি বললেনঃতা হলে সে সৎ কাজের আদেশ করিবে, অথবা বলেছেন, সাওয়াবের কাজের নির্দেশ করিবে। তারা বললোঃ তাও যদি সে না করে? তিনি বললেনঃতা হলে সে খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, এটাই তার জন্য সদাক্বাহ হইবে। [১৪৪৫; মুসলিম ১২/১৬, হাদীস ১০০৮, আহমাদ ১৯৭০৬] আঃপ্রঃ- ৫৫৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৪)

৭৮/৩৪. অধ্যায়: সুমিষ্ট ভাষা সদাকাহ।

আবু হুরাইরা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, সুমিষ্ট ভাষাও সদাকাহ।

৬০২৩

আদী ইবনু হাতিম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নাবী (সাঃআঃ) জাহান্নামের আগুনের কথা উল্লেখ করিলেন। তারপর তাত্থেকে আশ্রয় চাইলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরে আবার জাহান্নামের আগুনের কথা উল্লেখ করিলেন, তারপর তাত্থেকে আশ্রয় চাইলেন এবং তাহাঁর মুখ ফিরিয়ে নিলেন। শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন: দুবার যে বলেছেন, এতে আমার কোন সন্দেহ নেই। তারপর নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃতোমরা জাহান্নামের আগুন হইতে বাঁচ এক টুক্‌রা খেজুর দিয়ে হলেও। আর যদি তা না পাও, তবে সুমিষ্ট ভাষার বিনিময়ে।(আঃপ্রঃ- ৫৫৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৫)

৭৮/৩৫. অধ্যায়: সকল কাজে নম্রতা অবলম্বন করা।

৬০২৪

নাবী সহধর্মিণী আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইয়াহূদীদের একটি দল নাবী সাঃআঃ -এর কাছে এসে বললঃ السَّامُ عَلَيْكُمْতোমাদের উপর মৃত্যু উপনীত হোক। আয়েশাহ রাঃ)বলেনঃ আমি এর অর্থ বুঝলাম এবং বললামঃ وَعَلَيْكُمْ السَّامُ وَاللَّعْنَة তোমাদের উপরও মৃত্যু ও লানত। আয়েশাহ রাঃ)বলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বললেনঃ থাম, হে আয়েশাহ! আল্লাহ যাবতীয় কার্যে নম্রতা পছন্দ করেন। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি শোনেননি, তারা কী বলেছে? রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বললেনঃ আমি তো বলেছি عَلَيْكُمْ আর তোমাদের উপরও। [২৯৩৫] আঃপ্রঃ- ৫৫৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৬)

৬০২৫

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

একবার এক বেদুঈন মাসজিদে প্রস্রাব করে দিল। লোকেরা উঠে তার দিকে গেল। রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃতার প্রস্রাব করায় বাধা দিও না। অতঃপর তিনি এক বালতি পানি আনালেন এবং তাতে ঢেলে দিলেন।[মুসলিম২/৩০, হাদীস ২৮৪, আহমাদ ১৩৩৬৭] আঃপ্রঃ- ৫৫৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৭)

৭৮/৩৬. অধ্যায় : মুমিনদের পারস্পরিক সহযোগিতা ।

৬০২৬

আবু মূসা (আশআরী) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন: মুমিন মুমিনের জন্য ইমারাত সদৃশ, যার একাংশ অন্য অংশকে মযবূত করে। এরপর তিনি (হাতের) আঙ্গুলগুলো (অন্য হাতের) আঙ্গুলে (এ ফাঁকে) ঢুকালেন।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৮)

৬০২৭

আবু মূসা (আশআরী) (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তখন নাবী (সাঃআঃ) উপবিষ্ট ছিলেন। ইতোমধ্যে এক ব্যক্তি কিছু প্রশ্ন করার জন্য কিংবা কোন প্রয়োজনে আসলো। তখন নাবী (সাঃআঃ) আমাদের দিকে ফিরে চাইলেন এবং বললেনঃ তোমরা তার জন্য (তাকে কিছু দেয়ার) সুপারিশ করো। এতে তোমাদেরকে প্রতিদান দেয়া হইবে। আল্লাহ তাহাঁর নাবীর দুআ অনুসারে যা ইচ্ছে তা করেন।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৮)

৭৮/৩৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য সুপারিশ করিবে, তার জন্য তাতে (সাওয়াবের) অংশ আছে এবং যে মন্দ কাজের জন্যে সুপারিশ করিবে, তার জন্য তাতে অংশ আছে, আল্লাহ সকল বিষয়ে খোঁজ রাখেন। [সুরা আন-নিসা: ৪/৮৫]

(—) অর্থ অংশ। আবু মূসা (রাদি.) বলেছেনঃ হাবশী ভাষায় (—) শব্দের অর্থ হলো, দ্বিগুণ সাওয়াব। (সুরা আল-হাদীদঃ ২৮)

৬০২৮

আবু মূসা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) -এর কাছে কোন ভিখারী অথবা অভাবগ্রস্ত লোক এলে তিনি বলিতেনঃ তোমরা সুপারিশ করো, তাহলে তোমরা সাওয়াব পাবে। অবশ্য আল্লাহ তাআলা তাহাঁর রসূলের দুআ অনুযায়ী যা ইচ্ছে তা করেন।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৮৯)

৭৮/৩৮. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন কথা বলিতেন না।

৬০২৯

ইবনু মাসরূক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর -এর নিকট গেলাম, যখন তিনি মুআবিয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) -এর সাথে কুফায় পদার্পণ করেন। তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর কথা উল্লেখ করিতেন। অতঃপর বললেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) স্বভাবগতভাবে অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন কথা বলিতেন না। তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম স্বভাবে যে সবচেয়ে উত্তম।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯০)

৬০৩০

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

একবার একদল ইয়াহূদী নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট এসে বললঃ আস্‌-সামু আলাইকুম! (তোমার মরণ হোক)। আয়েশাহ (রাদি.) বললেনঃ তোমাদের উপরই এবং তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব পড়ুক। তখন নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আয়েশাহ! একটু থামো। নম্রতা অবলম্বন করা তোমাদের কর্তব্য। রূঢ়তা ও অশালীনতা বর্জন করো। আয়েশাহ (রাদি.) বললেনঃ তারা যা বলেছে তা কি আপনি শোনেননি? তিনি বললেনঃ আমি যা বললাম, তুমি কি তা শোননি? কথাটি তাদের উপরই ফিরিয়ে দিয়েছি। সুতরাং তাদের ব্যাপারে (আল্লাহর কাছে) আমার কথাই কবুল হইবে আর আমার সম্পর্কে তাদের কথা কবুল হইবে না।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯১)

৬০৩১

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) গালি-গালাজকারী, অশালীন ও লানতকারী ছিলেন না। তিনি আমাদের কারো উপর অসন্তুষ্ট হলে, শুধু এতটুকু বলিতেন, তার কী হলো। তার কপাল ধূলিমলিন হোক।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯২)

৬০৩২

আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, এক ব্যক্তি নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইল। তিনি লোকটিকে দেখে বললেনঃ সে সমাজের নিকৃষ্ট লোক এবং সমাজের দুষ্ট সন্তান। এরপর সে যখন এসে বলিল, তখন নাবী (সাঃআঃ) আনন্দ সহকারে তার সাথে মেলামেশা করিলেন। লোকটি চলে গেলে আয়েশাহ (রাদি.) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! যখন আপনি লোকটিকে দেখলেন তখন তার ব্যাপারে এমন বলিলেন, পরে তার সাথে আপনি আনন্দচিত্তে সাক্ষাৎ করিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আয়েশাহ! তুমি কখন আমাকে অশালীন দেখেছ? ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে মর্যাদার দিক দিয়ে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেই ব্যক্তি, যার দুষ্টামির কারণে মানুষ তাকে ত্যাগ করে।[৬০৫৪, ৬৪৩১; মুসলিম ৪৫/২০, হাদীস ২৫৯১, আহমাদ ২৪১৬১] আঃপ্রঃ- ৫৫৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৩)

৭৮/৩৯. অধ্যায়ঃ সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপণতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে।

ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেছেন, নাবী (সাঃআঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমাযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হইতেন। আবু যার (রাদি.) বর্ণনা করেন, যখন তাহাঁর নিকট নাবী (সাঃআঃ) -এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাহাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কাহ উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাহাঁর কথা শুনে এসো। তাহাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।

৬০৩৩

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

যে, নাবী (সাঃআঃ) মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সুন্দর, সর্বাপেক্ষা অধিক দানশীল এবং লোকদের মধ্যে সর্বাধিক সাহসী ছিলেন। একবার রাত্রিবেলা (বিরাট শব্দে) মাদীনাহবাসীরা ভীত-শঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাই লোকেরা সেই শব্দের দিকে রওয়ানা হয়। তখন তারা নাবী (সাঃআঃ) -কে সম্মুখেই পেলেন, তিনি সেই শব্দের দিকে লোকদের আগেই বের হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলিতে লাগলেনঃ তোমরা ভয় পেয়ো না, তোমরা ভয় পেয়ো না। এ সময় তিনি আবু ত্বলহা (রাদি.) –এর জিন বিহীন অশ্বোপরি সাওয়ার ছিলেন। আর তাহাঁর স্কন্ধে একখানা তলোয়ার ঝুলছিল। এরপর তিনি বলিতেনঃ এ ঘোড়াটিকে তো আমি সমুদ্রের মত (দ্রুত ধাবমান) পেয়েছি। অথবা বললেনঃ এ ঘোড়াটিতো একটি সমুদ্র।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৪)

৬০৩৪

জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট কোন জিনিস চাওয়া হলে, তিনি কক্ষনো না বলেননি।(আঃপ্রঃ- ৫৫৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৫)

৬০৩৫

মাসরূক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একবার আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদি.) -এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) স্বভাবগতভাবে অশালীন ছিলেন না এবং তিনি ইচ্ছে করে অশালীন কথা বলিতেন না। তিনি বলিতেনঃ তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র উত্তম, সেই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।(আঃপ্রঃ- ৫৬০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৬)

৬০৩৬

সাহল ইবনু সাদ (রাঃ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক মহিলা নাবী (সাঃআঃ) -এর নিকট একখানা বুরদাহ নিয়ে আসলেন। সাহল (রাদি.) লোকজনকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আপনারা কি জানেন বুরদাহ কী? তাঁরা বললেনঃ তা চাদর। সাহল (রাদি.) বললেনঃ এটি এমন চাদর যা ঝালরসহ বোনা। এরপর সেই মহিলা আরয করলেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমি আপনাকে এটি পরার জন্য দিলাম। নাবী (সাঃআঃ) চাদরখানা এমনভাবে গ্রহন করিলেন, যেন তাহাঁর এটির দরকার ছিল। এরপর তিনি এটি পরলেন। এরপর সহাবীদের মধ্যে এক ব্যক্তি সেটি তাহাঁর দেহে দেখে বললঃ হে আল্লাহর রাসুল! এটা কতই না সুন্দর! আপনি এটি আমাকে দিয়ে দিন। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হাঁ (দিয়ে দিব)। নাবী (সাঃআঃ) উঠে চলে গেলে, অন্যান্য সহাবীরা তাঁকে দোষারোপ করে বললেনঃ তুমি ভাল কাজ করোনি। যখন তুমি দেখলে যে, এটি তাহাঁর প্রয়োজন ছিল বলেই তিনি চাদরখানা এমনভাবে গ্রহন করিয়াছেন। এরপরও তুমি সেটা চাইলে। অথচ তুমি অবশ্যই জানো যে, তাহাঁর কাছে কোন জিনিস চাওয়া হলে তিনি কাউকে কখনো বিমুখ করেন না। তখন সেই ব্যক্তি বললঃ যখন নাবী (সাঃআঃ) এটি পরেছেন, তখন তাহাঁর বারাকাত লাভের জন্যই আমি এ কাজ করেছি, যাতে এ চাদরে আমার কাফন হয়।(আঃপ্রঃ- ৫৬০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৭)

৬০৩৭

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন কিয়ামত সন্নিকট হচ্ছে, আমাল কমে যাবে, অন্তরে কৃপণতা ঢেলে দেয়া হইবে এবং হারজ বেড়ে যাবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ হারজ কী? তিনি বললেনঃ হত্যা, হত্যা।(আঃপ্রঃ- ৫৬০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৮)

৬০৩৮

আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দশটি বছর নাবী (সাঃআঃ) -এর খিদমত করেছি। কিন্তু তিনি কক্ষনো আমার প্রতি উঃ শব্দটি করেননি। এ কথা জিজ্ঞেস করেননি, তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না? [২৭৬৮; মুসলিম ৪৩/১৩, হাদীস ২৩০৯, আহমাদ ১৩০২০] আঃপ্রঃ- ৫৬০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৪৯৯)

৭৮/৪০. অধ্যায়ঃ মানুষ নিজ পরিবারে কীভাবে চলবে।

৬০৩৯

আসওয়াদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাদি.) -কে জিজ্ঞেস করলামঃ নাবী (সাঃআঃ) নিজ গৃহে কী কাজ করিতেন? তিনি বললেনঃ তিনি পারিবারিক কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। যখন সালাতের সময় উপস্থিত হত, তখন উঠে সালাতে চলে যেতেন।(আঃপ্রঃ- ৫৬০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০০)

৭৮/৪১. অধ্যায়ঃ ভালবাসা আসে আল্লাহ তাআলার তরফ থেকে।

৬০৪০

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তাআলা কোন বান্দাকে ভালবাসেন, তখন তিনি জিবরীল (আঃ) -কে ডেকে বলেন, আল্লাহ তাআলা অমুক বান্দাকে ভালবাসেন, তুমিও তাকে ভালবাসবে। তখন জিবরীল (আঃ) তাকে ভালবাসেন এবং তিনি আসমানবাসীদের ডেকে বলেন, আল্লাহ তাআলা অমুককে ভালবাসেন, অতএব তোমরাও তাকে ভালবাসবে। তখন আসমানবাসীরাও তাকে ভালবাসে। তারপর আল্লাহ তাআলার পক্ষ হইতে দুনিয়াবাসীদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করা হয়।(আঃপ্রঃ- ৫৬০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০১)

৭৮/৪২. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশে ভালবাসা।

৬০৪১

আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না, যতক্ষণ না সে কোন মানুষকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে ভালবাসবে, আর যতক্ষণ না সে যে কুফরী থেকে আল্লাহ তাকে উদ্ধার করিয়াছেন, তার দিকে ফিরে যাবার চেয়ে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অধিক প্রিয় মনে না করিবে এবং যতক্ষণ না আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছুর চেয়ে অধিক প্রিয় না হইবেন।(আঃপ্রঃ- ৫৬০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫০২)

Comments

Leave a Reply

Discover more from HADIS QURAN

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading