ঘুমানোর দোয়া বাংলা । খারাপ স্বপ্ন বা দুুঃস্বপ্ন দেখলে দুয়া
ঘুমানোর দোয়া বাংলা । খারাপ স্বপ্ন বা দুুঃস্বপ্ন দেখলে দুয়া << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
ঘুমানোর দোয়া
ঘুমানোর যিকিরসমূহ
রাতে যখন পার্শ্ব পরিবর্তন করে তখন পড়ার দো‘আ
ঘুমন্ত অবস্থায় ভয় এবং একাকিত্বের অস্বস্তিতে পড়ার দো‘আ
খারাপ স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দেখে যা করবে
৩২. ঘুমানোর যিকিরসমূহ
৯৯-(১) দুই হাতের তালু একত্রে মিলিয়ে নিম্নোক্ত সূরাগুলো পড়ে তাতে ফুঁ দিবে:
99-(1)بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ ﴿قُلْ هُوَ اللّٰهُ اَحَدٌ Ǻۚ اَللّٰهُ الصَّمَدُ Ąۚ لَمْ يَلِدْ ڏ وَلَمْ يُوْلَدْ Ǽ وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ Ćۧ﴾،
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম (ক্বুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লাহুস্ সামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ)।
রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। “বলুন, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ হচ্ছেন ‘সামাদ’ (তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী)। তিনি কাউকেও জন্ম দেন নি এবং তাঁকেও জন্ম দেওয়া হয় নি। আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।”
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ ﴿قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ Ǻ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ Ą وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ اِذَا وَقَبَ Ǽ وَمِنْ شَرِّ النَّفّٰثٰتِ فِي الْعُقَدِ Ć وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ اِذَا حَسَدَ Ĉ﴾،
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম (ক্বুল আ‘উযু বিরব্বিল ফালাক্ব। মিন শাররি মা খালাক্ব। ওয়া মিন শাররি গা-সিক্বিন ইযা ওয়াক্বাব। ওয়া মিন শাররিন নাফফা-সা-তি ফিল ‘উক্বাদ। ওয়া মিন শাররি হা-সিদিন ইযা হাসাদ)।
রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। “বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে। ‘আর অনিষ্ট হতে রাতের অন্ধকারের, যখন তা গভীর হয়। আর অনিষ্ট থেকে সমস্ত নারীদের, যারা গিরায় ফুঁক দেয়। আর অনিষ্ট থেকে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।”
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ ﴿قُلْ اَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ Ǻ مَلِكِ النَّاسِ Ą اِلٰهِ النَّاسِ Ǽ مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ ڏ الْخَنَّاسِ Ć الَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِيْ صُدُوْرِ النَّاسِ Ĉ مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ Čۧ﴾
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম (ক্বুল ‘আউযু বিরাব্বিন্না-স। মালিকিন্না-সি, ইলা-হিন্নাসি, মিন শাররিল ওয়াসওয়া-সিল খান্না-স, আল্লাযি ইউওয়াসউইসু ফী সুদূরিন না-সি, মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্না-স।)।
রহমান, রহীম আল্লাহর নামে। “বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের ইলাহের কাছে, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে; যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিন্নের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে।”
তারপর দুই হাতের তালু দ্বারা দেহের যতোটা অংশ সম্ভব মাসেহ করবে। মাসেহ আরম্ভ করবে তার মাথা, মুখমণ্ডল ও দেহের সামনের দিক থেকে। (এভাবে ৩ বার করবে।)
বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৯/৬২, নং ৫০১৭; মুসলিম ৪/১৭২৩, নং ২১৯২।
100-(2)﴿ اَللّٰهُ لَآ اِلٰهَ اِلَّا ھُوَ ۚ اَلْـحَيُّ الْقَيُّوْمُ ڬ لَا تَاْخُذُهٗ سِـنَةٌ وَّلَا نَوْمٌ ۭ لَهٗ مَا فِي السَّمٰوٰتِ وَمَا فِي الْاَرْضِ ۭ مَنْ ذَا الَّذِيْ يَشْفَعُ عِنْدَهٗٓ اِلَّا بِاِذْنِهٖ ۭ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَھُمْ ۚ وَلَا يُحِيْطُوْنَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهٖٓ اِلَّا بِمَا شَاۗءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِـيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ ۚ وَلَا يَـــــُٔـــوْدُهٗ حِفْظُهُمَا ۚ وَھُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ ٢٥٥ ﴾.
(আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যূল কাইয়্যূমু লা তা’খুযুহু সিনাতুঁও ওয়ালা নাউম। লাহূ মা-ফিসসামা-ওয়া-তি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফা‘উ ‘ইনদাহূ ইল্লা বিইযনিহী। ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়ামা খালফাহুম। ওয়ালা ইয়ুহীতূনা বিশাইইম মিন্ ইলমিহী ইল্লা বিমা শাআ। ওয়াসি‘আ কুরসিয়্যুহুস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্ব। ওয়ালা ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুয়াল ‘আলিয়্যূল ‘আযীম)।
১০০-(২) “আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয়। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর। কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সামনে ও পিছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন। আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না। তাঁর ‘কুরসী’ আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে; আর এ দু’টির রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান।”
সূরা আল-বাকারাহ-২৫৫। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘যে কেউ যখন রাতে আপন বিছানায় যাবে এবং ‘আয়াতুল কুরসী’ পড়বে, তখন সে রাতের পুরো সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য হেফাযতকারী থাকবে; আর সকাল হওয়া পর্যন্ত শয়তান তার নিকটেও আসতে পারবে না’। বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ), ৪/৪৮৭, নং ২৩১১।
101-(3)﴿اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَآ اُنْزِلَ اِلَيْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَالْمُؤْمِنُوْنَ ۭ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَمَلٰۗىِٕكَتِهٖ وَكُتُبِهٖ وَرُسُلِهٖ ۣلَا نُفَرِّقُ بَيْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ ۣ وَقَالُوْا سَمِعْنَا وَاَطَعْنَا ڭ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَاِلَيْكَ الْمَصِيْرُ ٢٨٥لَا يُكَلِّفُ اللّٰهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا ۭ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ۭرَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَآ اِنْ نَّسِيْنَآ اَوْ اَخْطَاْنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تَحْمِلْ عَلَيْنَآ اِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَي الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖ ۚ وَاعْفُ عَنَّا ۪ وَاغْفِرْ لَنَا ۪ وَارْحَمْنَا ۪ اَنْتَ مَوْلٰىنَا فَانْــصُرْنَا عَلَي الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ ٢٨٦ۧ ﴾.
(আ-মানার রাসূলু বিমা উনযিলা ইলাইহি মির রব্বিহী ওয়াল মু’মিনূন। কুল্লুন আ-মানা বিল্লা-হি ওয়া মালা-ইকাতিহী ওয়াকুতুবিহী ওয়া রুসুলিহ, লা নুফাররিক্বু বাইনা আহাদিম মির রুসুলিহ, ওয়া ক্বালু সামি‘না ওয়া আতা‘না গুফ্রা-নাকা রব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসীর। লা ইয়ুকাল্লিফুল্লাহু নাফ্সান ইল্লা উস‘আহা লাহা মা কাসাবাত ওয়া আলাইহা মাক্তাসাবাত রব্বানা লা তুআখিয্না ইন নাসীনা আও আখ্ত্বা’না। রব্বনা ওয়ালা তাহ্মিল ‘আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহু ‘আলাল্লাযীনা মিন ক্বাবলিনা। রব্বনা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা-লা ত্বা-ক্বাতা লানা বিহী। ওয়া‘ফু আন্না ওয়াগফির লানা ওয়ারহামনা আনতা মাওলা-না ফানসুরনা ‘আলাল ক্বাউমিল কাফিরীন)।
১০১-(৩) “রাসূল তার রবের পক্ষ থেকে যা তার কাছে নাযিল করা হয়েছে তার ওপর ঈমান এনেছেন এবং মুমিনগণও। প্রত্যেকেই ঈমান এনেছে আল্লাহর ওপর, তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের ওপর। আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনেছি ও মেনে নিয়েছি। হে আমাদের রব! আপনার ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। আল্লাহ কারো ওপর এমন কোন দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না যা তার সাধ্যাতীত। সে ভাল যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তারই, আর মন্দ যা কামাই করে তার প্রতিফল তার উপরই বর্তায়। ‘হে আমাদের রব! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের রব! আমাদের পূর্ববর্তীগণের ওপর যেমন বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিলেন আমাদের ওপর তেমন বোঝা চাপিয়ে দিবেন না। হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না যার সামর্থ আমাদের নেই। আর আপনি আমাদের পাপ মোচন করুন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব, কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।”
সূরা আল-বাকারা ২৮৫-২৮৬। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: যে ব্যক্তি রাতের বেলা সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পড়বে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে। বুখারী, ফাতহুল বারীসহ, ৯/৯৪, ৪০০৮; মুসলিম ১/৫৫৪, নং ৮০৭।
بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، فَإِن أَمْسَكْتَ نَفْسِي فارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا، بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ
(বিইসমিকা রব্বী ওয়াদা‘তু জাম্বী, ওয়া বিকা আরফা‘উহু। ফাইন্ আম্সাক্তা নাফ্সী ফারহামহা, ওয়াইন আরসালতাহা ফাহ্ফায্হা বিমা তাহ্ফাযু বিহী ‘ইবা-দাকাস সা-লিহীন)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘তোমাদের কোনো ব্যক্তি তার বিছানা ত্যাগ করলো, আবার ঘুমাতে ফিরে এলো সে যেনো তার চাদর বা লুঙ্গির আঁচল দিয়ে তিনবার বিছানাটি ঝেড়ে নেয়। আর যেন সে বিসমিল্লাহ পড়ে, (আল্লাহর নাম নেয়); কেননা সে জানে না যে, তার চলে যাবার পর এতে কী পতিত হয়েছে। তারপর সে যখন শোয়, তখন যেনো এ দো‘আটি বলে। (হাদীসে বর্ণিত صنفة إزاره শব্দের অর্থ হচ্ছে, চাদরের পার্শ্বদিকস্থ অংশ। এর জন্য দেখুন, নিহায়া ফী গারিবিল হাদীস ওয়াল আসার’ ‘صنف’।)
১০২-(৪) “আমার রব! আপনার নামে আমি আমার পার্শ্বদেশ রেখেছি (শুয়েছি) এবং আপনারই নাম নিয়ে আমি তা উঠাবো। যদি আপনি (ঘুমন্ত অবস্থায়) আমার প্রাণ আটকে রাখেন, তবে আপনি তাকে দয়া করুন। আর যদি আপনি তা ফেরত পাঠিয়ে দেন, তাহলে আপনি তার হিফাযত করুন যেভাবে আপনি আপনার সৎকর্মশীল বান্দাগণকে হিফাযত করে থাকেন।”
বুখারী, ফাতহুল বারীসহ ১১/১২৬, নং ৬৩২০; মুসলিম ৪/২০৮৪, নং ২৭১৪।
اللَّهُمَّ إِنَّكَ خَلَقْتَ نَفْسِي وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا، لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْياهَا، إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا، وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا. اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ العَافِيَةَ
(আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা খালাক্তা নাফসী ওয়া আন্তা তাওয়াফ্ফাহা। লাকা মামা-তুহা ওয়া মাহ্ইয়া-হা। ইন্ আহ্ইয়াইতাহা ফাহ্ফায্হা ওয়াইন আমাত্তাহা ফাগফির লাহা। আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকাল ‘আ-ফিয়াতা)।
১০৩-(৫) “হে আল্লাহ! নিশ্চয় আপনি আমার আত্মাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনি তার মৃত্যু ঘটাবেন। তার মৃত্যু ও তার জীবন আপনার মালিকানায়। যদি তাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে আপনি তার হিফাযত করুন, আর যদি তার মৃত্যু ঘটান তবে তাকে মাফ করে দিন। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে নিরাপত্তা চাই।”
মুসলিম ৪/২০৮৩, নং ২৭১২; আহমাদ, তাঁর শব্দে ২/৭৯, নং ৫৫০২।
اللَّهُمَّ قِنِي عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ
(আল্লা-হুম্মা ক্বিনী ‘আযা-বাকা ইয়াওমা তাব‘আছু ‘ইবা-দাকা)।
১০৪-(৬) “হে আল্লাহ!
“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তাঁর ডান হাত তাঁর গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দো‘আটি বলতেন।”
আমাকে আপনার আযাব থেকে রক্ষা করুন, যেদিন আপনি আপনার বান্দাদেরকে পুনর্জীবিত করবেন।”
আবূ দাউদ, শব্দ তাঁরই, ৪/৩১১, নং ৫০৪৫; তিরমিযী, নং ৩৩৯৮; আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৪৩; সহীহ আবী দাঊদ, ৩/২৪০।
بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ أَمُوتُ وَأَحْيَا
(বিস্মিকাল্লা-হুম্মা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া)।
১০৫-(৭) “হে আল্লাহ! আপনার নাম নিয়েই আমি মরছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হবো।”
বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ১১/১১৩, নং ৬৩২৪; মুসলিম ৪/২০৮৩, নং ২৭১১।
سُبْحَانَ اللَّهِ (ثلاثاً وثلاثين) وَالْحَمْدُ لِلَّهِ (ثلاثاً وثلاثين) وَاللَّهُ أَكْبَرُ (أربعاً وثلاثينَ
(সুবহা-নাল্লাহ, (৩৩ বার) আলহামদুলিল্লা-হ (৩৩ বার) আল্লা-হু আকবার (৩৪ বার)-)
১০৬-(৮) আল্লাহ অতি-পবিত্র (৩৩ বার), সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য (৩৩ বার), আল্লাহ অতি-মহান (৩৪ বার)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী এবং ফতেমাকে বলেন: আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু বলে দিবো না যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষাও উত্তম হবে? যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তোমরা দু’জনে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদু লিল্লাহ, এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবর বলবে, যা তা খাদেম অপেক্ষাও তোমাদের জন্য উত্তম হবে’’। বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৭/৭১, নং ৩৭০৫; মুসলিম ৪/২০৯১, নং ২৭২৬।
اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعِ وَرَبَّ الأَرْضِ، وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ، فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى، وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالْإِنْجِيلِ، وَالْفُرْقَانِ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ. اللَّهُمَّ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ
(আল্লা-হুম্মা রব্বাস্ সামা-ওয়া-তিস্ সাব‘ই ওয়া রব্বাল ‘আরশিল ‘আযীম, রব্বনা ওয়া রব্বা কুল্লি শাই’ইন্, ফা-লিক্বাল হাব্বি ওয়ান-নাওয়া, ওয়া মুনযিলাত্-তাওরা-তি ওয়াল ইনজীলি ওয়াল ফুরক্বা-ন, আ‘ঊযু বিকা মিন শাররি কুল্লি শাই’ইন্ আনতা আ-খিযুম-বিনা-সিয়াতিহি। আল্লা-হুম্মা আনতাল আউওয়ালু ফালাইসা ক্বাবলাকা শাইউন। ওয়া আনতাল আ-খিরু ফালাইসা বা‘দাকা শাইউন। ওয়া আনতায যা-হিরু ফালাইসা ফাওক্বাকা শাইউন। ওয়া আনতাল বা-ত্বিনু ফালাইসা দূনাকা শাইউন। ইক্বদ্বি ‘আন্নাদ্-দাইনা ওয়া আগনিনা মিনাল ফাক্বরি)।
১০৭-(৯) হে আল্লাহ! হে সপ্ত আকাশের রব্ব, যমীনের রব্ব, মহান ‘আরশের রব্ব, আমাদের রব্ব ও প্রত্যেক বস্তুর রব্ব, হে শস্য-বীজ ও আঁটি বিদীর্ণকারী, হে তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআন নাযিলকারী, আমি প্রত্যেক এমন বস্তুর অনিষ্ট থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, যার (মাথার) অগ্রভাগ আপনি ধরে রেখেছেন (নিয়ন্ত্রণ করছেন)। হে আল্লাহ! আপনিই প্রথম, আপনার পূর্বে কিছুই ছিল না, আপনি সর্বশেষ, আপনার পরে কোনো কিছু থাকবে না, আপনি সব কিছুর উপরে, আপনার উপরে কিছুই নেই; আপনি সর্বনিকটে, আপনার চেয়ে নিকটবর্তী কিছু নেই, আপনি আমাদের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং আমাদেরকে অভাবগ্রস্ততা থেকে অভাবমুক্ত করুন।”
মুসলিম ৪/২০৮৪, নং ২৭১৩।
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا، وَكَفَانَا، وَآوَانَا، فَكَمْ مِمَّنْ لاَ كَافِيَ لَهُ وَلاَ مُؤْوِيَ
(আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত‘আমানা, ওয়া সাক্বা-না, ওয়া কাফা-না, ওয়া আ-ওয়ানা, ফাকাম্ মিম্মান লা কা-ফিয়া লাহু, ওয়ালা মু’উইয়া)।
১০৮-(১০) “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাদেরকে আহার করিয়েছেন, পান করিয়েছেন, আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেছেন এবং আমাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কেননা, এমন বহু লোক আছে যাদের প্রয়োজনপূর্ণকারী কেউ নেই এবং যাদের আশ্রয়দানকারীও কেউ নেই।”
মুসলিম ৪/২০৮৫, নং ২৭১৫।
اللَّهُمَّ عَالِمَ الغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي، وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطانِ وَشِرْكِهِ، وَأَنْ أَقْتَرِفَ عَلَى نَفْسِي سُوءاً، أَوْ أَجُرَّهُ إِلَى مُسْلِمٍ
(আল্লা-হুম্মা ‘আ-লিমাল গাইবি ওয়াশ শাহা-দাতি, ফা-ত্বিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, রাব্বা কুল্লি শাই’ইন ওয়া মালীকাহু, আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, আ‘উযু বিকা মিন শাররি নাফসী, ওয়ামিন শাররিশ শাইত্বা-নী ওয়াশিরকিহী/ওয়াশারাকিহী, ওয়া আন আক্বতারিফা ‘আলা নাফসী সূ’আন আউ আজুররাহু ইলা মুসলিম)
১০৯-(১১) “হে আল্লাহ! হে গায়েব ও উপস্থিতের জ্ঞানী, হে আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা, হে সব কিছুর রব্ব ও মালিক! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আমার আত্মার অনিষ্ট থেকে, শয়তানের অনিষ্টতা থেকে ও তার শির্ক বা তার ফাঁদ থেকে, আমার নিজের ওপর কোনো অনিষ্ট করা অথবা কোনো মুসলিমের দিকে তা টেনে নেওয়া থেকে।”
আবূ দাউদ, ৪/৩১৭, নং ৫০৬৭; তিরমিযী, নং ৩৬২৯; আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৪২।
১১০-(১২) ‘আলিফ লাম মীম তানযীলায সাজদাহ ও তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলক’ সূরাদ্বয় পড়বে।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা সাজদা এবং সূরা মুলক না পড়ে ঘুমাতেন না। তিরমিযী, নং ৩৪০৪; নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, নং ৭০৭। আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ৪/২৫৫।
اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ
(আল্লা-হুম্মা আস্লামতু নাফ্সী ইলাইকা, ওয়া ফাউওয়াদ্বতু আমরী ইলাইকা, ওয়া ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজহিয়া ইলাইকা, ওয়াআলজা’তু যাহ্রী ইলাইকা, রাগবাতান ওয়া রাহবাতান ইলাইকা। লা মালজা’আ ওয়ালা মান্জা মিনকা ইল্লা ইলাইকা। আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা ওয়াবিনাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা)।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন তুমি বিছানা গ্রহণ করবে, তখন নামাযের মত ওযু করবে, তারপর তোমার ডান পার্শ্বদেশে শুয়ে পড়বে। তারপর বল, ….. আল-হাদীস।
১১১-(১৩) “হে আল্লাহ! আমি নিজেকে আপনার কাছে সঁপে দিলাম। আমার যাবতীয় বিষয় আপনার কাছেই সোপর্দ করলাম, আমার চেহারা আপনার দিকেই ফিরালাম, আর আমার পৃষ্ঠদেশকে আপনার দিকেই ন্যস্ত করলাম, আপনার প্রতি অনুরাগী হয়ে এবং আপনার ভয়ে ভীত হয়ে। একমাত্র আপনার নিকট ছাড়া আপনার (পাকড়াও) থেকে বাঁচার কোনো আশ্রয়স্থল নেই এবং কোনো মুক্তির উপায় নেই। আমি ঈমান এনেছি আপনার নাযিলকৃত কিতাবের ওপর এবং আপনার প্রেরিত নবীর ওপর।”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে এ দো‘আটি শিক্ষা দিলেন, তাকে বলেন: যদি তুমি ঐ রাতে মারা যাও তবে ‘ফিতরাত’ তথা দীন ইসলামের উপর মারা গেলে। বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ১১/১১৩, নং ৬৩১৩; মুসলিম ৪/২০৮১, নং ২৭১০।
২৯. রাতে যখন পার্শ্ব পরিবর্তন করে তখন পড়ার দো‘আ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهّارُ، رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزيزُ الْغَفَّارُ
(লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল ওয়াহিদুল কাহ্হারু রব্বুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল-আরদ্বি ওয়ামা বাইনাহুমাল-‘আযীযুল গাফ্ফার)।
১১২- “মহাপ্রতাপশালী এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। (তিনি) আসমানসমূহ, যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যস্থিত সবকিছুর রব্ব, প্রবলপরাক্রমশালী, পরম ক্ষমাশীল।”
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন বিছানায় পার্শ্ব পরিবর্তন করতেন তখন তা বলতেন। হাদীসটি সংকলন করেছেন, হাকেম এবং তিনি তা সহীহ বলেছেন, আর ইমাম যাহাবী তাকে সমর্থন করেছেন, ১/৫৪০; নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল্লাইলা, নং ২০২; ইবনুস সুন্নী, নং ৭৫৭। আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ৪/২১৩।
৩০. ঘুমন্ত অবস্থায় ভয় এবং একাকিত্বের অস্বস্তিতে পড়ার দো‘আ
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ، وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّياطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ
(আ‘ঊযু বিকালিমা-তিল্লাহিত্তা-ম্মাতি মিন্ গাদ্বাবিহি ওয়া ইক্বা-বিহি ওয়া শাররি ‘ইবা-দিহি ওয়ামিন হামাযা-তিশ্শায়া-ত্বীনি ওয়া আন ইয়াহ্দুরূন)।
১১৩- “আমি আশ্রয় চাই আল্লাহর পরিপূর্ণ কালামসমূহের উসীলায় তাঁর ক্রোধ থেকে, তাঁর শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে, শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে এবং তাদের উপস্থিতি থেকে।”
আবূ দাঊদ ৪/১২, নং ৩৮৯৩; তিরমিযী, নং ৩৫২৮। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৭১।
৩১. খারাপ স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দেখে যা করবে
১১৪- (১) “তার বাম দিকে হাল্কা থুতু ফেলবে।” (৩ বার)
মুসলিম, ৪/১৭৭২, নং ২২৬১।
(২) “শয়তান থেকে এবং যা দেখেছে তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে প্রার্থনা করবে।” (৩ বার)
মুসলিম, ৪/১৭৭২, ১৭৭৩, নং ২২৬১, ২২৬২।
(৩) “কাউকে এ ব্যাপারে কিছু বলবে না।”
মুসলিম, ৪/১৭৭২, নং ২২৬১ ও নং ২২৬৩।
(৪) “অতঃপর যে পার্শ্বে সে ঘুমিয়েছিল তা পরিবর্তন করবে।”
মুসলিম, ৪/১৭৭৩, নং ২২৬১।
১১৫- (৫) “যদি ইচ্ছা করে তবে উঠে সালাত আদায় করবে।”
মুসলিম ৪/১৭৭৩, নং ২২৬৩