মায়ের উদরে মানুষের সৃষ্টি রহস্য তার ভাগ্যের রিয্‌ক, মুত্যুস্থান…

মায়ের উদরে মানুষের সৃষ্টি রহস্য তার ভাগ্যের রিয্‌ক, মুত্যুস্থান…

মায়ের উদরে মানুষের সৃষ্টি রহস্য তার ভাগ্যের রিয্‌ক, মুত্যুস্থান… >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১. অধ্যায়ঃ মায়ের উদরে মানুষের সৃষ্টি রহস্য , তার ভাগ্যের রিয্‌ক, মুত্যুস্থান, আমাল, হতভাগ্য ও সৌভাগ্য লিপিবদ্ধকরণ

৬৬১৬. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সাদিকুল মাসদূক [ন্যায়পরায়ণ ও ন্যায়নিষ্ঠরূপে প্রত্যায়িত] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন যে, তোমাদের প্রত্যেকের শুক্রকীট তার মায়ের গর্ভে চল্লিশ দিন একত্রিত করা হয়। তারপর হুবহু চল্লিশ দিনে তা একটি গোশত টুকরায় পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ্‌ তা আলার পক্ষ থেকে একজন ফেরেশ্তাকে প্রেরণ করা হয়। সে তাতে রূহ্ ফুঁকে দেয়। আর তাঁকে চারটি কালিমা [বিষয়] লিপিবদ্ধ করার আদেশ করা হয়। রিয্ক, মৃত্যুক্ষণ, কর্ম, বদ্কার ও নেক্কার। সে সত্তার শপথ যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই! নিশ্চয়ই তোমাদের মাঝ হইতে কেউ জান্নাতীদের আমালের [আমলের]ন্যায় আমাল [আমল] করিতে থাকে। অবশেষে তার ও জান্নাতের মধ্যে মাত্র একহাত দূরত্ব থাকে। অতঃপর ভাগ্যের লিখন তার উপর জয়ী হয়ে যায়। ফলে সে জাহান্নামীদের কর্ম শুরু করে। এরপর সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হয়। আর তোমাদের মধ্যে কোন কোন ব্যক্তি জাহান্নামের কাজ-কর্ম করিতে থাকে। ফলে জাহান্নামের মাঝে ও তার মাঝে মাত্র একহাত দূরত্ব থাকে। তারপর ভাগ্যলিপি তার উপর জয়ী হয়। ফলে সে জান্নাতীদের ন্যায় আমাল করে। অবশেষে জান্নাতে প্রবিষ্ট হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩৪]

৬৬১৭. জারীর ইবনি আবদুল হামীদ, ঈসা ইবনি ইউনুস, ওয়াকী ও শুবাহ্ ইবনিল হাজ্জাজ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সকলে আমাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

তিনি [আমাশ] ওয়াকী বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের কারো সৃষ্টি [শুক্রকীট] তার মায়ের গর্ভে চল্লিশ রাত্রি একত্রি রাখা হয়। আর তিনি শুবার সানাদে মুআয বর্ণিত হাদীসে বলেছেন, চল্লিশ রাত কিংবা চল্লিশ দিন। কিন্তু জারীর ও ঈসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসে কেবলমাত্র ………… [চল্লিশ দিবসের] কথা উল্লেখ রয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩৫]

৬৬১৮. হুযাইফাহ্ ইবুন আসীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে মারফূ সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, জরায়ুতে চল্লিশ অথবা পঁয়তাল্লিশ দিন রেণু জমা থাকার পর সেখানে ফেরেশ্ তা গমন করে। অতঃপর সে বলিতে থাকে, হে আমার প্রভু! সে কি হতভাগ্য না সৌভাগ্যবান? তখন উভয়টাতে লিপিবদ্ধ করা হয়। তারপর সে বলিতে থাকে, হে আমার রব! সে কি পুরুষ না মহিলা? তখন আদেশ অনুসারে উভয়টা লিপিবদ্ধ করা হয়। তার আমাল, আচরণ, মৃত্যুক্ষণ ও জীবনোপকরণ লিপিবদ্ধ করা হয়। তারপর ফলকটিকে পেঁচিয়ে দেয়া হয়। তাতে কোন অতিরিক্ত করা হইবে না এবং ঘাটতিও হইবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩৬]

৬৬১৯. আমির ইবনি ওয়াসিলাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেছেন, দুর্ভাগ্য সে লোক, যে তার মায়ের গর্ভ হইতে দুর্ভাগা আর সৌভাগ্যবান লোক সে, যে অন্যের নিকট হইতে উপদেশ লাভ করে। অতঃপর তিনি রসূল [সাঃআঃ]-এর সহাবাদের মধ্য থেকে একজন সহাবা যাকে হুযাইফাহ্ ইবনি আসীদ আল গিফারী বলা হয় তার কাছে আসলেন। তখন তিনি তাহাঁর নিকট আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.]-এর কথা বর্ণনা করিলেন এবং বলিলেন, আমালহীন কোন লোক কিভাবে দুর্ভাগ্যবান হইতে পারে? অতঃপর তিনি {হুযাইফাহ্ [রাদি.]} তাঁকে বলিলেন, তুমি কি এতে আশ্চর্য হচ্ছ? আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, যখন [মাতৃগর্ভে] শুক্রকীটের উপর বিয়াল্লিশ দিন চলে যায় তখন আল্লাহ তাআলা একজন ফেরেশ্তা প্রেরণ করেন। তিনি ওটাকে [শুক্রকে] একটি রূপ দান করে, তার কান, চোখ, চামড়া, গোশ্ত ও হাড় সৃষ্টি করে দেয়। তারপর ফেরেশতা বলে, হে আমাদের রব! সেটা কি পুরুষ, না মহিলা হইবে? তখন তোমার প্রভু যা চান সিদ্ধান্ত দেন এবং ফেরেশ্তা আদেশ অনুসারে তা লিখে ফেলেন। তারপর সে বলিতে থাকে, হে আমাদের রব! তার জীবিকা কি হইবে? তখন তোমার রব তাহাঁর মর্জি অনুযায়ী ফায়সালা করেন এবং ফেরেশ্তা তা লিপিবদ্ধ করেন। এরপর ফেরেশ্তা তাহাঁর হাতে একটি লিপিবদ্ধ কিতাব নিয়ে বের হন। সে এটাকে বৃদ্ধিও করে না এবং ঘাটতিও করে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩৭]

৬৬২০. আবু তুফায়ল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবদুল্লাহ ইবনি মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আমর ইবনিল আল হারিস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের হুবহু বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩৮]

৬৬২১. আবু তুফায়ল হইতে বর্ণীতঃ

আমি আবু সারীহাহ্ হুযাইফাহ্ ইবনি আসীদ আল গিফারী [রাদি.] -এর নিকট গেলে তিনি বলেন, আমি আমার এ কান দিয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, তিনি বলেন, বীর্য জরায়ুতে চল্লিশ রাত স্থির থাকে। তারপর এজন ফেরেশ্তা তাকে আকৃতি প্রদান করেন। রাবী যুহায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমার ধারণা তিনি বলেছেন, “যাকে তিনি তৈরি করেন” তখন তিনি বলিতে থাকেন, হে আমার প্রভু! সে-কি পুরুষ না মহিলা? তারপর আল্লাহ তাকে পুরুষ কিংবা মহিলা সৃষ্টি করেন। অতঃপর তিনি [ফেরেশ্তা] বলিতে থাকেন, হে আমার রব! আপনি তাকে পূর্ণ সৃষ্টি করবেন না অপূর্ণ? তখন আল্লাহ তাকে পূর্ণ অথবা অপূর্ণ সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি বলেন, হে আমার প্রভু! তার জীবনোপকরণ, মৃত্যুক্ষণ, চরিত্র কি হইবে? তারপর আল্লাহ তাআলা তাকে হতভাগ্যবান কিংবা সৌভাগ্যবান বানিয়ে দেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩৯]

৬৬২২. রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সহাবা হুযাইফাহ্ ইবনি আসীদ আল গিফারী [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পর্যন্ত মারফূ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন আল্লাহ তাহাঁর আদেশ অনুসারে কোন কিছু সৃষ্টির আকাঙ্খা করেন তখন জরায়ুতে একজন ফেরেশ্তা প্রেরণ করে দেন চল্লিশের কিছু বেশি দিন পরে। তারপর তিনি তাদের হাদীসের হুবহু হাদীস উল্লেখ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪০]

৬৬২৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে মারফূ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা জরায়ুতে একজন ফেরেশ্তা প্রেরণ করে দেন। তখন ফেরেশ্তা বলিতে থাকেন, হে আমার প্রভু! এখন তা শুক্র। হে আমার রব! এখন তা জমাট রক্ত। হে আমার প্রতিপালক! এখন গোশ্তের খণ্ড। তারপর যখন আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত করেন তখন ফেরেশ্তা বলেন, হে আমার প্রতিপালক! সে-কি পুরুষ না মহিলা, দুর্ভাগ্যবান, না সৌভাগ্যবান হইবে? তার রিজিক কি হইবে? তার আয়ুষ্কাল কি হইবে? তারপর এমনিভাবে মায়ের গর্ভে থাকাবস্থায় সবকিছু লিখে দেয়া হয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪১]

৬৬২৪. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা বাকী গারকাদে {৪} একটি জানাযা সলাতে উপস্থিত ছিলাম। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট এসে বসলেন এবং আমরাও তাহাঁর পাশাপাশি বসলাম। তাহাঁর সাথে ছিল একটি ছড়ি। তিনি মাথা নিচু করেছিলেন। সে সময় তিনি তাহাঁর ছড়ি দ্বারা জমিনে টোকা দিচ্ছিলেন। তারপর তিনি বলিলেন, তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক নেই, যার পরিণাম আল্লাহ তাআলা জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্ধারণ করেননি এবং সে দুর্ভাগ্যবান হইবে বা সৌভাগ্যবান হইবে, তা লিপিবদ্ধ করেননি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন জনৈক লোক আবেদন করিল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমরা কি আমাদের ভাগ্যলিপির উপর অটুট থেকে আমাল ত্যাগ করব না? তখন তিনি বলিলেন, যে লোক সৌভাগ্যবান সে সৌভাগ্যবানদের আমালের দিকে ধাবিত হইবে। যে হতভাগাদের অন্তর্ভূক্ত সে হতভাগার আমালের প্রতি ধাবিত হইবে। তারপর তিনি বলিলেন, তোমরা আমাল করো। প্রত্যেকের পথ সহজ করে দেয়া হয়েছে। অবশ্যই সৌভাগ্যবান লোকদেরকে সৌভাগ্যের আমাল করা সহজ করে দেয়া হচ্ছে। হতভাগ্যদেরকে হতভাগ্যের আমাল সহজ করে দেয়া হচ্ছে। তাপর তিনি তিলাওয়াত করিলেন, “সুতরাং যে দান করিল, তাক্ওয়া অর্জন করিল এবং যা উত্তম তা সত্যায়ন করিল, আমি তাদের জন্যে সফলতার পথ সুগম করে দিব এবং যারা বখিলী করিল এবং নিজকে স্বয়ংসম্পূর্ণ অমুখাপেক্ষী মনে করিল আর যা উত্তম তা মিথ্যা সাব্যস্ত করিল, আমি তার জন্যে কঠোর বিফল পথ সহজ করে দিব”- [সূরাহ্ আল লায়ল ৯২ : ৫-১০]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৩০]

{৪} বাকী গারকাদ-মাদীনার গোরস্থান যা বর্তমানে জান্নাতুল বাকী নামে প্রসিদ্ধ।

৬৬২৫. মানসূর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [মানসূর] বলেন, তাছাড়া তিনি বলেছেন, “একটি লাকড়ি ধারণ করিলেন এবং ছড়ি” শব্দটি তিনি বলেননি। ইবনি আবু শাইবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবুল আহওয়াস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সানাদে তার হাদীসে বলেছেন, তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পড়লেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪৩]

৬৬২৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক টুকরা লাকড়ি হাতে নিয়ে বসে ছিলেন। তিনি তা দ্বারা জমিনে টোকা দিচ্ছিলেন। তারপর তিনি নিজের মাথা উঠালেন এবং বলিলেন, তোমাদের মাঝে এমন কেউ নেই যে তার ঠিকানা জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্ধারিত নেই। তারা সকলে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! তাহলে আমরা কেন কাজ-কর্ম করব? আমরা কি ভরসা করব না? তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, না, বরং তোমরা আমাল করিতে থাকো। যাকে যে জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তা তার জন্য সহজ করা হয়েছে। তারপর তিনি পাঠ করিলেন, “সুতরাং যারা দান-সদাকাহ্ করিল, তাক্ওয়া অর্জন করিল এবং যা ভাল তা সত্যায়ন করিল, ….. ….. আমি কঠোর পরিণামের পথ সহজ করে দিব, এ পর্যন্ত”- [সূরাহ্ আল লায়ল ৯২ : ৫-১০]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯২, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪৪]

৬৬২৭. আলী [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

আলী [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে হুবহু হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪৫]

৬৬২৮. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, সুরাকাহ্ ইবনি মালিক ইবনি জুশুম [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলেন, অতঃপর বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমাদের সামনে আমাদের দ্বীন সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করুন, যেন আমরা এই মাত্র সৃষ্ট হয়েছি। আজকের আমাল কি ঐ বিষয়ের উপর যার সম্পর্কে কলম লিখে শুকিয়ে গেছে এবং তাক্দীর তার উপর চলছে? নাকি আমরা ভবিষ্যতে তার সামনাসামনি হব? তিনি বলিলেন, না; বরং কলম যা কিছু লিখার লিখে শুকিয়ে গেছে ও সে অনুযায়ী তাকদীর জারী হয়ে গেছে। সুরাকাহ্ বলিলেন, তাহলে কিসের জন্য আমাল করার প্রয়োজন?

যুহায়র বলেন, অতঃপর আবু যুবায়র কিছু কথা বলিলেন, যা আমি বুঝতে পারিনি। অতঃপর আমি [লোকেদের] প্রশ্ন করলাম, তিনি কি বলিলেন। জবাবে বলিলেন, তিনি [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা আমাল করিতে থাকো; প্রত্যেকের জন্য সে পথ সহজ করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪৬]

৬৬২৯. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-এর সানাদে নবী [সাঃআঃ] হইতে এ মর্মে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। এ বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক আমালকারীকে তার আমালের পথ সহজ করে দেয়া হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৫, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৬৬৩০. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, বলা হলো, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! জাহান্নামীদের হইতে জান্নাতীদের সুনির্দিষ্ট হয়েছে কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ প্রতীয়মান হয়েছে। তিনি [রাবী] বলেন, বলা হলো, তাহলে আমালকারী কিসের জন্য আমাল করিবে? তিনি বলিলেন, প্রত্যেক লোকের জন্যে সে কর্মটি সহজ করে দেয়া হইবে, যার জন্যে তাকে বানানো হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪৭]

৬৬৩১. শাইবান ইবনি ফার্রূখ, আবু বাক্র ইবনি আবু শাইবাহ্, যুহায়র ইবনি হার্ব, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম, ইবনি নুমায়র, ইয়াহ্ইয়া ইবনিল ইয়াহ্ইয়া ও ইবনি মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সব সানাদেই ইয়াযীদ আর্ রিশ্ক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্রে হাম্মাদ হইতে বর্ণীতঃ

শাইবান ইবনি ফার্রূখ, আবু বকর ইবনি আবু শাইবাহ্, যুহায়র ইবনি হার্ব, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম, ইবনি নুমায়র, ইয়াহ্ইয়া ইবনিল ইয়াহ্ইয়া ও ইবনি মুসান্না [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সব সানাদেই ইয়াযীদ আর্ রিশ্ক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সূত্রে হাম্মাদ-এর হাদীসের অর্থে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আর এছাড়া আবদুল ওয়ারিস বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, সে বলেছে, আমি বললাম, “হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]!”

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪৮]

৬৬৩২. আবুল আসওয়াদ আদ্ দিয়ালী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইমরান ইবনি হুসায়ন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে বলিলেন, আজকাল মানুষেরা যা আমাল করে এবং তাতে যা কষ্ট করে, সে ব্যাপারে আপনার মতামত কি? তা-কি এমন বিষয় যা তাদের উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত ও অতীতে সাব্যস্ত হয়ে গেছে যা তাদের উপর পূর্ব নির্ধারিত? নাকি ভবিষ্যতে করা হইবে যা তাদের নিকট তাদের নবী [সাঃআঃ] নিয়ে আসছেন এবং যাদের উপর দলীল-প্রমাণ সাব্যস্ত হয়েছে? আমি বললাম বরং বিষয়টি তো তাদের উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত ও অতীত সাব্যস্ত হয়ে গেছে। তিনি [রাবী] বলেন, অতঃপর তিনি বলিলেন, তা কি যুল্ম হইবে না? তিনি বলিলেন, এতে আমি অত্যন্ত ঘাবড়ে গেলাম এবং বললাম, প্রতিটি বিষয় আল্লাহর মাখলুক এবং তাহাঁর আওতাধীন। সুতরাং তিনি যা করেন, সে বিষয়ে জবাবদিহিতা নেই অথবা তাদেরকে কৈফিয়ত দিতে হইবে না। কিন্তু তারা যা করে সে বিষয়ে তাদের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হইবে। অতঃপর তিনি আমাকে বলিলেন, আল্লাহ আপনার প্রতি দয়া করুন। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করে আপনার অনুভূতি অনুমান করিতে চেয়েছিলাম। মুযাইনাহ্ গোত্রের দু ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! লোকেরা আজকাল যেসব আমাল করে এবং পরিশ্রম করে, সেগুলো কি তাদের উপর সিদ্ধান্ত গৃহীত ও অতীত সাব্যস্ত হয়ে গেছে, আগে নির্দিষ্টতা থেকে? নাকি ভবিষ্যতে যে আমাল করা হইবে, যা নবী [সাঃআঃ] তাদের নিকট নিয়ে আসছেন এবং তাদের উপর দলীল প্রমাণ সাব্যস্ত আছে? জবাবে তিনি বলিলেন, না; বরং বিষয়টি তাদের উপর সিদ্ধান্ত করা হয়েছে এবং অতীতে সাব্যস্ত হয়ে গিয়েছে? আল্লাহর কিতাবে তার সত্যায়ন:

“আর শপথ মানুষের এবং তাহাঁর যিনি তাকে সম্পূর্ণ করিয়াছেন, এরপর তার উপর তিনি পাপ-পুণ্যের জ্ঞান ঢেলে দিয়েছেন”- [সূরাহ্ আশ্ শামস্ ৯১ : ৭-৮]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৮, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৪৯]

৬৬৩৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন লোক দীর্ঘকাল জান্নাতীদের ন্যায় আমাল করিবে। এরপর জাহান্নামীদের আমালের সাথে তার আমাল পরিসমাপ্ত হয়। আর এক লোক দীর্ঘকাল ধরে জাহান্নামীদের আমালের ন্যায় আমাল করিবে। তারপর জান্নাতীদের আমালের সাথে তার আমাল পরিসমাপ্ত হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৫০]

৬৬৩৪. সাহ্‌ল ইবনি সাদ আস্ সাইদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি জনসাধারণের সামনে প্রকাশিত আমালের বিবেচনায় জান্নাতীদের আমালের ন্যায় আমাল করিবে; অথচ সে জাহান্নামীদের অন্তর্ভূক্ত। আর কোন ব্যক্তি জনসাধারণের সামনে প্রকাশিত আমালের বিবেচনায় জাহান্নামীদের আমালের ন্যায় আমাল করিবে, অথচ সে জান্নাতীদের অন্তর্ভূক্ত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫০০, ইসলামিক সেন্টার- ৬৫৫১]

By ইমাম মুসলিম

এখানে কুরআন শরীফ, তাফসীর, প্রায় ৫০,০০০ হাদীস, প্রাচীন ফিকাহ কিতাব ও এর সুচিপত্র প্রচার করা হয়েছে। প্রশ্ন/পরামর্শ/ ভুল সংশোধন/বই ক্রয় করতে চাইলে আপনার পছন্দের লেখার নিচে মন্তব্য (Comments) করুন। “আমার কথা পৌঁছিয়ে দাও, তা যদি এক আয়াতও হয়” -বুখারি ৩৪৬১। তাই এই পোস্ট টি উপরের Facebook বাটনে এ ক্লিক করে শেয়ার করুন অশেষ সাওয়াব হাসিল করুন

Leave a Reply