শয়তান থেকে বাচার দোয়া । কঠিন কাজে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
শয়তান থেকে বাচার দোয়া । কঠিন কাজে পতিত ব্যক্তির দো‘আ << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
শয়তান থেকে বাচার দোয়া
সালাতে ও কিরাতে শয়তানের কুমন্ত্রণায় পতিত ব্যক্তির দো‘আ
কঠিন কাজে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
পাপ করে ফেললে যা বলবে এবং যা করবে
শয়তান ও তার কুমন্ত্রণা দূর করার দো‘আ
যখন অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে বা যা করতে চায় তাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখন পড়ার দো‘আ
৪২. সালাতে ও কিরাতে শয়তানের কুমন্ত্রণায় পতিত ব্যক্তির দো‘আ
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيطَانِ الرَّجِيمِ
১৩৮-(আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম)
“বিতাড়িত শয়তান থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় নিচ্ছি।”
অতঃপর বাম দিকে তিনবার থুতু ফেলবে[1]।
৪৩. কঠিন কাজে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
اللَّهُمَّ لاَ سَهْلَ إِلاَّ مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً، وَأَنْتَ تَجْعَلُ الْحَزْنَ إِذَا شِئْتَ سَهْلاً
(আল্লা-হুম্মা লা সাহ্লা ইল্লা মা জা‘আলতাহু সাহ্লান, ওয়া আনতা তাজ্‘আলুল হাযনা ইযা শি’তা সাহ্লান)।
১৩৯- “হে আল্লাহ! আপনি যা সহজ করেছেন তা ছাড়া কোনো কিছুই সহজ নয়। আর যখন আপনি ইচ্ছা করেন তখন কঠিনকেও সহজ করে দেন।”[2]
৪৪. পাপ করে ফেললে যা বলবে এবং যা করবে
১৪০- “যদি কোনো বান্দা কোনো পাপ কাজ করে ফেলে, অতঃপর সে উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে এবং দাঁড়িয়ে যায় ও দু’ রাকাত সালাত আদায় করে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন।”[3]
৪৫. শয়তান ও তার কুমন্ত্রণা দূর করার দো‘আ
১৪১-(১) ‘তার থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে’[4] (অর্থাৎ ‘আ‘ঊযু বিল্লাহ’ পড়বে)।
১৪২-(২) ‘আযান দিবে।’[5]
১৪৩-(৩) ‘যিকির করবে এবং কুরআন পড়বে।’[6]
৪৬. যখন অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে, বা যা করতে চায় তাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখন পড়ার দো‘আ
144-«قَدَرُ اللَّه وَمَا شَاءَ فَعَلَ».
(কাদারুল্লা-হ, ওয়ামা শা-আ ফা‘আলা)
১৪৪- “এটি আল্লাহর ফয়সালা, আর তিনি যা ইচ্ছা করেছেন।”[7]
[1] মুসলিম ৪/১৭২৯, ২২০৩। সেখানে এসেছে, উসমান ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! শয়তান আমার ও আমার নামাযের মাঝে অনুপ্রবেশ করে এবং কিরাআতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সেটা বলার নির্দেশ দেন, তিনি সেটা করার পর আল্লাহ তাঁকে সেটা থেকে মুক্ত করেন।
[2] সহীহ ইবন হিব্বান ২৪২৭, (মাওয়ারিদ); ইবনুস সুন্নী, নং ৩৫১। আর হাফেয (ইবন হাজার) বলেন, এটি সহীহ হাদীস। তাছাড়া আবদুল কাদের আরনাউত ইমাম নওয়াবীর আযকার গ্রন্থের তাখরীজে পৃ. ১০৬, একে সহীহ বলে মত প্রকাশ করেছেন।
[3] আবূ দাউদ ২/৮৬, ১৫২১; তিরমিযী ২/২৫৭, নং ৪০৬; আর শাইখ আলবানী সহীহ আবি দাউদে ১/২৮৩ একে সহীহ বলে মত প্রকাশ করেছেন।
[4] আবূ দাউদ ১/২০৩, ইবন মাজাহ ১/২৬৫, নং ৮০৭। আর পূর্বে ৩১ নং হাদীসে এর তাখরীজ চলে গেছে। আরও দেখুন, সূরা আল-মুমিনূন এর ৯৭-৯৮।
[5] মুসলিম ১/২৯১; নং ৩৮৯; বুখারী, ১/১৫১, নং ৬০৮।
[6] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা তোমাদের ঘরসমূহ কবরে পরিণত করুন না। নিশ্চয় শয়তান ঐ ঘর থেকে পলায়ন করে যেখানে সূরা বাকারাহ্ পাঠ করা হয়।” মুসলিম ১/৫৩৯, হাদীস নং ৭৮০। তাছাড়া আরও যা শয়তানকে তাড়িয়ে দেয় তা হচ্ছে, সকাল বিকালের যিকিরসমূহ, ঘুমের যিকির, জাগ্রত হওয়ার যিকির, ঘরে প্রবেশের ও ঘর থেকে বের হওয়ার যিকিরসমূহ, মসজিদে প্রবেশের ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার যিকিরসমূহ, ইত্যাদী শরী‘আতসম্মত যিকিরসমূহ। যেমন, ঘুমের সময় আয়াতুল কুরসী, সূরা আল-বাকারার সর্বশেষ দু’টি আয়াত। তাছাড়া যে ব্যক্তি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর” একশতবার পড়বে, সেটা তার জন্য সে দিনটির জন্য পুরোপুরিই হেফাযতের কাজ দিবে। তদ্রুপ আযান দিলেও শয়তান পলায়ন করে।
[7] হাদীসে এসেছে, “শক্তিশালী ঈমানদার আল্লাহর নিকট উত্তম ও প্রিয় দুর্বল ঈমানদারের চেয়ে। আর তাদের (ঈমানদারদের) প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তোমার যা কাজে লাগবে সেটা করার ব্যাপারে সচেষ্ট হও আর আল্লাহর সাহায্য চাও, অপারগ হয়ে যেও না। আর যদি তোমার কোনো অনাকাঙ্খিত বিষয় উদয় হয়, তখন বলো না যে, ‘যদি আমি এরকম করতাম তাহলে তা এই এই হতো’, বরং বলো, “এটা আল্লাহর ফয়সালা, আর তিনি যা ইচ্ছে করেছেন।” কেননা, ‘যদি’ শয়তানের কাজের সূচনা করে দেয়। মুসলিম, ৪/২০৫২, নং ২৬৬৪।