নামাজের পর যিকির মুস্তাহাব এবং এর বিবরণ
নামাজের পর যিকির মুস্তাহাব এবং এর বিবরণ >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন
২৬. অধ্যায়ঃ নামাজের পর যিকির মুস্তাহাব এবং এর বিবরণ
১২২১
সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নামাজ শেষ করে তিনবার ইসতিগ্ফার করিতেন এবং বলিতেন-
اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ
“আল্লা-হুম্মা আন্তাস্ সালা-মু ওয়া মিনকাস্ সালা-মু তাবা-রক্তা যাল জালা-লি ওয়াল ইকর-ম” [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমিই শান্তিময় এবং তোমার থেকে শান্তি আসে। তুমি কল্যাণময় এবং সন্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী |]।
হাদীস বর্ণনাকারী ওয়ালীদ বলেন- আমি আওযাঈকে জিজ্ঞেস করলাম | তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] কিভাবে ইস্তিগফার করিতেন। তিনি বলিলেন, তিনি [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিতেন-
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ
আস্তাগ্ফিরুল্ল-হ, আস্তাগ্ফিরুল্ল-হ | [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১২১০, ইসলামিক সেন্টার- ১২২২]
১২২২
আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নামাজে সালাম ফিরানোর পরে নবী [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ততটুকু সময় বসতেন-
اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ
“আল্লা-হুম্মা আন্তাস সালাম-মু ওয়া মিনকাস্ সালা-মু তাবা-রক্তা যাল জালা-লি ওয়াল ইকর-ম” [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমিই শান্তিময় এবং তোমার থেকে শান্তি আসে। তুমি কল্যাণময় এবং সন্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী।] এ দুআটা পড়তে যতটুকু সময় লাগে।
ইবনি নুমায়র-এর একটি বর্ণনায় [আরবী] -এর স্থলে [আরবী] উল্লেখ আছে। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১২১১, ই.সেস. ১২২৩]
১২২৩
আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
একই সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এতে তিনি
يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ
উল্লেখ করিয়াছেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১২১২, ইসলামিক সেন্টার- ১২২৪]
১২২৪
আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এ বর্ণনাতে এ কথাটুকু নেই যে, তিনি
يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ
[হে শান-শওকাতময়, দয়াবান] বলিতেন। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১২১৩, ইসলামিক সেন্টার- ১২২৫]
১২২৫
মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ [রাদি.] কর্তৃক আযাদকৃত ক্রীতদাস ওয়ার্রাদ হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, মুগীরাহ্ বিন শুবাহ্ মুআবিয়াহ্ [রাদি.] -কে লিখে পাঠান যে, রসূলুল্লাহ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নামাজ শেষে সালাম ফিরিয়ে বলিতেন-
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহ্ লা শারীকা লাহু লাহুল মুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন্ ক্বদীর, আল্ল-হুম্মা লা-মা-নিআ লিমা- আত্বয়তা ওয়ালা- মুত্বিয়া লিমা- মানাতা ওয়ালা- ইয়ান্ফাউ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দ” [অর্থাৎ – আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। তিনি এক ও শারীক বিহীন। সার্ভৌম ক্ষমতা তাহাঁর জন্য নির্দিষ্ট। সব প্রশংসা তাহাঁরই প্রাপ্য। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দিতে চাও তাতে বাধা দেয়ার শক্তি কারো নেই। আর যা দিতে না চাও তার দেবার শক্তিও কারো নেই। আর কোন সম্পদশালীর সম্পদ তোমার নিকট থেকে রক্ষা করিতে পারে না।] [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১২১৪, ইসলামিক সেন্টার- ১২২৬]
১২২৬
মুগীরাহ্ ইবনি শায়বাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] – এর একই হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু বকর ও আবু কুরায়ব তাদের বর্ণনায় উল্লেখ করিয়াছেন যে, ওয়ার্রাদ বলেছেনঃ মুগীরাহ্ দুআটি আমাকে শিখিয়েছেন। অতঃপর তা আমি মুআবিয়াকে লিখে পাঠিয়েছি। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১২১৫, ইসলামিক সেন্টার- ১২২৭]
১২২৭
মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] কর্তৃক আযাদকৃত ক্রীতদাস ওয়ার্রাদ হইতে বর্ণীতঃ
মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [আমীর] মুআবিয়ার কাছে ওয়ার্রাদকে দিয়ে লিখিয়েছিলেন যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – কে নামাজ শেষে সালাম ফিরিয়ে বলিতে শুনেছি…। তবে এ বর্ণনায় [আরবি] বাক্যটির উল্লেখ নেই, কেননা তিনি তা উল্লেখ করেননি। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১২১৬, ইসলামিক সেন্টার- ১২২৮]
১২২৮
মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] – এর কাতিব [সেক্রেটারী] ওয়ার্রাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, [আমীর] মুআবিয়াহ্ মুগীরাহ্ – এর কাছে লিখেছিলেন। … এরপর তিনি মানসূর ও আমাশ বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিলেন। [ই.ফা.১২১৭, ইসলামিক সেন্টার-১২২৯]
১২২৯
আব্দাহ্ ইবনি আবু লুবাবাহ্ ও আবদুল মালিক ইবনি উমায়র [উভয়ে] মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ [রাদি.] – এর কাতিব [সেক্রেটারী] ওয়ার্রাদ হইতে বর্ণীতঃ
[আমীর] মুআবিয়াহ্ মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্-এর কাছে পত্র লিখলেনঃ তুমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর কাছে শুনেছ এমন কিছু লিখে পাঠাও। ওয়ার্রাদ বর্ণনা করেনঃ এ পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে মুগীরাহ্ ইবনি শুবাহ্ তাকে লিখে জানালেন যে, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছি, তিনি নামাজ শেষে [এ দুআটি] বলিতেন,
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ
“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুল্ক ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন্ ক্বদীর, আল্ল-হুম্মা লা- মা-নিআ লিমা- আত্বয়তা ওয়ালা- মুত্বিয়া লিমা- মানাতা ওয়ালা- ইয়ান্ফাউ যাল জাদ্দি মিনকাল জাদ্দ” [অর্থাৎ- আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। তিনি এক ও শারীকবিহীন। সার্বভৌম ক্ষমতা তাহাঁর জন্য নির্দিষ্ট। সব প্রশংসা তাহাঁরই প্রাপ্য। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দিতে চাও তাতে বাধা দেয়ার শক্তি কারো নেই। আর যা দিতে না চাও তার দেবার শক্তিও কারো নেই। আর কোন সম্পদশালীর সম্পদ তোমার নিকট থেকে রক্ষা করিতে পারে না।] [ই.ফা.১২১৮, ইসলামিক সেন্টার-১২৩০]
১২৩০
আবুয্ যুবায়র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেনঃ আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজে সালাম ফিরানোর পর বলিতেনঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَلاَ نَعْبُدُ إِلاَّ إِيَّاهُ لَهُ النِّعْمَةُ وَلَهُ الْفَضْلُ وَلَهُ الثَّنَاءُ الْحَسَنُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ
“লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহূ লা-শারীকা লাহূ লাহুল মুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুওয়া আলা-কুল্লি শাইয়িন্ ক্বদীর, লা- হাওলা ওয়ালা- কূওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি লা- ইলা- হা ইল্লাল্ল-হু ওয়ালা- নাবুদু ইল্লা- ঈয়্যা-হু লাহুন্ নিমাতু ওয়ালাহুল ফায্লু ওয়ালাহুস্ সানা-উল হাসানু লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুখলিসীনা লাহুদ্দীনা ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন” [অর্থাৎ- আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। তিনি একক ও শারীকবিহীন। তিনিই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সব প্রশংসা তাহাঁরই প্রাপ্য। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন আশ্রয় এবং শক্তি নেই। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। তাঁকে ছাড়া আর কারো ইবাদাত করি না যদিও কাফিরদের তা পছন্দ নয়।]
আর তিনি [ইবনিয্ যুবায়র] বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের পরে কথাগুলো বলে আল্লাহর প্রশংসা করিতেন। [ই.ফা.১২১৯, ইসলামিক সেন্টার-১২৩১]
১২৩১
উরওয়াহ্ তাদের আযাদকৃত দাস আবুয্ যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনিয্ যুবায়র প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের শেষে ইবনি নুমায়র – এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ তাহলীল [অর্থাৎ- “লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই] বলে আল্লাহর প্রশংসা করিতেন। হাদীসটির শেষে তিনি এভাবে বলেছেন, অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনিয্ যুবায়র বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ কথাগুলো বলে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের পর তাহলীল বা আল্লাহর প্রশংসা করিতেন। [ই.ফা.১২২০, ইসলামিক সেন্টার-১২৩২]
১২৩২
আবুয্ যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনিয্ যুবায়রকে এ মিম্বারে দাঁড়িয়ে এই বলে খুত্বাহ্ দিতে শুনেছি যে, নামাজের শেষে সালাম ফিরিয়ে রসূলুল্ললাহ [সাঃআঃ] বলিতেন…। অতঃপর তিনি হিশাম ইবনি উরওয়াহ্ বর্ণিত হাদীসটির অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিলেন। [ই.ফা.১২২১, ইসলামিক সেন্টার-১২৩৩]
১২৩৩
আবুয্ যুবায়র আল মাক্কী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাদি.] – কে প্রতি ওয়াক্ত সলামে ফিরানোর পর বলিতে শুনেছেন – হিশাম ও হাজ্জাজ বর্ণিত পূর্বের হাদীসে উল্লেখিত দুআর অনুরূপ দুআ করিতেন। অবশ্য এ হাদীসের শেষে তিনি এ কথা বলেছেনঃ বিষয়টি আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিতেন। [ই.ফা.১২২২, ইসলামিক সেন্টার-১২৩৪]
১২৩৪
আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ কুতায়বাহ্ও হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। আবু হুরায়রা [রাদি.] বলেছেনঃ একদিন গরীব মুহাজিরগণ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর কাছে গিয়ে বলিলেন, সম্পদশালী লোকেরা উচ্চমর্যাদা ও স্থায়ী নিআমাতসমূহ লুটে নিচ্ছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ কিভাবে? তারা বললেনঃ আমরা নামাজ আদায় করি তারাও নামাজ আদায় করে। আমরা সিয়াম পালন করি তারাও সিয়াম পালন করে। কিন্তু তারা দান করে আমরা দান করিতে পারি না। আর তারা দাস মুক্ত করে আমরা দাস মুক্ত করিতে পারি না। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু শিখিয়ে দিব যা করলে তোমরা তোমাদের চেয়ে অগ্রসর লোকদের সমকক্ষ হইতে পারবে? আর যারা তোমাদের পিছনে পড়ে আছে তাদের পিছনে রেখে এগিয়ে যেতে পারবে? আর তোমাদের মতো কাজ না করে কেউ তোমাদের মতো উত্তম হইতে পারবে না। তারা বললেনঃ হে আল্লাহর রসূল! তা অবশ্যই বলবেন। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ প্রত্যেক নামাজের পর তোমরা তেত্রিশবার করে তাসবীহ [সুবহানা-ল্ল-হ] , তাকবীর [আল্ল-হু আকবার] ও তাহমীদ [আলহাম্দু লিল্লা-হ] বলবে। আবু সালিহ বর্ণনা করিয়াছেন এরপর গরীব মুহাজিরগণ পুনরায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর কাছে এসে বললেনঃ আমরা যা করেছি আমাদের সম্পদশালী ভাইয়েরা তা জেনে ফেলেছে। সুতরাং এখন তারাও এ কাজ করিতে শুরু করেছে। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এ তো আল্লাহর মেহেরবানী। যাকে ইচ্ছা তিনি তা দান করেন। কুতায়বাহ্ ছাড়া এ হাদীসটি লায়স ও ইবনি আজলান – এর মাধ্যমে সুমাই থেকে বর্ণনা করিয়াছেন তারা এতে এতটুকু কথা অধিক বলেছেন যে, সুমাই [হাদীসটির এক পর্যায়ের বর্ণনাকারী] বলেছনঃ আমি ভুলে গিয়েছি হাদীসটি বরং এভাবে বলা হয়েছেঃ তেত্রিশবার তাসবীহ বর্ণনা করিবে, তেত্রিশবার হাম্দ করিবে আর তেত্রিশবার তাকবীর বলবে। সুতরাং [এ কথা শুনে] আমি আবু সালিহ্-এর কাছে গিয়ে এ বিষয়টি বললে, তিনি আমার হাত ধরে বললেনঃ বরং তুমি বলবে- “আল্ল-হু আকবার ওয়া সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হাম্দুলিল্লা-হি আল্ল-হু আকবার ওয়া সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হামদুলিল্লা-হ” [অর্থাৎ- আল্লাহ মহান। তিনি পবিত্র, সব প্রশংসা তাহাঁর। আল্লাহ মহান। তিনি পবিত্র, সব প্রশংসা তাহাঁর।] এভাবে সবগুলো মোট তেত্রিশবার বলবে। ইবনি আজলান বলেছেনঃ আমি রাজা ইবনি হাওাহ্-এর কাছে হাদীসটি বর্ণনা করলে তিনিও আমাকে আবু সালিহ ও আবু হুরায়রা [রাদি.] – এর মাধ্যমে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করে শোনালেন। [ই.ফা.১২২৩, ইসলামিক সেন্টার-১২৩৫]
১২৩৫
আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন গরীব মুহাজিররা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! সম্পদশালী লোকেরা উচ্চমর্যাদা ও স্থায়ী নিআমাতসমূহ লুটে নিচ্ছে। অর্থাৎ – এভাবে তিনি লায়স থেকে কুতায়বাহ্ বর্ণিত হাদীসটির অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিলেন। তবে তিনি আবু হুরায়রা বর্ণিত হাদীসে আবু সালিহ বর্ণিত হাদীসের “অতঃপর গরীব মুহাজিররা ফিরে আসলো” কথাটা শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করিয়াছেন? আর হাদীসটির মধ্যে তিনি এতটুকু কথা অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন যে, সুহায়ল বলেন, এগারবার করে সবগুলো মিলিয়ে মোট তেত্রিশবার পড়তে হইবে। [ই.ফা.১২২৪, ইসলামিক সেন্টার-১২৩৬]
১২৩৬
কাব ইবনি উজ্রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রত্যেক ফরয নামাজের পরে কিছু দুআ আছে, যে ব্যক্তি ঐগুলো পড়ে বা কাজে লাগায় কখনো নিরাশ বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। তা হলোঃ তেত্রিশবার তাসবীহ [আলহাম্দু লিল্লা-হ] পড়া, তেত্রিশবার তাহমীদ [সুবহা-নাল্ল-হ] পাঠ করা এবং চৌত্রিশবার তাকবীর [আল্ল-হু আকবার] পাঠ করা। [ই.ফা.১২২৫, ইসলামিক সেন্টার-১২৩৭]
১২৩৭
কাব ইবনি উজ্রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিছু দুআ আছে প্রত্যেক ফরযনামাজের পরে যে ব্যক্তি ঐগুলো পড়ে বা আমাল করে সে কখনও নিরাশ বা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। দুআগুলো হলোঃ তেত্রিশবার তাসবীহ [সুবহা-নাল্ল-হ, অর্থাৎ- আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করা] পড়া, তেত্রিশবার তাহমীদ [আলহাম্দুলিল্লা-হ, অর্থাৎ- আল্লহর প্রশংসা করা] পড়া এবং চৌত্রিশবার তাকবীর [আল্ল-হু আকবার, অর্থাৎ- আল্লহর মহত্ব বর্ণনা করা] পড়া। [ই.ফা.১২২৬, ইসলামিক সেন্টার-১২৩৮]
১২৩৮
হাকাম হইতে বর্ণীতঃ
একই সানাদে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। [ই.ফা.১২২৭, ইসলামিক সেন্টার-১২৩৯]
১২৩৯
আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের শেষে তেত্রিশবার আল্লহর তাসবীহ বা পবিত্রতা বর্ণনা করিবে, তেত্রিশবার আল্লাহর তামহীদ বা আল্লাহর প্রশংসা করিবে এবং তেত্রিশবার তাকবীর বা আল্লহর মহত্ব বর্ণনা করিবে আর এভাবে নিরানব্বই বার হওয়ার পর শততম পূর্ণ করিতে বলবে-“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্দাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুওয়া আলা-কুল্লি শাইয়িন্ ক্বদীর” [অর্থাৎ- আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই। তিনি একক ও তাহাঁর কোন অংশীদার নেই। সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র তিনিই। সম প্রশংসা তাহাঁরই প্রাপ্য। তিনি সবকিছু করিতে সক্ষম-তার গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে সেয়া হয়।] [ই.ফা.১২২৮, ইসলামিক সেন্টার-১২৪০]
১২৪০
আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এরপর উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। [ই.ফা.১২২৯, ইসলামিক সেন্টার-১২৪০]