রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ গায়েবী বিষয়ে সংবাদ দেওয়া

রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ গায়েবী বিষয়ে সংবাদ দেওয়া

রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ গায়েবী বিষয়ে সংবাদ দেওয়া << নবুওয়তের মুজিযা হাদীসের মুল সুচিপত্র দেখুন

দশম পরিচ্ছেদ : রাঃসাঃ এর নবুওয়তের প্রমাণ

গায়েবী বিষয়ে সংবাদ দেওয়া এবং তিনি যেভাবে বলিয়াছেন সেগুলো ঠিক সেভাবেই সংঘটিত হয়েছিল।

আবূ হুরাইরা রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, নাজাশী যে দিন মারা যান সেদিন-ই রাঃসাঃ তাহাঁর মৃত্যু সংবাদ দেন এবং জানাযার স্থানে গিয়ে লোকদের কাতারবদ্ধ করে চার তাক্‌বির আদায় করিলেন। [1]

আবূ হুরাইরা রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ [আবিসিনিয়ার বাদশাহ্] নাজাশীর মৃত্যুর দিনই আমাদের তার মৃত্যু সংবাদ জানান এবং বলেন: তোমরা তোমাদের ভাই-এর [নাজাশীর] জন্য ইস্তিগফার কর। আর ইবনু শিহাব সা`য়ীদ ইবনু মুসায়্যাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে আবূ হুরাইরা রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ রাঃসাঃ তাদের নিয়ে মুসাল্লায় কাতার করিলেন, এরপর চার তাক্‌বীর আদায় করেন। [2]

জাবির রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন নাজাশীর মৃত্যু হল তখন নাবী রাঃসাঃ বলিলেন, আজ একজন সৎ ব্যক্তি মারা গেছেন। উঠো, এবং তোমাদের [ধর্মীয়] ভাই আসহামার জন্য জানাযার নামায আদায় কর। [3]

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত যে, নাবী রাঃসাঃ নাজাশীর উপর জানাযার নামায আদায় করেন। আমরাও তাহাঁর পিছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমি দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় কাতারে ছিলাম। [4]

জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, নাবী রাঃসাঃ আসহাম নাজাশীর উপর জানাযার নামায আদায় করেন এবং চারবার তাকবির বলেন।[5]

আনাস ইবনু মালিক রাদি. `আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ [মূতা যুদ্ধের অবস্থা বর্ণনায়] বলিলেন, যায়েদ রাদি. `আনহু পতাকা বহন করেছে তারপর শহীদ হয়েছে। তারপর জা`ফর রাদি. `আনহু [পতাকা] হাতে নিয়েছে; সেও শহীদ হয়। তারপর আবদুল্লাহ্ ইবনু রাওয়াহা রাদি. `আনহু [পতাকা] ধারন করে এবং সেও শহীদ হয়। এ সংবাদ বলেছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর দু`চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল। এরপর খালিদ ইবনু ওয়ালিদ রাদি. আনহু পরামর্শ ছাড়াই [পতাকা] হাতে তুলে নেয় এবং তাহাঁর দ্বারা বিজয় সূচিত হয়। [6]

আব্দুল্লাহ ইবনু জা`ফর রাদি. আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাঃসাঃ [মূতার যুদ্ধে] যায়েদ ইবনু হারেসা রাদি. আনহুকে সেনাপতি করে সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেন। আর বলে দিলেন যে, যদি যায়েদ রাদি. আনহু শহীদ হন তবে তোমাদের আমীর হবেন জাফর রাদি. আনহু। তিনিও যদি শহীদ হন তবে তোমাদের আমীর হবেন আব্দুল্লাহ ইবনু রাওয়াহাহ রাদি. আনহু। যায়েদ রাদি. আনহু পতাকা বহন করেছেন তারপর এমনভাবে জিহাদ করেছেন যে, তিনি শহীদ হয়েছে। তারপর জা`ফর রাদি. আনহু [পতাকা] হাতে নিয়েছে; তিনিও এমনভাবে জিহাদ করেছেন যে, শহীদ হন তারপর আবদুল্লাহ্ ইবনু রাওয়াহা রাদি. আনহু [পতাকা] ধারন করে এবং তিনিও এমনভাবে জিহাদ করেছেন যে, শহীদ হন। এরপর খালিদ ইবনু ওয়ালিদ রাদি. আনহু পতাকা হাতে তুলে নেন এবং তাহাঁর দ্বারা বিজয় সূচিত হয়। তাদের সংবাদ রাঃসাঃ  এর কাছে আসলে তিনি লোকদের মাঝে নেমে আসেন। অতঃপর তিনি আল্লাহর হামদ ও সানা করেন। তিনি বলেন, তোমাদের ভাইয়ের শত্রুর মোকাবিলা করছে। যায়েদ রাদি. আনহু পতাকা বহন করেছে তারপর শহীদ হয়েছে। তারপর জা`ফর রাদি. আনহু [পতাকা] হাতে নিয়েছে; সেও শহীদ হয়। তারপর আবদুল্লাহ্ ইবনু রাওয়াহা রাদি. আনহু [পতাকা] ধারন করে এবং সেও শহীদ হয়। অতঃপর আল্লাহর তরবারী খ্যাত খালিদ ইবনু ওয়ালিদ রাদি. আনহু পতাকা বহন করেছে। আল্লাহ তাহাঁর দ্বারা বিজয় সূচিত করেছেন। জা`ফর পরিবারকে সুযোগ দাও তাদের জন্য শান্তনা। জা`ফর পরিবারকে সুযোগ দাও তাদের জন্য শান্তনা। অতপর তাদেরকে নিয়ে আসা হলো। তিনি বলিলেন, আজকের পরে তোমরা আমার ভাইয়ের জন্য কাঁদবে না, আমার ভাইয়ের ছেলের জন্য দো`আ করো। [7]

আলী রাদি. আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ আমাকে এবং যুবায়র ও মিকদাদ ইবনু আসওয়াদ রাদি. আনহুকে পাঠিয়ে বলিলেন, `তোমরা খাখ্ বাগানে যাও। সেখানে তোমরা এক মহিলাকে দেখতে পাবে। তার নিকট একটি পত্র আছে, তোমরা তার কাছ থেকে তা নিয়ে আসবে`। তখন আমরা রওনা করলাম। আমাদের ঘোড়া আমাদের নিয়ে দ্রুত বেগে চলছিল। অবশেষে আমরা উক্ত খাখ্ নামক বাগানে পৌঁছলাম এবং সেখানে আমরা মহিলাটিকে দেখতে পেলাম। আমরা বলিলাম, `পত্র বাহির কর`। সে বলল, `আমার কাছে তো কোনো পত্র নেই`। আমরা বলিলাম, `তুমি অবশ্যই পত্র বের করে দিবে, নচেৎ তোমার কাপড় খুলতে হবে`। তখন সে তার চুলের খোঁপা থেকে পত্রটি বের করে দিল। আমরা তখন সে পত্রটি নিয়ে রাসূল্লাল্লাহ্ রাঃসাঃ এর নিকট উপস্থিত হলাম। দেখা গেল, তা হাতিব ইবনু আবূ বালতাবা রাদি. আনহুর পক্ষ থেকে মক্কার কতিপয় মুশরিক ব্যক্তির নিকট লেখা হয়েছে। যাতে তাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর কোনো পদক্ষেপ সম্পর্কে সংবাদ দেওয়া হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ বলিলেন, `হে হাতিব! একি ব্যাপার?` তিনি বলিলেন, `ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার ব্যাপারে কোনো তড়িত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। মূলত আমি কুরাইশ বংশীয় লোক ছিলাম না। তবে তাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। আর যারা আপনার সঙ্গে মুহাজিরগণ রয়েছেন, তাদের সকলেরই মক্কাবাসীদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। যার কারণে তাহাঁদের পরিবার-পরিজন ও ধন-সম্পদ নিরাপদ। তাই আমি চেয়েছি, যেহেতু আমার বংশগতভাবে এ সম্পর্ক নেই, কাজেই আমি তাদের প্রতি এমন কিছু কুফরী কিংবা মুরতাদ হওয়ার উদ্দেশ্যে করিনি এবং ইসলাম গ্রহণের পর পুনঃ কুফরীতে প্রত্যাবর্তন করার প্রতি আকৃষ্ট হবার কারণেও নয়`। রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ বলিলেন, `হাতিব তোমাদের নিকট সত্য কথা বলেছে`। তখন উমর রাদি. আনহু বলিলেন, `ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এই মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেই`। রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ বলিলেন, `সে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। সম্ভবত তোমার হয়ত জানা নেই, আল্লাহ্ তা`আলা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের ব্যাপারে অবহিত আছেন। তাই তাদের উদ্দেশ্য করে বলিয়াছেন, তোমরা যা ইচ্ছা আমল কর। আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি`। সুফিয়ান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন এ সনদটি কতই না উত্তম।[8]

আবু হুরাইরা রাদি. আনহু হইতে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনু আবু রাবা রহ. বলেন, আমি একটি প্রতিনিধি দলের সাথে [যার মধ্যে আবু হুরাইরা রাদি. আনহু ও ছিলেন] মুয়াবিয়া রাদি. আনহুর কাছে গেলাম। সেই সময় ছিল রামাযান মাস। তখন তাঁরা একে অন্যের জন্য খানা পাকাতেন। আবু হুরাইরা রাদি. আনহু অধিকাংশ সময় আমাদেরকে তাহাঁর বাসস্থানে দাওয়াত করতেন। সুতরাং একদিন আমি তাঁকে বলিলাম, আমিও খানা তৈয়ার করবো এবং সলকেই আমার বাসস্থানে-দাওয়াত করবো। আমি খানা তৈরীর নির্দেশ দিলাম। এরপর আবু হুরাইরা রাদি. আনহুর সঙ্গে আমি বিকালে সাক্ষাত করলাম এবং বলিলাম, আজ রাতে আমার বাসায় আপনার দাওয়াত। আবু হুরাইরা রাদি. আনহু বলিলেন, আপনি আজ আমার-পূর্বেই দাওয়াত দিয়ে দিলেন, আমি বলিলাম, হ্যাঁ। আমি সকলকেই দাওয়াত করলাম। তখন আবু হুরাইরা রাদি. আনহু বলিলেন, হে আনসার- সম্প্রদায়! আমি কি তোমাদেরকে তোমাদের সম্পর্কে একটি হাদীস বর্ণনা করবে না? তারপর তিনি মক্কা বিজয়ের ঘটনা বর্ণনা করতে শুরু করিলেন। তিনি বলিলেন, রাঃসাঃ  মক্কার দিকে অগ্রসর হলেন এবং পরিশেষে তিনি তথায় উপনীত হলেন। এরপর যুবাইরকে মক্কার একদিকে এবং খালিদ ইবনু ওয়ালীদ রাদি. আনহুকে অপর দিকে প্রেরণ করিলেন। আর আবু উবায়দা রাদি. আনহুকে সেইসব লোকদের উপর নেতা বানিয়ে পাঠালেন যাদের কাছে লৌহ বর্ম ছিলনা। তারা উপত্যকার ভিতরের পথ অবলম্বন করে চললেন। আর রাঃসাঃ  ছিলেন একটি ছোট সেনাদলের মধ্যে। তিনি তাকালেন এবং আমাকে দেখে বলিলেন, হে আবু হুরাইরা! আমি বলিলাম, ইয়া রাঃসাঃ ! আমি উপস্থিত। এরপর তিনি বলিলেন, আমার নিকট আনসার ব্যতীত আর কেউ যেন না আসে। শাইবান ব্যতীত অন্য বর্ণনাকারী অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, তারপর তিনি বলিলেন, আনসারদেরকে আহবান কর। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আনসারগণ তার চারপাশে জমায়েত হলেন। এদিকে কুরাইশগণও তাদের বিভিন্ন গোত্রের লোক এবং অনুগতদেরকে একত্রিত করলো। এরপর তারা বলল, আমরা তাদেরকে আগে প্রেরণ করব। যদি তাদের- ভাগে কিছু জুটে, তবে আমরাও তো তাদের সঙ্গেই আছি। আর যদি তারা বিপদের সম্মুখীন হয় তবে তারা আমাদের কাছে যা চাইবে, তাই দিয়ে দেব। এরপর রাঃসাঃ  সাহাবীগণকে বলিলেন, তোমরা কি কুরাইশের বিভিন্ন গোত্রের লোক এবং তাদের অনুগতদেরকে দেখতে পাচ্ছ। এরপর রাঃসাঃ  তাহাঁর এবং হাত আপন হাতের উপর রেখে ইঙ্গিত করিলেন, [মক্কার পথে যারা তোমাদের বাধা দেয় তোমরা তাদের খতমঁ করে দিবে]। এরপর বলিলেন, অবশেষে সাফা পাহাড়ে তোমরা আমার সঙ্গে মিলিত হবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা অগ্রসর হতে লাগলাম। আমাদের মধ্য হতে কেউ যাকে কতল করতে চেয়েছে তাকে কতল করেছে। তাই তাদের মধ্য হতে কেউই আমাদের উপর আক্রমণ করতে সাহস পায়নি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আবু সুফিয়ান এসে বলিলেন, ইয়া রাঃসাঃ ! আজ কুরাইশ সম্প্রদায়ের রক্ত হালাল করে-দেওয়া হয়েছে। আজকের পরে আর কোনো কুরাইশের অস্তিত্ব থাকবেনা। তখন রাঃসাঃ  ঘোষণা দিলেন, যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের ঘরে প্রবেশ করবে সে-নিরাপদ। সূতরাং আনসারগণ একে অপরের সাথে বলাবলি করতে লাগল যে, লোকটিকে [রাঃসাঃ  স্বদেশের অনুপ্রেরণ এবং স্বদেশ প্রেমে পেয়ে বসেছে। আবু হুতায়রা রাদি. আনহু বলেন যে, তখনই অহী অবতীর্ণ হল। যখন অহী অবতীর্ণ হতো তখন তা আমাদের নিকট গোপন থাকত না। ঐ সময় কারো সাধ্য হতো না যে, রাঃসাঃ  এর দিকে চোখ তোলে দেখে, যতক্ষননা অহী শেষ হতো। এরপর যখন অহী শেষ হল, তখন রাঃসাঃ  বলিলেন, হে আনসার সম্প্রদায়! তারা বলল, ইয়া রাঃসাঃ ! আমরা আপনার কাছে উপস্থিত। তখন তিনি বলিলেন, তোমরা কি বলেছ, যে, লোকটিকে স্বদেশের অনুপ্রেরণায় পেয়ে বসেছে”। তখন তারা বলিলেন, এ রকম কিছু হয়েছে। রাঃসাঃ  বলিলেন, কখনও না। নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর বান্দা এবং তার প্রেরিত রাসুল। আমি আল্লহর উদ্দেশ্যে স্বদেশ ত্যাগ করে তোমাদের কাছে গিয়েছি। আমার জীবন ও মরণ তোমাদের সাথে। তারা কাঁদতে কাদতে নাবী রাঃসাঃ এর দিকে অগ্রসর হলেন এবং কাঁদতে লাগলেন, আল্লাহর শপথ! আমরা যা বলেছিলাম, তা ছিল আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের প্রতি আমাদের ভালবাসা ও দূর্বলতার কারণে। এরপর রাঃসাঃ  বলিলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল তোমাদের বক্তব্য-বিশ্বাস করেন এবং তোমাদের ওযর গ্রহণ করিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর মক্কার জনগণ আবু সুফিয়ানের বাড়ীর দিকে চলে গেল- [জীবন রক্ষার জন্যে] আর অন্যান্য মানুষ আপন ঘরে দরজা লাগিয়ে বসে রইল এরপর রাঃসাঃ  `হজরে আসওয়াদ` এর নিকটবর্তী হয়ে একে চুম্বন এবং বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করিলেন। এরুপর তিনি বাইতুল্লাহর পাশ্বে রক্ষিত একটি মূর্তির নিকটবর্তী হলেন, যাকে তারা উপাসনা করতো। রাঃসাঃ  এর হাতে তখন একটি ধনুক ছিল, তিনি এর এক প্রান্তে ধরে রেখেছিলেন। যখন তিনি মূর্তিটির নিকটবর্তী হলেন তখন তিনি তা দ্বারা এর চোখে খুচাতে লাগলেন এবং বলিলেন, “সত্য আগমন করেছে এবং বাতিল [মিথ্যা] চলে গিয়েছে।” [কোরআনের সুরা ইসরা : ৮১] এরপর বায়তুল্লাহর তাওয়াফ শুরু শেষে তিনি সাফা পাহাড়ের দিকে গমন করিলেন। এরপর তাতে আরোহণ করে বাইতুল্লাহর দিকে চেয়ে দেখলেন এবং দু`হাত উচু করে আল্লাহ তা`আলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিলেন এবং তার যা পার্থনা করার তাই প্রার্থনা করিলেন। [9]

সুলাইমান ইবনু মুগীরা রাদি. আনহু থেকে উক্ত সনদে এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে তার হাদীসে অতিরিক্ত কথা উল্লেখ রয়েছে যে, তারপর তিনি তার এক হাত অপর হাতের উপর রেখে ইশারা করে বলিলেন, তোমরা তাদেরকে খতম করে দাও। এতে আরো উল্লেখ রয়েছে সে, তখনঁ তারা বলিলেন, ইয়া রাঃসাঃ ! আমরা এ রকম কিছু বলেছি। তখন তিনি বলিলেন, তাহলে আমার-নামের কী আর থাকবে। সুতরাং এমনটি কখনো হবে না। আমিতো আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। [10]

আব্দুল্লাহ ইবনু রাবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেন, আমরা ভ্রমন করে মুয়াবিয়া ইবনু আবু সূফিয়ান রাদি. আনহুর নিকট গেলাম। আমাদের মধ্যে তখন আবু হুরাইরা রাদি. আনহু ও ছিলেন। প্রত্যেকেই এক দিন তার সাথীর জন্য খাবার তৈয়ার করতে হয় একদিন আমার পালা আসল। তখন আমি বলিলাম, হে আবু হুরাইরা! আজতো আমার পালা! অতএব, সকালেই আমার বাসস্থানে এলেন, “তখনও খানা পাকানো শেষ হয় নাই। তখন আমি বলিলাম, হে আবু হুরাইরা! আপনি যদি আমাদেরকে খানা পাকানোর পূর্ব পর্যন্ত রাঃসাঃ  এর কোন হাদীস বর্ণনা করতেন! [তবে ভাল হতো] অতএব, বলিলেন, আমরা মক্কা বিজয়ের দিন রাঃসাঃ  এর সঙ্গে ছিলাম। তখন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ রাদি. আনহুকে ডানদিকের বাহিনীর এবং যুবাইর রাদি. আনহুকে বাম দিকের বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করিলেন। আবু উবায়দা রাদি. আনহুকে পদাতিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত করিলেন প্রান্তর অতিক্রম করার জন্য। এরপর তিনি বলিলেন, হে আবু হুরাইরা! আনসারদেরকে আমার কাছে আসার জন্য আহবান কর। অতএব আমি তাদেরকে আহবান করলাম। এরপর তাঁরা দ্রুত আসলেন। তখন তিনি বলিলেন, হে আনসারগণ! তোমরা কি কুরাইশের দলের লোক দেখতে পাচ্ছ। প্রতি উত্তরে তারা বলিলেন, হ্যাঁ। অতএব তিনি বলিলেন, আগামীকাল যখন তোমরা [যূদ্ধক্ষেত্রে] তাদের মোকাবিলা করবে তখন তাদেরকে সম্পুর্ন নির্মূল করে দেবে। তারপর তাহাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে ইঙ্গিতে বলিলেন, তাদেরকে সমূলে বিনষ্ট করে দেবে। তারপর বলিলেন, আমার সাথে তোমাদের এক হবার স্থান সাফা পাহাড়। বর্ণনাকারী বলেন, সেদিন যে কোনো বিধর্মী আনসারদের লক্ষ্যস্হলে পড়েছে, তাকেই তারা নির্মুল করেছে। এরপরে রাঃসাঃ  সাফা পাহাড়ের উপর আরোহণ করিলেন। যখন আনসারগণ তথীয় উপনীত হয়ে সাফা পাহাড় ঘিরে ফেললো, ইত্যবসরে আবু সুফিয়ান এলেন এবং বলিলেন, ইয়া রাঃসাঃ ! কুরাইশদেরকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে আর কোন কুরাইশের অস্তিত্ব থাকবেনা। এরপর রাঃসাঃ  বলিলেন, যে ব্যক্তি আবু সুফিয়ানের বাড়িতে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ। যে অস্ত্র ফেলে দিবে সেও নিরাপদ এবং যে স্বীয় গৃহের দরজা বন্ধ করে রাখবে সেও নিরাপদ। তখন আনসারগণ বলাবলি করছিল যে, এ লোকটিকে [রাঃসাঃ কে] স্বীয় গোত্রের ভালবাসা এবং স্বদেশের অনুরাগে পেয়ে বসেছে। এমতাবস্হ্যয় রাঃসাঃ  এর উপর অহী নাযিল হল। এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমরাই কি বলেছিলে যে, `এ লোকটিকে [হযরত মুহাম্মাদ রাঃসাঃকে] স্বীয় গোত্রের ভালবাসা এবং স্বদেশের অনুরাগে পেছো বসেছে`। সাবধান! তোমরা কি জানা আমার নাম কি-! কথাটি তিনি তিনবার বলিয়াছেন। আমি হলাম মুহাম্মাদ, আল্লাহর বান্দা এবং তাহাঁর রাসুল। আমি আল্লাহর নির্দেশেই তোমাদের কাছে হিজরত করেছি। আমার জীবন ও মরণ তোমাদের জীবনও মরণের সাথে সস্পৃক্ত। তখন তাঁরা বললো, আল্লাহর শপথ! আমরা একথা বলেছিলাম আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি দুর্বলতার কারণে। [যেন তিনি আমাদেরকে ছেড়ে না যান]। নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল তোমাদের সত্য বলিয়াছেন করেছেন এবং তোমাদের ওযর কবুল করেছেন। [11]

আবু হুমাইদ রাদি. আনহু হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ [রাঃসাঃ এর সঙ্গে তাবুক যুদ্ধের উদ্দেশ্যে বের হলাম। আমরা `ওয়াদিল কুরা` এলাকায় এক মহিলার একটি বাগানের কাছে পৌছলে রাঃসাঃ  বলিলেন, তোমরা এর পরিমাণ অনুমান কর। আমরা এর পরিমাণ অনুমান করলাম। আর রাঃসাঃ  দশ ওয়াসুক [প্রায় পঞ্চাশ মণ] পরিমাণ অনুমান করিলেন এবং [স্ত্রীলোকটিকে] বলিলেন, আমরা ইনশা আল্লাহ তোমার এখানে ফিরে আসা পর্যন্ত এ পরিমাণ ধরে রাখ। পরে আমরা এগিয়ে চললাম এবং তাবুক পৌছে গেলাম। তখন রাঃসাঃ  বলিলেন আজ রাতে প্রচণ্ড বায়ু প্রবাহ তোমাদের উপর দিয়ে বয়ে যাবে। তাই তোমাদের কেউ যেন তার মাঝে দাড়িয়ে না থাকে এবং যার উট আছে, সে যেন তার দড়ি শক্ত করে বেঁধে রাখে। সে রাতে প্রচণ্ড বাতাস প্রবাহিত হল। এক ব্যক্তি দাঁড়ালে বাতাস তাকে উঠিয়ে নিল। অবশেষে `তাই` নামক পাহাড়ে ফেলে দিল। আর [ঐ সময় নিকটবর্তী] “আয়লার” এলাকা প্রধান [শাসক] ইবনুল আলমার দূত রাঃসাঃ  এর কাছে একটি চিঠি লিখে পাঠালেন এবং তাকে একটি চাদর হাদিয়া পাঠালেন। তারপর আমরা এগিয়ে চলতে চলতে “ওয়াদিল কুরা” পৌছলাম। রাঃসাঃ  স্ত্রীলোকটিকে [বাগানের মালিক] তার বাগান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিলেন যে, তার ফল কি পরিমাণে পৌছেছে? সে বলল, দশ ওয়াসক। তার পর রাঃসাঃ  বলিলেন, আমি দ্রুত যাচ্ছি। তোমাদের মধ্যে যার ইচ্ছা হয়, সে আমার সঙ্গে দ্রুত যেতে পারে। আর যার ইচ্ছা, সে অবস্থান করতে পারে। আমরা বের হয়ে পড়লাম। অবশেষে মদীনার কাছাকাছি পৌছলাম। তখন তিনি বলিলেন, এ [মদীনা] হল তোবা পবিত্র ও উত্তম স্থান। আর এ হল উহুদ। আর তা এমন পাহাড়, যে আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। তারপর বলিলেন, আনসারীদের শ্রেষ্ঠ পরিবার বনূ-নাজ্জার, তারপর বনূ আব্দুল আশহাল, তারপর বনূ হারিস ইবনু খাযরাজ, তারপর বনূ সাঈদা পরিবার। আর আনসারদের প্রতিটি গোত্রই উত্তম। সাদ ইবনু উবাদা রাদি. আনহু আমাদের সাথে এসে মিলিত হলে [তাঁবু গোত্রের] আবু উসায়দ রাদি. আনহু তাকে বলিলেন, আপনি কি দেখেন নি যে, রাঃসাঃ  আনসার গোত্রগুলির মাঝে ক্রমানূসারে শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করেছেন এবং আমাদের গোত্রকে তালিকার শেষে রেখেছেন। তখন সা`দ রাদি. আনহু রাঃসাঃ কে খুঁজে পেলেন এবং বলিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আনসার গোত্রগুলির শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করেছেন এবং আমাদের শেষে রেখেছেন! তখন তিনি বলিলেন, শ্রেষ্ঠ তালিকাতে অন্যতম হওয়াও কি তোমাদের জন্য যথেষ্ট নয়? [12]

আমির ইবনু শারাহীল শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিত, তিনি যাহহাক ইবনু কায়সের বোন ফাতিমা বিনত কায়স রাদি. আনহাকে জিজ্ঞেস করিলেন -যে সমন্ত মহিলাগণ প্রথমে হিজরত করেছিলেন, তিনি তাদের অন্যতম-। তিনি বলেন, আপনি, রাঃসাঃ  থেকে যে হাদীস শুনেছেন, অন্যের দিকে সম্বোধন করা ব্যতীরেকে, এমন একটি হাদীস আপনি আমার নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বলিলেন, আচ্ছা, তুমি যদি শুনতে চাও, তবে অবশ্যই আমি বর্ণনা করবো। সে বলল, হ্যাঁ আপনি বর্ণনা করুন। তিনি বলিলেন, আমি ইবনু মুগীরা রাদি. আনহুকে বিবাহ করেছি। তখন তিনি কুরাইশী যুবকদের উত্তম ব্যক্তি ছিলেন। রাঃসাঃ  এর সাথে প্রথম যুদ্ধে শরীক হয়েই তিনি শহীদ হয়ে যান। আমি বিধবা হয়ে যাবার পর আবদুল রহমান ইবনু আউফ রাদি. আনহু আমার নিকট বিবাহের পয়গাম পাঠান। পয়গাম পাঠান রাঃসাঃ  এর আরো কতিপয় সাহাবী। রাঃসাঃ  নিজেও তাহাঁর আযাদকৃত গোলাম উসামা ইবনু যায়িদ রাদি. আনহুর জন্য পয়গাম পাঠান। রাঃসাঃ  এর এ হাদীসটি আমি পূর্বেই শুনেছিলাম যে, তিনি বলিয়াছেন, যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে সে যেন উসামাকেও ভালবাসে। ফাতিমা রাদি. আনহা বলেন, রাঃসাঃ  এ বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা করার পর আমি তাকে বলেছি, আমার বিষয়টি আপনার ইখতিয়ারে ছেড়ে দিলাম। আপনি যার সাথে ইচ্ছা আমাকে বিয়ে দিয়ে দিন। অতঃপর তিনি বলিলেন, তুমি উম্মে শারীকের নিকট চলে যাও। উম্মে শারীক একজন আনসারী বিত্তশালী মহিলা। আল্লাহর পথে সে অধিক ব্যয় করে এবং তার নিকট অধিক অতিথি আসে। একথা শুনে আমি বলিলাম, আমি তাই করব। তখন তিনি বলিলেন, তুমি উম্মে শারীকের নিকট যেয়ো না। কেনানা উম্মে শারীক অধিক আপ্যায়নকারী মহিলা এবং আমি এটাও পছন্দ করিনা যে, তোমার ওড়না পড়ে যাক বা তোমার পায়ের গোছা হতে কাপড় খসে যাক আর লোকেরা তোমার শরীরের এমন স্থান দেখে নিক যা তুমি কখনো পসন্দ করনা। তবে তুমি তোমার চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহ ইবনু মাকতুম রাদি. আনহুর নিকট চলে যাও। তিনি বনী ফিহরের এক ব্যক্তি। ফিহর কুরাইশেরই একটি শাখা গোত্র। ফাতিমা যে খান্দানের লোক তিনিও সে খান্দানেরই মানুষ। আমি তার নিকট চলে গেলাম। অতঃপর আমার ইদ্দত সমাপ্ত হলে আমি জনৈক আহ্বানকারীর আওয়াজ শুনতে পেলাম। বস্তুতঃ তিনি রাঃসাঃ  কর্তৃক নির্ধারিত আহ্বানকারী ছিলেন। তিনি এ মর্মে আহবান করছিলেন যে সালাতের উদ্দেশ্যে তোমরা একত্রিত হয়ে যাও। অতঃপর আমি মসজিদের দিকে রওয়ানা হলাম এবং রাঃসাঃ  এর সাথে নামায আদায় করলাম। তিনি বলেন, কাওমের পেছনে যে কাতারে মহিলাগণ ছিলেন আমি সে কাতারেই ছিলাম। রাঃসাঃ  সালাতের শেষে হাসিমুখে মিম্বরে বসে গেলেন। অতপর বলিলেন, প্রত্যেকেই আপন আপন স্থানে বসে যাও। অতঃপর তিনি বলিলেন, তোমরা কি জান, আমি কি জন্য তোমাদেরকে একত্রিত করেছি? সাহাবায়ে কেরাম বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বলিলেন, আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে কোন আশা বা ভীতি প্রদর্শনের জন্য একত্রিত করিনি। তবে আমি তোমাদেরকে কেবল এ জন্য একত্রিত করেছি যে, তামীমদারী রাদি. আনহু প্রথমে খ্রীষ্টান ছিল। সে আমার নিকট এসে বায়আত গ্রহণ করেছে এবং ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। সে আমার কাছে এমন একটি কাহিনী বর্ণনা করেছে যদ্বারা আমার সেই বর্ণনার সত্যায়ন হয়ে যায়, যা আমি দাজ্জাল সম্পর্কে তোমাদের শ্রুতিগোচর করেছিলাম। সে আমাকে বলেছে যে, একবার সে লখম ও জুযাম গোত্রের ত্রিশজন লোকসহ একটি সামুদ্রিক নৌকায় আরোহণ করেছিল। সামুদ্রিক তুফান এক মাস পর্যন্ত তাদেরকে নিয়ে খেলা করতে থাকো অতঃপর সূর্যাস্তের সময় তারা সমুদ্রের এক দ্বীপে আশ্রয় গ্রহণ করে। এরপর তারা ছোট ছোট নৌকায় বসে ঐ দ্বীপে প্রবেশ করে। দ্বীপে নামতেই জন্তুর মত একটি জিনিস তাদের দৃষ্টিগোচর হল। তার সমগ্র দেহ লোমে আবৃত ছিল। লোমের কারণে তার আগা-পাছা চিনা যাচ্ছিল না। লোকেরা তাকে বলল, হতভাগা, তুই কে? সে বলল, আমি দাজ্জালের গুপ্তচর। লোকেরা বলল- গুপ্তচর আবার কি? সে বলল! লোক সকল! ঐযে গীর্জা দেখা যায় সেখানে চল। সেখানে এক ব্যক্তি অধীর আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষা করয়ে তামীমদারী রাদি. আনহু বলেন, তার মুখে এক ব্যক্তির কথা শুনে আমরা ভীত ছিলাম যে, সে আবার শয়তান তো নয়! আমরা দ্রুত হেটে গীর্জায় প্রবেশ করতঃ এক বিশালদেহী ব্যক্তিকে দেখতে পেলাম। ইতোপূর্বে এমন আমরা আর কখনো দেখিনি। লোহার শিকলে বাধা অবস্থায় দুই হ্যাইর মধ্য দিয়ে তার উভয় হাত ঘাড়ের সাথে মিলানো। আমরা তাকে বলিলাম, তোর সর্বনাশ হোক, তুই কে? সে বলল, তোমরা আমার সন্ধান কিছু না কিছু পেয়েই গেছ। এখন তোমরা বল, তোমাদের পরিচয় কি? তারা বলল, আমরা আরবের বাসিন্দা। আমরা সমুদ্রে নৌকায় চড়ে ভ্রমণ করছিলাম। আমরা সমূদ্রকে উত্তাল তরঙ্গে উদ্বেলিত অবস্থায় পেয়েছি। এক মাস পর্যন্ত ঝাড়ের কবলে থেকে আমরা তোমার এ দ্বীপে এসে পৌছেছি। অতঃপর ছোট ছোট নৌকায় আরোহণ করে এ দ্বীপে আমরা প্রবেশ করেছি। এখানে আমরা একটি সর্বাঙ্গ লোমে আবৃত জন্তুকে দেখতে পেয়েছি। লোমের আধিক্যের কারণে আমরা তার আগা-পাছা চিহ্নিত করতে পারছিলাম না। আমরা তাকে বলেছি, তোর সর্বনাশ হোক, তুই কে? সে বলেছে, সে নাকি দাজ্জালের গুপ্তচর। আমরা বলিলাম, গুপ্তচর আবার কি! তখন সে বলেছে, ঐ যে গীর্জা দেখা যায়, তোমরা সেখানে চল। সেখানে এক ব্যক্তি অধীর আগ্রহে তোমাদের অপেক্ষায় আছে। তাই আমরা দ্রুত তোর কাছে এসে গেছি। আমরা তার কথায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি; না জানি এ আবার কোন জ্বীন ভূত কিনা? অতঃপর সে বলল, তোমরা আমাকে বাইসানের খেজুর বাগানের খবর বল। আমরা বলিলাম, এর কোনো বিষয়টি সস্পর্কে তুই সংবাদ জানতে চাচ্ছিস? সে বলল, বাইসানের খেজুর বাগানে ফল আসে কি না, এ সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করছি। তাকে আমরা বলিলাম, হ্যাঁ, আছে। সে বলল, সেদিন নিকটেই যেদিন এগুলোতে ফল ধরবে না। অতঃপর সে বলল, আচ্ছা, তিবরিয়া সমুদ্র সম্পর্কে আমাকে অবগত কর।” আমরা বলিলাম, এর কোনো বিষয় সম্পর্কে তুই আমাদের থেকে জানতে চাচ্ছিস! সে বলল, এর মধ্যে পানি আছে কি? তারা বলল,হ্যাঁ, সেখানে বহু পানি আছে। অতঃপর সে বলল, সেদিন বেশী দূরে নয়, যখন এ সাগরে পানি থাকবে না। সে আবার বলল, যুগার এর ঝর্ণা সম্পর্কে তোমরা আমাকে অবহিত কর। তারা বলল, তুই এর কি সম্পর্কে আমাদেরকে জিজ্ঞেস করতে চাচ্ছিস। সে বলল, এর ঝর্ণাতে পানি আছে কি? এবং এ জনপদের লোকেরা তাদের ক্ষেত্রে এ ঝর্ণার পানি দেয় কি! আমরা বলিলাম হ্যাঁ, এতে বহু পানি আছে এবং এ জনপদের লোকেরা এপানি দ্বারাই তাদের ক্ষেত সিক্ত করে। সে পুনরায় বলল, তোমরা আমাকে উম্মীদের নাবী রাঃসাঃ সম্পর্কে সংবাদ দাও। সে এখন কি করছেই তারা বলল, তিনি মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় চলে এসেছেন। সে জিজ্ঞেস করল, আরবের লোকেরা তার সাথে যুদ্ধ করছে কি! আমরা বলিলাম, হ্যাঁ, করেছে। সে বলল, সে তাদের সাথে কিরূপ আচরণ করেছে। আমরা তাকে সংবাদ দিলাম যে, তিনি আরবের পার্শবর্তী এলাকায় জয়ী হয়েছেন এবং তারা তার বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। সে বলল, এ কি হয়েই গেছে ? আমরা বলিলাম, হ্যাঁ। সে বলল, বশ্যতা স্বীকার করে নেওয়াই জনগণের জন্য মঙ্গলজনক ছিল। এখন আমি নিজের সম্পর্কে তোমাদেরকে বলছি, আমিই মাসীহ দাজ্জাল। অতি সত্ত্বরই আমি এখান থেকে বাইরে যাবার অনুমতি পেয়ে যাব। বাইরে যেয়ে আমি সমগ্র পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবো। চল্লিশ দিনের ভেতর এমন কোনো জনপদ থাকবে না, যেখানে আমি প্রবেশ না করব। তবে মক্কা ও তায়্যিবা এ দু-টি স্থানে আমার প্রবেশ নিষিদ্ধ। যখন আমি এ দুটির কোনো একটিতে প্রবেশের ইচ্ছা করব, তখন এক ফিরিশতা উন্মুক্ত তরবারি হস্তে সামনে এসে আমাকে বাধা দিবে। এ দুটি স্থানের সকল রাস্তায় ফিরিশতাদের পাহারা থাকবে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রাঃসাঃ  তার ছড়ি দ্বারা মিম্বরে আঘাত করে বলিলেন, এই হচ্ছে তায়্যিবা, এই হচ্ছে তায়্যিবা, এই হচ্ছে তায়্যিবা। অর্থাৎ তায়্যিবা অর্থ এই মদীনায় সাবধান! আমি কি এ কথাটি ইতোপূর্বে তোমাদেরকে বলিনি? তখন লোকেরা বলল, হ্যাঁ, আপনি বলিয়াছেন। রাঃসাঃ  বলিলেন, তামীমদারীর কথাটি আমার খুবই পছন্দ হয়েছে! যেহেতু তা সামঞ্জস্যপূর্ণ আমার ঐ বর্ণনার- যা আমি তোমাদেরকে দাজ্জাল, মাদীনা ও মক্কা সস্পর্কে ইতোপূর্বে বলেছি। তিনি আরো বলিলেন, সিরিয়া সাগরে অথবা ইয়ামান সাগরে বরং পূর্বদিকে রয়েছে, পূর্নদিকে রয়েছে, পূর্বদিকে রয়েছে। এসময় তিনি স্বীয় হাত দ্বারা পূর্ব দিকে ইশারাও করিলেন। বর্ণনাকারী ফাতিমা বিনত কায়স রাদি. আনহা বলেন, এ হাদীস আমি রাঃসাঃ  থেকে মুখস্থ করেছি। [13]

আনাস রাদি. আনহু হইতে বর্ণিত যে, রাঃসাঃ  এর কাছে যখন আবু সুফিয়ানের [মদীনায়] আগ্রাভিযানের সংবাদ পৌছল। তখন তিনি সাহাবীদের সাথে এ নিয়ে পরামর্শ করিলেন। আবু বকর রাদি. আনহু এ ব্যাপারে কথা বলিলেন, কিন্তু তাহাঁর কথার উত্তর দিলেন না। এরপর উমর রাদি. আনহু কথা বলিলেন। তিনি তার কথারও কোনো উত্তর দিলেন না। পরিশেষে সা`দ ইবনু উবাদা রাদি. আনহু দন্ডায়মান হলেন। এরপর বলিলেন, ইয়া রাঃসাঃ ! আপনি কি আমাদের জবাব প্রত্যাশা করেন? সে আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জীবন, যদি আপনি আমাদেরকে আমাদের ঘোড়া নিয়ে সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে বলেন, তবে নিশ্চয়ই আমরা যেখানে ঝাপ দিব। আর যদি আপনি আমাদেরকে নির্দেশ দেন, সাওয়ারী হাঁকিয়ে `বারকুল গামাদ` পর্যন্ত পৌঁছার জন্য তবে আমরা তাই করবো। এরপর রাঃসাঃ  মুসলিমদেরকে আহ্বান করিলেন। তখন সকলে রওয়ানা হলেন এবং বদর নামক স্থানে সম্মিলীত হলেন। আর সাহাবীগণের সামনে সেখান কুরাইশের উটের পানিপানকারী সাকীগণও উপনীত হল। তাদের মধ্যে বনী হাজ্জাজের একজন কৃষ্ণকায় দাস ছিল। সাহাবীগণ তাকে পাকড়াও করিলেন। তারপর তাকে আবু সুফিয়ান এবং তার সাথীদের সম্পর্কে তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করিলেন, তখন সে বলতে লাগলো, আবু সুফিয়ান সম্পর্কে আমার কোনো কিছু জানা নেই। তবে আবু জাহল, উতবা, শায়বা এবং উমাইয়া ইবনু খালফ তো-উপাস্থিত আছে। যখন সে এরূপ বললো তখন তাঁরা তাকে প্রহার করতে লাগলেন। এমতাবস্থায় সে বলল, হ্যাঁ, আমি আবু সুফিয়ান সম্পর্কে খবর দিচ্ছি। তখন তাঁরা তাকে ছেড়ে দিলেন। এরপর যখন তারা পুনরায় আবু সুফিয়ান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করিলেন, তখন সে বলল, আবু সুফিয়ান জনগণের মাঝে উপস্তিত আছেন। যখন সে পুনরায় এ একই কথা বলল, তখন তাঁরা আবার তাকে প্রহার করতে লাগলেন। সে সময় রাঃসাঃ  সালাতে দন্ডায়মান ছিলেন। অতএব, যখন তিনি এ অবস্থা দেখলেন, তখন নামায সমাপ্ত করার পর বলিলেন, সে আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জান, যখন সে তোমাদের কাছে সত্য কথা বলে তখন তোমরা তাকে ছেড়ে দাও। এরপর রাঃসাঃ  ভূমির উপর স্বীয় হাত রেখে বলিলেন, এ স্থান অমুক বিধর্মীর ধরাশায়ী হওয়ার স্থান বা মৃত্যুস্হল। বর্ণনাকারী বলেন, রাঃসাঃ  যে স্থানে যে বিধর্মীর নাম নিয়ে হাত রেখেছিলেন, সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে, এর বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম হয়নি।[14]

জনৈক আনসার সাহাবী হইতে বর্ণিত, তিনি বলেন: একবার আমরা রাঃসাঃ এর সঙ্গে এক ব্যক্তির জানাযায় শরীক ছিলাম। এ সময় আমি দেখতে পাই যে, রাঃসাঃ কবরের কাছে দাঁড়িয়ে যারা কবর খুঁড়ছিল তাদের বলেন, পায়ের দিকে প্রশস্ত কর, মাথার দিকে চওড়া কর। এরপর তিনি সেখান থেকে ফিরতে উদ্যত হলে জনৈক মহিলার আহ্বনকারী নাবী রাঃসাঃকে ডাকার জন্য সেখানে উপস্থিত হয়। তিনি সেখানে গেলে তাহাঁর জন্য খাদ্য উপস্থিত করা হয়। নাবী রাঃসাঃ খেতে শুরু করলে অন্যরাও খাওয়া শুরু করেন। তখন আমাদের মুরব্বীরা লক্ষ্য করেন যে, রাঃসাঃ এক লোকমা মুখে দিয়ে কেবল তা চিবাচ্ছেন, কিন্তু তা গিলছেন না। এ সময় তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে, এ গোশত এমন এক বকরীর, যা তার মালিকের বিনা অনুমতিতে নেওয়া হয়েছে। তখন সে মহিলা বলল, ইয়া রাঃসাঃ! আমি জনৈক ব্যক্তিকে বকরী খরিদ করার জন্য `বাকী` নামক বাজারে পাঠিয়েছিলাম, সেখানে বকরী পাওয়া যায় নি। এরপর আমি আমার প্রতিবেশী, যিনি একটি বকরী খরিদ করেন, তাকে বলি যে, তিনি যেন তার বকরীটি ক্রয়মূল্যে আমাকে প্রদান করেন। কিন্তু তাকেও বাড়ীতে পাওয়া যায় নি। তখন আমি তার স্ত্রীর নিকট লোক পাঠাই, যিনি আমাকে বকরীটি দিয়েছেন। তখন রাঃসাঃ বলেন, এ গোশত বন্দীদের খাইয়ে দাও। [15]

সাহল ইবনু হানযলিয়্যাহ রাদি. আনহু বর্ণনা করেন, তাঁরা হুনায়নের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর সঙ্গে সফরে ছিলেন। তখন দ্রুতগতিতে উট চালিয়ে সন্ধ্যাকালে মাগরিবের সালাতের সময় রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর নিকট গিয়ে পৌঁছলেন। এমন সময় একজন অশ্বারোহী সৈনিক এসে তাঁকে বলিলেন, হে আল্লাহর রাঃসাঃ! আমি আপনাদের নিকট হতে আলাদা হয়ে ঐ সব পাহাড়ের উপর আরোহণ করে দেখতে পেলাম যে, হাওয়াযিন গোত্রের স্ত্রী-পুরুষ সকলেই তাদের উট, বকরি সবকিছু নিয়ে হুনায়নে একত্রিত হয়েছে। তা শুনে রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ মুচকি হাসি দিয়ে বলিলেন, ঐ সকল বস্তু ইনশাআল্লাহ আগামীকাল মুসলিমদের গনীমতের সামগ্রীতে পরিণত হবে। এরপর তিনি বলিলেন, আজ রাতে আমাদেরকে কে পাহাড়া দিবে? আনাস ইবনু আবূ মারসাদ আল্-গানাবী রাদি. আনহু উত্তর করিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ! আমি পাহাড়া দেবো। তিনি বলিলেন, তাহলে তুমি ঘোড়ায় আরোহণ কর। তিনি তাহাঁর একটি ঘোড়ায় আরোহণ করে রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ এর নিকট উপস্থিত হন। রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ তাঁকে উদ্দেশ্য করে নির্দেশ দিলেন, যাও, এ দু`পাহাড়ের মধ্যবর্তী উপত্যকার দিকে রওয়ানা হয়ে এর চূড়ায় পৌঁছে পাহারায় রত থাকো। আমরা যেন তোমার আসার আগে আজ রাতে কোনো ধোঁকায় না পড়ি। ভোরবেলায় রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ তার সালাতের স্থানে গিয়ে ফজরের দু`রাক`আত [ সুন্নাত] নামায আদায় করিলেন। তারপর জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমরা তোমাদের পাহাড়াদার অশ্বারোহী সৈনিকের কোনো সন্ধান পেয়েছ কী? সকলে উত্তর করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! তিনি পাহাড়ায় রত আছেন বলে মনে হয় কিন্তু দেখতে পাইনি। এরপর ফজর সালাতের ইকামত দেওয়া হলে, রাসূলুল্লাহ্ রাঃসাঃ নামায পড়াতে আরম্ভ করিলেন। এমতাবস্থায় তিনি উপত্যকার দিকে লক্ষ্য রাখতে রাখতে নামায শেষ করে সালাম ফিরালেন। এরপর তিনি বলিলেন, তোমরা সকলে সুসংবাদ নাও যে, তোমাদের পাহাড়াদার সৈনিক এসে পড়েছে। আমরা উপত্যকায় গাছের ফাঁকে দেখতে পেলাম যে, তিনি সত্যই এসে পড়েছেন। এমনকি তিনি রাসূলূল্লাহ রাঃসাঃ এর সামনে দাঁড়িয়ে সালাম করিলেন এবং বলিলেন, রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ আমাকে যেভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন সেভাবে আমি এই উপত্যকার উপরাংশের শেষ মাথায় গিয়ে পৌঁছেছিলাম। সকাল হওয়ার পর আমি উভয় পাহাড়ের উপত্যকা দু`টির উপরে উঠে তাকালাম, কোনো শত্রুকেই দেখতে পেলাম না। তা শুনে রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ তাঁকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তুমি সারারাত কখনও কি ঘোড়ার পিঠ হতে নেমেছিলে? তিনি উত্তর করিলেন, না, নামায পড়ার জন্য অথবা পায়খানা-প্রসাবের প্রয়োজন ছাড়া কখনও ঘোড়ার পিঠ হতে নামিনি। তা শুনে রাসূলূল্লাহ্ রাঃসাঃ তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলিলেন, তোমার জন্য জান্নাত অবধারিত হল। তোমার জীবনে আর কোনো অতিরিক্ত নেককাজ না করলেও চলবে। [অর্থাৎ সারারাত জাগ্রত থেকে পাহারায় রত থাকার মত বৃহৎ নেক কাজটি তোমার জান্নাতে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট। অবশ্য ফরয-ওয়াজিব যথারীতি পালনের পর]। [16]

জারীর রাদি. আনহু বলেন, আমি যখন মদীনার নিকটবর্তী হলাম তখন আমার উটকে বেঁধে [চুল, মোছ ও অন্যান্য পশম পরিস্কার করে] হালাল হলাম এবং বস্ত্র পরিধান করলাম। অতঃপর আমি মসজিদে প্রবেশ করলাম, দেখি রাঃসাঃ খুতবা দিচ্ছেন। লোকজন আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। আমি আমার পাশে বসা লোককে জিজ্ঞেস করলাম, হে আব্দুল্লাহ রাঃসাঃ কি আমার কথা উল্লেখ করেছেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, উত্তমভাবেই উল্লেখ করেছেন। তিনি যখন খুতবা দিচ্ছিলেন হঠাৎ তিনি বলিলেন, এ দরজা দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ইয়ামেনের উত্তম ব্যক্তি প্রবেশ করবে। তাহাঁর চেহারায় থাকবে রাজা বাদশার চিহ্ন। জারীর রাদি. আনহু বলেন, আল্লাহ আমাকে যে পরীক্ষা করেছেন সে জন্য আমি তাহাঁর প্রশংসা করি। [17]


[1] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ১২৪৫।

[2] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ১৩২৭-১৩২৮।

[3] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৩৮৭৭।

[4] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৩৮৭৮।

[5] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৩৮৭৯।

[6] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ১২৪৬।

[7] মুসনাদে আহমদ, হাদিস নম্বর ১৭৫০। হাদীসটি সহীহ্ম এর সনদের রিজাল সবাই সিকাহ।

[8] সহিহ বুখারি, হাদিস নম্বর ৩০০৭, সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২৪৯৪।

[9] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৭৮০।

[10] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৭৮০।

[11] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৭৮০।

[12] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৩৯২।

[13] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ২৯৪২।

[14] সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৭৭৯।

[15] আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ৩৩৩২। আলবানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, হাদীসটি সহিহ।

[16] আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ২৫০১। আলবানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, হাদীসটি সহিহ।

[17] মুসনাদে আহমদ, হাদিস নম্বর ১৯১৮০। হাদীসটি সহিহ।

Leave a Reply