বিদআত এবং দ্বীনে নতুন কাজ আবিষ্কার করা নিষেধ- রিয়াদুস সালেহীন
বিদআত এবং দ্বীনে নতুন কাজ আবিষ্কার করা নিষেধ- রিয়াদুস সালেহীন >> রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে রিয়াদুস সালেহীন হাদিস শরীফ এর একটি পরিচ্ছেদের হাদিস পড়ুন
পরিচ্ছেদ -১৮ : বিদআত এবং [দ্বীনে] নতুন নতুন কাজ আবিষ্কার করা নিষেধ
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ فَمَاذَا بَعۡدَ ٱلۡحَقِّ إِلَّا ٱلضَّلَٰلُۖ ﴾ [يونس: ٣٢]
অর্থাৎ “সত্যের পর ভ্রষ্টতা ছাড়া আর কী আছে?” [সূরা ইউনুস ৩২ আয়াত]
তিনি আরো বলেন,
﴿ مَّا فَرَّطۡنَا فِي ٱلۡكِتَٰبِ مِن شَيۡءٖۚ ﴾ [الانعام: ٣٨]
অর্থাৎ “আমি কিতাবে কোন কিছু লিপিবদ্ধ করিতে ত্রুটি করিনি।” [সূরা আনআম ৩৮ আয়াত]
তিনি আরো বলেন,
﴿فَإِن تَنَٰزَعۡتُمۡ فِي شَيۡءٖ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ ﴾ [النساء: ٥٩]
অর্থাৎ “আর যদি কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে মতভেদ ঘটে, তাহলে সে বিষয়কে আল্লাহ ও রসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও।” [সূরা নিসা ৫৯ আয়াত] অর্থাৎ কিতাব ও সুন্নাহর দিকে।
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
﴿ وَأَنَّ هَٰذَا صِرَٰطِي مُسۡتَقِيمٗا فَٱتَّبِعُوهُۖ وَلَا تَتَّبِعُواْ ٱلسُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمۡ عَن سَبِيلِهِۦۚ﴾ [الانعام: ١٥٣]
অর্থাৎ “নিশ্চয়ই এটি আমার সরল পথ। সুতরাং এরই অনুসরণ কর এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, করলে তা তোমাদেরকে তাহাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে।” [সূরা আনআম ১৫৩ আয়াত]
তিনি আরো বলেন,
﴿ قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ ﴾ [ال عمران: ٣١]
অর্থাৎ “বল, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর। ফলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করিবেন।” [সূরা আলে ইমরান ৩১ আয়াত]
এ ছাড়া এ প্রসঙ্গে আরো বহু আয়াত রয়েছে। আর হাদীসসমূহ নিম্নরূপঃ-
1/173 عَن عَائِشَة رَضِي الله عَنهَا، قَالَتْ : قَالَ رَسُولُ الله ﷺ: «مَنْ أحْدَثَ في أمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ، وفي رواية لمسلم: «مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيهِ أمرُنا فَهُوَ رَدٌّ».
১/১৭৩। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহ হইতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি আমার এই দ্বীনে কোনো নতুন কিছু উদ্ভাবন করল—যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যানযোগ্য।’’ [বুখারী ও মুসলিম]
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘যে ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করল, যাতে আমাদের নির্দেশ নেই, তা বর্জনীয়।’’[1]
2/174 وَعَن جَابِرٍ رضي الله عنه، قَالَ : كَانَ رَسُولُ الله ﷺ إِذَا خَطَبَ احْمَرَّتْ عَينَاهُ، وَعَلاَ صَوتُهُ، وَاشْتَدَّ غَضَبُهُ، حَتَّى كَأنَّهُ مُنْذِرُ جَيشٍ، يَقُولُ: «صَبَّحَكُمْ وَمَسَّاكُمْ»وَيَقُولُ: «بُعِثتُ أنَا والسَّاعَةُ كَهَاتَينِ» وَيَقْرِنُ بَيْنَ أُصبُعَيهِ السَّبَّابَةِ وَالوُسْطَى، وَيَقُولُ: «أمَّا بَعْدُ، فَإنَّ خَيْرَ الحَديثِ كِتَابُ الله، وَخَيرَ الهَدْيِ هَدْيُ مُحَمَّدٍ ﷺ، وَشَرَّ الأُمُورِ مُحْدَثَاتُهَا، وَكُلَّ بِدْعَة ضَلالَةٌ» ثُمَّ يَقُولُ: «أنَا أوْلَى بِكُلِّ مُؤمِنٍ مِنْ نَفسِهِ، مَنْ تَرَكَ مَالاً فَلأَهْلِهِ، وَمَنْ تَرَكَ دَيْناً أَوْ ضَيَاعاً فَإلَيَّ وَعَلَيَّ». رواه مسلم
২/১৭৪। জাবের রাঃআঃ বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ ভাষণ দিতেন, তখন তাহাঁর চক্ষুদ্বয় লাল হয়ে যেত এবং তাহাঁর আওয়াজ উঁচু হত ও তাহাঁর ক্রোধ কঠিন রূপ ধারণ করত। যেন তিনি [শত্রু] সেনা থেকে ভীতি প্রদর্শন করছেন। তিনি বলিতেন, ‘‘[সে শত্রু] তোমাদের উপর সকালে অথবা সন্ধ্যায় হামলা করিতে পারে।’’ আর তিনি তাহাঁর তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলদ্বয় মিলিত করে বলিতেন যে, ‘‘আমাকে এবং কিয়ামতকে এ দু’টির মত [কাছাকাছি] পাঠানো হয়েছে।’’ আর তিনি বলিতেন, ‘‘আম্মা বা‘দ [আল্লাহর প্রশংসা ও সাক্ষ্য দান করার পর] নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম কথা আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম রীতি মুহাম্মাদ সাঃআঃ-এর রীতি। আর নিকৃষ্টতম কাজ [দ্বীনে] নব আবিষ্কৃত কর্মসমূহ এবং প্রত্যেক বিদ‘আত ভ্রষ্টতা।’’ অতঃপর তিনি বলিতেন, ‘‘আমি প্রত্যেক মু’মিনদের নিকট তার আত্মার চেয়েও নিকটতম। যে ব্যক্তি মাল ছেড়ে [মারা] যাবে, তা তার উত্তরাধিকারীদের জন্য এবং যে ঋণ অথবা অভাবী সন্তান-সন্ততি ছেড়ে যাবে, তার দায়িত্ব আমার উপর ন্যস্ত।’’[2] ৩/১৭৫। ইরবাদ্ব ইবনি সারিয়ার যে [১৬১নং] হাদীসটি ‘সুন্নাহ পালনের গুরুত্ব’ পরিচ্ছেদে অতিবাহিত হয়েছে তা এখানেও উল্লেখ্য।
[1] সহীহুল বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ১৭১৮, আবূ দাউদ ৪৬০৬, ইবনু মাজাহ ১৪, আহমাদ ২৩৯২৯, ২৪৬০৪, ২৪৯৪৪, ২৫৫০২, ২৫৬৫৯, ২৫৬৫৯, ২৫৭৯৭
[2] মুসলিম ৮৬৭, নাসায়ী ১৫৭৮, আবূ দাউদ ২৯৫৪, ২৯৫৬, ইবনু মাজাহ ৪৫, ২৪১৬, আহমাদ ১৩৭৪৪, ১৩২৪, ১৪০২২, ১৪১৯, ১৪৫৬৫