ঘুম থেকে উঠার দোয়া ও জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ

ঘুম থেকে উঠার দোয়া ও জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ

ঘুম থেকে উঠার দোয়া ও জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

ঘুম থেকে উঠার দোয়া ও জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ

১. ঘুম থেকে জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ

১.

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِيْ أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا، وَإِلَيْهِ النُّشُوْرُ

(আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বাদা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিন্ নুশূর)

হামদ-প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তাঁরই নিকট সকলের পুনরুত্থান”

বুখারী ফাতহুল বারী ১১/১১৩, নং ৬৩১৪; মুসলিম ৪/২০৮৩, নং ২৭১১

২.

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَريكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، سُبْحَانَ اللَّهِ، وَالْحَمْدُ للَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكبَرُ، وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ الْعَلِيِّ الْعَظِيمِ» «رَبِّ اغْفرْ لِي

(লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহূ লা- শারীকালাহূ, লাহুল মুলকু, ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শায়ইন ক্বাদীর। সুবহা-নাল্লাহি, ওয়ালহামদু লিল্লাহি, ওয়া লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু, ওয়াল্লা-হু আকবার, ওয়া লা- হাওলা ওয়ালা- কুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হিল ‘আলিয়্যিল ‘আযীম, রাব্বিগফির লী)।

একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই; রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁরই; আর তিনি সকল কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ পবিত্র-মহান। সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সুউচ্চ সুমহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই। হে রব্ব ! আমাকে ক্ষমা করুন”।

যে ব্যক্তি তা বলবে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যদি সে  দো‘আ করে, তবে তার দো‘আ কবুল হবে। যদি সে উঠে অযু করে নামায পড়ে, তবে তার নামায কবুল করা হবে। বুখারী: ফাতহুল বারী, ৩/৩৯, নং ১১৫৪। হাদীসের ভাষ্য ইবন মাজাহ এর অনুরূপ। দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ: ২/৩৩৫।

৩.

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي عَافَانِي فِي جَسَدِي، وَرَدَّ عَلَيَّ رُوحِي، وَأَذِنَ لي بِذِكْرِهِ

(আল্‌হামদু লিল্লা-হিল্লাযী ‘আ-ফা-নী ফী জাসাদী, ওয়ারদ্দা ‘আলাইয়্যা রূহী ওয়া আযিনা লী বিযিকরিহী)৩-(৩)

“সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার দেহকে নিরাপদ করেছেন, আমার রূহকে আমার নিকট ফেরত দিয়েছেন এবং আমাকে তাঁর যিকির করার অনুমতি (সুযোগ) দিয়েছেন”

তিরমিযী ৫/৪৭৩, নং ৩৪০১। দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৪৪।

4-(4)﴿اِنَّ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافِ الَّيْلِ وَالنَّھَارِ لَاٰيٰتٍ لِّاُولِي الْاَلْبَابِ  ١٩٠؁ڌالَّذِيْنَ يَذْكُرُوْنَ اللّٰهَ قِيٰمًا وَّقُعُوْدًا وَّعَلٰي جُنُوْبِھِمْ وَيَتَفَكَّرُوْنَ فِيْ خَلْقِ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ۚ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هٰذَا بَاطِلًا  ۚ سُبْحٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ   ١٩١؁رَبَّنَآ اِنَّكَ مَنْ تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ اَخْزَيْتَهٗ ۭ وَمَا لِلظّٰلِمِيْنَ مِنْ اَنْصَارٍ   ١٩٢؁رَبَّنَآ اِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُّنَادِيْ لِلْاِيْمَانِ اَنْ اٰمِنُوْا بِرَبِّكُمْ فَاٰمَنَّاڰ رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوْبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّاٰتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الْاَبْرَارِ  ١٩٣؁ۚرَبَّنَا وَاٰتِنَا مَا وَعَدْتَّنَا عَلٰي رُسُلِكَ وَلَا تُخْزِنَا يَوْمَ الْقِيٰمَةِ  ۭاِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيْعَادَ   ١٩٤؁فَاسْتَجَابَ لَھُمْ رَبُّھُمْ اَنِّىْ لَآ اُضِيْعُ عَمَلَ عَامِلٍ مِّنْكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ اَوْ اُنْثٰى ۚ بَعْضُكُمْ مِّنْۢ  بَعْضٍ ۚ فَالَّذِيْنَ ھَاجَرُوْا وَاُخْرِجُوْا مِنْ دِيَارِھِمْ وَاُوْذُوْا فِيْ سَبِيْلِيْ وَقٰتَلُوْا وَقُتِلُوْا لَاُكَفِّرَنَّ عَنْھُمْ سَيِّاٰتِھِمْ وَلَاُدْخِلَنَّھُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِھَا الْاَنْھٰرُ ۚ ثَوَابًا مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ  ۭوَاللّٰهُ عِنْدَهٗ حُسْنُ الثَّوَابِ  ١٩٥؁لَا يَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فِي الْبِلَادِ ١٩٦؁ۭ مَتَاعٌ قَلِيْلٌ  ۣ ثُمَّ مَاْوٰىھُمْ جَهَنَّمُ  ۭوَبِئْسَ الْمِھَادُ   ١٩٧؁لٰكِنِ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا رَبَّھُمْ لَھُمْ جَنّٰتٌ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِھَا الْاَنْھٰرُ خٰلِدِيْنَ فِيْھَا نُزُلًا مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ  ۭ وَمَا عِنْدَ اللّٰهِ خَيْرٌ لِّلْاَبْرَارِ  ١٩٨؁وَاِنَّ مِنْ اَھْلِ الْكِتٰبِ لَمَنْ يُّؤْمِنُ بِاللّٰهِ وَمَآ اُنْزِلَ اِلَيْكُمْ وَمَآ اُنْزِلَ اِلَيْھِمْ خٰشِعِيْنَ لِلّٰهِ ۙ لَا يَشْتَرُوْنَ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ ثَـمَنًا قَلِيْلًا  ۭ اُولٰۗىِٕكَ لَھُمْ اَجْرُھُمْ عِنْدَ رَبِّھِمْ ۭ اِنَّ اللّٰهَ سَرِيْعُ الْحِسَابِ ١٩٩؁يٰٓاَيُّھَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اصْبِرُوْا وَصَابِرُوْا وَرَابِطُوْا   ۣوَاتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ     ٢٠٠؁ۧ﴾

(ইন্না ফী খলকিস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়াখতিলা-ফিল লাইলি ওয়ান্নাহা-রি লাআয়া-তিল্ লিউলিল্ আলবা-ব। আল্লাযীনা ইয়াযকুরূনাল্লাহা কিয়া-মাও ওয়াকু‘উদাঁও ওয়া‘আলা জুনূবিহিম ওয়াইয়াতাফাক্কারূনা ফী খলকিস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদি, রববানা মা খালাকতা হাযা বা-তিলান, সুবহানাকা ফাকিনা ‘আযা-বান্ নার। রববানা ইন্নাকা মান তুদখিলিন্ না-রা ফাকাদ আখযাইতাহু, ওয়ামা লিয্যালিমীনা মিন আনসা-র। রববানা ইন্নানা সামি‘না মুনাদিইয়াইয়্যুনা-দী লিলঈমানি আন্ আ-মিনু বিরব্বিকুম ফাআ–মান্না। রব্বানা ফাগফির লানা যুনূবানা ওয়াকাফফির ‘আন্না সায়্যিআ-তিনা ওয়া তাওয়াফ্‌ফানা মা‘আল আবরা-র। রববানা ওয়া আতিনা মা ওয়া‘আদতানা ‘আলা রুসুলিকা ওয়ালা তুখযিনা ইয়াওমাল কিয়া-মাতি, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী‘আদ। ফাস্তাজাবা লাহুম রববুহুম আন্নী লা উদী‘উ আমালা ‘আমিলিম মিনকুম মিন যাকারিন ওয়া উনসা বা‘দুকুম মিন বা‘দ, ফাল্লাযীনা হা-জারূ ওয়া উখরিজূ মিন দিয়ারিহিম ওয়া ঊ-যূ ফী সাবীলী ওয়া কা-তালু ওয়া কু-তিলু লাউকাফফিরান্না ‘আনহুম সায়্যিআ-তিহিম ওয়ালাউদখিলান্নাহুম জান্না-তিন তাজরী মিন তাহ-তিহাল আনহারু, ছাওয়া-বাম্ মিন ‘ইনদিল্লাহি, ওয়াল্লা-হু ইনদাহু হুসনুছ ছাওয়া-ব। লা ইয়াগুররান্নাকা তাকল্লুবুল্লাযীনা কাফারূ ফিল্ বিলা-দ। মাতা‘উন কালীলুন ছুম্মা মা’ওয়াহুম জাহান্নামু ওয়া বি’সাল মিহা-দ। লা-কিনিল্লাযীনাত্তাকাও রববাহুম লাহুম জান্না-তুন তাজরী মিন তাহতিহাল আনহারু খা-লিদীনা ফীহা নুযুলাম্ মিন ইনদিল্লাহি ওয়ামা ইনদাল্লাহি খাইরুল লিল্ আবরার। ওয়াইন্না মিন আহলিল কিতাবি লামইয়ূ’মিনু বিল্লাহি ওয়ামা উনযিলা ইলাইকুম ওয়ামা উনযিলা ইলাইহিম খা-শিঈনা লিল্লা-হি লা ইয়াশতারূনা বিআ-য়া-তিল্লাহি ছামানান্ কালীলা। উলা-ইকা লাহুম আজরুহুম ‘ইনদা রববিহিম। ইন্নাল্লাহা সারী‘উল হিসাব। ইয়া আয়্যুহাল্লাযীনা আমানুসবিরূ ওয়াসা-বিরূ ওয়া রা-বিতু ওয়াত্তাকুল্লাহা লা‘আল্লাকুম তুফলিহুন)। ৪-(৪)

নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহর স্মরণ করে এবং আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে, আর বলে, ‘হে আমাদের রব! আপনি এগুলো অনর্থক সৃষ্টি করেন নি, আপনি অত্যন্ত পবিত্র, অতএব আপনি আমাদেরকে আগুনের শাস্তি হতে রক্ষা করুন।’ ‘হে আমাদের রব! আপনি কাউকেও আগুনে নিক্ষেপ করলে তাকে তো আপনি নিশ্চয় হেয় করলেন এবং যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।’ ‘হে আমাদের রব, আমরা এক আহ্বায়ককে ঈমানের দিকে আহ্বান করতে শুনেছি, ‘তোমরা তোমাদের রবের ওপর ঈমান আন।’ কাজেই আমরা ঈমান এনেছি। হে আমাদের রব! আপনি আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করুন, আমাদের মন্দ কাজগুলো দূরীভূত করুন এবং আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের সহগামী করে মৃত্যু দিন। ‘হে আমাদের রব! আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদেরকে যা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমাদেরকে দান করুন এবং কিয়ামতের দিন আমাদেরকে হেয় করবেন না। নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।’ তারপর তাদের রব তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের মধ্যে আমলকারী কোনো নর বা নারীর আমল বিফল করি না, তোমরা একে অপরের অংশ। কাজেই যারা হিজরত করেছে, নিজ ঘর থেকে উৎখাত হয়েছে, আমার পথে নির্যাতিত হয়েছে এবং যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে আমি তাদের পাপ কাজগুলো অবশ্যই দূর করব এবং অবশ্যই তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। এটা আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার, আর উত্তম পুরস্কার আল্লাহরই কাছে রয়েছে। যারা কুফুরী করেছে, দেশে দেশে তাদের অবাধ বিচরণ যেন কিছুতেই আপনাকে বিভ্রান্ত না করে। এ তো স্বল্পকালীন ভোগ মাত্র, তারপর জাহান্নাম তাদের আবাস, আর ওটা কত নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল! কিন্তু যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। এ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আতিথেয়তা; আর আল্লাহর কাছে যা আছে তা সৎকর্মপরায়ণদের জন্য উত্তম। আর নিশ্চয় কিতাবীদের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা আল্লাহর প্রতি বিনয়াবনত হয়ে তাঁর প্রতি এবং তিনি যা তোমাদের ও তাদের প্রতি নাযিল করেছেন তাতে ঈমান আনে। তারা আল্লাহর আয়াত তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে না। তারাই, যাদের জন্য আল্লাহর কাছে পুরস্কার রয়েছে। নিশ্চয় আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, ধৈর্যে প্রতিযোগিতা কর এবং সব সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাক, আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার”

সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০-২০০; বুখারী, ফাতহুল বারীসহ ৮/৩৩৭, নং ৪৫৬৯; মুসলিম ১/৫৩০, নং ২৫৬।

Leave a Reply