রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ: অল্প খাবার বেশী হওয়া

রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ: অল্প খাবার বেশী হওয়া

রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ: অল্প খাবার বেশী হওয়া << নবুওয়তের মুজিযা হাদীসের মুল সুচিপত্র দেখুন

সপ্তম পরিচ্ছেদ:রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ: অল্প খাবার বেশী হওয়া

ইমাম বুখারী রহ. বলেন,

জাবির রাদি. আনহুর সূত্রে বর্ণিত, [আমার পিতা] আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু হারাম রাদি. আনহু ঋনী অবস্থায় মারা যান। পাওনাদারেরা যেন তাহাঁর কিছু ঋন ছেড়ে দেয়, এজন্য আমি রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ এর কাছে সাহায্য চাইলাম। রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ তাদের কাছে কিছু ঋন ছেড়ে দিতে বললে, তারা তা করলনা। তখন রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ আমাকে বলিলেন, যাও, তোমার প্রত্যেক ধরনের খেজুরকে আলাদা আলাদা কর রাখ। আজওয়া আলাদা এবং আযকা যায়দ আলাদা করে রাখ। পরে আমাকে খবর দিও। [জাবির রাদি. আনহু বলেন] আমি তা করে রাঃসাঃ কে খবর দিলাম। তিঁনি এসে খেজুরের [স্তুপ এর] উপরে বা তার মাঝখানে বসলেন। তারপর বলিলেন, পাওনাদারদের মেপে দাও। আমি তাদের মেপে দিতে লাগলাম, এমনকি তাদের পাওনা পুরোপুরী দিয়ে দিলাম। আর আমার খেজুর এরূপ থেকে গেল, যেন এ থেকে কিছুই কমেনি। ফিরাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] শা`বী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে জাবির রাদি. আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ তাদের এ পর্যন্ত মেপে দিতে থাকলেন যে, তাদের ঋন পরিশোধ করে দিলেন। হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ওহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে জাবির রাদি. `আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ বলেছিলেন গাছ থেকে খেজুর কেটে নাও এবং পুরোপুরী আদায় করে দাও। [1]

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত যে, তাহাঁর পিতা একজন ইহুদীর কাছে থেকে নেওয়া ত্রিশ ওসাক [খেজুর] ঋণ রেখে ইন্তিকাল করেন। জাবির রাদি. `আনহু তার নিকট [ঋণ পরিশোধের জন্য] সময় চান। কিন্তু সে সময় দিতে অস্বীকার করে। জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ রাদি. `আনহু রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর সঙ্গে কথা বলিলেন, যেন তিনি তার জন্য ইয়াহূদীর কাছে সুপারিশ করেন। রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এলেন এবং ইয়াহূদীর সাথে কথা বলেন, ঋণের বদলে সে যেন তার খেজুর গাছের ফল নিয়ে নেয়। কিন্তু সে তা অস্বীকার করল। এরপর রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ বাগানে প্রবেশ করে সেখানে গাছের [চারদিক] হাঁটা চলা করিলেন। তারপর তিনি জাবির রাদি. `আনহুকে বলিলেন, ফল পেড়ে তার সম্পূর্ণ প্রাপ্য আদায় করে দাও। রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ ফিরে আসার পর তিনি ফল পাড়লেন এবং তাকে এরপর পূর্ণ ত্রিশ ওসাক [খেজুর] দিয়ে দিলেন এবং সতর ওসাক [খেজুর] অতিরিক্ত রয়ে গেল। জাবির রাদি. `আনহু রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য আসলেন। তিনি তাঁকে আসরের নামায আদায় করা অবস্থায় পেলেন। তিনি নামায শেষ করলে তাঁকে অতিরিক্ত খেজুরের কথা অবহিত করিলেন। তিনি বলিলেন- খবরটি ইবনু খাত্তাব [উমর] কে পৌঁছাও। জাবির [রাদি. `আনহু উমর রাদি. `আনহুর কাছে গিয়ে খবরটি পৌঁছালেন। উমর রাদি. `আনহু তাঁকে বলিলেন, রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ যখন বাগানে প্রবেশ করে হাঁটাচলা করিলেন, তখনই আমি বুঝতে পারছিলাম যে, নিশ্চয় এতে বরকত দান করা হবে। [2]

আব্দুর রহমান ইবনু আবূ বকর রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, [কোন এক সফরে] নাবী রাঃসাঃ এর সাথে আমরা একশ ত্রিশজন লোক ছিলাম। সে সময় নাবী রাঃসাঃ জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমাদের কারো সাথে কি খাবার আছে? দেখা গেল, এক ব্যক্তির সংগে এক সা কিংবা তার কমবেশী পরিমান খাদ্য [আটা] আছে। সে আটা গোলানো হল। তারপর দীর্ঘ দেহী এলোমেলো চুল বিশিষ্ট এক মুশরিক এক পাল বকরী হাকিয়ে নিয়ে এল। নাবী রাঃসাঃ জিজ্ঞাসা করিলেন। বিক্রি করবে, না, উপহার দিবে? সে বলল না, বরং বিক্রি করব। নাবী রাঃসাঃ তা কাছ থেকে একটা বকরী কিনে নিলেন। একশ ত্রিশজনের প্রত্যেককে নাবী রাঃসাঃ সেই কলিজার কিছু কিছু করে দিলেন। যে উপস্থিত ছিল, তাকে হাতে দিলেন; আর অনুপস্থিত ছিলো। তার জন্য তুলে রাখলেন। তারপর দু`টি পাত্রে তিন গোশত ভাগ করে রাখলেন। সবাই তৃপ্তির সাথে খেলেন। আর উভয় পাত্রে কিছু উদ্বৃত্ত থেকে গেল। সেগুলো আমরা উটের পিঠে উঠিয়ে নিলাম। অথবা রাবী যা বলিলেন। [3]

আনাস রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু তালহা রাদি. `আনহু তদীয় [পত্নী] উম্মে সুলাইমকে বলিলেন, আমি নাবী রাঃসাঃ এর কন্ঠস্বর দুর্বল শুনেছি। আমি তাহাঁর মধ্যে ক্ষুদা বুঝতে পেরেছি। তোমার নিকট খাবার কিছু আছে কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ আছে। এই বলে তিনি কয়েকটা যবের রুটি বের করিলেন। তারপর তাহাঁর একখানা ওড়না বের করে এর কিয়দংশ দিয়ে রুটিগুলো মুড়ে আমার হাতে গোপন করে রেখে দিলেন ও ওড়নার উপর অংশ আমার শরীর জড়িয়ে দিলেন এবং আমাকে নাবী রাঃসাঃ এর খেদমতে পাঠালেন। রাবী আনাস রাদি. `আনহু বলেন, আমি তাহাঁর নিকট গেলাম। ঐ সময় তিনি কতিপয় লোকসহ মসজিদে অবস্থান করছিলেন। আমি গিয়ে তাদের সম্মুখে দাঁড়ালাম। নাবী রাঃসাঃ আমাকে দেখে বলিলেন, তোমাকে আবু তালহা পাঠিয়েছে? আমি বলিলাম, জি হ্যাঁ। নাবী রাঃসাঃ বলিলেন, খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে পাঠিয়েছে? আমি বলিলাম, জি হ্যাঁ। তখন নাবী রাঃসাঃ সঙ্গীদেরকে বলিলেন, চলো, আবু তালহা আমাদেরকে দাওয়াত করেছে। আমি তাহাঁদের আগেই চলে গিয়ে আবু তালহা রাদি. `আনহুকে নাবী রাঃসাঃ এর আগমন বার্তা শুনালাম। ইহা শুনে আবু তালহা রাদি. `আনহু বলেন, হে উম্মে সুলাইম, নাবী রাঃসাঃ তাহাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে আসছেন। তাহাঁদেরকে খাওয়ানোর মত কিছু আমাদের নিকট নেই। উম্মে সুলাইম রাদি. আনহা বলিলেন, আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলই ভালো জানেন। আবু তালহা রাদি. `আনহু তাহাঁদেরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বাড়ী হতে কিছুদূর অগ্রসর হলেন এবং নাবী রাঃসাঃ এর সাক্ষাৎ করিলেন। নাবী রাঃসাঃ আবু তালহাকে সঙ্গে নিয়ে তাহাঁর ঘরে আসলেন, আর বলিলেন, হে উম্মে সুলাইম, তোমার নিকট যা কিছু আছে নিয়ে এসো। তিনি যবের ঐ রুটিগুলো হাযির করিলেন এবং তাহাঁর নির্দেশে রুটিগুলো টুকরা টুকরা করা হল। উম্মে সুলাইম ঘিয়ের পাত্র ঝেড়ে মুছে কিছু ঘি বের করে তা তরকারী স্বরূপ পেশ করিলেন। এরপর নাবী রাঃসাঃ কিছু পাঠ করে তাতে ফুঁ দিলেন, এরপর দশজনকে নিয়ে আসতে বলিলেন। তাঁরা দশজন আসলেন এবং রুটি খেয়ে পরিতৃপ্ত হয়ে বেরিয়ে গেলেন। তারপর আরো দশজনকে আসতে বলা হল। তাঁরাও আসলেন এবং পেটভরে খেয়ে নিলেন। অনুরূপভাবে সমবেত সকলেই রুটি খেয়ে পরিতৃপ্ত হলেন। লোকজন সর্বমোট সত্তর বা আশিজন ছিলেন। [4]

আয়মান রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জাবির রাদি. `আনহুর নিকট গেলে তিনি বলিলেন, খন্দক যুদ্ধের দিন আমরা পরিখা খনন করেছিলাম। এ সময় একখন্ড কঠিন পাথর বেরিয়ে আসলে [যা ভাঙ্গা যাচ্ছিল না] সকলেই নাবী রাঃসাঃ এর কাছে এসে বলিলেন, খন্দকের মাঝে একখন্ড শক্ত পাথর বেরিয়েছে [আমরা তা ভাংতে পারছি না]। এ কথা শুনে তিনি বলিলেন, আমি নিজে খন্দকে অবতরণ করব। এরপর তিনি দাঁড়ালেন। এ সময় তাহাঁর পেটে একটি পাথর বাঁধা ছিল। আর আমরাও তিন দিন পর্যন্ত অনাহারী ছিলাম। কোনো কিছুর স্বাদও গ্রহণ করিনি। তখন নাবী রাঃসাঃ একখানা কোদাল হাতে নিয়ে প্রস্তরখন্ডে আঘাত করিলেন। ফলে তৎক্ষণাৎ তা চূর্ণ হয়ে বালুকারাশিতে পরিণত হল। তখন আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! রাঃসাঃ আমাকে বাড়ি যাওয়ার জন্য অনুমতি দিন। [তিনি অনুমতি দিলে বাড়ি পৌঁছে] আমি আমার স্ত্রীকে বলিলাম, নাবী রাঃসাঃ এর মধ্যে আমি এমন কিছু দেখলাম যা আমি সহ্য করতে পারছি না। তোমার নিকট কোনো খাবার আছে কি? সে বলল, আমার কাছে কিছু যব ও একটি বকরীর বাচ্চা আছে। তখন বকরীর বাচ্চাটি আমি যবেহ করলাম। এবং সে [আমার স্ত্রী] যব পিষে দিল। এরপর গোশত ডেকচিতে দিয়ে আমি নাবী রাঃসাঃ এর কাছে আসলাম। এ সময় আটা খামির হচ্ছিল এবং ডেকচি চুলার উপর ছিল ও গোশত প্রায় রান্না হয়ে আসছিল। তখন আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! রাঃসাঃ আমার [বাড়িতে] সামান্য কিছু খাবার আছে। আপনি একজন বা দুইজন সাথে নিয়ে চলুন। তিনি বলিলেন, কি পরিমাণ খাবার আছে? আমি তার নিকট সব খুলে বললে তিনি বলিলেন, এ তো অনেক উত্তম। এরপর তিনি আমাকে ডেকে বলিলেন, তুমি তোমার স্ত্রীকে গিয়ে বল, সে যেন আমি না আসা পর্যন্ত উনান থেকে ডেকচি ও রুটি না নামায়। এরপর তিনি বলিলেন, উঠ! [জাবির তোমাদের খাবার দাওয়াত দিয়েছে] মুহাজিরগণ উঠলেন [এবং চলতে লাগলেন]। জাবির রাদি. `আনহু তার স্ত্রীর নিকট গিয়ে বলিলেন, তোমার সর্বনাশ হোক! [এখন কি হবে?] নাবী রাঃসাঃ তো মুহাজির, আনসার এবং তাহাঁদের অন্য সাথীদের নিয়ে চলে আসছেন। তিনি [জাবিরের স্ত্রী] বলিলেন, তিনি কি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন? আমি বলিলাম, হ্যাঁ। এরপর নাবী রাঃসাঃ [উপস্থিত হয়ে] বলিলেন, তোমরা সকলেই প্রবেশ কর এবং ভিড় করোনা। এ বলে তিনি রুটি টুকরো করে এরপর গোশত তিনি সাহাবীগণের নিকট তা বিতরণ করতে শুরু করিলেন। [এগুলো পরিবেশন করার সময়] তিনি ডেকচি এবং উনান ঢেকে রেখেছিলেন। এমনি করে তিনি রুটি টুকরো করে হাত ভরে বিতরণ করতে লাগলেন। এতে সকলে পেট ভরে খাবার পরেও কিছু বাকী রয়ে গেল। তাই তিনি [জাবিরের স্ত্রীকে] বলিলেন, এ তুমি খাও এবং অন্যকে হাদিয়া দাও। কেননা লোকদেরও ক্ষুধা পেয়েছে। [5]

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ্ রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন পরিখা খনন করা হচ্ছিল তখন আমি নাবী রাঃসাঃকে ভীষণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম। তখন আমি আমার স্ত্রীর কাছে ফিরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কাছে কোনো কিছু আছে কি? আমি রাঃসাঃ কে দারুণ ক্ষুধার্ত দেখেছি। [এ কথা শুনে] তিনি একটি চামড়ার পাত্র এনে তা থেকে এক সা পরিমাণ যব বের করে দিলেন। আমাদের গৃহপালিত একটি বকরীর বাচ্চা ছিল। আমি সেটি যবেহ করলাম এবং গোশত কেটে কেটে ডেকচিতে ভরলাম। আর সে [আমার স্ত্রী] যব পিষে দিল। আমি আমার কাজ শেষ করে চললাম। তখন সে [স্ত্রী] বলল, আমাকে রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ ও তাহাঁর সাহাবীদের নিকট লজ্জিত করবেন না। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর নিকট গিয়ে চুপে চুপে বলিলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! রাঃসাঃ আমরা আমাদের একটি বকরীর বাচ্চা যবেহ করেছি এবং আমাদের ঘরে এক সা যব ছিল। তা আমার স্ত্রী পিষে দিয়েছে। আপনি আরো কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আসুন। তখন নাবী রাঃসাঃ উচ্চ স্বরে সবাইকে বলিলেন, হে পরিখা খননকারীগণ! জাবির খানার ব্যবস্থা করেছে। এসো, তোমরা সকলেই চল। এরপর রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ বলিলেন, আমার আসার পূর্বে তোমাদের ডেকচি নামাবে না এবং খামির থেকে রুটিও তৈরি করবে না। আমি [বাড়িতে] আসলাম এবং রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ সাহাবীদেরকে নিয়ে আসলেন, এরপর আমি আমার স্ত্রীর নিকট আসলে সে বলল, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। [তুমি এ কি করলে? এতগুলো লোক নিয়ে আসলে? অথচ খাদ্য একেবারে নগন্য] আমি বলিলাম, তুমি যা বলেছ আমি তাই করেছি। এরপর সে রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর সামনে আটার খামির বের করে দিলে তিনি তাতে মুখের লালা মিশিয়ে দিলেন এবং বরকতের জন্য দো`আ করিলেন। এরপর তিনি ডেকচির দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তাতে মুখের লালা মিশিয়ে এর জন্য বরকতের দো`আ করিলেন। তারপর বলিলেন, [হে জাবির] রুটি প্রস্তুতকারিনীকে ডাকো। সে আমার কাছে বসে রুটি প্রস্তুত করুক এবং ডেকচি থেকে পেয়ালা ভরে গোশত পরিবেশন করুক। তবে চুলা থেকে ডেকচি নামাবে না। তাঁরা [আগন্তুক সাহাবীরা] ছিলেন সংখ্যায় এক হাজার। আমি আল্লাহ্‌র কসম করে বলছি, তাঁরা সকলেই তৃপ্তিসহকারে খেয়ে অবশিষ্ট খাদ্য রেখে চলে গেলেন। অথচ আমাদের ডেকচি পূর্বের ন্যায় তখনও টগবগ করছিল এবং আমাদের আটার খামির থেকেও পূর্বের মত রুটি তৈরি হচ্ছিল। [6]

আবু উসমান রহ. বলেন, একদিন আনাস ইবনু মালিক রাদি. `আনহু আমাদের বনী রিফা`আর মসজিদের নিকট গমনকালে তাকে এ কথা বলতে শুনেছি যে, যখনই উম্মে সুলাইমের নিকট দিয়ে নাবী রাঃসাঃ যেতেন, তাঁকে সালাম দিতেন। আনাস রাদি. `আনহু আরো বলেন, নাবী রাঃসাঃ এর যখন যয়নাব রাদি. `আনহার সাথে শাদী হয়, তখন উম্মে সুলাইম আমাকে বলিলেন, চল আমরা রাঃসাঃ এর জন্য কিছু হাদীয়া পাঠাই। আমি তাকে বলিলাম, হ্যাঁ, এ ব্যবস্থা করুন। তখন তিনি খেজুর, মাখন ও পনির এক সাথে মিশিয়ে হালুয়া বানিয়ে একটি ডেকচিতে করে আমার মারফত রাঃসাঃ এর কাছে পাঠালেন। আমি সেসব নিয়ে তাহাঁর খিদমতে উপস্থিত হলে তিনি এগুলো রেখে দিতে বলেন, এবং আমাকে কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করে ডেকে আনার আদেশ করিলেন। আরো বলিলেন, যার সাথে দেখা হয় তাকেও দাওয়াত দিবে। তিনি যেভাবে আমাকে হুকুম করিলেন, আমি সেইভাবে কাজ করলাম। যখন আমি ফিরে এলাম, তখন ঘরে অনেক লোক দেখতে পেলাম। রাঃসাঃ তখন হালুয়া [হাইশা] পাত্রের মধ্যে হাত রাখা অবস্থায় ছিলেন এবং আল্লাহ তা`আলার মর্জি মোতাবেক কিছু কথা বলিলেন। তারপর তিনি দশ দশ জন করে লোক খাবারের জন্য ডাকলেন এবং বলিলেন, তোমরা `বিসমিল্লাহ` বলে খাওয়া শুরু কর এবং প্রত্যেকে পাত্রের নিজ নিজ দিক হতে খাও। যখন তাদের খাওয়া-দাওয়া শেষ হল তাদের মধ্য থেকে অনেকেই চলে গেল এবং কিছু সংখ্যক লোক কথাবার্তা বলতে থাকল। যা দেখে আমি বিরক্তি বোধ করলাম। তারপর নাবী রাঃসাঃ সেখান থেকে বের হয়ে অন্য ঘরে গেলেন। আমিও সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। যখন আমি বলিলাম, তারাও চলে গেছে তখন তিনি নিজের কক্ষে ফিরে এলেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। তিনি তাহাঁর কক্ষে থাকলেন এবং এই আয়াত পাঠ করিলেন,

“হে মু`মিনগণ, তোমাদেরকে অনুমতি না দেওয়া হলে তোমরা খাবার তৈরির অপেক্ষা না করে নাবীগৃহে খাবার জন্য প্রবেশ করো না। তবে যদি তোমাদেরকে ডাকা হয় তাহলে প্রবেশ কর এবং খাওয়া শেষ করে চলে যাবে। তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়ে পড়ো না এবং তোমাদের এরূপ আচরণ নাবীর মনে কষ্ট হয়। তিনি তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করেন, কিন্তু আল্লাহ তা`আলা সত্য বলতে সংকোচ বোধ করেন না”। [কোরআনের সুরা আল-আহযাব: ৫৩]

আবু উসমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আনাস রাদি. `আনহু বলিয়াছেন যে, তিনি দশ বছর নাবী রাঃসাঃ এর খেদমত করেছেন। [7]

আবু হুরাইরা রাদি. `আনহু বলতেন, আল্লাহর কসম! যিনি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই, আমি ক্ষুধার জ্বালায় আমার পেটকে মাটিতে রেখে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতাম। আর কোনো সময় ক্ষুধার জ্বালায় আমার পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। একদিন আমি ক্ষুধার যন্ত্রনায় বাধ্য হয়ে নাবী রাঃসাঃ ও সাহাবীগণের বের হওয়ার পথে বসে থাকলাম। আবূ বকর রাদি. `আনহু যেতে লাগলে আমি কুরআনের একটা আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি তাহলে আমাকে পরিতৃপ্ত করে কিছু খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন, কিছু করিলেন না, কিছুক্ষন পর উমর রাদি. `আনহু যাচ্ছিলেন, আমি তাকে কুরআনের একটা আয়াত সম্বন্ধে প্রশ্ন করলাম। এই সময়ও আমি প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি আমাকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবেন, কিন্তু তিনি চলে গেলেন। আমার কোনো ব্যবস্থা করিলেন না। তার পরক্ষনে রাঃসাঃ যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই মুচকি হাসলেন এবং আমার প্রাণে কি অস্থিরতা বিরাজমান এবং আমার চেহারার অবস্থা থেকে তিনি তা আঁচ করতে পারলেন। তারপর বলিলেন, হে আবূ হির! আমি বলিলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! রাঃসাঃ আমি হাযির আছি। তিনি বলিলেন, তুমি আমার সঙ্গে চল। এ বলে তিনি চললেন, আমি ও তার অনুসরন করলাম। তিনি ঘরে ঢুকবার অনুমতি চাইলেন এবং আমাকে ঢুকবার অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ করে একটা পেয়ালার মধ্যে কিছু পরিমান দুধ পেলেন। তিনি বলিলেন, এ দুধ কোথা থেকে এসেছে? তাঁরা বলিলেন, এটা আপনাকে অমুক পুরুষ অথবা অমুক মহিলা হাদিয়া দিয়েছেন। তখন তিনি বলিলেন, হে আবূ হির! আমি বলিলাম লাব্বাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তুমি সুফফাবাসীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। রাবী বলেন, সুফফাবাসীরা ইসলামের মেহমান ছিলেন। তাদের কোনো পরিবার ছিল না এবং তাদের কোনো সম্পদ ছিল না এবং তাদের কারো উপর নির্ভরশীল হওয়ার ও সুযোগ ছিলনা। যখন কোনো সাদাকা আসত তখন তিনি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি এর থেকে কিছুই গ্রহণ করতেন না। আর যখন কোনো হাদিয়া আসত, তখন তার কিছু অংশ তাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং এর থেকে নিজেও কিছু রাখতেন, এর মধ্যে তাদেরকে শরীক করতেন। এ আদেশ শুনে আমার মনে কিছুটা হতাশা এল, মনে মনে ভাবলাম যে, এ সামান্য দুধ দ্বারা সুফফাবাসীদের কি হবে? এ সামান্য দুধ আমার জন্যই যথেষ্ট হতো। এটা পান করে আমি শরীরে কিছু শক্তি পেতাম। এরপর যখন তারা এসে গেলেন, তখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিলেন যে, আমিই যেন তা তাদেরকে দেই, আর আমার আশা রইল না যে, এ দুধ থেকে আমি কিছু পাব, কিন্তু আল্লাহ্ ও রাসূলের নির্দেশ না মেনে কোনো উপায় নেই। তাই তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে ডেকে আনলাম। তাঁরা এসে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলে তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তারা এসে ঘরে আসন গ্রহণ করিলেন। তিনি বলিলেন, হে আবূ হির! আমি বলিলাম আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বলিলেন তুমি পেয়ালাটি নাও আর তাদেরকে দাও। আমি পেয়ালা নিয়ে একজনকে দিলাম। তিনি তা পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফেরত দিলেন। আমি আরেকজনকে পেয়ালাটি দিলাম। তিনিও পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। এমনকি আমি এরূপে দিতে দিতে নাবী রাঃসাঃ পর্যন্ত পৌছালাম। তাঁরা সবাই তৃপ্ত হয়েছিলেন। তারপর নাবী রাঃসাঃ পেয়ালাটি নিজ হাতে নিয়ে রেখে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। আর বলিলেন, হে আবূ হির! আমি বলিলাম আমি হাযির ইয়া রাসূলাল্লাহ্! তিনি বলিলেন, এখন তো আমি আর তুমি আছি। আমি বলিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি ঠিক বলছেন। তিনি বলিলেন, এখন তুমি বসে পান কর। তখন আমি বসে কিছু পান করলাম। তিনি বলিলেন, তুমি আরও পান করো। আমি আরও পান করলাম। তিনি বারবার আমাকে পান করার নির্দেশ দিতে লাগলেন। এমন কি আমি বলতে বাধ্য হলাম যে, আর না। যে সত্তা আপনাকে সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম! [আমার পেটে] আর পান করার মতো জায়গা আমি পাচ্ছি না। তিনি বলিলেন, তাহলে আমাকে দাও। আমি পেয়ালাটি তাঁকে দিয়ে দিলাম। তিনি আলহামদুলিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ্ বলে বাকীটা পান করিলেন। [8]

আবু হুরাইরা রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, আমরা রাঃসাঃ  এর সাথে একটি সফরে ছিলাম। এক পর্যায়ে দলের রসদপত্র নিঃশেষ হয়ে গেল। পরিশেষে রাসুল রাঃসাঃ তাদের কিছু সংখ্যক উট যবেহ করার মনস্থ করিলেনত। রাবী বলেন যে, এতে উমর রাদি. `আনহু আরয করিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আপনি সকলের রসদ সামগ্রী একত্র করে আল্লাহর কাছে দো`আ করতেন, তবে ভাল হতো। রাসুল রাঃসাঃ তাই করিলেন। যার কাছে গম ছিল সে গম এবং যার কাছে খেজুর ছিল সে খেজুর নিয়ে হাযির হলো, [তালহা ইবনু মুসাররিফ বলেন] মুজাহিদ আরো বর্ণনা করেন যে, যার কাছে খেজুরের আটি ছিল, সে তাই নিয়ে হাযির হলো। আমি [তালহা] আরয করলাম, আটি দিয়ে কি করতেন? তিনি বলিলেন, তা চুষে পানি পান করতেন বর্ণনাকারী বলিলেন, তারপর রাসুল রাঃসাঃ সংগৃহীত খাদ্য সামগ্রীর উপর দো`আ করিলেন। রাবী বলেন, অবশেষে লোকেরা রসদে নিজেদের পাত্র পূর্ণ করে নিল। রাবী বলেন যে, তখন রাসুল রাঃসাঃ বলিলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। যে এ দুটি বিষয়ের প্রতি সন্দেহাতীত বিশ্বাস রেখে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [9]

আবু হুরাইরা রাদি. `আনহু অথবা আবু সাঈদ খূদরী রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, [সন্দেহ রাবী `আমাশের] তাবুকের যুদ্ধের সময়ে লোকেরা দারুণ খাদ্যাভাবে পতিত হলো । তারা আরয করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের উটগুলো যবেহ করে তার গোশত খাই এবং আর চর্বি ব্যবহার করি। রাঃসাঃ  বলিলেন, যবেহ করতে পার। রাবী বলেন, ইত্যবসরে উমর রাদি. `আনহু আসলেন এবং আরয করিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি এরূপ করা হয়, তাহলে বাহন কমে যাবে বরং আপনি লোকদেরকে তাদের উদ্বৃত্ত রসদ নিয়ে উপস্হিত হতে বলুন, তাতে তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে বরকতের দো`আ করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দিবেন। রাঃসাঃ  বলিলেন, হ্যাঁ- ঠিক আছে। একটি দস্তরখান আনতে বলিলেন এবং তা বিছালেন, এরপর সকলের উদ্বৃত্ত রসদ চেয়ে পাঠালেন। রাবী বলেন, তখন কেউ একমুঠো গম নিয়ে হাযির হলো, কেউ একমুঠো খেজুর নিয়ে হাযির হলো, কেউ এক টুকরা রুটি নিয়ে আসল, এভাবে কিছু পরিমাণ রসদ-সামগ্রী দস্তরখানায় জমা হলো। রাঃসাঃ  বরকতের দো`আ করিলেন। তারপর বলিলেন, তোমরা নিজ নিজ পাত্রে রসদপত্র ভর্তি করে নাও। সকলেই নিজ নিজ পাত্র ভরে নিল, এমনকি এ বাহিনীর কোনো পাত্রই আর অপূর্ণ রইল না। এরপর সকলে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করিলেন। কিছু উদ্বৃত্তও রয়ে গেল। তখন রাঃসাঃ  বলিলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর প্রেরিত রাসুল-যে ব্যক্তি সন্দেহাতীতভাবে এ কথা দু`টির উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে, সে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে না। [10]

আব্দুর রহমান ইবনু আবী `আমরাহ আল-আনসারী রাদি. `আনহু তাহাঁর পিতার থেকে বর্ণনা করেন, আমরা রাঃসাঃ  এর সাথে এক যুদ্ধে [তাবুকের যুদ্ধে] ছিলাম। তখন লোকেরা দারুণ খাদ্যাভাবে পতিত হলো। তারা আরয করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা আমাদের কিছু উটগুলো যবেহ করে তার গোশত খাই এবং আর চর্বি ব্যবহার করি। উমর রাদি. `আনহু যখন দেখলেন যে, রাঃসাঃ  তাদেরকে, যবেহ করতে অনুমতি দিতে ইচ্ছা পোষণ করেছেন, তখন তিনি আরয করিলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি এরূপ করা হয়, তাহলে বাহন কমে যাবে, আগামীকাল আমরা শত্রুর মোকাবলা করব ক্ষুধার্তাবস্থায় বরং আপনি লোকদেরকে তাদের উদ্বৃত্ত রসদ নিয়ে উপস্হিত হতে বলুন, তাতে তাদের জন্য আল্লাহর দরবারে বরকতের দো`আ করুন। আশা করা যায়, আল্লাহ তাতে বরকত দিবেন। অথবা রাবী বলেন, অচিরেই আল্লাহ আপনার দু`আর বরকতে আমাদেরকে বরকত দিবেন। রাঃসাঃ  বলিলেন, হ্যাঁ, ঠিক আছে। একটি দস্তরখান আনতে বলিলেন এবং তা বিছালেন, এরপর সকলের উদ্বৃত্ত রসদ চেয়ে পাঠালেন। রাবী বলেন, তখন কেউ একমুঠো গম নিয়ে হাযির হলো, কেউ একমুঠো খেজুর নিয়ে হাযির হলো, কেউ এক টুকরা রুটি নিয়ে আসল, এভাবে কিছু পরিমাণ রসদ-সামগ্রী দস্তরখানায় জমা হলো। রাঃসাঃ  বরকতের দো`আ করিলেন। তারপর বলিলেন, তোমরা নিজ নিজ পাত্রে রসদপত্র ভর্তি করে নাও। সকলেই নিজ নিজ পাত্র ভরে নিল, এমনকি এ বাহিনীর কোনো পাত্রই আর অপূর্ণ রইল না। এরপর সকলে পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করিলেন। কিছু উদ্বৃত্তও রয়ে গেল। তখন রাঃসাঃ  হাসলেন এবং তাহাঁর চোয়ালের দাঁত বের হয়েছিল। তিনি বলিলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর প্রেরিত রাসুল-যে ব্যক্তি সন্দেহাতীতভাবে এ কথা দু`টির উপর বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে, কিয়ামতের দিন সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।[11]

সামুরাহ ইবনু জুনদুব রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমরা রাঃসাঃ এর সাথে ছিলাম। আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটি পাত্র থেকে দশজন দশজন করে আহার করতাম। একদল উঠে গেলে আরেক দল এসে বসত। আমরা নিজেরা বলিলাম, এটা কখনও খালি হবে না। সাহাবী রাবীকে বলেন, তুমি কিসে আশ্চর্য হচ্ছ? সেটা খালি হলেই এখান থেকে পূর্ণ হয়ে যেত, তিনি তাহাঁর হাত দিয়ে আসমানের দিকে ইশারা করিলেন। [12]


[1] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ২১২৭।

[2] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ২৩৯৬।

[3] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ২৬১৮, সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২০৫৬।

[4] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৩৫৭৮, সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২০৪০।

[5] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৪১০১।

[6] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৪১০২, সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২০৩৯।

[7] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৫১৬৩।

[8] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৬৪৫২।

[9] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২৭।

[10] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২৭।

[11] মুসনাদে আহমদ, হাদিস নম্বর ১৫৪৪৯। হাদীসটি সহিহ, এর সনদের বর্ণনাকারীরা সিকাহ।

[12] তিরমিযী, হাদিস নম্বর ৩৬২৫, ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটি হাসান সহিহ। আবূ ই‘য়ালার নাম হলো ইয়াযীদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন শিখখীর।

Leave a Reply