ফাজায়েলে রুকু সিজদাহ
এ বিষয়ে সরাসরি মুল হাদিস শরীফ থেকে পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী ১ ২ >> সহীহ মুসলিম >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> রিয়াদুস সালেহীন >> বুলুগুল মারাম হাদীস শরীফ হতে
নামাজে তাকবির
আবু সালামাহ্ ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আবু হুরায়রা্[রাদি.] তাদের নামাজ আদায় করে দেখাতেন। তিনি প্রতিবার ঝুঁকে পড়ার সময় এবং সোজা হওয়ার সময়
اللَّهُ أَكْبَرُ
উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার, অর্থঃ আল্লাহ মহান
বলিতেন। তিনি নামাজ শেষে বলিতেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের চেয়ে অধিক পরিমাণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নামাজ আদায় করিতে পারি।
৭৫৩ [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭৫১, ইসলামিক সেন্টার-৭৬৪]
রুকুর তাসবিহ ও দুয়া
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) রুকূ ও সিজদায় এ দুআ পড়তেন-
سُبحاَنَكَ اللَّهُمَّ رَبّاَناَ وَبِحَمدِكَ اللَهُمَّ إِغفِرليِ
উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা; আল্লাহুম্মাগফরলি, অর্থঃ “হে আল্লাহ! হে আমাদের রব! আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন” পাঠ করিতেন।
رَبّاَناَ | اللَّهُمَّ | سُبحاَنَكَ |
হে আমাদের রব | আল্লাহ | আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি |
إِغفِرليِ | اللَهُمَّ | وَبِحَمدِكَ |
আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন | হে আল্লাহ! | এবং আপনার প্রশংসা করছি |
সহীহ বুখারী ৭৯৪
রুকু থেকে উঠার তাসবিহ
মালিক ইবনি হুওয়াইরিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন তাকবীর বলিতেন, কান পর্যন্ত উভয় হাত উত্তোলন করিতেন। তিনি যখন রুকূতে যেতেন উভয় হাত কান পর্যন্ত উত্তোলন করিতেন। তিনি যখন রুকূ থেকে মাথা তুলতেন তখন
سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
উচ্চারণঃ সামিআল্ল-হ লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করেন আল্লাহ তার কথা শুনে থাকেন
বলিতেন এবং অনুরূপ [কান পর্যন্ত উভয় হাত উত্তোলন] করিতেন।
৭৫১ [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭৪৯, ইসলামিক সেন্টার-৭৬২]
রুকূ হইতে মাথা উঠানোর সময় ইমাম ও মুক্তাদী যা বলবেন ।
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলে (রুকূ থেকে উঠতেন) তখন
اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আল্লাহ, আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা
বলিতেন, আর তিনি যখন রুকূতে যেতেন এবং রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন, তখন তাক্বীর বলিতেন এবং উভয় সিজ্দা থেকে যখন দাঁড়াতেন, তখন
اللَّهُ أَكبَر
উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবর, অর্থঃ আল্লাহ মহান
বলিতেন।
বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের উক্তির সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
সহীহ বুখারী ৭৯৫
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ইমাম যখন
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলেন, তখন তোমরা
اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আল্লাহ, আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা
বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের উক্তির সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
সহীহ বুখারী ৭৯৫
রিফাআ ইবনু রাফি যুরাকী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যখন রুকূ থেকে মাথা উঠিয়ে
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলিলেন, তখন পিছন থেকে এক সাহাবী
رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ حَمداً كَثيراً طَيِّباً مُبارَكاً فيِهِ
উচ্চারণঃ রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু, হামদান কাছীরান ত্বায়্যিবান মুবা–রাকান ফীহি, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা; অঢেল, পবিত্র ও বরকত-রয়েছে-এমন প্রশংসা
الحَمدُ | وَلَكَ | رَبَّناَ |
সমস্ত প্রশংসা | আর আপনার জন্যই | হে আমাদের রব্ব |
طَيِّباً | كَثيراً | حَمداً |
পবিত্র | অঢেল | প্রশংসা |
فيِهِ | مُبارَكاً | |
এমন | ও বরকত |
বলিলেন। সালাত শেষ করে তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, কে এরূপ বলেছিল? সে সাহাবী বলিলেন, আমি। তখন তিনি বললেনঃ আমি দেখলাম ত্রিশ জনের অধিক মালাইকা এর সওয়াব কে পূর্বে লিখবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছেন। [১]
সহীহ বুখারী ৭৯৯ [১] রুকূর পর পঠিতব্য দুআর মর্যাদার কারণে এর সওয়াব লেখার জন্য মালাকদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। তাই রুকূ হইতে উঠে এই দুআটি পাঠ করা অধিক মর্যাদাপূর্ণ যা অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে অনেকে না জানার কারণে পড়েন না ।
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি অবশ্যই নাবী (সাঃআঃ)-এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করব। আবু হুরাইরা (রাদি.) যুহর, ইশা ও ফজরের সালাতের শেষ রাকআতেঃ
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন
বলার পর কুনূত পড়তেন। এতে তিনি মুমিনগণের জন্য দুআ করিতেন এবং কাফিরদের প্রতি অভিসম্পাত করিতেন।
৭৫৪
আবু বাক্র ইবনি আবদুর রহমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আবু হুরায়রা্[রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সলাতে দাঁড়াতেন
اللَّهُ أَكْبَرُ
উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার, অর্থঃ আল্লাহ মহান
বলে নামাজ শুরু করিতেন। তিনি তাকবীর বলে রুকূতে যেতেন। তিনি রুকূ থেকে পিঠ সোজা করে দাঁড়ানোর সময়
سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ
সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ [যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করেন আল্লাহ তার কথা শুনে থাকেন]
বলিতেন। অতঃপর দাঁড়ানো অবস্থায়
رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ
রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ [হে আল্লাহ! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা] বলিতেন।
তিনি তাকবীর সাজদাহ থেকে মাথা তোলার সময়ও তাকবীর বলিতেন। প্রত্যেক রাকআতে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত তিনি এরূপই করিতেন। দ্বিতীয় রাকআতের বসার পর ওঠার সময়ও তিনি তাকবীর বলিতেন।
অতঃপর আবু হুরায়রা্[রাদি.] বলিলেন, আমি তোমাদের সবার তুলনায় অধিক পরিমাণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অনুরূপ নামাজ আদায় করিতে পারি।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৭৫২, ইসলামিক সেন্টার-৭৬৫]
সিজদা হইতে দাঁড়ানোর সময় তাকবীর বলা
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সালাত আরম্ভ করার সময় দাঁড়িয়ে তাকবীর বলিতেন। অতঃপর রুকূতে যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন, আবার যখন রুকূ হইতে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখন
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শোনেন
اللهُ | سَمِعَ |
আল্লাহর | যে প্রশংসা করে |
حَمِدَه | لِمَن |
প্রশংসা শোনেন | তার |
বলিতেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে
رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ
উচ্চারণঃ রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা
الحَمدُ | وَلَكَ | رَبَّناَ |
সমস্ত প্রশংসা | আর আপনার জন্যই | হে আমাদের রব্ব |
বলিতেন। অতঃপর সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। আবার (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতে তাকবীর বলিতেন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। এভাবেই তিনি পুরো সালাত শেষ করিতেন। আর দ্বিতীয় রাকআতের বৈঠক শেষে যখন (তৃতীয় রাকআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) লাইস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিতে وَلَكَ الحَمدُ উল্লেখ করিয়াছেন।
সহীহ বুখারী ৭৮৯, ৮০৩, ৮০৫
৮০৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন রুকূ হইতে মাথা উঠাতেন তখন
سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ
সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শোনেন, হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা
বলিতেন। আর কতিপয় লোকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের জন্য দুআ করিতেন। দুআয় তিনি বলিতেন,
اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ، وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ
হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদ, সালামা ইবনু হিশাম, আইয়্যাস ইবনু আবু রাবীআ (রাদি.) এবং অপরাপর দুর্বল মুসলিমদেরকে রক্ষা করুন। হে আল্লাহ! মুদার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াও কঠোর করুন, ইউসুফ (আঃ)–এর যুগে যেমন খাদ্য সংকট ছিল তাঁদের জন্যও তেমন খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে দিন।
(রাবী বলেন) এ যুগে পূর্বাঞ্চলের অধিবাসী মুদার গোত্রের লোকেরা নাবী (সাঃআঃ)–এর বিরোধী ছিল।
==============
৮১১. বারাআ ইবনু আযিব (রাদি.) যিনি অবশ্যই মিথ্যাবাদী ছিলেন না হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর পশ্চাতে সালাত আদায় করতাম। তিনি
سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَه
উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শোনেন
বলার পর যতক্ষণ না কপাল মাটিতে স্থাপন করিতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কেউ সিজদার জন্য পিঠ ঝুঁকাত না।
১৭. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর রুকূ ও সিজদায় অধিক পরিমাণে
سُبحانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَبِحَمدِكَ اللَّهُمَّ اغفِرلي
উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকা; আল্লাহুম্মাগফরলি, অর্থঃ “হে আল্লাহ! হে আমাদের রব! আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করুন” পাঠ করিতেন।
এতে তিনি পবিত্র কুরআনের নির্দেশ পালন করিতেন। [১]
[১] এর দ্বারা সুরা নাসর-এর ৩ নং আয়াত “فَسَبِّح بِحَمدِ رَبِّكَ وَاستَغفِرهُ إِنَّهُ كانَ تَوّاَباً” (আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাহাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি তো তাওবাহ কবুলকারী) এর দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে ।
হুযাইফাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী (সাঃআঃ)-এর সাথে নামায আদায় করিয়াছেন। তিনি রুকুতে
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ
সুবহানা রব্বিয়াল আযীম, আমি আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি
الْعَظِيمِ | رَبِّيَ | سُبْحَانَ |
মহান | আমার রবের | পবিত্রতা বর্ণনা করছি |
এবং সাজদা হইতে
سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى
সুবহানা রব্বিয়াল আলা, আমার রবের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে
الأَعْلَى | رَبِّيَ | سُبْحَانَ |
যিনি সবার উপরে | আমার রবের | পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি |
পাঠ করতেন এবং কুরআন তিলাওয়াতকালে তিনি কোন রহমাতের আয়াতে পৌঁছলে সেখানে থেমে রহমাতের দুআ করতেন এবং কোনআযাবের আয়াত তিলাওয়াতকালে সেখানে থেমেআযাব থেকে পরিত্রান চাইতেন।
আবু দাউদ ৮৭১, সহীহঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
আবদুল্লা ইবনি মাসঊদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ রুকূতে গিয়ে যেন কমপক্ষে তিনবার বলেঃ
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ
“সুবহানা রব্বিয়ালআযীম” আমি আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি
এবং সাজদাহ্তে গিয়ে যেন তিনবার বলেঃ
سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى
“সুবহানা রব্বিয়াল আলা” আমার রবের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে
আর এটাই সর্বনিম্ম পরিমাণ। {৮৮৬}
আবু দাউদ ৮৮৬, দূর্বল। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ বর্ণনাটি মুরসাল। কেননাআওনআবদুল্লা ইবনি মাসঊদ (রাঃআঃ)-এর সাক্ষাত পাননি।
{৮৮৬} তিরমিযী (অধ্যায়ঃ নামায, অনুঃ রুকূ ও সাজদাহ্র তাসবীহ, হাঃ ২৬১, ঈমাম তিরমিযী বলেন, এর সানাদ মুত্তাসিল নয়, কেননাআওন ইবনি মাসউদের সাক্ষাৎ পাননি), ইবনি মাজাহ (অধ্যায়ঃ নামায ক্বায়িম, অনুঃ রুকূ ওসাজদাহ্র তাসবীহ, হাঃ ৮৯০)। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) সাজদাহ এবং রুকূতে
سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّ الْمَلاَئِكَةِ وَالرُّوحِ
সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রব্বুল মালাইকাতি ওয়ার রূহ, (আল্লাহ তাআলা) পবিত্র, ত্রুটিমুক্ত; (তিনি) সব ফেরেশতা ও জিবরিলের প্রভু
رَبُّ | قُدُّوسٌ | سُبُّوحٌ |
প্রভু | আল্লাহ তাআলা | অতিপবিত্র |
وَالرُّوحِ | الْمَلاَئِكَةِ | |
ও জিবরিলের | সব ফেরেশতা |
বলিতেন।
আবু দাউদ ৮৭২, সহীহঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) রুকূ ও সাজদাহ্তে বেশী করে এ দুআ পড়তেনঃ
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي
“সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া বিহামদিকা আল্লাহুম্মাগফিরলী”। অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু, আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি আর আপনার প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
رَبَّنَا | اللَّهُمَّ | سُبْحَانَكَ |
হে আমাদের প্রভু, | আল্লাহ! | আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি |
اغْفِرْ لِي | اللَّهُمَّ | وَبِحَمْدِكَ |
আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন | হে আল্লাহ! | আর আপনার প্রশংসা করছি |
তিনি এভাবে কুরআনের আয়াতকে ব্যাখ্যা করতেন।
আবু দাউদ ৮৭৭, সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
আওফ ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে আমি রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) সাথে নামায আদায়ে দাঁড়ালাম। তিনি সূরাহ বাক্বারাহ তিলাওয়াতের সময় কোন রহমাতের আয়াতে পৌঁছলে তথায় থেমে রহমাত চাইতেন এবং যখন কোন আযাবের আয়াতে পৌঁছতেন, তখন সেখানে থেমে আযাব হইতে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। অতঃপর তিনি কিয়ামের সমপরিমাণ সময় রুকূতে অবস্থান করেন এবং তাতে
سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوتِ وَالْمَلَكُوتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظَمَةِ
“সুবহানা যিল জাবারূতি ওয়াল মালাকূতি ওয়াল কিবরিয়াই ওয়ালআযমাতি”, অর্থ : ‘পবিত্র ওই সত্তা, যিনি সর্বময় ক্ষমতা, সার্বভৌমত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্বের অধিকারী।’
الْجَبَرُوتِ | ذِي | سُبْحَانَ |
পবিত্র ওই সত্তা | ||
وَالْعَظَمَةِ | وَالْكِبْرِيَاءِ | وَالْمَلَكُوتِ |
পাঠ করেন। অতঃপর তিনি কিয়ামের সমপরিমাণ সময় সাজদাহইতে অবস্থান করেন এবং তাতেও উক্ত দুআ পাঠ করেন। অতঃপর তিনি (দ্বিতীয় রাকআতে) দাঁড়িয়ে সূরাহ আলে-ইমরান তিলাওয়াত করেন। অতঃপর (প্রত্যেক রাকআতে) একটি করে সূরাহ তিলাওয়াত করেন।
আবু দাউদ ৮৭৩, হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
হুযাইফাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
একদা রাতে তিনি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে নামায আদায় করতে দেখলেন। এ সময় তিনি (সাঃআঃ)
তিনবার আল্লাহু আকবার
বলার পর
যুল-মালাকূতি ওয়াল জাবারূতি ওয়াল কিবরিয়াই ওয়ালআযমাতি, অর্থ : ‘পবিত্র ওই সত্তা, যিনি সর্বময় ক্ষমতা, সার্বভৌমত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্বের অধিকারী।’
পাঠ করেন। অতঃপর তিনি সূরাহ বাকারাহ তিলাওয়াত শুরু করেন। এবং তাহাঁর রুকু ছিলো কিয়ামের সমপরিমাণ সময়। তিনি রুকুতে
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ
সুবহানা রব্বিয়াল আযীম, সুবহানা রব্বিয়াল আযীম, আমি আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি, আমি আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি
পাঠ করেন। অতঃপর রুকু হইতে মাথা উঠিয়ে প্রায় রুকুর সমপরিমাণ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন এবং এ সময়
لِرَبِّيَ الْحَمْدُ
“লি-রব্বিয়াল হামদ”
পাঠ করেন। অতঃপর তিনি সাজদাহয় গিয়ে তাতে কিয়ামের অনুরূপ সময় অবস্থান করেন এবং হে সময়সুবহানা রব্বিয়াল আলা পাঠ করেন। অতঃপর সাজদাহ হইতে মাথা উঠিয়ে দু সাজদাহর মাঝে সাজদাহয় অবস্থানের সমপরিমাণ সময় বসে থাকেন এবং এখানে তিনি
رَبِّ اغْفِرْ لِي رَبِّ اغْفِرْ لِي
রব্বিগফিরলী রব্বিগফিরলী, প্রভু আমাকে ক্ষমা করুন, প্রভু আমাকে ক্ষমা করুন
পাঠ করেন। এরূপে তিনি চার রাকআত নামায আদায় করেন এবং এ নামায সূরাহ আল-বাকারাহ, সূরাহ আলে-ইমরান, সূরাহ নিসা এবং সূরাহ মায়িদাহ অথবা সূরাহ আনআম তিলাওয়াত করেন।
আবু দাউদ ৮৭৪, হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
আবু হুরাইরাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সাজদাহ্তে এ দুআ পড়তেনঃ
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
“আল্লাহুম্মাগফিরলী যামবী কুল্লাহু দিক্কাহু ওয়া জুল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু।”, অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার সব গুনাহ ক্ষমা করে দাও। সুক্ষ্ম ও স্থূল, শুরুর দিকের ও শেষের দিকে (গুনাহ ক্ষমা করে দাও);
لِي | اغْفِرْ | اللَّهُمَّ |
আমার | সব গুনাহ ক্ষমা করে দাও | হে আল্লাহ! |
دِقَّهُ | كُلَّهُ | ذَنْبِي |
সব | শেষের দিকে | |
وَآخِرَهُ | وَأَوَّلَهُ | وَجِلَّهُ |
শেষের দিকে |
ইবনিস সারহ এ বাক্যটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেনঃ
عَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ
“আলানিয়্যাতাহু ওয়া সিররাহু।” প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য (গুনাহও ক্ষমা করে দাও)।’
وَسِرَّهُ | عَلاَنِيَتَهُ |
আবু দাউদ ৮৭৮, সহীহঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বিছানায় না পেয়ে তার খোঁজে মাসজিদে গিয়ে সেখানে তাঁকে সাজদাহ্রত দেখিতে পেলাম। এ সময় তাহাঁর দু পায়ের পাতা খাড়া ছিল। তিনি এ দুআ পড়ছিলেনঃ
أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَأَعُوذُ بِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
“আউযু বিরিদাকা মিন্ সাখাতিকা ওয়া আউযু বিমাআফাতিকা মিনউকুবাতিকা ওয়া আউযুবিকা মিনকা লা উহসী সানায়ানআলাইকা আনতা কামা আসনাইতাআলা নাফসিকা।, অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার খুশির জন্য তোমার অখুশি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি, তোমার ক্ষমা ও অনুকম্পার জন্য তোমার শাস্তি হতে আশ্রয় প্রার্থনা করি এবং তোমার সত্বা হতে তোমার কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা করি। তোমার প্রশংসা করে আমি শেষ করতে পরি না, তুমি তেমনি যেমন তুমি নিজের প্রশংসা করেছ।’
مِنْ | بِرِضَاكَ | أَعُوذُ |
থেকে | আশ্রয় প্রার্থনা করি | |
بِمُعَافَاتِكَ | وَأَعُوذُ | سَخَطِكَ |
আশ্রয় প্রার্থনা করি | তোমার অখুশি | |
وَأَعُوذُ | عُقُوبَتِكَ | مِنْ |
আশ্রয় প্রার্থনা করি | তোমার শাস্তি | থেকে |
لاَ | مِنْكَ | بِكَ |
না | ||
عَلَيْكَ | ثَنَاءً | أُحْصِي |
أَثْنَيْتَ | كَمَا | أَنْتَ |
যেমন | ||
نَفْسِكَ | عَلَى | |
তুমি নিজের |
আবু দাউদ ৮৭৯, সহীহঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস