তাফহীমুল কুরআন সূরা বাকারা ও সুরা আল ফাতিহা – ১ম খন্ড
তাফহীমুল কুরআন সূরা বাকারা ও সুরা আল ফাতিহা – ১ম খন্ড
বিষয়বস্তু – সুরা আল ফাতিহা
আসনে এ নটি বে এবাছে দোয! হে কোন বাজি ‘& উহা পড়তো তির রে
আল্লাহ্ প্রথমে তাকে এ দোয়াটি শিিয়ে দেন। গ্রন্থের শুরুতে এর স্থান দেয়ার অথই হচ্ছে
এই যে, যদি যথার্থই এ গ্রন্থ থেকে তৃমি লাভবান হতে চাও, তাহলে নিখিল
বিশ্ব-জাহানের মালিক আল্লাহর কাছে দোয়া এবং সাহায্য প্রার্থনা করো।
মানুষের মনে যে বন্ডুটির আকাংথা ও চাহিদা থাকে শ্বভাবত মানুষ সেটিই চায় এবং
সে জন্য দোয়া করে। আবার এমন অবস্থায় সে এই দোয়। করে যখন অনুভব করে যে, যে
সম্ভার কাছে সে দোয়া করছে তার আকার্ধখত বস্তুটি তারই কাছে আছে! কাজেই
সাজের গরুতে ৪ যারা নিক ভি যেন মানুকে বানিয়ে “দ্যা তে, সত্য
পথের সন্ধান লাভের জন্য এ গ্রন্থটি পড়, সত্য অনুসন্ধানের মানসিকতা নিয়ে এর পাতা
ওলটাও এবং নিখিল রিশ্ব-জাহানের মালিক ও প্রভূ আল্লাহ হচ্ছেন জ্ঞানের একমাত্র
উতস-_একথা জেনে নিয়ে একঘাত্র তার কাছেই পথনির্দেশনার আর্জি পেশ করেই এ
গ্রন্থটি পাঠের সৃচনা কর?
এ বিষয়টি অনুধাবন করার পর একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, কুরআন ও সুরা ফাতিহার
মধ্যকার আসল সম্পর্ক কোন বই ও তার ভূমিকার সম্পর্কের পর্যায়ভুক্ত লয়। বরং এ
সম্পর্কটি দোয়া ও দোয়ার জবাবের পধায়ভুক্ত। সূরা ফাতিহা বান্দার পণ থেকে একটি
দোয়া। আর বুরমান তার জবাব আ্লাহর পক্ষ থেকে। বান্না দোয়া করে, হে মহান প্র!
আমাকে পথ দেখাও । জবাবে মহান প্রভু এই বলে সমগ্র খুন তার সামনে রেখে দেন
-এই নাও সেই হিদায়াত গু পথের দিশ! যে জন্য ভূমি আমার কাছে আবেদন জানিয়েছ।
বিষয়বস্তু – সুরা আল বাকারা
লাঘিলের উদ্পলক্ষ
এ সুরাটি বুঝতে হলে প্রথমে এর এরতিহাসিক পটভূমি ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।
(১) হিঅরাতের আগে ইসলামের দাওয়াতের কাজ চলছিল কেবল মন্কায়। এ সময়
পর্যন্ত সধ্বোধন করা হচ্ছিল কেবলমাত্র আরবের মুশরিকদেরকে। তাদের কাছে ইসলামের
বাণী ছিল সম্পূর্ণ নতুন ও অপরিচিত। এখন হিজরাতের পরে ইহুদিরা সামনে এসে গেল।
তাদের জনবসতিগুলো ছিল মদীনার সাথে একেবারে লাগানো। তারা তাওহীদ, রিসালাত,
অহী, আখেরাত ও ফেরেশতার স্বীকৃতি দিত।
আলাইহিস সালামের ওপর যে শরিয়াতী বিধান
নীতিগতভাবে তারাও সেই দীন ইসলামের অনুসারী ছিল যার শিক্ষা হযরত মুহাম্মাদ
সললান্লাহ আলাইহি ওয়া সান্লাম দিয়ে চলছিলেন। কিন্তু বহু
ও অবনতির ফলে তারা আসল দীন থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিল।১ তাদের
আকীদা-বিশ্বাসের মধ্যে বহু অনৈসলামী বিষয়ের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। ভাওরাতে এর কোন
ভিত্তি ছিল না। তাদের কর্মজীবনে এমন অসংখ্য রীতি-পদ্ধতির প্রচলন ঘটেছিল যথার্থ
দীনের সাথে যেগুলোর কোন সম্পর্ক ছিন না। তাওয়াতের মূল বিষয়বস্তুর সাথেও
এগুলোর কোন সামঞ্পসা ছিল না। আল্লাহর কালাম তাওরাতের মধ্যে তারা মানুষের কথা
মিশিয়ে দিয়েছিল। শাব্দিক বা অর্থগত দিক দিয়ে আল্লাহর কালাম যতটুকু পরিমাণ
সংরক্ষিত ছিল তাকেও তারা নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যা বিশ্রেষণের মাধ্যমে বিকৃত করে
দিয়েছিল? দীনের যথার্থ প্রাণবন্ত তাদের মধ্য থেকে অন্তরহিত হয়ে শিয়েছিল। লোক
দেখানো ধার্মিকতার নিছক একটা নিষ্প্রাণ খোলসকে তারা বুকের সাথে আঁকড়ে ধরে
রেখেছিল। তাদের উলামা, মাশায়েখ, জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও জনগণ-_সবার আকীদা-বিশ্বাস
এবং নৈতিক ও বাস্তব কর্ম জীবন বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। নিজেদের এই বিকৃতির প্রতি
তাদের আসক্তি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যার ফলে কোন প্রকার সংস্কার সংশোধন
গ্রহণের তারা বিরোধী হয়ে উঠেছিল। যখনই কোন আল্লাহর বান্দা তাদেরকে আল্লাহর
দীনের সরন-সোজা পথের সন্ধান দিতে আসতেন তখনই তারা তাঁকে নিজেদের সবচেয়ে
বড় দুশমন মনে করে সম্ভাব্য সকল উপায়ে তার সংশোধন প্রচেষ্টা ব্যথ্থ করার জন্য উঠে
পড়ে লাগতো। শত শত বছর ধরে ক্রুমাগতভাবে এই একই: ধারার পুনরাবৃত্তি হয়ে চলছিল।
এরা ছিল আসলে বিকৃত মুসলিম। দীনের মধ্যে বিকৃতি, দীন বহির্ভূত বিষয়গুলোর দীনের
মধ্যে অনুপ্রবেশ, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি, দলাদলি, বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে বাদ
দিয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ ও গুরত্ত্ুহীন বিষয় নিয়ে মাতামাতি, আল্লাহকে ভূলে যাওয়া ও
পার্ধিব লোত-লালসায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ার কারণে ভারা পতনের শেষ প্রান্তে
পৌছে গিয়েছিল! এমন কি তারা নিজেদের আসল ‘মুসলিম’ নামও ভুলে গিয়েছিল।’ নিছক
‘ইহুদি’ নামের যধ্যেই তারা নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। আল্লাহর দীনকে তারা কেবল
ইসরাঈল বংশজাতদের পিতৃসূত্রে প্রাপ্ত উত্তরাধিকারে পরিণত করেছিল। কাজেই নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনায় পৌঁছার পর ইহুদিদেরকে আসল দীনের দিকে
আহবান করার জন্য আল্লাহ তাঁকে নির্দেশ দিলেন। সূরা বাকারার ১৫ ও ১৬ রুক্’ এ
দাওয়াত সন্ধলিত। এ দু’রুক্ণতে যেভাবে ইহুদিদের ইতিহাস এবং তাদের নৈতিক ও
ধর্মীয় অবস্থার সমালোচনা করা হয়েছে এবং যেভাবে তাদের বিকৃত ধর্ম ও নৈতিকতার
উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যের মোকাবিলায় যথার্থ দীনের মুলনীতিগুলো পাশাপাশি উপস্থাপন করা
হয়েছে, তাতে আনুষ্ঠানিক ধার্মিকতার মোকাবিলায় যথার্থ ধার্মিকতা কাকে বলে, সত্য
ধর্মের মূলনীতিগুলো কি এবং আল্লাহ্র দৃষ্টিতে কোন্ কোন্ জিনিস যথার্থ গুরুত্বের
অধিকারী তা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। |