আরব ভুমি বিজয়, জিয্‌য়া, খাজনা, জমি আবাদ, উপঢৌকন, গুপ্তধন

আরব ভুমি বিজয়, জিয্‌য়া, খাজনা, জমি আবাদ, উপঢৌকন, গুপ্তধন

আরব ভুমি বিজয়, জিয্‌য়া, খাজনা, জমি আবাদ, উপঢৌকন, গুপ্তধন >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায়ঃ ২০, অনুচ্ছেদঃ ৩০-৪১=১২টি

অনুচ্ছেদ-৩০ঃ জিয্‌য়া আদায় সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩১ঃ আগুন-পূজারীদের কাছ থেকে জিয্‌য়া আদায়
অনুচ্ছেদ-৩২ঃ জিয্‌য়া আদায়ে কঠোরতা অবলম্বন সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৩ঃ যিম্মীদের ব্যবসায়ের লাভ থেকে এক-দশমাংশ [উশর] আদায় সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ–৩৪ঃ যদি বছরের কোন সময়ে যিম্মী ইসলাম গ্রহন করে তাহলে সে কি জিয্‌য়া দিবে?
অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ শাসক কর্তৃক মুশরিকদের উপঢৌকন গ্রহণ
অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ কাউকে জায়গীর হিসাবে জমি দেয়া
অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ অনাবাদী জমি আবাদ করা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ খাজনা ধার্যকৃত [খারাজী] জমি কেনা
অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ ঈমাম অথবা কোন ব্যক্তি কর্তৃক চারণভূমি সংরক্ষন করা
অনুচ্ছেদ-৪০ঃ গুপ্তধন ও তার বিধান
অনুচ্ছেদ-৪১ঃ কাফিরদের ধনভর্তি পুরাতন ক্ববর খোঁড়া

অনুচ্ছেদ৩০ঃ জিয্‌য়া আদায় সম্পর্কে

৩০৩৭. আনাস ইবনি মালিক ও উসমান ইবনি আবু সুলাইমান [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] খালিদ ইবনিল ওয়ালীদকে দূমাতুল জান্দালের শাসক উকাইদির ইবনি আবদুল মালিকের বিরুদ্ধে অভিযানে পাঠালেন। সাহাবীরা তাহাকে গ্রেফতার করে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট নিয়ে আসেন। তিনি তাহাঁর মৃত্যুদন্ড মওকুফ করিলেন এবং জিয্য়া দেয়ার শর্তে তার সাথে সন্ধিতে আবদ্ধ হলেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩০৩৮. মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে ইয়ামানে প্রেরণের সময় নির্দেশ দেনঃ প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি থেকে এক দীনার করে জিয্‌য়া নিবে কিংবা সমমূল্যের ইয়ামানে উৎপাদিত মুআফিরী কাপড় গ্রহণ করিবে।

সহিহ। এটি যাকাত অধ্যায়ের প্রথম দিকে গত হয়েছে। মাদীনা, খায়বার, তায়িফ, ইয়ামান, আরব ও  মক্কা বিজয় হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩০৩৯. মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মুআয [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর কাছ থেকে এ সানাদেও উপরের হাদিসের অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেছেন।

আমি এটি সহিহ এবং যইফেও পাইনি। হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৩০৪০. যিয়াদ ইবনি হুদাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আলী [রাদি.] বলিয়াছেন, আমি বেঁচে থাকলে খৃস্টান বনূ তাগলিবের যুদ্ধবাজ লোকদের অবশ্যই হত্যা করবো এবং তাহাদের সন্তানদের বন্দী করবো। কারণ আমি তাহাদের ও নাবী [সাঃআঃ] এর মধ্যে এ মর্মে চুক্তিপত্র লিখেছিলাম যেঃ “তারা তাহাদের সন্তানদের খৃস্টান বানাবে না।”

আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদিসটি মুনকার [প্রত্যাখ্যাত]। আমি জানতে পেরেছি, ঈমাম আহমদ ইবনি হাম্বল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হাদিসটি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যাত করেছেন। কারো মতে এটা মাতরূক হাদিসের পর্যায়ে। অধস্তন বর্ণনাকারী আবদুর রহমান ইবনি হানীর কারণে লোকেরা একে মুনকার হাদিস মনে করিতেন। আবু আলী বলেন, আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] যখন সংকলন দ্বিতীয়বার শুনান, তখন তিনি এতে উল্লেখিত হাদিসটি পাঠ করেননি। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩০৪১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নাজরানের খৃস্টানদের সাথে বছরে দুই হাজার জোড়া কাপড় দেয়ার শর্তে সন্ধি করেন। তারা অর্ধেক কাপড় সফর মাসে এবং অবশিষ্ট অর্ধেক রজব মাসে মুসলিমদের নিকট পরিশোধ করিবে এবং তারা তিরিশটি লৌহবর্ম, তিরিশটি ঘোড়া, তিরিশটি উট এবং প্রত্যেক প্রকারের তিরিশটি করে যুদ্ধাস্ত্র তাহাদেরকে জিহাদের জন্য ধার হিসেবে প্রদান করিবে। কেউ যদি ইয়ামানে বিশ্বাসঘাতকা করে কিংবা বিদ্রোহ করে তাহলে তা দমনের জন্য এ অস্ত্র ব্যবহার করা হইবে। যুদ্ধের পর মুসলিমরা এগুলো তাহাদেরকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে। এ ধার দেয়ার বিনিময়ে তাহাদের গীর্জাসমূহ ধ্বংস করা হইবে না, তাহাদের পুরোহিতদের বিতাড়িত করা হইবে না এবং তাহাদের ধর্মের উপর হস্তক্ষেপ করা হইবে না। চুক্তির এ শর্তগুলো ততক্ষণই বলবৎ থাকিবে যতক্ষণ তারা বিরূপ পরিস্থিত সৃষ্টি না করিবে এবং সুদের ব্যবসায় না জড়াবে। বর্ণনাকারী ইসমাঈল বলেন, নাজরানবাসীরা সুদের ব্যবসায় জড়িয়ে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩১ঃ আগুন-পূজারীদের কাছ থেকে জিয্‌য়া আদায়

৩০৪২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যখন পারস্যের অধিবাসীদের নাবী মারা যান তখন ইবলিস তাহাদেরকে অগ্নিপূজায় লিপ্ত করে।

হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান মাওকুফ

৩০৪৩. বাজালা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ছিলাম আহনাফ ইবনি ক্বায়িসের চাচা জাযই ইবনি মুআবিয়াহর সচিব। উমারের [রাদি.] মৃত্যুর এক বছর পূর্বে তার লেখা একটি পত্র আমাদের কাছে আসে। পত্রের বিষয়বস্তু এরূপঃ প্রত্যেক যাদুকরকে হত্যা করিবে, প্রত্যেক মুহরিম অগ্নিপূজারী স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ ছিন্ন করিবে এবং তাহাদেরকে যামযামা থেকে বিরত রাখবে। অতঃপর আমরা একদিনে তিনজন জাদুকর হত্যা করি এবং আল্লাহর কিতাবে বিধিবদ্ধ প্রতিটি অগ্নিপূজারী পুরুষ ও তার মুহরিম স্ত্রীর বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করি।

বর্ণনাকারী বলেন, তিনি [জাযই] অনেক খাবার তৈরি করে অগ্নিপূজারীদের ডাকলেন। তিনি তার রানের উপর তরবারি রাখলেন। তারা খাবার খেলো কিন্তু গুনগুন শব্দ করিল না। তারা একটি কিংবা দুটি খচ্চর বোঝাই রূপা দিলো। কিন্তু উমার [রাদি.] কখনো অগ্নিপূজারীদের কাছ থেকে জিয্‌য়া নেননি। অতঃপর আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.] যখন সাক্ষী দেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাজার এলাকার অগ্নিপূজারীদের কাছ থেকে জিয্‌য়া গ্রহণ করেছেন তখন তিনি তা গ্রহণ করিলেন।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৪৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে যখন বাহরাইনের অধিবাসীদের পক্ষ হইতে রাজবংশের একটি লোক আসলো। যারা ছিলো হাজার এলাকার অগ্নিপূজারী সম্প্রদায়। সে কিছুক্ষণ তাহাঁর নিকট অবস্থান করে বেড়িয়ে গেলো। আমি তাহাকে জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহ্‌ ও তাহাঁর রাসূল তোমাদের জন্য কি ফায়সালা দিলেন? তখন সে বললো, মন্দ ফায়সালা দিয়েছেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, আবদুর রহমান ইবনি আওফ [রাদি.] বলিয়াছেন, নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের কাছ থেকে জিয্‌য়া গ্রহণ করেন। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, লোকেরা আবদুর রহমানের [রাদি.] বক্তব্যকে গ্রহণ করলো এবং আসবাযীর কাছে আমি যা শুনিয়াছিলাম তা বর্জন করলো।

হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২ঃ জিয্‌য়া আদায়ে কঠোরতা অবলম্বন সম্পর্কে

৩০৪৫. উরওয়াহ ইবনিয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

একদা হিশাম ইবনি হাকীম ইবনি হিযাম [রাদি.] দেখেন, হিমসের শাসক কতিপয় কিবতীর কাছ থেকে জিয্‌য়া আদায় করিতে তাহাদেরকে রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। তিনি বলিলেন, এ কী ব্যাপার? আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যারা দুনিয়াতে মানুষকে অহেতুক শাস্তি দিবে, ক্বিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ্‌ তাহাদেরকে শাস্তি দিবেন।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৩ঃ যিম্মীদের ব্যবসায়ের লাভ থেকে এক-দশমাংশ [উশর] আদায় সম্পর্কে

৩০৪৬. হারব ইবনি উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার নানার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [নানা] তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ উশর ধার্য হইবে ইয়াহুদী ও নাসারাদের [ব্যবসায়িক পণ্যের] উপর। মুসলিমের উপর হইবে না।

দুর্বলঃ মিশকাত [৪০৩৯]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৪৭. হারব ইবনি উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

হারব ইবনি উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার সনদ পরম্পরায় নাবী [সাঃআঃ] এর এ হাদিসটি বর্ণনা করেন। তবে তাতে উশরের স্থলে খারাজ শব্দ উল্লেখ আছে।

হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল মুরসাল

৩০৪৮. আত্বা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বাক্‌র ইবনি ওয়াইল গোত্রের জনৈক ব্যক্তি হইতে শুনেছেন যিনি তার মামা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি বলি, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি কি আমার গোত্রের লোকদের নিকট থেকে উশর আদায় করবো? তিনি বলিলেনঃ উশর ইয়াহুদী ও খৃস্টানদের উপর ধার্য করা হইবে।

হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৪৯. বনূ সাক্বীফের হারব ইবনি উবাইদুল্লাহ ইবনি উমাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার নানার হইতে বর্ণীতঃ

তিনি [নানা] বনূ তাগলিবের লোক ছিলেন। তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে ইসলাম কবুল করি এবং তিনি আমাকে ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দিলেন। আমার গোত্রের যারা ইসলাম গ্রহণ করিবে তাহাদের কাছ থেকে কিভাবে যাকাত আদায় করবো তাও তিনি আমাকে শিখালেন। আমি তাহাঁর কাছে পুনরায় এসে বলি, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি আমাকে যা কিছু শিক্ষা দিয়েছেন তার সবই মনে রেখেছি। তবে আমি সদাক্বাহর বিধান মনে রাখতে পারিনি। আমি কি তাহাদের কাছ থেকে উশর নিবো? তিনি বলিলেনঃ না, উশর ধার্য হইবে ইয়াহুদী-খৃস্টানদের উপর।

হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৫০. বনূ সুলাইমের ইবনি সারিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ] এর সাথে খায়বারে অবতরণ করলাম। তখন তাহাঁর সাথে সাহাবীও ছিলেন। খায়বার অঞ্চলের নেতা ছিলো দুষ্টস্বভাবের বিদ্রোহী ব্যক্তি। সে নাবী [সাঃআঃ] এর সামনে এসে বললো, হে মুহাম্মাদ! আমাদের গাধাগুলোকে যাবাহ করা, আমাদের ফল খাওয়া এবং আমাদের নারীদের নির্যাতন করা কি তোমাদের জন্য বৈধ? একথা শুনে নাবী [সাঃআঃ] রাগান্বিত হলেন। তিনি ইবনি আওফকে বলিলেনঃ তুমি ঘোড়ায় চড়ে ঘোষণা করো ঃ “মুমিন ব্যক্তি ছাড়া কারো জন্য জান্নাত হালাল নয়; তোমরা সলাতের জন্য একত্র হও।” বর্ণনাকারী বলেন, সাহাবীগণ একত্র হলে নাবী [সাঃআঃ] তাহাদেরকে নিয়ে সলাত আদায় করিলেন; তারপর দাঁড়িয়ে বলিলেনঃ তোমাদের কেউ কি তার আসনে হেলান দিয়ে বসে এরূপ মত ব্যক্ত করিবে যে, আল্লাহ্‌র এই কুরআনে যা আছে তা ব্যতীত আর কিছুই হারাম করেননি। সাবধান! আল্লাহ্‌র শপথ! নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে কোন কোন বিষয়ে উপদেশ দিয়েছি। আমি তোমাদেরকে যা করার নির্দেশ দিয়েছি এবং যা থেকে বিরত থাকতে বলেছি তা কুরআনেরই অনুরূপ বা তার অতিরিক্ত। আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য আহলে কিতাবদের ঘরে তাহাদের অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা, তাহাদের নারীদের নির্যাতন করা এবং তাহাদের উপর ধার্যকৃত জিয্‌য়া তোমাদের প্রদান করলে তাহাদের ফল খাওয়া হালাল করেননি।

দূর্বল ঃ মিশকাত [১৬৪] হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৫১. জুহাইনাহ গোত্রের এক ব্যক্তির হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সম্ভবত তোমরা এমন এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাহাদের উপর বিজয়ী হইবে যারা নিজেদের জীবন ও সন্তান রক্ষার্থে তোমাদেরকে তাহাদের সম্পদ দিয়ে দিবে। সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদিসে রয়েছে, তারা তোমাদের সাথে সন্ধি করিবে। তোমরা তাহাদের কাছ থেকে ধার্যকৃত মালের অধিক গ্রহণ করিবে না। কারণ তোমাদের জন্য এরূপ সমীচীন নয়।

দূর্বল ঃ যঈফাহ্ [২৯৪৭], যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৪৬৮০]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৫২. রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাহাবীদের কিছু সন্তান তাহাদের পিতা সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

যারা ছিলেন পরস্পর ঘনিষ্ঠ। তিনি বলেনঃ সাবধান! যে ব্যক্তি চুক্তিবদ্ধ সম্প্রদায়ের কোন ব্যক্তির উপর যুলুম করিবে বা তার প্রাপ্য কম দিবে কিংবা তাহাকে তার সামর্থ্যের বাইরে কিছু করিতে বাধ্য করিবে অথবা তার সন্তুষ্টিমূলক সম্মতি ছাড়া তার কাছ থেকে কিছু গ্রহণ করিবে, ক্বিয়ামাতের দিন আমি তার বিপক্ষে বাদী হব।

সহিহ ঃ গায়াতুল মারাম [৪৭১] হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ–৩৪ঃ যদি বছরের কোন সময়ে যিম্মী ইসলাম গ্রহন করে তাহলে সে কি জিয্‌য়া দিবে?

৩০৫৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন মুসলিমের উপর জিয্‌য়া ধার্য হইবে না।

দূর্বল ঃ ইরওয়া [১২৫৭], যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৪৮৯৯]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৫৪. সুফিয়ান সাওরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]- হইতে বর্ণীতঃ

সুফিয়ান সাওরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে উপরোক্ত কথার ব্যাখ্যা জিঞ্জেস করা হলে তিনি বলেন, সে ইসলাম কবুল করলে তার উপর জিয্য়া ধার্য হইবে না।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ মাকতু

অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ শাসক কর্তৃক মুশরিকদের উপঢৌকন গ্রহণ

৩০৫৫. আবদুল্লাহ আল-হাওযানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা হালব শহরে আমার সাথে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] মুয়াযযিন বিলালের [রাদি.] সাক্ষাত হলো। আমি বলিলাম, হে বিলাল! রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] পরিবারে ভরণ-পোষণের খরচ কিভাবে ব্যবস্থা হতো তা আমাকে বলুন। তিনি বলিলেন, মহান আল্লাহ্ নাবী [সাঃআঃ]-কে [রাসূল করে] পাঠানোর পর থেকে তাহাঁর মৃত্যু পর্যন্ত আমি তাহাঁর পরিবারের যাবতীয় বিষয়ের দায়িত্বে ছিলাম। তাহাঁর কাছে কোন বস্ত্রহীন মুসলিম এলে তিনি আমাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতেন এবং আমি ধার করিতে বের হতাম। আমি তার জন্য কাপড় কিনে এনে তাহাকে পরিয়ে দিতাম এবং আহার করাতাম। এমতাবস্থায় মুশরিক সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি এসে আমাকে বললো, হে বিলাল! আমার অনেক সম্পদ রয়েছে। তুমি অন্য কারো কাছে ধার না করে আমার কাছ থেকে ধার নাও। সুতরাং আমি তাই করলাম। এ অবস্থায় আমি একদিন উযু করে সলাতের আযান দিতে উঠি। এ সময় মুশরিক লোকটি একদল ব্যবসায়ীর সাথে এসে উপস্থিত হলো। সে আমাকে দেখামাত্র বললো, হে হাবশী। আমি বলিলাম, উপস্থিত আছি। সে আমাকে কটুক্তি করাতে আমার মনে খুব বাঁধলো। সে আমাকে আরো বললো, তুমি কি জানো, মাসের কত দিন বাকী আছে? আমি বলিলাম, প্রায় শেষ। সে বললো, তোমার ও তার [ঋণ পরিশোধের সময়ের] মধ্যে চার দিনের ব্যবধান। কাজেই আমি তোমাকে ঋণের পরিবর্তে ধরে নিয়ে যাবো এবং মেষপালের রাখাল বানিয়ে তোমাকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দিবো।

তার এরূপ কথা শুনে আমি মর্মাহত হলাম যেমন অন্যান্য লোকদের হয়ে থাকে। আমি যখন ইশার সলাত আদায় করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর পরিজনের কাছে ফিরে আসলেন। আমি তাহাঁর সাথে দেখা করার অনুমতি চাইলে তিনি তা অনুমতি দিলেন। আমি বলিলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আমি যে মুশরিক ব্যক্তির কাছ থেকে ধার নিয়েছিলাম সে আমাকে এ কথা বলেছে। আমার এ ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য আপনারও নেই, আমারও নেই। সে আমাকে অপদস্থ করিবে। কাজেই ইতিপূর্বে ইসলাম গ্রহন করেছে এরূপ কোন মুসলিম জনপদে পলায়ন করার অনুমতি আমাকে দিন। আমি ততোদিন আত্মগোপন থাকার অনুমতি চাই যতদিন না মহান আল্লাহ্‌ তাহাঁর রাসূল [সাঃআঃ]- কে এমন সম্পদের ব্যবস্থা করে দেন যা দিয়ে আমার ঋণ পরিশোধ হইবে। একথা বলে আমি আমার ঘরে চলে এসে আমার তরবারি, মোজা, জুতা ও ঢাল গুছিয়ে আমার মাথার কাছে রাখি। ইচ্ছা ছিল, ভোরের আভা ফুটা মাত্রই বেরিয়ে পড়বো। হঠাৎ এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে আমাকে বললো, হে বিলাল! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তোমাকে স্মরণ করেছেন। আমি রওয়ানা হয়ে তাহাঁর কাছে এসে উপস্থিত হয়ে দেখি, চারটি উট পিঠে বোঝাই সম্পদ নিয়ে বসে আছে। আমি অনুমতি চাইলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেনঃ সুসংবাদ গ্রহণ করো! মহান আল্লাহ্‌ তোমার ঋণ পরিশোধের জন্য এগুলো পাঠিয়েছেন। পুনরায় তিনি বলিলেনঃ তুমি কি দেখছো না চারটি মাল বোঝাই উট বসে আছে? আমি বলিলাম, হাঁ। তিনি বলিলেনঃ এই উট এবং এদের পিঠে বোঝাই সমস্ত সম্পদ তোমার জন্য। এগুলোর পিঠ বোঝাই বস্ত্র ও খাদ্যদ্রব্য ফাদাকের শাসক আমার জন্য পাঠিয়েছে। এগুলো নিয়ে তোমার ঋণ পরিশোধ করো। আমি তাই করলাম।

অতঃপর বিলাল [রাদি.] বলিলেন, আমি মাসজিদে গিয়ে দেখি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাসজিদে বসে আছেন। আমি তাঁকে সালাম দিলে তিনি বলিলেনঃ তুমি যে সম্পদ পেয়েছো তা কি করেছো, ঋণ পরিশোধ হয়েছে কি? আমি বলিলাম, মহান আল্লাহ্‌ রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সমস্ত ঋণ পরিশোধের তৌফিক দিয়েছেন। এখন আর অবশিষ্ট নেই। তিনি বলিলেনঃ কিছু সম্পদ অবশিষ্ট আছে কি? আমি বলিলাম, হাঁ। তিনি বলিলেনঃ অবশিষ্ট সম্পদ তাড়াতাড়ি খরচ করো। তুমি আমাকে এ অবশিষ্ট সম্পদ হইতে রেহাই না দেয়া পর্যন্ত আমি আমার পরিবারের কারো নিকট যাবো না।

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইশার সলাত আদায়ের পর আমাকে ডেকে বলিলেনঃ তোমাকে দেয়া মালের অবস্থা কি? আমি বলিলাম, সেগুলো আমার কাছেই আছে। আমার কাছে কেউ আসেননি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাসজিদে রাত কাটালেন। বর্ণনাকারী হাদিসের বাকী অংশ বর্ণনা করিলেন। এমনকি পরবর্তী দিনের ইশার সলাত আদায় করে তিনি আমাকে ডাকলেন। তিনি বলিলেনঃ তোমার কাছে অবশিষ্ট মালের অবস্থা কি? আমি বলিলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আল্লাহ্‌ আপনাকে তা থেকে চিন্তামুক্ত করেছেন। তিনি তাকবীর দিলেন এবং আল্লাহ্‌র প্রশংসা করিলেন। তিনি আশঙ্কা করছিলেন, ঐ সম্পদ তাহাঁর কাছে থেকে যাওয়া অবস্থায় হয়তো তাহাঁর মৃত্যু হইবে। অতঃপর আমি তাঁকে অনুসরণ করি, তিনি তাহাঁর স্ত্রীদের কাছে এসে এক এক করে তাহাদের প্রত্যেককে সালাম দিলেন, এভাবে তিনি তাহাঁর শয়নকক্ষে ঢুকলেন। এ সেই ঘটনা যা তুমি [আবদুল্লাহ আল-হাওযানী] আমাকে জিজ্ঞেস করছো।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৫৬. মুআবিয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে আবু তাওবাহর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অনূরূপ হাদিস বর্ণিত। এতে রয়েছে ঃ বিলাল বলিলেন, ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য আপনারও নাই আমারও নাই। আমার এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নীরব রইলেন। এ অবস্থাটা আমার কাছে কঠিন মনে হয়েছে।

সনদ সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৫৭. ইয়াদ ইবনি হিমার হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলিলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে একটি উষ্ট্রী উপঢৌকন দিলে তিনি জিজ্ঞেস করেন, তুমি ইসলাম গ্রহণ করেছো কি? আমি বলিলাম, না। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আমাকে মুশরিকদের উপঢৌকন গ্রহণ করিতে নিষেধ করা হয়েছে।

হাসান সহিহ ঃ তিরমিজি [১৬৪১]। হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ কাউকে জায়গীর হিসাবে জমি দেয়া

৩০৫৮. ওয়াইল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে হাদরামাওত এলাকায় একখন্ড জমি জায়গীর হিসাবে দিয়েছিলেন।

সহিহ ঃ তিরমিজি [১৪১২]। হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৫৯. আলক্বামাহ ইবনি ওয়াইল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আলক্বামাহ ইবনি ওয়াইল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] নিজ সানাদে উপরোক্ত হাদিস বর্ণনা করেছেন।

আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি। হাদিসের তাহকিকঃ  নির্ণীত নয়

৩০৬০. আমর ইবনি হুরাইস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মদিনায় আমাকে ঘর বানানোর জন্য একখন্ড জমি দান করেন এবং তীরের ফলা দিয়ে এর সীমা নির্ধারণ করেন। তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে আরো দিবো, আরো দিবো।

হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৬১. রবীআহ ইবনি আবু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] একাধিক সাহাবী সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বিলাল ইবনিল হারিস আল-মুযানীকে আল-ফুর এর পার্শ্ববর্তী জায়গায় অবস্থিত ক্বাবালিয়া খনিটি বন্দোবস্ত করে দেন। ঐ খনি থেকে যাকাত ব্যতীত অন্য কিছু ধার্য করা হয়নি।

দূর্বল ঃ ইরওয়া [৮৩০]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৬২. কাসীর ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনি আওফ আল-মুযানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] মুযাইনাহ গোত্রের বিলাল ইবনিল হারিসকে ক্বাবালিয়ার উচ্চ ও নিম্ন ভূমির খনিসমূহ দান করেন। তিনি তাহাকে কুদস পাহাড়ের কৃষিভূমিও জায়গীর হিসেবে দান করেন। আব্বাস ছাড়া অন্যান্য বর্ণনাকারী জালসিয়া ও গাওরিয়া শব্দের স্থলে পর্যায়ক্রমে জালসা ও গাওরা শব্দের উল্লেখ করেছেন। তিনি কোন মুসলিমের মালিকানাধীন জমি তাহাকে দান করেননি অথবা এ জমির উপর কোন মুসলিমের মালিকানা ছিলো না। নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে একটি ফরমানও লিখে দিয়েছিলেন ঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম, আল্লাহ্‌র রাসূল মুহাম্মাদ মুযাইনা গোত্রের বিলাল ইবনিল হারিসকে ক্বাবালিয়ার উচ্চ ও নিম্নভূমির খনিসমূহ এবং কুদস পাহাড় সংলগ্ন কৃষিভূমি দান করেছেন। তিনি কোন মুসলিমের হক তাহাকে দান করেননি। অন্যান্য বর্ণনাকারী জালসিয়া ও গাওরিয়ার পরিবর্তে জালসা ও গাওরা শব্দ বর্ণনা করেছেন।

হাসান ঃ ইরওয়া [৩/৩১৩]। হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

৩০৬৩. কাসীর ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] মুযাইনাহ গোত্রের বিলাল ইবনিল হারিসকে ক্বাবালিয়ার উচ্চ ও নিম্ন ভূমির খনিসমূহ দান করেছিলেন। ইবনিন নাদর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ক্বাবালিয়ার পার্শ্ববর্তী ভূমি এবং যাতুন-নুসুর এলাকাও দান করেন। অতঃপর উভয় বর্ণনাকারী বর্ণনা করেন যে, এবং কুদস পাহাড়ের কৃষিভূমিও। তিনি বিলাল ইবনিল হারিসকে কোন মুসলিমের হক দান করেননি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে ফরমান লিখে দেন ঃ বিলাল ইবনিল হারিস আল-মুযানীকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ক্বাবালিয়ার উচ্চ ও নিম্ন ভূমির খনিসমূহ এবং এর সংলগ্ন কুদস পাহাড়ের কৃষিভূমি দান করেছেন। এতে আর কোন মুসলমানের হক রইলো না। তবে ইবনিন নাযরের বর্ণনায় রয়েছে ঃ নাবী [সাঃআঃ]–এর দানের ফরমানটি উবাই ইবনি কাব [রাদি.] লিখেছিলেন।

হাসান। পূর্বেরটি দেখুন। হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

৩০৬৪. আব্ইয়াদ ইবনি হাম্মাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ.

তিনি একটি প্রতিনিধি নিয়ে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে আসলেন এবং তাহাঁর কাছে লবন কূপটি দান হিসাবে চাইলেন। ইবনিল মুতাওয়াক্‌কিল বলেন, এটা মারিব নামক স্থানে অবস্থিত ছিল। তিনি [সাঃআঃ] তাহাকে তা দিলেন। আব্ইয়াদ ফিরে যাওয়ার সময় বৈঠকে উপস্থিত এক ব্যক্তি বললো, আপনি কি জানেন তাহাকে কোন জমি দান করেছেন? আপনি তাহাকে ঝরণার অফুরন্ত পানি দিয়েছেন। লোকটি বললো, অতঃপর তিনি [সাঃআঃ] তার কাছ থেকে ঐ জমি ফিরিয়ে নেন। তিনি বলেন, আব্ইয়াদ তাঁকে এ জিজ্ঞেস করেন, আরাক গাছে বেড়া দিবে কিনা। তিনি বলিলেনঃ যাতে সেখানে ক্ষুরের পদচারণা না হয়। ইবনিল মুতাওয়াক্‌কিল বলেন, ক্ষুর বলিতে বুঝানো হয়েছে উটের পায়ের ক্ষুর।

হাসান, পূর্বেরটি দ্বারা। হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

৩০৬৫. মুহাম্মাদ ইবনিল হাসান আল-মাখযূমী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ.

তিনি বলেন, উটের পদচারণা হইবে না অর্থাৎ উট গাছের উপরিভাগ খেয়ে থাকে। সুতরাং তা রক্ষার জন্য উপরেই বেড়া দিতে হইবে।

খুবই দূর্বল মাক্বতু ঃ মিশকাত [৩০০০]। হাদিসের তাহকিকঃ  খুবই দুর্বল

৩০৬৬. আব্ইয়াদ ইবনি হাম্মাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে তিনি আরাক গাছ সমৃদ্ধ জমি সংরক্ষনার্থে তাহাকে তা দেয়ার জন্য আবেদন করলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আরাক গাছে বেড়া দেয়া যায় না। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করিলেন, তা যদি আমার জমির প্রাচীরের মধ্যে থাকে? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আরাক গাছ সমৃদ্ধ ভূমি বেড়া দিয়ে রক্ষা করা যায় না। বর্ণনাকারী ফারাজ বলেন, হিদার হলো চারদিকে ঘেরা কৃষি জমি।

হাসান, পূর্বেরটি দ্বারা। হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

৩০৬৭. উসমান ইবনি আবু হাযিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদা সাখরের [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বনূ সাক্বীফের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলেন। সাখর [রাদি.] এটা জানতে পেরে নাবী [সাঃআঃ] এর সাহায্যের জন্য কয়েকজন ঘোড়সওয়ার নিয়ে রওয়ানা হলেন। তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে বিনা বিজয়ে ফিরে আসতে দেখলেন। তখন সাখর [রাদি.] আল্লাহর নামে শপথ করে নিজে দায়িত্ব নিলেন যে, তারা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নির্দেশের সামনে মাথা নত করে দুর্গ থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত তিনি তা অবরোধ করে রাখবেন। ব্যাপার তাই হলো। অতঃপর তারা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] নির্দেশ মেনে দুর্গ থেকে বেরিয়ে এলো। তখন সাখর [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ মর্মে চিঠি লিখলেনঃ আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান করার পর, হে আল্লাহর রাসূল! বনূ সাক্বীফ আপনার নির্দেশ অনুযায়ী আত্নসমর্পণ করেছে। আমি তাহাদের কাছে যাচ্ছি। তারা ঘোড়সওয়ার অবস্থায় বের হচ্ছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ সংবাদ জানতে পেরে জামাআতে সলাত আদায়ের জন্য তৈরী হইতে নির্দেশ দিলেন। তিনি আহ্মাস গোত্রের জন্য দশবার দুআ করিলেন। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহ! আপনি আহ্মাস গোত্রের ঘোড়া ও জনশক্তিতে বরকত দান করুন। অতঃপর লোকেরা তাহাঁর কাছে আসলো। তাহাদের পক্ষ হইতে মুগীরাহ ইবনি শুবাহ [রাদি.] তাহাঁর সাথে কথা বলিলেন। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর নাবী! সাখর [রাদি.] আমার ফুফুকে ধরে এনেছে। অথচ তিনি ইসলাম কবুল করেছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে ডেকে বলিলেনঃ হে সাখর! কোন গোত্রের লোক ইসলাম কবুল করলে তারা তাহাদের জীবনে ও সম্পদের নিরাপত্তা লাভ করে। মুগীরাহ্র ফুফুকে তার নিকট ফিরিয়ে দাও। তিনি [সাখর] তাহাকে মুগীরাহ্র নিকট ফিরিয়ে দিলেন।

সাথর নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে বনূ সুলাইমের পানির কূপটি চাইলেন। তারা ইসলাম গ্রহণ করার ভয়ে এই কূপ ছেড়ে পালিয়েছিল। সাখর [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর নাবী! আমাকে ও আমার গোত্রকে এ কূপের নিকটে বসবাসের অনুমতি দিন। তিনি বলিলেনঃ ঠিক আছে। তিনি তাহাদেরকে সেখানে বসবাসের অনুমতি দিলেন।

ইতিমধ্যে বনূ সুলাইমের লোকেরা ইসলাম কবুল করলো। তারা সাখরের নিকট এসে তাহাদের কূপ ফেরত চাইলে তিনি তা ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করিলেন। অবশেষে তারা নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর নাবী! আমরা ইসলাম কবুলের পর সাখরের কাছে এসে আমাদের কূপটি ফেরত চাইলে তিনি তা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে ডেকে এনে বলিলেনঃ হে সাখর! কোন সম্প্রদায় ইসলাম গ্রহণ করলে তারা নিজেদের জান-মালের নিরাপত্তা পায়। সুতরাং তাহাদের পানির কূপটি তাহাদেরকে ফিরিয়ে দাও। তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর নাবী! ঠিক আছে। এ সময় আমি লক্ষ্য করলাম, রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] চেহারা মুবারক লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কেননা সাখরের কাছ থেকে বাঁদী ও কূপ ফেরত নেয়া হয়েছিল।

সনদ দূর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৬৮. সাবুরাহ ইবনি আবদুল আযীয ইবনির রবী আল-জুহানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও দাদার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] একটি প্রকাণ্ড গাছের নীচে মাসজিদের স্থানে নামলেন। তিনি সেখানে তিন দিন অবস্থান করিলেন। অতঃপর তিনি তাবূকের দিকে রওয়ানা হলেন। জুহাইনাহ গোত্রের লোকেরা এক প্রশস্ত ভূমিতে এসে তাহাঁর সাথে মিলিত হলে তিনি তাহাদেরকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এখানে কারা বসবাস করে? তারা বললো, জুহাইনাহ গোত্রের উপগোত্র বনূ রিফাআহ। তিনি বলিলেনঃ আমি এ জমি বনূ রিফাআহকে প্রদান করলাম। তারা এ জমি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিলো। তাহাদের মধ্যে কেউ নিজ অংশ বিক্রি করে দিল এবং কেউ বিক্রি করলো না। তারা জমিতে কৃষিকাজ করলো। ইবনি ওয়াহ্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি সাবুরাহ্র পিতা আবদুল আযীযকে এ হাদিস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমার নিকট এর কিছু অংশ বর্ণনা করেন, কিন্তু সম্পূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেননি।

সনদ হাসান। হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

৩০৬৯. আসমা বিনতু আবু বাক্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যুবাইরকে এক খণ্ড খেজুর বাগান জায়গীর হিসেবে দান করেছিলেন।

হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান সহিহ

৩০৭০. উলাইবার দুই কন্যা সফিয়্যাহ ও দুহাইবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তারা উভয়ে মাখরামাহ্র কন্যা ক্বাইলাহ [রাদি.] এর তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হন। তিনি তাহাদের পিতার দাদী ছিলেন। তিনি তাহাদের উভয়কে এ হাদিস সম্পর্কে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে গেলাম। আমার সঙ্গী বাক্র ইবনি ওয়াইল গোত্রের প্রতিনিধি হুরাইস ইবনি হাসসান অগ্রসর হয়ে নিজের ও তার গোষ্ঠীর পক্ষ হইতে তাহাঁর নিকট ইসলাম কবুলের বাইআত গ্রহণ করিলেন। অতঃপর তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের ও বনূ তামীম গোত্রের মধ্যে আদ-দাহনাকে সীমান্ত হিসাবে চিহ্নিত করে দিন। তাহাদের কেউ এ স্থানটি অতিক্রম করে আমাদের এদিকে আসবে, তবে মুসাফিরের কথা ভিন্ন। তিনি বলিলেনঃ হে যুবক! তাহাকে আদ-দাহনা সম্পর্কে লিখে দাও। ক্বাইলাহ [রাদি.] বলেন, আমি যখন দেখলাম যে, তিনি তাহাকে ঐ স্থানটি লিখে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, তখন আমার চিন্তা হলো। কেননা আদ-দাহনা আমার জন্মভূমি। এখানেই আমার ঘরবাড়ী। আমি বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! সে আপনার কাছে সঠিক সীমানা ইনসাফ সহকারে বলেনি। এই আদ-দাহনা হচ্ছে উট বাঁধার এবং বকরী চরাবার চরণভূমি। বনূ তামীম গোত্রের নারী ও শিশুরা এর পিছনেই বসবাস করে। একথা শুনে তিনি বলিলেনঃ হে যুবক! [লিখা] থামাও। এ মহিলা সত্যিই বলেছে। মুসলিম পরস্পর ভাই ভাই। একজনের পানি এবং গাছের দ্বারা অন্যজন উপকৃত হইবে এবং বিপদে পরস্পরের সাহায্য করিবে।

সনদ দূর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৭১. আসমার ইবনি মুদাররিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে বাইআত নিলাম। তিনি বলিলেনঃ যে ব্যক্তি কোন পানির উৎসের নিকট সর্বপ্রথম পৌঁছবে, যার নিকট তার পূর্বে কোন মুসলিম পৌঁছেনি, তা তার জন্য। বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা বের হলো এবং নিশান লাগাতে থাকলো।

দুর্বলঃ ইরওয়া [১৫৫৩], যয়ীফ আর-জামিউস সাগীর [৫৬২২], মিশকাত [৩০০২]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৭২. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] যুবাইর [রাদি.]-কে তার ঘোড়ার এক দৌড় পরিমাণ জমিন জায়গীর হিসেবে দিলেন। তিনি তার ঘোড়া ছুটালেন, অতঃপর তা থেমে গেলে সেখানে তার চাবুক নিক্ষেপ করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ তাহাকে তার চাবুক পৌঁছার স্থান পর্যন্ত প্রদান করো।

হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ অনাবাদী জমি আবাদ করা সম্পর্কে

৩০৭৩. সাঈদ ইবনি যায়িদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কেউ কোন পতিত জমি আবাদ করলে সেটা তারই। অন্যায়ভাবে দখলকারীর পরিশ্রমের কোন মূল্য নাই।

সহীহঃ তিরমিজি [১৪০৭]। হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৭৪. ইয়াহইয়া ইবনি উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন অনাবাদী জমি আবাদকারীই হইবে ঐ জমির মালিক। এটি উপরের হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। অতঃপর উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, যিনি আমাকে এ হাদিস বর্ণনা করেছেন, তিনি আমাকে আরো জানিয়েছেন যে, দুই ব্যক্তি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] কাছে তাহাদের বিবাদের মীমাংসার জন্য আসলো। তাহাদের একজন অপরজনের জমিতে একটি খেজুর গাছ লাগিয়েছিল। তিনি জমির মালিকের পক্ষে জমি তারই বলে রায় দিলেন এবং খেজুর গাছের মালিককে জমি থেকে গাছ তুলে নেয়ার নির্দেশ দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি দেখলাম, গাছটির গোড়ায় অবিরত কোদাল পড়ছে। গাছটি খুব লম্বা ছিল। অতঃপর গাছটি সেখান থেকে তুলে ফেলা হয়।

হাসানঃ ইরওয়া [৫/৩৫৫]। হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

৩০৭৫. ইবনি ইসহাক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

ইবনি ইসহাক্ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তার নিজস্ব সানাদে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেন। তবে তাতে রয়েছেঃ উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এর সাহাবীদের মধ্যকার এক ব্যক্তি বলিয়াছেন। আমার ধারণা সম্ভবত তিনি হলেন আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.]। তিনি বলিয়াছেন, আমি দেখলাম, লোকটি খেজুর গাছের গোড়া কেটে ফেলছে।

হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

৩০৭৬. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফয়সালা করেছেনঃ জমিন আল্লাহর, বান্দাও আল্লাহর। যে ব্যক্তি পতিত জমি আবাদ করিবে সে-ই এর অগ্রাধিকারী প্রাপক। এ হাদিস আমাদের কাছে তারা বর্ণনা করেছেন যারা নাবী [সাঃআঃ] এর কাছ থেকে আমাদের জন্য সলাতের হাদিস বর্ণনা করেছেন।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৭৭. সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কেউ [মালিকানাহীন] জমির চারপাশে দেয়াল বাঁধলে সেটা তারই প্রাপ্য।

দুর্বলঃ ইরওয়া [৫/৩৫৫, ১৫২০], মিশকাত [২৯৯৬]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৭৮. মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ঐ ব্যক্তি অন্যায়ভাবে দখলকারী যে নিজের অবৈধ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যের জমিতে গাছ লাগায়। মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে পতিত জমি থেকে কিছু নিবে, তাতে গর্ত খনন করিবে কিংবা রোপণ করিবে সে অত্যাচারী।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ মাকতু

৩০৭৯. আবু হুমাইদ আস-সাঈদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে তাবূকের যুদ্ধে যোগদান করেছি। তিনি ওয়াদিল কুরায় পৌঁছলে এক মহিলাকে তার বাগানের মধ্যে দেখিতে পান। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের বলিলেনঃ এ বাগানের ফলের পরিমাণ কতটুকু? অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিজেই দশ ওয়াসাক অনুমান করিলেন। তিনি মহিলাটিকে বলিলেনঃ তোমার বাগানের ফলের পরিমাণ ওজন করে দেখবে। অতঃপর আমরা তাবূকে পৌঁছলাম। তখন ঈলা নামক স্থানের রাজা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে একটি সাদা খচ্চর উপহার পাঠালেন। তিনি [সাঃআঃ] রাজাকে একটি চাঁদর দিলেন এবং জিয্‌য়ার বিনিময়ে তার এলাকায় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে ফরমান লিখে পাঠালেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা ওয়াদিল কুরায় প্রত্যাবর্তন করলে তিনি মহিলাটিকে বলিলেনঃ তোমার বাগানে কি পরিমাণ ফল এসেছে? সে বললো, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যে দশ ওয়াসাক অনুমান করেছেন তাই। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আমি খুব দ্রুত মদিনায় পৌঁছতে চাই। তোমাদের মধ্যে যে আমার সাথে দ্রুত যেতে চায় সে যেন তাড়াতাড়ি করে।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৮০. যাইনাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা তিনি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] মাথার উঁকুন তারাশ করছিলেন। এ সময় তাহাঁর কাছে উসমান ইবনি আফফানের [রাদি.] স্ত্রী এবং কতিপয় মুহাজির মহিলা উপস্থিত ছিলেন। তাহাঁর কাছে তারা তাহাদের বাসস্থানের সংকীর্ণতার অভিযোগ পেশ করেন। তাহাদেরকে ঘর থেকে বহিস্কার করা হতো। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নির্দেশ দিলেনঃ মুহাজিরদের [মৃত্যুর পর] তাহাদের স্ত্রীরা তাহাদের বাসস্থানের উত্তরাধিকারী হইবে। সুতরাং আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] মারা গেলে তার স্ত্রী তার মাদীনাহ্‌র বাসস্থানের ওয়ারিস হন।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ খাজনা ধার্যকৃত [খারাজী] জমি কেনা

৩০৮১. মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি জিয্য়ার জমি ক্রয় করেছে, সে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] অনুসৃত পথ থেকে দূরে সরে গেলো।

হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

৩০৮২. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি জিয্‌য়া দেয়ার শর্তে জমি ক্রয় করলো সে নিজের হিজরাতের শর্ত বাতিল করলো। আর যে ব্যক্তি কোন কাফিরের অমর্যাদা করে তার গরদান থেকে নিজ গরদানে তুলে নিলো, সে যেন ইসলাম থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করলো। অধস্তন বর্ননাকারী সিনান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ হাদিস খালিদ ইবনি মাদান আমার কাছ থেকে শুনে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, শাবীব কি তোমার কাছে এ হাদিস বর্ণনা করেছে? আমি বলিলাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, তুমি পুনরায় তার কাছে গেলে তাহাকে বলবে, তিনি যেন আমাকে এ হাদিসটি লিখে দেন। সিনান বলেন, শাবীব তাহাকে এ হাদিসটি লিখে দেন। অতঃপর আমি খালিদের কাছে এলে তিনি আমার কাছে লিখিত কাগজটি চান। আমি তাহাকে তা দিলাম। তিনি তা পড়ে নিজ মালিকানাধীন সমস্ত জিয্য়ার জমি ছেড়ে দেন, এ হাদিস শুনার পর। আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এ ইয়াযীদ ইবনি খুমাইর আল-ইয়াযান্নী শুবাহর ছাত্র নন।

সনদ দুর্বলঃ যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৫৩৬৩], মিশকাত [৩৫৪৬]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ ঈমাম অথবা কোন ব্যক্তি কর্তৃক চারণভূমি সংরক্ষন করা

৩০৮৩. আস-সাব ইবনি জাসসামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল ছাড়া চারণভূমি সংরক্ষণ করার অধিকার অন্য কারো নাই। ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি জানতে পারলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আন-নাকী নামক স্থানের চারণভূমি সংরক্ষণ করেছেন।

সহীহঃ আত-তালীকু আলা রাওযাতিন নাদিয়্যাহ [২/১৪০]। হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে আস-সাব ইবনি জাসসামাহ [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] আন-নাকী নামক চারণভূমি সংরক্ষণ করেছিলেন। তিনি বলিয়াছেনঃ চারণভূমি সংরক্ষণ করার অধিকার মহান আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নাই।

হাদিসের তাহকিকঃ  হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪০ঃ গুপ্তধন ও তার বিধান

৩০৮৫. সাঈদ ইবনিল মুসাইয়্যাব ও আবু সালামাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তারা উভয়ে আবু হুরায়রা [রাদি.]-কে এ হাদিস বলিতে শুনেছেন, নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ গুপ্তধনে এক-পঞ্চমাংশ ধার্য হইবে।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ হাদিস

৩০৮৬. আল-হাসান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

রিকায অর্থ ইসলাম-পূর্ব যুগে ভূগর্ভে প্রোথিত সম্পদ।

হাদিসের তাহকিকঃ  সহিহ মাকতু

৩০৮৭. আল-মিক্বদাদ [রাদি.] কন্যা কারীমাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে যুবাইর ইবনি আবদুল মুত্তালিব ইবনি হিশামের কন্যা দাবাআহ্র [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

তিনি তাহাকে এ হাদিস জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আল–মিক্বদাদ [রাদি.] প্রাকৃতিক প্রয়োজনে নাকীউল খাবখাবাহ নামক স্থানে যান। তিনি হঠাৎ দেখিতে পান, একটি ইঁদুর গর্ত থেকে একটি একটি করে দীনার বের করছে। এরপর ইঁদুরটি একাধারে সতেরটি দীনার বের করলো, অতঃপর একটি লাল রঙ্গের পুটুলি বের করে আনলো। তাতেও একটি দীনার ছিল। এতে সর্বমোট দীনার হলো আঠারটি। মিক্বদাদ এগুলো নিয়ে নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁকে ঘটনাটি জানালেন। তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলেন, আপনি এর যাকাত নিন। তখন নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি কি নিজে এগুলো গর্ত থেকে বের করেছ? তিনি বলিলেন, না। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ এ সম্পদে আল্লাহ্ তোমাকে বরকত দান করুন।

দুর্বল ঃ ইবনি মাজাহ [২৫০৮] হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪১ঃ কাফিরদের ধনভর্তি পুরাতন ক্ববর খোঁড়া

৩০৮৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সাথে তায়িফের দিকে রওয়ানা হই। আমরা একটি ক্ববরের পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ কবরটি আবু রিগালের [সামূদ জাতির লোক]। সে গযব থেকে বাঁচার জন্য হেরেম শরীফের অভ্যন্তরে অবস্থান করতো। অতঃপর সেখান থেকে বের হয়ে এখানে পৌছলে সে উক্ত গযবে পতিত হয়, যাতে তার জাতির লোকেরা ধ্বংস হয়ে যায়। তাহাকে এ স্থানে দাফন করা হয়েছে। আর এর নিদর্শন হচ্ছে, তার সাথে লাঠি সদৃশ একটি স্বর্ণের লাঠিও দাফন করা আছে। তোমরা তার ক্ববর খুঁড়ে দেখলে সেটা তার সাথেই পাবে। লোকেরা দ্রুত তার ক্ববর খুঁড়ে স্বর্ণের লাঠিটি বের করলো।

দুর্বল ঃ যঈফাহ [৪৭৩৬], যয়ীফ আল-জামিউস সাগীর [৬০৮২]। হাদিসের তাহকিকঃ  দুর্বল হাদিস

By ইমাম আবু দাউদ

এখানে কুরআন শরীফ, তাফসীর, প্রায় ৫০,০০০ হাদীস, প্রাচীন ফিকাহ কিতাব ও এর সুচিপত্র প্রচার করা হয়েছে। প্রশ্ন/পরামর্শ/ ভুল সংশোধন/বই ক্রয় করতে চাইলে আপনার পছন্দের লেখার নিচে মন্তব্য (Comments) করুন। “আমার কথা পৌঁছিয়ে দাও, তা যদি এক আয়াতও হয়” -বুখারি ৩৪৬১। তাই এই পোস্ট টি উপরের Facebook বাটনে এ ক্লিক করে শেয়ার করুন অশেষ সাওয়াব হাসিল করুন

Leave a Reply