ইফতারের দোয়া । সাওম, নতুন চাঁদ ও খাওয়ার দুয়া
ইফতারের দোয়া । সাওম, নতুন চাঁদ ও খাওয়ার দুয়া << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
ইফতারের দোয়া
- নতুন চাঁদ দেখে পড়ার দো‘আ
- ইফতারের সময় সাওম পালনকারীর দো‘আ
- খাওয়ার পূর্বে দো‘আ
- আহার শেষ করার পর দো‘আ
- আহারের আয়োজনকারীর জন্য মেহমানের দো‘আ
- দো‘আর মাধ্যমে খাবার বা পানীয় চাওয়ার ইঙ্গিত করা
- কোনো পরিবারের কাছে ইফতার করলে তাদের জন্য দো‘আ
- সাওম পালনকারীর নিকট যদি খাবার উপস্থিত হয়, আর সে সাওম না ভাঙ্গে তখন তার দো‘আ করা
- সাওম পালনকারীকে কেউ গালি দিলে যা বলবে
৬৭. নতুন চাঁদ দেখে পড়ার দো‘আ
اللَّهُ أَكْبَرُ، اللَّهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْأَمْنِ وَالْإِيمَانِ، وَالسَّلاَمَةِ وَالْإِسْلاَمِ، وَالتَّوْفِيقِ لِمَا تُحِبُّ رَبَّنَا وَتَرْضَى، رَبُّنَا وَرَبُّكَ اللَّهُ
(আল্লা-হু আকবার, আল্লা-হুম্মা আহিল্লাহু ‘আলাইনা বিলআমনি ওয়ালঈমানি ওয়াস্সালা-মাতি ওয়াল-ইসলা-মি, ওয়াত্তাওফীকি লিমা তুহিব্বু রব্বানা ওয়া তারদ্বা, রব্বুনা ওয়া রব্বুকাল্লাহ)
১৭৫- “আল্লাহ সবচেয়ে বড়। হে আল্লাহ! এই নতুন চাঁদকে আমাদের উপর উদিত করুন নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে; আর হে আমাদের রব্ব! যা আপনি পছন্দ করেন এবং যাতে আপনি সন্তুষ্ট হন তার প্রতি তাওফীক লাভের সাথে। আল্লাহ আমাদের রব্ব এবং তোমার (চাঁদের) রব্ব।”
তিরমিযী ৫/৫০৪, নং ৩৪৫১; আদ-দারিমী, শব্দ তাঁরই, ১/৩৩৬। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৫৭।
৬৮. ইফতারের সময় সাওম পালনকারীর দো‘আ
ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ العُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ
(যাহাবায-যামাউ ওয়াবতাল্লাতিল ‘উরূকু ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশা-আল্লা-হু)।
১৭৬-(১) “পিপাসা মিটেছে, শিরাগুলো সিক্ত হয়েছে এবং আল্লাহ চান তো সাওয়াব সাব্যস্ত হয়েছে।”
হাদীসটি সংকলন করেছেন আবূ দাউদ ২/৩০৬, নং ২৩৫৯ ও অন্যান্য। আরও দেখুন, সহীহুল জামে‘ ৪/২০৯।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ أَنْ تَغْفِرَ لِي
(আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিরহ্মাতিকাল্লাতী ওয়াসি‘আত কুল্লা শাই’ইন আন তাগফিরা লী)।
১৭৭-(২) “হে আল্লাহ! আপনার যে রহমত সকল কিছু পরিব্যাপ্ত করে রেখেছে তার উসীলায় আবেদন করি, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।”
হাদীসটি সংকলন করেছেন, ইবন মাজাহ ১/৫৫৭, নং ১৭৫৩; যা মূলত আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমার দো‘আ। আর হাফেয ইবন হাজার তাঁর তাখরীজুল আযকারে এটার সনদকে হাসান বলেছেন। শরহুল আযকার, ৪/৩৪২।
৬৯. খাওয়ার পূর্বে দো‘আ
১৭৮-(১) “যখন তোমাদের কেউ আহার শুরু করে তখন সে যেন বলে,
بِسْمِ اللَّهِ
(বিসমিল্লাহ)
“আল্লাহর নামে।” আর শুরুতে বলতে ভুলে গেলে যেন বলে,
بسمِ اللَّهِ فِي أَوَّلِهِ وَآخِرِهِ
(বিস্মিল্লাহি ফী আওওয়ালিহী ওয়া আখিরিহী)।
“এর শুরু ও শেষ আল্লাহর নামে।”
হাদীসটি সংকলন করেছেন আবূ দাঊদ ৩/৩৪৭, নং ৩৭৬৭; তিরমিযী, ৪/২৮৮, নং ১৮৫৮। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ২/১৬৭।
১৭৯-(২) “যাকে আল্লাহ কোনো খাবার খাওয়ায় সে যেন বলে,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَأَطْعِمْنَا خَيْراً مِنْهُ
(আল্লা-হুম্মা বারিক লানা ফীহি ওয়া আত‘ইমনা খাইরাম-মিনহু)।
“হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে এই খাদ্যে বরকত দিন এবং এর চেয়েও উত্তম খাদ্য আহার করান।”
আর আল্লাহ কাউকেদুধ পান করালে সে যেন বলে:
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَزِدْنَا مِنْهُ
(আল্লা-হুম্মা বারিক লানা ফীহি ওয়াযিদনা মিনহু)।
“হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে এই খাদ্যে বরকত দিন এবং আমাদেরকে তা থেকে আরও বেশি দিন।”
তিরমিযী ৫/৫০৬, নং ৩৪৫৫। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী, ৩/১৫৮।
৭০. আহার শেষ করার পর দো‘আ
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي هَذَا، وَرَزَقَنِيهِ، مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلاَ قُوَّةٍ
(আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত‘আমানী হা-যা ওয়া রাযাকানীহি মিন গাইরি হাউলিম মিন্নী ওয়ালা কুওয়াতিন)।
১৮০-(১) “সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে এ আহার করালেন এবং এ রিযিক দিলেন যাতে ছিল না আমার পক্ষ থেকে কোনো উপায়, ছিল না কোনো শক্তি-সামর্থ্য।”
হাদীসটি নাসাঈ ব্যতীত সকল সুনান গ্রন্থকারগণ সংকলন করেছেন। আবূ দাউদ, নং ৪০২৫; তিরমিযী, নং ৩৪৫৮; ইবন মাজাহ, নং ৩২৮৫। আরও দেখুন, সহীহুত তিরমিযী ৩/১৫৯।
الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْداً كَثِيراً طَيِّباً مُبَارَكاً فِيهِ، غَيْرَ [مَكْفِيٍّ وَلاَ ] مُوَدَّعٍ، وَلاَ مُسْتَغْنَىً عَنْهُ رَبَّنَا
(আলহামদু লিল্লা-হি হামদান কাসীরান তায়্যিবান মুবা-রাকান ফীহি, গাইরা মাকফিয়্যিন ওয়ালা মুয়াদ্দা‘ইন, ওয়ালা মুসতাগনান ‘আনহু রব্বানা)।
১৮১-(২) “আল্লাহর জন্যই সকল প্রশংসা; এমন প্রশংসা যা অঢেল, পবিত্র ও যাতে রয়েছে বরকত; [যা যথেষ্ট করা হয় নি], যা বিদায় দিতে পারব না, আর যা থেকে বিমুখ হতে পারব না, হে আমাদের রব্ব!”
বুখারী ৬/২১৪, হাদীস নং ৫৪৫৮; তিরমিযী, আর শব্দটি তাঁরই, ৫/৫০৭, নং ৩৪৫৬।
৭১. আহারের আয়োজনকারীর জন্য মেহমানের দো‘আ
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِيمَا رَزَقْتَهُم، وَاغْفِرْ لَهُمْ وَارْحَمْهُمْ
(আল্লা-হুম্মা বা-রিক লাহুম ফীমা রাযাক্তাহুম ওয়াগফির লাহুম ওয়ারহামহুম)।
১৮২- “হে আল্লাহ! আপনি তাদেরকে যে রিযিক দান করেছেন তাতে তাদের জন্য বরকত দিন এবং তাদের গুনাহ মাফ করুন, আর তাদের প্রতি দয়া করুন।”
মুসলিম ৩/১৬১৫, নং ২০৪২।
৭২. দো‘আর মাধ্যমে খাবার বা পানীয় চাওয়ার ইঙ্গিত করা
اللَّهُمَّ أَطْعِمْ مَنْ أَطْعَمَنِي، وَاسْقِ مَنْ سَقَانِي
(আল্লা-হুম্মা আত্ব‘ইম মান আত্ব‘আমানী ওয়াসক্বি মান সাক্বা-নী)।
১৮৩- “হে আল্লাহ! যে আমাকে আহার করাবে আপনি তাদেরকে আহার করান এবং যে আমাকে পান করাবে আপনি তাদেরকে পান করান।”
মুসলিম ৩/১৬২৬, নং ২০৫৫।
৭৩. কোনো পরিবারের কাছে ইফতার করলে তাদের জন্য দো‘আ
أَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُونَ، وَأَكَلَ طَعَامَكُمُ الْأَبْرَارُ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ الْمَلاَئِكَةُ
(আফত্বারা ইন্দাকুমুস সা-ইমূন, ওয়া আকালা ত্বা‘আ-মাকুমুল আবরা-রু, ওয়াসাল্লাত আলাইকুমুল মালা-ইকাহ)
১৮৪- “আপনাদের কাছে সাওম পালনকারীরা ইফতার করুন, আপনাদের খাবার যেন সৎলোকেরা খায়, আর আপনাদের জন্য ফিরিশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করুন।”
সুনান আবি দাউদ ৩/৩৬৭, নং ৩৮৫৬; ইবন মাজাহ ১/৫৫৬, নং ১৭৪৭; নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, নং ২৯৬-২৯৮। আর সেখানে স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার পরিবারের কাছে ইফতার করতেন তখন তা বলতেন। আর শাইখ আলবানী তাঁর সহীহ আবি দাউদে একে সহীহ বলেছেন, ২/৭৩০।
৭৪. সাওম পালনকারীর নিকট যদি খাবার উপস্থিত হয়, আর সে সাওম না ভাঙ্গে তখন তার দো‘আ করা
১৮৫- “যদি কাউকে খাবারের দাওয়াত দেওয়া হয় সে যেন তাতে সাড়া দেয়; তারপর যদি সে সাওম পালনকারী হয়, তবে যেন সে তার (খাবার ওয়ালার) জন্য দো‘আ করে, আর যদি সাওম ভঙ্গকারী হয়, তবে যেন সে খায়।”
মুসলিম, ২/১০৫৪, নং ১১৫০।
৭৫. সাওম পালনকারীকে কেউ গালি দিলে যা বলবে
إِنِّي صَائِمٌ، إِنِّي صَائِمٌ
(ইন্নি সা‘ইমুন, ইন্নি সা’ইমুন)
১৮৬- “নিশ্চয় আমি সাওম পালনকারী, নিশ্চয় আমি সাওম পালনকারী।”
বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৪/১০৩, নং ১৮৯৪; মুসলিম, ২/৮০৬, নং ১১৫১।